হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা: HOMOEOPATHIC TREATMENT
১। সারাসিনিয়া পারপিউরিয়া (Sarracenia purpurea) ৩০ অন্যতম নির্দিষ্ট ওষুধটি রোগাক্রমণের প্রথম অবস্থায় রোগ নির্ধারণের পরেই দিয়ে দেখবেন। রোগীর কষ্ট অনেকাংশে কমে যাবে। এক্ষেত্রে রোগীর মাথায় রক্তাধিক্যতা, সাথে হৃৎপিন্ডের অনিয়মিত গতি হতে দেখা যায়।
২। এন্টিমোনিয়াম টার্টারিকাম (Antimonium tartaricum) ৩০ – Pastular eruption, রোগী খুব দুর্বল হয়ে পড়ে। সেই সঙ্গে অল্প বিস্তর সর্দিকাশিতে ভোগে। মৃদু প্রকৃতির জ্বর হতেও দেখা যায়, কাশি হলে কফ সহজে বের হতে চায় না। উদ্ভেদগুলি জ্বালাকর ও অস্বস্তিকর হয়ে ওঠে।
৩। রাস টক্সিকোডেনড্রন (Rhus toxicodendron) ৩০ জল পরিপূর্ণ উদ্ভেদ। সেই সঙ্গে ক্রমাগত চুলকানি। উদ্ভেদগুলি জ্বালাকর। জল লাগালে চুলকানি বাড়ে। রোগী সময় সময় অস্থির হয়ে ওঠে। এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় পরিবর্তিত হতে চায়। তীব্র পিপাসা। রোগীর ক্রমাগত জ্বর। জিভের প্রান্তভাগ লাল ত্রিভুজাকৃতি হয়।
4। ভেরিওলিনাম (Variolinum) ২০০ যদিও small pox-এর জীবাণু থেকে তৈরি তবু chicken pox-এর চিকিৎসায় সাফল্যের সাথে ব্যবহার করা হয়। রোগীর শরীরে জ্বর, দুর্গন্ধযুক্ত ঘাম, শুকনো ত্বক ও উদ্ভেদ লক্ষ করা যায়। Herper zoster shingles.
🔥 Cantharis 30 / 200
-
ভেসিকেল বা ফোসকা ফাটার পর তীব্র জ্বালাপোড়া ও পোড়ার মতো ব্যথা হলে এটি উপযুক্ত।
-
চামড়া স্পর্শ করলে ব্যথা বাড়ে।
-
রোগী ঠান্ডা জিনিসে আরাম পায়।
-
যদি প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া থাকে, তাহলে এটি আরও বেশি উপযুক্ত।
🔥 Apis Mellifica 30
-
ভেসিকেলগুলো লাল, ফোলা এবং জ্বালা করে, যেন কেউ সুই দিয়ে বিঁধছে।
-
ঠান্ডা প্রয়োগে আরাম, গরমে খারাপ।
-
রোগী সাধারণত পানিতে পিপাসাহীন।
* অন্যান্য প্রযোজনীয় ওষুধ: OTHER VALUABLE REMEDIES
Malan, Morbil, Thuja, Vacini ইত্যাদি।
■ ওষুধ প্রয়োগ: MEDICINAL APPLICATION
নির্বাচিত ওষুধটির নির্দিষ্ট শক্তি দিনে তিন চার বার করে খেতে দেবেন।
* বায়োকেমিক চিকিৎসা: BIOCHEMIC TREATMENT
বায়োকেমিক মতে Ferrumphos 3x, Kali mur 3x একত্রে মিশিয়ে দিনে তিন চার বার গরম জলের সাথে খেতে দেবেন।
■ পথ্য ও আনুষঙ্গিক ব্যবস্থা: DIET AND MANAGEMENT
রোগীকে সম্পূর্ণ পৃথক ঘরে রাখতে হয়। মশারির ব্যবস্থা অবশ্যই করবেন। শুশ্রুষাকারী ছাড়া অন্য কেউ যেন সেই ঘরে প্রবেশ না করে। ঘরে ধূপ ধুনা দিয়ে ঘর পরিষ্কার রাখার প্রচলন আছে। ব্লিচিং দিয়ে নিয়মিত ঘর পরিষ্কার করা ফিনাইল দিয়ে মেঝে পরিষ্কার করা, নিয়মিত জামাকাপড়, বিছানাপত্র পরিষ্কার রাখা উচিত। ঠান্ডা জাতীয় খাবার, গ্লুকোজ, লেবুর রস, সাবু, সাগু, বার্লি হরলিক্স প্রভৃতি খেতে দেবেন। সহজে হজম হয় এমন পুষ্টিকর খাদ্য নিয়মিত খেতে দেবেন।
বসন্ত ও পানি বসন্ত
১। সালফার: যদি দেখেন কোন রোগী বসন্তে বা পানি বসন্তের প্রথম অবস্থায় সামান্য কয়েকটি ‘গোটা’ বাহির হইয়া রোগীর জ্বর হতে থাকে তখন সালফার ২০০ শক্তির এক মাত্রা প্রয়োগ করতে ভুলবেন না। তাহাতে সম্পূর্ণ বসন্ত শরীর হতে তাড়াতাড়ি বাহির হয়ে যাবে এবং জ্বর ও সারিয়া যাবে। আরও মনে রাখবেন যে, রোগীর বসন্ত রোগ আরোগ্যের শেষ পর্যায়ে শরীরে চুলকানি দেখা দিলে সালফার ৩০ শক্তি কয়েকমাত্রা প্রয়োগ করলে অব্যর্থ ফল পাবেন। শক্তি ৩০, ২০০।
২। রাসটক্স: যদি দেখেন কোন রোগীর বসন্তে বা পানি বসন্তে সমস্ত শরীর ব্যথা করিয়া সামান্য জ্বর, মাথাব্যথা ব্যথা ও চুলকানী হয় তখন রাসটক্স প্রয়োগ করবেন। আরও মনে রাখবেন যে, রোগীর অস্থিরতাসহ শরীরে ব্যথা হইলে এবং সেই ব্যথা টিপিলে আরাম অনুভব করলে এবং জিহ্বার অগ্রভাগ লাল থাকলে রাসটক্স অব্যর্থ মহৌষধ। শক্তি ৬, ৬০, ৩০। আরও মনে রাখবেন রাসটক্স এর যে কোন শক্তির (বিশেষতঃ ২০০, শক্তির ঔষধ পরিশ্রুত পানিতে মিশাইয়া ১০ বার ঝাকি দিয়া ১/২ ঘন্টা পর পর প্রয়োগ করলে ১০/১৫ দিনের মধ্যে বসন্ত রোগী আরোগ্য লাভ করবে। বহু রোগীতে পরিক্ষীত।
৩। এপিস মেল: আবার যদি দেখেন কোন রোগীর বসন্তের গোটাগুলি ফোলা লালবর্ণ দেখা যায়, সর্ব শরীরে জ্বালা ও চুলকানী হয় এবং হুল ফোঁটানো টাটানী ব্যথা থাকে, তখন এপিস মেল প্রয়োগ করবেন। আরও মনে রাখবেন যে, রোগীর শরীরের জ্বালার জন্য কোন জামা-কাপড় গায়ে রাখতে চায় না, সর্বদাই ঠাণ্ডায় থাকতে চায়, কিন্তু পিপাসা হয় না, পানিও খায় না, তজ্জন্য মুত্রের স্বল্পতা দেখা দেয় এবং চোখের নীচের পাতা থলির মত ফুলিয়া যায়, তখন এপিস মেল অব্যর্থ মহৌষধ। শক্তি
৬, ৬০, ৩০, ২০০।
৪। আর্সেনিক: আবার যদি দেখেন কোন রোগীর বসন্তে অত্যন্ত জ্বালা থাকে, তাহা আবার গরমে উপশম হয়। পিপাসার জন্য অল্প অল্প পানি খাও ও সঙ্গে সঙ্গে বমি করিয়া দেয় এবং সেইসাথে রোগীর অস্থিরতা ও মৃত্যুভয় দেখা দেয়, তখন আর্সেনিক অব্যর্থ মহৌষধ। শক্তি ৬, ৬০, ৩০।
৫। সারাসিনিয়া : কোন রোগীর বসন্ত পীড়ায় প্রথম অবস্থায় সারাসিনিয়া প্রয়োগ করলে বসন্তের গুটিগুলি খুব তাড়াতাড়ি বাহির হইয়া যায় এবং তাহা না পাকিয়া অল্পদিনের মধ্যেই শুকাইয়া যায়, তাই ইহাকে বসন্ত রোগের পেটেন্ট ঔষধ বলা হয়। আরও মনে রাখবেন যে, বসন্তের গতি খারাপের দিকে যাইতে থাকলে সারাসিনিয়া প্রয়োগ করলে তাহা অবশ্যই নিবারণ হইবে। তাছাড়া ইহা একটি বসন্তের প্রতিষেধক। বাড়ীতে বসন্ত রোগ দেখা দিলে, অন্যেরা তাহা প্রতিদিন সেবন করিলে বসন্ত রোগের আক্রমণ হইবার সম্ভাবনা থাকে না। শক্তি ৬, ৬০, ৩০, প্রতিষেধক হিসাবে ৩০ শক্তি দিনে ৩ বার প্রয়োগ করবেন।
৬। এন্টিমটার্ট: ইহা মানুষের সুস্থ শরীরে পরীক্ষা করার সময় পরীক্ষকের শরীরে বসন্তের ন্যায় গুটি দেখা দিয়াছিল। সেইজন্য ইহাকে বসন্তের অমোঘ বা পেসিফিক ঔষধ বলা হয়। তবে বসন্ত বাহির হইবার সময় কোন কারণে ঠাণ্ডা লাগিয়া বসন্ত খাই খাইয়া বসন্তের গুটিগুলি সম্পূর্ণ বাহির না হইলে এবং রোগীর বুকের মধ্যে সর্দির ঘড় ঘড় শব্দ শুনা গেলে, বুকে অনেক সর্দি কফ জমা আছে, মনে হয় কিন্তু কাশিলে কিছুই উঠে না, রোগী তন্দ্রাচ্ছন্নভাবে পড়িয়া থাকে, তখন এন্টিমটার্ট অব্যর্থ মহৌষধ। আরো মনে রাখবেন যে, ইহা একটি বসন্তের প্রতিষেধকরূপে কাজ করে। শক্তি ৬০, ৩০।
৭। হিপার সালফার : আবার যদি দেখেন কোন রোগীর বসন্তে পুঁজ উৎপন্ন হয়, তাহাতে টাটানী ব্যথা ও এত স্পর্শকাতরতা থাকে যে, ডাক্তারকে হাত দিয়া দেখিতে দেয় না, রোগী চিৎকার করিয়া উঠে, তখন হিপার সালফার অব্যর্থ মহৌষধ। শক্তি ৬০, ৬, ৩০।
৮। মার্কসল: আবার যদি দেখেন কোন রোগীর বসন্তে পুঁজ উৎপন্ন হইয়াছে, তাহাতে চুলকানী আছে এবং হিপারের মত স্পর্শকাতরতা নাই। রোগী ডাক্তারকে স্পর্শ করিয়া দেখিতে দেয়, তাহাতে রোগীর কোন প্রকার কষ্ট হয় না, অর্থাৎ পুঁজ নিবারণে মার্কসল অব্যর্থ মহৌষধ। শক্তি ৬, ৬০, ৩০, ১০০০।
৯। কেলিমিউর ও ক্যালকেরিয়া সালফ: যে কোন রোগীর বসন্তের পুঁজ শুকাইবার জন্য এই ঔষধ দুইটির ৩টি করিয়া ৬টি বড়ি ঘন ঘন একত্রে প্রয়োগ করবেন। তাহাতে অল্প দিনের মধ্যে পুঁজ শুকাইয়া যাইবে। শক্তি ৬০, ১২০, (বাইওকেমিক)।
১০। থুজা ও হাইড্রাসটিস: এই দুইটি ঔষধ বসন্তের দাগ নিবারণের জন্য অদ্বিতীয় মহৌষধ। যে কোন একটি ঔষধের মূল আরিষ্ট ২০/২৫ ফোঁটা এক আউন্স অলিভওয়েল এর সাথে ভালভাবে মিশাইয়া বাহ্যিক প্রয়োগ করবেন। তাহাতে অব্যর্থ ফল পাবেন। শক্তি মূল আরিষ্ট।
১১। বসন্তের প্রতিষেধক ঔষধ : ভেরিওলিমাম ২০০, (২) ম্যালেন্ডিনাম ২০০, তিনদিন পর পর একমাত্রা দিবেন।
১২। পানি বসন্তের প্রতিষেধকঃ (১) রাসটক্স: (২) সারাসিনিয়া শক্তি ৩০, ২০০, বাড়ীর আশেপাশে বসন্ত দেখা দিলে ৩০ শক্তির ঔষধ দিনে তিন বার, ২০০ শক্তির তিন দিন পর পর একমাত্রা প্রয়োগ করবেন।
বসন্ত রোগ
SMALL POX
এন্টিম টার্ট (Antim Tart) 3x:- বসন্ত রোগের প্রথমাবস্থায় পূজা হবার পূর্বে ইহা উত্তম কার্যকরী। বসন্তে গুটি সমূহ সম্পূর্ণ বের না হতে পেরে রোগীর জ্বর, শ্বাস কষ্ট, গলায় সাঁই সাঁই ঘড় ঘড় শব্দ, জিহ্বার মাখখানে সাদা পুরু ময়লায় লেপাবৃত, মুখমন্ডল নীলাভ, তন্দ্রাচ্ছন্ন ভাব, নাকের পাতা উঠা নামা করে, নিউমোনিয়ার উপক্রম হলে ইহা উপযোগী।
মার্কুরিয়াস সল (Merc Sol) 6:- বসন্ত রোগের দ্বিতীয় অবস্থায় অর্থাৎ পুঁজ হবার পর ইহা কার্যকরী। রোগী উপদংশ ধাতুগ্রন্থ, জিহ্বা মোটা থল থলে, রসাল, অথচ প্রচুর পিপাসা, মুখ দিয়ে লালা ঝরে, প্রচুর ঘাম, তৎসহ আমাশয়ের লক্ষণ থাকলে ইহা অধিক উপকারী।
রাস টক্স (Rush Tox) 6 বা 30:- জল বসন্ত রোগে ইহা সাফল্যের সাথে ব্যবহৃত হয়। রোগীর জলপূর্ণ গুটিকা, জ্বর, গাত্র বেদনা, অত্যন্ত ছট্ ফটানি ও অস্থিরতা থাকে, নাড়া চড়ায় উপশম, শরীরে চাবানি কামড়ানি বেদনা, চাপলে আরাম বোধ, জিহ্বার উপর ত্রিভুজাকৃতি দাগ,গুটিকা কাল বর্ণ ইত্যাদিতে উৎকৃষ্ট।
স্যারাসিনিয়া পার্পিউ (Sarracenia Purpu) 3x বা 6:- সকল প্রকার বসন্তে ইহা উপযোগী। বসন্ত রোগের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সর্ব অবস্থায় ইহা প্রয়োগ করা চলে। রোগের প্রথমে ইহা প্রয়োগ করলে জ্বালা যন্ত্রণা ও বেদনা হ্রাস পায়, গুটি সমূহ দ্রুত বের হয়ে যায় এবং উহা না পেকেই শুকিয়ে যায়। ত্বকে গর্ত হবার সম্ভাবনা থাকে না। ডাঃ ক্যাষ্টিস সত্যি লিখিয়াছেন-“It is credited for having cured and modifided simall Pos in all of its staqe.” ইহা দ্বারা অনেক রোগীকে সম্পূর্ণ রূপে আরোগ্য করেছি।
ম্যালেনড্রিনাম (Malandrinum) 30 বা 200:- ইহা বসন্ত রোগের প্রতিষেধক ঔষধ (ডেরিওলিনাম, ড্যাক্সিনিনাম)। কেবল বসন্ত রোগের নহে হাম, চর্ম রোগ প্রভৃতিরও প্রতিষেধক ও আরোগ্যকারী ঔষধ।
বিশেষ দ্রষ্টব্য :- বসন্তের দাগ দূরীকরণের নিমিত্তে বার্ব্বেরিস একুই ০ ১৫ ফোঁটা+ মাখন বা অলিভ অয়েল অথবা বিশুদ্ধ নারিকেল তৈল ২৫ গ্রাম উত্তম রূপে মিশিয়ে প্রতিদিন ৩/৪ বার দাগ সমূহে ভাল ভাবে মর্দন করলে অচিরেই দাগগুলো বিলিন হয়ে ত্বক স্বাভাববিক হয়।
বায়োকেমিক ঔষধ
BIOCHEMIC MEDICIN
ফেরাম ফস (Ferrum Phos) 6x ও কেলি মিউর (Kali Mure) 6x 8-সকল প্রকার বসন্ত রোগের প্রথম অবস্থায় ইহা কার্যকরী। রোগীর জ্বর, অস্থিরতা, পিপাসা ও জিহ্বা সাদা বা পাংশু ময়লা দ্বারা লেপাবৃত। ইহা প্রয়োগে গুটি সমূহে পুঁজ না হয়ে শীঘ্র শুকিয়ে যায়।
সেবন বিধিঃ- (৪+৪) = ৮ বটিকা (শিশুদের ২-৪ বটিকা) মাত্রায় গরম জলসহ দিনে ৩/৪ বার দু’চার দিন সেবনে অব্যর্থ।
ক্যাল্কে সালফ (Cal Sulph) 12x ও কেলি সালফ (Kali Sulph)
12x:- বসন্তের গুটি উঠতে বিলম্ব হলে কিম্বা বসে গেলে এবং গুটির ভিতরে পুঁজ, উপরে মামড়ি এমনি অবস্থায় ইহা প্রয়োগ করলে ক্ষত খুব শীঘ্র শুকিয়ে যায়।
সেবন বিধিঃ- (৪+৪) = ৮ বটিকা (শিশুদের ২-৪ বটিকা) মাত্রায় উষ্ণ জলসহ দিনে ৩ বার কয়েক মাত্রা সেবনে উত্তম ফলদায়ক। প্রয়োজনে আরো উচ্চ শক্তি।
∎ বসন্ত (জল ও গুটি বসন্ত)
হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা লক্ষণভিত্তিক চিকিৎসা , প্রকৃত বসন্ত এবং জলবসন্ত লক্ষণ সাদৃশ্যে নিম্নলিখিত ঔষধগুলিই ব্যবহৃত হয়। বসন্তের গুটি (উদ্ভেদ) সম্পূর্ণ বাহির হইতে না পারিয়া মিলাইয়া গেলে কিংবা ভালভাবে বাহির হইতে না পারিয়া জ্বর, কাশি গলায় সাঁইসাঁই, ঘড়ঘড় শব্দ, শ্বাসকষ্ট প্রভতি লক্ষণ দেখা দিলে এবং সেই সাথে ব্রংকাইটিস ও নিমোনিয়া থাকিলে এন্টিম টার্ট ৬, ৩০।
পীড়ার প্রথমাবস্থায় উষণ জ্বর, গাত্রশুষ্ক, মাথাব্যথা, দ্রুত নাড়ী , অস্থিরতা, মৃত্যুভয় ইত্যাদি লক্ষণ কিলে একোনাইট ৩x, ৬। গুটিবসন্তে গুটি কাল বর্ণের, ভিতরে রক্ত, রক্তবাহ্য, জলবসন্তে পানিপূর্ণ গুটিকা, জ্বর, গাত্রবেদনা ছটফটানি, কোমর ব্যথা, পিপাসা প্রভৃতি
লক্ষণে রাস টক্স ৬. ৩০, ২০০ উৎকষ্ট। • সর্বপ্রকার বসন্তে প্রথমাবস্থায় ব্যবহার করিলে বসন্তের গুটিগুলি শীঘ্র বাহির হইয়া যায়। দ্বিতীয়াবস্থায় ব্যবহারে ত্বকে গর্ত হয় না, শেষাবস্থায় ব্যবহারে গুটির ঘা শুকাইয়া যায়, বেদনা যন্ত্রণা কমিয়া যায়, প্রতিষেধক হিসাবেও ইহা উৎকৃষ্ট স্যারাসিনিয়া ৩x, ৬। থুজার পর ব্যবহারের প্রায়ই রোগীর বসন্তের দাগ পর্যন্ত থাকে না। • বসন্তের গুটিতে চলকানি ও ফোলা, বিসর্পের ন্যায় লালিমা, মুখমণ্ডল ও চোখের পাতা ফোলে, পিপাসাহীনতা, সারাদেহে জ্বালা লক্ষণে এপিস মেল ৬, ৩০। বসন্তের গুটি বাহির হইতে না হইতেই বসিয়া
গিয়া নিমোনিয়া, ব্রংকাইটিস, পচনযুক্ত ক্ষত, দুর্গন্ধযুক্ত উদরাময়, লিঙ্গটি অনবরত
নাড়াচড়া করার অভ্যাস প্রভৃতি লক্ষণে এবং প্রতিষেধক হিসাবে ব্যবহার্য ম্যালেন্ড্রিনাম ৩০, ২০০। মহামারীরূপে বসন্ত দেখা দিলে এবং জ্বর তাপ হ্রাস করিতে ও পূজ সঞ্চয়ের পূর্বেই গুটিকাগুলিকে দমন করিতে বা সত্বর গুটিকা মধ্যে পূজ জমাইতে অদ্বিতীয় ঔষধ ভেরিওলিনাম ৩০, ২০০। প্রতিষেধক হিসাবেও এই ঔষধ ব্যবহৃত হয়। রোগাক্রমণের সাথে সাথেই উদ্ভেদগুলি বাহির হইয়া পড়ে। মহামারী আকারে বসন্ত আক্রমণের ভয়ে যাহারা অস্থির হইয়া উঠে তাহাদের ক্ষেত্রে
প্রতিষেধকরূপে ব্যবহার্য ভ্যাক্সিনিনাম ৩০, ২০০। বসন্তের গুটিকাগুলি বাহির হইয়া পড়িলে, পূজপূর্ণ অবস্থায় কিংবা পূজ সঞ্চয়ের পূর্বে লক্ষণসাদৃশ্যে থুজা ৩০, ২০০ ব্যবহারে উদ্ভেদগুলি ক্রমেই শুকাইয়া যায়। গুটিকার দাগ নিশ্চিহ্ন করিতে এবং বসন্ত আরোগ্য হওয়ার পরও রোগীর শরীর হইতে গুমসানি গন্ধ দূর করিতে থুজা বা
সোরিনাম নির্ভরযোগ্য ঔষধ। বসন্তগুটিকার ক্ষতে দুর্গন্ধ, রক্তের বিষাক্ততা হেতু প্রবল গাত্রতাপসহ অস্বাভাবিক অবসাদ, বিছানার নিচের দিকে সরিয়া যায়, অসাড়ে বাহ্য প্রস্রাব, হাত পা ঠাণ্ডা প্রভৃতি লক্ষণে এসিড মিউর ৩, ৬। বসন্তের সর্বাবস্থায়, সাংঘাতিক প্রকারের বসন্তে রক্ত দূষিত হইলে ইচিনেশিয়া ৪। ইহার মূলঅরিষ্ট ১
ভাগ, সাত ভাগ অলিভ অয়েলের সাথে মিশাইয়া ক্ষতে প্রয়োগ করা যায়। সারাশরীর ক্ষত, পচা-মরার ন্যায় দুর্গন্ধ, দুর্গন্ধ মল বিশিষ্ট উদরাময়। ক্ষতের মধ্যে
পোকা হইয়া দুর্গন্ধ হইলে এসিড কার্বলিক ৬, ৩০, ৩-৪ ঘন্টা অন্তর সেবন করানো উচিত। ইহার মূল আরকের সহিত অলিভ অয়েল মিশাইয়া লোশন বাহ্যিক ক্ষতের উপর প্রয়োগ করিলে ক্ষতের দুর্গন্ধ দূরীভূত হয়। গুটি বাহির না হইয়া বা বিলম্বে
উঠিয়া বিকার লক্ষণে বেলেডোনা, হায়োসিয়ামস, ট্রামোনিয়াম ৩০, ২০০। উদ্ভেদ বাহির হইতে না পারিয়া পীড়া কঠিন হইলে জিঙ্কাম ৩০, ২০০। বসন্তের গুটির
মধ্যভাগে কালবর্ণের গর্ত দুষ্ট হইলে এনাকার্ডিয়াম ৬, ৩০। রক্তস্রাবীয় বসন্ত, সর্বাঙ্গে প্রদাহ, গুটিকার চতুস্পার্শের চর্ম লাল, রক্তের ভীষণ বিষাক্ত অবস্থায় ক্রোটেলাস ৬, ৩০। ইহা ছাড়া লক্ষণানুযায়ী কেলি মিউর, কেলি সালফ, ফসফোরাস, ক্যান্থারিস, কার্বোভেজ, সাইলিসিয়া হিপার,
, সালফার, আর্সেনিক প্রভতি ব্যবহৃত হয়। বায়োকেমিক: প্রথমাবস্থার জ্বর, গাত্র বেদনা থাকিলে ফেরাম ফস ৬x এবং কেলি মিউর ৬x পর্যায়ক্রমে ব্যবহার্য। গুটি উঠিতে বিলম্ব হইলে বা কিছু
উঠিয়া বসিয়া গেলে কেলি সালফ ১২x ব্যবহারে গুটি বাহির হয়। বসন্তের গুটি ভিতরে পুঁজ, উপরে মামডি এই অবস্থায় ক্যালকেরিয়া সালফ ১২x প্রয়োগ করিলে ক্ষত শীঘ্র শুকাইয়া যায়।