ক্রনিক ডিজিজ (4th Year)

CHRONIC DISEASE

ডিজিজ (রোগ)- একিউট ও ক্রনিক

প্রশ্নঃ অর্গানন গ্রন্থের আলোকে চির রোগের সংজ্ঞা দাও। ১

অর্গানন গ্রন্থের আলোকে চিররোগের সংজ্ঞা:

ডাঃ হ্যানিম্যান তাঁর “অর্গানন অব মেডিসিন” গ্রন্থে ৭২ ও ৭৮নং অনুচ্ছেদে চিররোগ ও প্রকৃত চিররোগের সংজ্ঞা সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।

কতকগুলি রোগ ধীরে ধীরে প্রায়ই অজ্ঞাতসারে আরম্ভ হয়, গতিশীলভাবে জীবন্ত শরীরতন্ত্রকে স্বীয় বিশিষ্টতা অনুসারে বিকৃত করে এবং ক্রমশঃ উহাকে সুস্থ অবস্থা হতে বিচ্যুত করে। স্বাস্থ্য অক্ষুন্ন রাখা যার কাজ সে স্বয়ংক্রিয় জীবনীশক্তি প্রথমদিকে কেবল বাধা দেয়, এদের বিকশিত অবস্থায় অসম্পূর্ণ অনুপযোগী ও ব্যর্থ প্রতিরোধ সৃষ্টি করে। কিন্তু এদের ধ্বংস সাধনে সমর্থ হয় না। উপরন্তু শরীরতন্ত্রের বিনাশ না হওয়া পর্যন্ত নিতান্ত অসহায়ভাবে (এদের বর্ধিত হতে দিয়ে এবং) নিজেকে আরো অধিকতর অস্বাভাবিকভাবে অসুস্থ করতে বাধ্য হয়। এসব রোগকেই চিররোগ (Chronic Diseases) নামে অভিহিত করা হয়। যে কোন একটি চির মায়াজমের গতিশীল সংক্রমণ (dynamic infection) হতেই এদের সৃষ্টি হয়।

কোন চির রোগ-বীজ হতে উৎপন্ন রোগগুলিকেই যথার্থ প্রাকৃতিক চিররোগ বলা হয়। উপযুক্ত ঔষধের দ্বারা আরোগ্য করা না হলে দৈহিক-মানসিক সর্বপ্রকার যত্ন নেয়া সত্ত্বেও এরা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেতে থাকে, ক্রমশ অবনতির পথে চলতে থাকে ও অধিকতর যন্ত্রণা দিয়ে রোগীকে আজীবন কষ্ট দেয়। কারণ বলিষ্ট দেহ, নিয়মনিষ্ঠ জীবন-

যাপন ও জীবনীশক্তির সতেজ কার্যকারীতা এদেরকে নির্মূল করতে সক্ষম হয় না।

যে সকল রোগ মানবদেহের অজ্ঞাতে উৎপন্ন হয়, যা চির মায়াজম অর্থাৎ সোরা, সিফিলিসি ও সাইকোসিস হতে উৎপন্ন রোগগুলিকেই, চিররোগ বলা হয়। এন্টিমায়াজমেটিক ঔষধের দ্বারা আরোগ্য করা না হলে দৈহিক-মানসিক সর্বপ্রকার যত্ন নেয়া সত্ত্বের এরা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেতে থাকে, ক্রমশঃ অবনতির পথে চলতে থাকে ও অধিকতর যন্ত্রণা দিয়ে রোগীকে আজীবন কষ্ট দেয়। কু-চিকিৎসা হতে উৎপন্ন রোগসমূহ ছাড়া এগুলি হচ্ছে মানবজাতির সর্বাপেক্ষা অধিক ও সবচাইতে বড় শত্রু। কারণ বলিষ্ট দেহ, নিয়মনিষ্ঠ জীবন-যাপন ও জীবনীশক্তির সতেজ কার্যকারীতা এদেরকে নির্মূল করতে সক্ষম হয় না।

২। চিররোগ কাকে বলে? ১৮ বা চিররোগের সংজ্ঞা দাও।

চির রোগের সংজ্ঞাঃ

যে সকল রোগ মানবদেহের অজ্ঞাতে উৎপন্ন হয়, যা চির মায়াজম অর্থাৎ সোরা, সিফিলিসি ও সাইকোসিস হতে উৎপন্ন রোগগুলিকেই, চিররোগ বলা হয়। এন্টিমায়াজমেটিক ঔষধের দ্বারা আরোগ্য করা না হলে দৈহিক-মানসিক সর্বপ্রকার যত্ন নেয়া সত্ত্বের এরা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেতে থাকে, ক্রমশ অবনতির পথে চলতে থাকে ও অধিকতর যন্ত্রণা দিয়ে রোগীকে আজীবন কষ্ট দেয়। কু-চিকিৎসা হতে উৎপন্ন রোগসমূহ ছাড়া এগুলি হচ্ছে মানবজাতির সর্বাপেক্ষা অধিক ও সবচাইতে বড় শত্রু। কারণ বলিষ্ট দেহ, নিয়মনিষ্ঠ জীবন-যাপন ও জীবনীশক্তির সতেজ কার্যকারীতা এদেরকে নির্মূল করতে সক্ষম হয় না।

৩। হোমিওপ্যাথিক দৃষ্টিকোণ থেকে রোগের সংজ্ঞা লিখ। ১১ বা, রোগ সম্পর্কে হোমিওপ্যাথির ধারনা কি?

রোগ সম্পর্কে হোমিওপ্যাথির ধারনা:

জীবন বিরোধী কোন শক্তি বা প্রভাবের দ্বারা মানুষের জীবনী শক্তির বিশৃংঙ্খলা হেতু দেহ ও মনে প্রকাশিত অস্বাভাবিক চিহ্ন ও লক্ষণাবলীকে রোগ বলা হয়। রোগ হলো অজড়, অশুভ, প্রাকৃতিক শক্তি যা জীবনীশক্তির উপরে প্রভাব বিস্তার করলে দেহ ও মনে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। অর্থাৎ জীবনীশক্তি বিশৃংখলার ফলে শারিরিক ও মানসিক অস্বাভাবিক পরিবর্তন হওয়াকেই রোগ বলে। ডাঃ হ্যানিম্যান কর্তৃক আবিষ্কৃত হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা পদ্ধতি ‘সিমিলিয়া সিমিলিবাস কিউরেন্টার’ অর্থাৎ সদৃশ বিধান চিকিৎসা। হোমিওপ্যাথিক ঔষধ সুস্থ মানুষের দেহে পরীক্ষিত শক্তিকৃত ঔষধ যা রোগারোগ্যে বিশেষ ভূমিকা রাখে। স্কুলমাত্রায় ঔষধ সেবন করলে মানব দেহের দৈহিক ও মানসিক সুস্থ অবস্থার পরিবর্তন বা বিকৃতি ঘটে। এই বিকৃত বা লক্ষণসমষ্টি যদি প্রাকৃতিক রোগে আক্রান্ত কোন রোগীর রোগ লক্ষণের সদৃশ হয় এবং রোগীকে ঐ শক্তিকৃত ঔষধ সূক্ষ্মমাত্রায় প্রয়োগ করা হয়, তাহলে রোগী নির্দোষ আরোগ্য লাভ করে। অতএব রোগ সম্বন্ধে হোমিওপ্যাথিতে যে ধারনা পোষণ করে তা হল রোগ অজড়, অশুভ, প্রাকৃতিক সূক্ষ্মশক্তি।

৪। রোগ কি? এর শ্রেণীবিভাগ কর।

রোগের সংজ্ঞাঃ

জীবন বিরোধী কোন শক্তি বা প্রভাবের দ্বারা মানুষের জীবনী শক্তির বিশৃংখলা হেতু দেহ ও মনে প্রকাশিত অস্বাভাবিক চিহ্ন ও লক্ষণাবলীকে রোগ বলা হয়। রোগ হলো অজড়, অশুভ, প্রাকৃতিক শক্তি যা জীবনীশক্তির উপরে প্রভাব বিস্তার করলে দেহ ও মনে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। অর্থাৎ জীবনী শক্তির বিশৃংখলার ফলে শারীরিক ও মানসিক অস্বাভাবিক পরিবর্তন হওয়াকেই রোগ বলে।

রোগের শ্রেণীবিভাগঃ

হোমিওপ্যাথির নিয়মনীতি অনুসারে রোগকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথাঃ

১। তরুণ রোগ (Acute Diseases) বা অচির রোগ।

২। পুরাতণ রোগ (Chronic Diseases) বা চিররোগ।

তরুণ রোগ আবার তিন প্রকার যথাঃ

(1) ব্যক্তিগত তরুণ রোগ, (ii) বিক্ষিপ্ত তরুণ রোগ ও (iii) মহামারী

তরুণ রোগ।

পুরাতন রোগ আবার তিন প্রকার যথাঃ

(চ) মিথ্যা চিররোগ,

(ii) প্রকৃত চিররোগ ও

(iii) ঔষধজনিত চিররোগ।

৫। “পরিপোষক কারণ দূর না হলে রোগী আরোগ্য হয় না।”-ব্যাখ্যা কর।

“পরিপোষক কারণ দূর না হলে রোগী আরোগ্য হয় না।”- ব্যাখ্যাঃ

চিকিৎসা বিজ্ঞানী ডাঃ হ্যানিম্যান, “অর্গানন অব মেডিসিন” গ্রন্থের ৫নং অনুচেছদে রোগের কারণ সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন- যে সকল কারণের জন্য রোগ পরিপুষ্ট হতে থাকে এবং আরোগ্যের পথে বাধার সৃষ্টি করে, তাদেরকে রোগের পরিপোষক কারণ বলে। অর্থাৎ কোন কারণে রোগের পরিপোষন ঘটলে, তাকে রোগের পরিপোষক কারণ বলে। পরিপোষক কারণের উদাহরণ- পেটের গোলযোগের মধ্যে যদি সবসময় গুরুপাক বা তৈলাক্ত খাদ্যবস্তু গ্রহণ করে তাহলে পেটের রোগ দিনদিন পরিপুষ্ট হয়ে মারাত্বক আকার ধারন করে, এখানে গুরুপাক খাদ্যবস্তু গ্রহণ পেটের রোগের পরিপোষক কারণ। কোন ব্যক্তি যদি স্যাঁতসেঁতে স্থানে বসবাস করার কারণে রোগের উৎপত্তি ও বৃদ্ধি পায় তা পরিপোষক কারণ।

উপরিউক্ত আলোচনা হতে ইহাই প্রতীয়মান যে, পরিপোষক কারণে জন্য রোগের উৎপত্তি ও বিকাশ লাভ করে। সুতরাং পরিপোষক কারণ দূর না হলে রোগী আরোগ্য হয় না এটি সর্বজন স্বীকৃত সত্য উক্তি।

প্রশ্নঃ মেটেরিয়া মেডিকার জ্ঞান থাকলেই চিকিৎসা চলে- সে ক্ষেত্রে চিররোগ তত্ত্ব পাঠের প্রয়োজন কি? আলোচনা কর। ০৮

মেটেরিয়া মেডিকার জ্ঞান থাকলেই চিকিৎসা চলে- সে ক্ষেত্রে চিররোগ তত্ত্ব পাঠের প্রয়োজনীয়তা।

হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা একটি লক্ষণ ভিত্তিক চিকিৎসা। মহাত্মা ডাঃ হ্যানিম্যান দেখলেন যে রোগী চিকিৎসার কিছুদিন পর আবার রোগ যন্ত্রণা নিয়ে ফিরে আসে। তখন তিনি দুশ্চিন্তায় পড়লেন এবং কারণ অনুসন্ধান করতে শুরু করলেন। তিনি দীর্ঘ ১২ বছর গবেষণার পর রোগের কারণ হিসাবে মায়াজম এর আবিষ্কার করলেন। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় প্রাকৃতিক নিয়মে আরোগ্য সাধিত হয়, অর্থাৎ সিমিলিয়া সিমিলিবাস কিউরেন্টার। ডাঃ হ্যানিম্যান হোমিওপ্যাথির আইন সম্বলিত গ্রন্থ “অর্গানন অব মেডিসিন” এর ৫নং অনুচ্ছেদে রোগের কারণ সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। ডাঃ হ্যানিম্যান রোগের কারণ বলতে মায়াজমকে বুঝিয়েছেন। সমগ্র পৃথিবীতে যত প্রকার দূরারোগ্য রোগ সৃষ্টি হচ্ছে তার পিছনে কিছু না কিছু কারণ রয়েছে, আর এ কারণকে মহাত্মা ডাঃ হ্যানিম্যান মায়াজম হিসাবে নামকরণ করেছেন। মায়াজম তিন প্রকার। যথা ১। সোরা ২। সিফিলিস ও ৩। সাইকোসিস। সোরা আদি মায়াজম যা সকল রোগ সৃষ্টিতে সহায়তা করে। তাহলে সোরা বংশগতভাবে মানুষের দেহে সংক্রমিত হয়ে চলে আসে। আবার সাইকোসিস ও সিফিলিস এক দিকে বংশানুক্রমিক চলে আসছে এবং অন্যদিকে ব্যক্তিগতভাবে কুকর্মের দ্বারা অর্জিত হতে দেখা যাচ্ছে। প্রত্যেকটি মায়াজম এক একটি রোগের জীবন্ত প্রতিচ্ছবি। প্রতিটি রোগীর ক্ষেত্রে সঠিক রোগীলিপি প্রনয়ন করে, বিশুদ্ধ মেটেরিয়া মেডিকা হতে প্রকৃত এন্টিমায়াজমেটিক ঔষধ সেবনে আর্দশ আরোগ্য হয়। প্রত্যেকটি মায়াজমের নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য, নির্দেশক লক্ষণাবলী, গঠনগত ও মানসিক লক্ষণ, ইচ্ছা-অনিচ্ছা, হ্রাস-বৃদ্ধি প্রভৃতি আলাদা। সুতরাং প্রত্যেকটি মায়াজম সম্বন্ধে বিস্তারিতভাবে জ্ঞান অর্জন করলে রোগী চিকিৎসা সহজতর হবে।

অতএব, উপরিউক্ত আলোচনা হতে ইহাই প্রমাণিত হয় যে, মেটেরিয়া মেডিকার জ্ঞান থাকলেই চিকিৎসা চলে- কিন্তু সে ক্ষেত্রে চিররোগ তত্ত্ব পাঠের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।

প্রশ্নঃ চিররোগের কারণসমূহ লিখ। বা, চিররোগ কি? চিররোগের কারণ লিখ। ০৮, ০৯, ১১, ১৩, ১৮

চির রোগের সংজ্ঞাঃ

যে সকল রোগ মানবদেহে অতি ধীরে ধীরে গোপনে প্রকাশিত হয় ও দীর্ঘ মেয়াদে আস্তে আস্তে জীবনীশক্তিকে বিকৃত করে এবং দেহের অভ্যন্তরে বিশৃংখলা সৃষ্টি করে, যার রোগ লক্ষণগুলো বেশির ভাগ অস্পষ্ট থাকে, রোগের মায়াজমেটিক অবস্থা নির্ণয় করে, এন্টিমায়াজমেটিক ঔষধ ছাড়া রোগীকে প্রকৃত আরোগ্য করা অসম্ভব, তাকে চিররোগ বলে। প্রকৃত ঔষধ ব্যতীত রোগাক্রমের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত জীবনীশক্তি ইহার হাত হতে মুক্তি পায় না। ইহার রোগীকে ক্রমশঃ মৃত্যু দিকে ধাবিত করে।

চির রোগের কারণঃ ডাঃ হ্যানিম্যান হোমিওপ্যাথির আইন সম্বলিত গ্রন্থ “অর্গানন অব মেডিসিন” এর ৫নং অনুচ্ছেদে চিররোগের কারণ সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।

(ক) মূল কারণঃ (1) সোরা, (ii) সিফিলিস, (iii) সাইকোসিস,

(iv) টিউবারকুলার ডায়াথেসিস, (v) মিশ্র মায়াজম।

(খ) উত্তেজক/আনুসঙ্গিক কারণ: (i) বংশগত কারণে, (ii) বয়স, (iii)

লিঙ্গ (পুরুষ/মহিলা), (iv) ঋতু, (v) আবহাওয়া, (vi) পেশা, (vii)

পারিবারিক অবস্থা, (viii) সামাজিক অবস্থা, (ix) ব্যক্তিগত অভ্যাস,

(x) শারিরীক গঠন, (xi) পুষ্টির অবস্থা, (xii) বাসস্থান, (xiii) বিভিন্ন ধরনের মাইক্রোঅর্গানিজম।

প্রশ্নঃ চিররোগের কারণসমূহ লিখ। বা, চিররোগ কি? চিররোগের কারণ লিখ। ০৮, ০৯, ১১, ১৩, ১৮ চির রোগের সংজ্ঞাঃ

যে সকল রোগ মানবদেহে অতি ধীরে ধীরে গোপনে প্রকাশিত হয় ও দীর্ঘ মেয়াদে আস্তে আস্তে জীবনীশক্তিকে বিকৃত করে এবং দেহের অভ্যন্তরে বিশৃংখলা সৃষ্টি করে, যার রোগ লক্ষণগুলো বেশির ভাগ অস্পষ্ট থাকে, রোগের মায়াজমেটিক অবস্থা নির্ণয় করে, এন্টিমায়াজমেটিক ঔষধ ছাড়া রোগীকে প্রকৃত আরোগ্য করা অসম্ভব, তাকে চিররোগ বলে। প্রকৃত ঔষধ ব্যতীত রোগাক্রমের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত জীবনীশক্তি ইহার হাত হতে মুক্তি পায় না। ইহার রোগীকে ক্রমশঃ মৃত্যু দিকে ধাবিত করে।

চির রোগের কারণঃ ডাঃ হ্যানিম্যান হোমিওপ্যাথির আইন সম্বলিত গ্রন্থ “অর্গানন অব মেডিসিন” এর ৫নং অনুচ্ছেদে চিররোগের কারণ সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।

(ক) মূল কারণঃ (1) সোরা, (ii) সিফিলিস, (iii) সাইকোসিস,

(iv) টিউবারকুলার ডায়াথেসিস, (v) মিশ্র মায়াজম।

(খ) উত্তেজক/আনুসঙ্গিক কারণ: (i) বংশগত কারণে, (ii) বয়স, (iii)

লিঙ্গ (পুরুষ/মহিলা), (iv) ঋতু, (v) আবহাওয়া, (vi) পেশা, (vii)

পারিবারিক অবস্থা, (viii) সামাজিক অবস্থা, (ix) ব্যক্তিগত অভ্যাস,

(x) শারিরীক গঠন, (xi) পুষ্টির অবস্থা, (xii) বাসস্থান, (xiii) বিভিন্ন ধরনের মাইক্রোঅর্গানিজম।

প্রশ্নঃ চিররোগের বৈশিষ্ট্যসমূহ কি কি? ১৪

চিররোগের বৈশিষ্ট্যসমূহঃ

(i) চিররোগ মানবদেহে ধীরে ধীরে ও অজ্ঞাতসারে প্রকাশ পায়।

(ii) ইহার কারণ মায়াজম অর্থাৎ সোরা, সিফিলিস ও সাইকোসিস এবং বিভিন্ন ধরনের মিশ্র মায়াজম ও বংশগত প্রভাব ইত্যাদি।

(iii) ইহা সুস্পষ্ট লক্ষণ প্রকাশ করে না, তাই সহজে ইহাকে সনাক্ত করা যায় না।

(iv) ইহার ভোগকাল অনির্দিষ্ট, সদৃশ বিধান মতে চিকিৎসা না করলে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত থাকে।

(v) ইহা মহামারী আকার ধারণ করে না।

(vi) ইহার চিকিৎসা সম্পর্কে ডাঃ হ্যানিম্যান অর্গানন অব মেডিসিন গ্রন্থের ২০৪-২০৯ নং অনুচ্ছেদে বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন।

(vii) এতে কোন অবস্থাতেই রোগের কারণ নির্ণয় ছাড়া অর্থাৎ মায়াজমেটিক অবস্থা নির্ধারণ করে এন্টিমায়াজমেটিক ঔষধ বিনা রোগী আদর্শ আরোগ্য হয় না।

(viii) এতে বংশানুক্রমিক ধাতু প্রবণতার প্রভাব বেশি থাকে।

প্রশ্নঃ চিররোগের প্রকৃতি বর্ণনা কর। ০৯, ১০, ১২, ১৪, ১৮

চিররোগের প্রকৃতি বর্ণনাঃ

চিররোগ অজ্ঞাতসারে মানবদেহে প্রবেশ করে। এটির সৃষ্টিকারী অশুভ শক্তি তথা মায়াজম ও বিভিন্ন প্যাথজেনিক ক্ষুদ্র অনুজীব দেহে প্রবেশ করে দেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গসমূহতে অবস্থান করে। সেখানে রোগ সৃষ্টিকারী শক্তি তাদের বংশবৃদ্ধি করে। পরবর্তীতে দেহের সুশৃংখলা ভেঙ্গে দেহ ও মনে কিছু লক্ষণ প্রকাশ করে। উক্ত প্রকাশিত লক্ষণাবলী মাধ্যমে দেহ অর্থাৎ দেহ পরিচালনাকারী জীবনীশক্তি মুক্তির জন্য ঔষধ প্রার্থনা করে। চিররোগ দেহের মধ্যে খুব ধীরে ধীরে

বংশবৃদ্ধি করে রোগীকে মৃত্যুর মুখে পতিত করে। রোগী অজ্ঞাতেই দুই একটি লক্ষণ প্রকাশ করে। যার সূত্রধরে চিকিৎসা করা কষ্টকর হয়। চিররোগ এমন সময় প্রচন্ডভাবে রোগী ও চিকিৎসকের দৃষ্টি গোচর হয়, তখন রোগীর তৃতীয় স্টেজে বা শেষ অবস্থা।

প্রশ্নঃ অচির রোগের সংজ্ঞা দাও। অচির রোগের কারণসমূহ আলোচনা কর। ১১, ১৫, ১৬

অচির রোগের সংজ্ঞা:

যে সকল রোগ হঠাৎ আবির্ভূত হয়ে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে, যাদের ভোগকাল স্বল্পসময় বা স্বল্পদিন স্থায়ী, ঐ সময়ের মধ্যে হয় রোগী আরোগ্য লাভ করে অথবা রোগ নিজে নিজেই ধ্বংস হয়ে যায় নতুবা ঐ সময়ের মধ্যে রোগীর পরিণতি ফল মৃত্যু হয়, তাকে অচির রোগ বা তরুণ রোগ বলে।

অচির রোগের কারণসমূহঃ

(ক) মূল কারণ (Fundamental Causes): অচির রোগের মূল কারণ প্রকৃত পক্ষে সুপ্ত সোরা মায়াজমের সাময়িক প্রকাশ বা উচ্ছ্বাস মাত্র।

(খ) উত্তেজক/অনুসঙ্গিক কারণসমূহ (Exciting Causes):

(i) বংশগত কারণে, (ii) বয়স, (iii) লিঙ্গ (পুরুষ/মহিলা),

(iv) ঋতু, (v) আবহাওয়া, (vi) পেশা, (vii) পারিবারিক অবস্থা,

(viii) সামাজিক অবস্থা, (ix) ব্যক্তিগত অভ্যাস, (x) শারিরীক গঠন

(xi) পুষ্টির অবস্থা, (xii) বাসস্থান, (xiii) বিভিন্ন ধরনের মাইক্রোঅর্গানিজম। উদাহরণ- অতিরিক্ত আহারের কারণে বদহজমজনিত পেটে ব্যথা, দূষিত পানি পান করার ফলে ডায়েরিয়া, প্রচন্ড রৌদ্রে হাটার কারণে জ্বর আসা, অতিরিক্ত ঠান্ডা খাদ্য ও পানীয় গ্রহণে গলা ব্যথা প্রভৃতি।

প্রশ্নঃ তরুণ ও চিররোগের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় কর। ০৮, ১৬ বা, চির ও অচির ব্যাধির মধ্যে পার্থক্য বর্ণনা কর। ১১, ১৫, ১৭

চির ও অচির ব্যাধির মধ্যে পার্থক্য:

চিররোগ

চির রোগ মানবদেহে ধীরে ধীরে ও অজ্ঞাতসারে প্রকাশ পায়।

এটির কারণ মায়াজম অর্থাৎ সোরা, ২ সিফিলিস ও সাইকোসিস এবং বিভিন্ন ধরনের মিশ্র মায়াজম ও বংশগত প্রভাব ইত্যাদি।

এটি সুস্পষ্ট লক্ষণ প্রকাশ করে না, তাই সহজে একে সনাক্ত করা যায় না।

এটির ভোগকাল অনির্দিষ্ট, সদৃশ বিধান মতে চিকিৎসা না করলে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত থাকে।

এটি মহামারী আকার ধারণ করে ৫ না।

এটির চিকিৎসা সম্পর্কে ডাঃ ৬ হ্যানিম্যান ‘অর্গানন অব মেডিসিন’ গ্রন্থের ২০৪-২০৯ নং অনুচ্ছেদে বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন।

এতে কোন অবস্থাতেই রোগের ৭ কারণ নির্ণয় ছাড়া অর্থাৎ মায়াজমেটিক অবস্থা নির্ধারণ করে এন্টিমায়াজমেটিক ঔষধ বিনা রোগী আদর্শ আরোগ্য হয় না।

অচির রোগ

অচির রোগ হঠাৎ আবির্ভূত হয় এবং দ্রুত বৃদ্ধি পায়।

এটির কারণ সোরা মায়াজমের সাময়িক উচ্ছ্বাস, অতিরিক্ত রৌদ্র, বৃষ্টি, প্রাকৃতিক দূর্যোগ এবং বিভিন্ন ধরনের ইত্যাদি। মাইক্রোঅর্গানিজম

এটি সুস্পষ্ট লক্ষণ প্রকাশ করে তাই সহজে একে সনাক্ত করা যায়।

এটির ভোগকাল নির্দিষ্ট, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রোগী মারা যায়। অথবা রোগ নিজে ধ্বংস হয়ে যায়।

এটি মহামারী আকার ধারণ করে।

এটির চিকিৎসা সর্ম্পকে ডাঃ হ্যানিম্যান ‘অর্গানন অব মেডিসিন’ গ্রন্থের ১৫০-১৫৬ নং অনুচ্ছেদে বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন।

এতে বিনা ঔষধে রোগী আরোগ্য লাভ করে, শুধুমাত্র রোগের কারণ, পথ্য নিয়ন্ত্রণ, রোগীকে স্বাস্থ্যকর স্থানে স্থানান্তরিত করা, উপযুক্ত পরিচর্যার ব্যবস্থা করলে রোগী আরোগ্য হয়।

এতে সাধারণতঃ বংশানুক্রমিক ধাতু প্রবণতার প্রভাব থাকে না।

د

এতে বংশানুক্রমিক ধাতু প্রবণতার প্রভাব বেশি থাকে।

8

প্রশ্নঃ চিররোগ চিকিৎসায় রোগীর কি কি বিষয় অনুসন্ধান আবশ্যক? ০৮, ১২

চিররোগ চিকিৎসায় রোগীর নিম্নলিখিত বিষয় অনুসন্ধান আবশ্যক:

ডাঃ হ্যানিম্যান “অর্গানন অব মেডিসিন” গ্রন্থের ১৮৫-২০৩ নং অনুচ্ছেদে স্থানীয় রোগের চিকিৎসা, ২০৪-২০৯ নং অনুচ্ছেদে চির রোগের চিকিৎসা, ২১০-২৩০ নং অনুচ্ছেদে মানসিক রোগ ও চিকিৎসা সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। উক্ত অনুচ্ছেদের রোগসমূহ চিররোগের অন্তর্ভূক্ত।

চিররোগ চিকিৎসায় রোগীলিপি সংগ্রহের সময়-

(i) রোগীর লক্ষণসমষ্টি সংগ্রহ করতে হবে।

(ii) রোগের কারণ অনুসন্ধান- অর্জিত না বংশগত তা জানতে হবে।

(iii) মিশ্র মায়াজম, উত্তেজক বা আনুসঙ্গিক কারণ জানতে হবে।

(iv) রোগীর রোগ সম্পর্কিত পারিবারিক বা বংশগত ইতিহাস জেনে নিতে হবে।

(v) রোগীর রোগ সম্পর্কিত অতীতের ইতিহাস জানতে হবে।

(vi) রোগীর ব্যক্তিগত বিষয়াবলী যেমন-শখ, অভ্যাস, রোগীর সামাজিক অবস্থান ও পেশাগত অবস্থান জানতে হবে।

(vii) রোগীর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সাধারণ চিত্র, চেহারা, শারীরিক গঠন এনিমিয়া, জন্ডিস, আঁচিল, তাপমাত্রা, শ্বাস-প্রশ্বাসের হার, পালস, ব্লাডপ্রেসার, চর্মের অবস্থা, মল-মূত্র, ঘর্মস্রাব ইত্যাদির ইতিহাস জানতে হবে।

(viii) সার্বদৈহিক অবস্থা- কাতরতা, সর্দি লাগার প্রবণতা, গোসলের ইচ্ছা-অনিচ্ছা, খাদ্য গ্রহণে ইচ্ছা-অনিচ্ছা, স্বপ্ন, ঘুম ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে হবে।

অতএব উপরিউক্ত বিষয়াবলী চিররোগ চিকিৎসায় রোগীর আদর্শ আরোগ্য জন্য আবশ্যক।

প্রশ্নঃ মিথ্যা চিররোগ বলতে কি বুঝ? ১২, ১৪

মিথ্যা চিররোগ:

যে সকল রোগ স্বাস্থ্য বিধি লংঘনের ফলে উৎপন্ন হয়, তাদেরকে মিথ্যা চিররোগ বলা হয়। যেমন- রাত্রি জাগরণ, মদ্যপান, স্যাঁতস্যাঁতে স্থানে বসবাস ইত্যাদি। ইহাতে বিনা ঔষধে রোগী আরোগ্য লাভ করে, শুধুমাত্র রোগের কারণ, পথ্য নিয়ন্ত্রণ, রোগীকে স্বাস্থ্যকর স্থানে স্থানান্তরিত করা, উপযুক্ত পরিচর্যার ব্যবস্থা করলে রোগী আরোগ্য হয়।

প্রশ্নঃ স্ব-প্রতিরোধ বলতে কি বুঝ? ১১, ১৩, ১৬

স্ব-প্রতিরোধ: যে ইমিউনিটি ব্যক্তি নিজে অর্জন করে অথবা রোগ জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হবার ফলে ব্যক্তির দেহে যে প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টি হয়, তাকে স্ব-প্রতিরোধ বলে।

অর্জিত ইমিউনিটি বা স্ব-প্রতিরোধকে নিম্নলিখিত ভাগে ভাগ করা যায়। যথা- ইমিউন রেস্পনস এবং ইফেকটির মেকানিজমের উপর ভিত্তি করে ইমিউনিটি। (ক) একটিভ ইমিউনিটি (সক্রিয়)

(খ) প্যাসিভ ইমিউনিটি (নিষ্ক্রিয়)।

১৪। প্রশ্ন: প্রকৃত চিররোগ ও মিথ্যা চিররোগের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় কর।

প্রকৃত চিররোগ ও মিথ্যা চিররোগের পার্থক্য নির্ণয়ঃ

প্রকৃত চিররোগ

প্রকৃত চিররোগের মূলকারণ সোরা, ১ সিফিলিস ও সাইকোসিস নামক চিররোগ উপবিষ।

ইহাতে বংশগত ধাতু প্রবণতার প্রভাব থাকে।

ইহাতে সদৃশ বিধান মতে চিকিৎসা দ্বারা আরোগ্য করা সহজ।

ইহাতে কোন অবস্থাতেই রোগের ৪ কারণ নির্ণয় ছাড়া অর্থাৎ মায়াজমেটিক অবস্থা নির্ধারণ করে এন্টিমায়াজমেটিক ঔষধ ‘বিনা রোগী আদর্শ আরোগ্য হয় না।

উদাহরণ- পেপটিক আলসার, ডায়াবেটিস, যক্ষ্মা, হাঁপানি, চর্মরোগ ইত্যাদি প্রকৃত চির রোগ।

মিথ্যা চিররোগ

স্বাস্থ্য বিধি লংঘনের ফলে মিথ্যা চির রোগ সৃষ্টি হয়। যেমন-রাত্রি জাগরণ, মদপান, স্যাঁতসেঁতে স্থানে বসবাস ইত্যাদি।

ইহাতে বংশগত ধাতু প্রবণতার প্রভাব থাকে না।

ইহাতে পরিপোষক কারণ নির্ণয় করে সদৃশ চিকিৎসা দিলে আরোগ্য ক্রিয়া সহজ হয়।

ইহাতে বিনা ঔষধে রোগী আরোগ্য লাভ করে, শুধুমাত্র রোগের কারণ, পথ্য নিয়ন্ত্রণ, রোগীকে স্বাস্থ্যকর স্থানে স্থানান্তরিত করা, উপযুক্ত পরিচর্যার ব্যবস্থা করলে রোগী আরোগ্য হয়।

উদাহরণ- দুধ পানজনিত অজীর্ণতা, স্যাঁতসেঁতে ঘরে বসবাসের জন্য শ্বাসকষ্ট, রাত্রি জাগরণের জন্য অসুস্থতা মিথ্যা চিররোগ।

প্রশ্নঃ পরিপোষক কারণ কাকে বলে? রোগের পরিপোষক কারণগুলি লিখ। ১১, ১৩, ১৫, ১৬

পরিপোষক কারণের সংজ্ঞা:

বিজ্ঞানী ডাঃ হ্যানিম্যান, “অর্গানন অব মেডিসিন” গ্রন্থের ৫নং অনুচেছদে রোগের কারণ সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। যে সকল কারণে জন্য রোগ পরিপুষ্ট হতে থাকে এবং আরোগ্যের পথে বাধার সৃষ্টি করে, তাদেরকে রোগের পরিপোষক কারণ বলে। অর্থাৎ কোন কারণে রোগের পরিপোষন ঘটলে, তাকে রোগের পরিপোষক কারণ বলে।

রোগের পরিপোষক কারণসমূহ নিম্নরূপ:

(i) বংশগত কারণে, (ii) বয়স, (iii) লিঙ্গ (পুরুষ/মহিলা), (iv) ঋতু, (v) আবহাওয়া, (vi) পেশা, (vii) পারিবারিক অবস্থা, (viii) সামাজিক অবস্থা, (ix) ব্যক্তিগত অভ্যাস, (x) শারিরীক গঠন, (xi) পুষ্টির অবস্থা, (xii) বাসস্থান (xiii) বিভিন্ন ধরনের মাইক্রোঅর্গানিজম।

পরিপোষক কারণের উদাহরণ- পেটের গোলযোগের মধ্যে যদি সবসময় গুরুপাক বা তৈলাক্ত খাদ্যবস্তু গ্রহণ করে তাহলে পেটের রোগ দিনদিন পরিপুষ্ট হয়ে মারাত্বক আকার ধারন করে, এখানে গুরুপাক খাদ্যবস্তু গ্রহণ পেটের রোগের পরিপোষক কারণ। কোন ব্যক্তি যদি স্যাঁতসেঁতে স্থানে বসবাস করার কারণে রোগের উৎপত্তি ও বৃদ্ধি পায় তা পরিপোষক কারণ।

প্রশ্নঃ উত্তেজক কারণ বলতে কি বুঝ? উদাহরণসহ লিখ।

উত্তেজক কারণ এর সংজ্ঞা: বিজ্ঞানী ডাঃ হ্যানিম্যান, “অর্গানন অব মেডিসিন” গ্রন্থের ৫নং অনুচেছদে রোগের কারণ সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। যে সকল আনুসংঙ্গিক কারণে রোগের উৎপত্তি ও বিস্তার লাভ সহায়তা করে, তাকে উত্তেজক কারণ বলে। অর্থাৎ হঠাৎ কোন কারণে যদি কোন ব্যক্তি অসুস্থ হয়, তাকে রোগের উত্তেজক কারণ বলে।

রোগের উত্তেজক/ পরিপোষক কারণসমূহ নিম্নরূপঃ

(i) বংশগত কারণে, (ii) বয়স, (iii) লিঙ্গ (পুরুষ/মহিলা), (iv) ঋতু, (v) আবহাওয়া, (vi) পেশা, (vii) পারিবারিক অবস্থা, (viii) সামাজিক অবস্থা, (ix) ব্যক্তিগত অভ্যাস, (x) শারিরীক গঠন (xi) পুষ্টির অবস্থা (xii) বাসস্থান (xiii) বিভিন্ন ধরনের মাইক্রোঅর্গানিজম।

উত্তেজক কারণের উদাহরণ- অতিরিক্ত আহারের কারণে বদহজমজনিত পেটে ব্যথা, দূষিত পানি পান করার ফলে ডায়েরিয়া, প্রচন্ড রৌদ্রে হাটার কারণে জ্বর আসা, অতিরিক্ত ঠান্ডা খাদ্য ও পানীয় গ্রহনের গলা ব্যথা প্রভৃতি।

প্রশ্নঃ  চিররোগ কখন আরোগ্য লাভ করে না? ১৩

চিররোগ নিম্নলিখিত কারণে আরোগ্য লাভ করে না:

ডাঃ হ্যানিম্যান বলেন- কোন ঔষধ রোগীর ক্ষেত্রে সদৃশ বিধানমতে উপযোগী হওয়া সত্ত্বেও মাত্রা অত্যন্ত বড় হলে তার প্রতিটি মাত্রায় ক্ষতি সাধন করে এবং ঔষধ যত বেশী রোগের সদৃশ হয় ও যতই উচ্চশক্তিতে নির্বাচিত হয় তার বড় মাত্রাসমূহ ততোধিক ক্ষতি করে। উহা অসদৃশ ও রুগ্নাবস্থায় সম্পূর্ণ অনুপযোগী (allopathic) ঔষধের ঐরূপ বড় মাত্রা অপেক্ষা আরো বেশী ক্ষতিকর হয়ে থাকে। সুনির্বাচিত হোমিওপ্যাথিক ঔষধের বড় মাত্রাসমূহ বিশেষ করে ঘনঘন প্রয়োগ করা হলে স্বাভাবিক নিয়মেই প্রভূত ক্ষতি সাধন করে। এরা অর্থাৎ বড় মাত্রাসমূহ প্রায়ই রোগীর জীবন বিপন্ন করে তোলে বা রোগকে অসাধ্য করে দেয়। জীবনীশক্তির অনুভূতির দিক হতে এরা প্রাকৃতিক রোগকে ধ্বংস করে দেয় এবং হোমিওপ্যাথিক ঔষধের বড়মাত্রা ব্যবহারের সময় হতে রোগ আর মূলরোগ ভোগ করে না ঠিকই কিন্তু তার ফলে রোগী সদৃশ অধিকতর উগ্র ঔষধজাত রোগের দ্বারা অধিকতর রুগ্ন হয়ে পড়েন। সেই রোগ দূর করা সর্বাপেক্ষা দূরসাধ্য ও চিররোগ আরোগ্যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়।

উপরিউক্ত কারণে চিররোগ আরোগ্য লাভ করে না।

প্রশ্নঃ প্রাকৃতিক রোগ এবং কৃত্রিম রোগের মধ্যে পার্থক্য লিখ। ০৮

প্রাকৃতিক রোগ এবং কৃত্রিম রোগের মধ্যে পার্থক্যঃ

প্রাকৃতিক রোগ

প্রকৃত চিররোগের মূলকারণ ১ সোরা, সিফিলিস ও সাইকোসিস নামক চিররোগ উপবিষ।

ইহাতে বংশগত ধাতু প্রবণতার ২ প্রভাব থাকে।

ইহাতে সদৃশ বিধান মতে চিকিৎসা দ্বারা আরোগ্য করা সহজ।

ইহাতে কোন অবস্থাতেই রোগের 8 কারণ নির্ণয় ছাড়া অর্থাৎ মায়াজমেটিক অবস্থা নির্ধারণ করে এন্টিমায়াজমেটিক ঔষধ বিনা রোগী আদর্শ আরোগ্য হয় না।

উদাহরণ- পেপটিক আলসার, ৫ ডায়াবেটিস, যক্ষ্মা, হাঁপানি, চর্মরোগ ইত্যাদি প্রকৃত চিররোগ।

কৃত্রিম রোগ

বি-সদৃশ চিকিৎসা পদ্ধতির বারবার প্রয়োগকৃত বড় মাত্রার ঔষধ প্রয়োগের ফলে কৃত্রিম রোগ সৃষ্টি হয়।

ইহাতে বংশগত ধাতু প্রবণতার প্রভাব থাকে না।

ইহাতে আরোগ্য সর্বাপেক্ষায় কষ্টসাধ্য এবং সদৃশ চিকিৎসা দিলে আরোগ্য ক্রিয়া দেরী হয়।

ইহাতে প্রয়োগকৃত ভূল ঔষধে ক্রিয়ানাশক ঔষধ ব্যবহার করে পরবর্তীতৈ লক্ষণ সদৃশ ঔষধ ও উপযুক্ত পরিচর্যার ব্যবস্থা করলে রোগী আরোগ্য হয়।

উদাহরণ- হৃদরোগের ঔষধ সেবনে রক্তের লোহিত কনিকা ভেঙ্গে যায়, লিভারের রোগে ভূল ঔষধ প্রয়োগের কারণে সৃষ্ট রোগ ইত্যাদি।

প্রশ্নঃ অলিক এবং কৃত্রিম চিররোগের মধ্যে পার্থক্য লিখ। ২০১৮ অলিক এবং কৃত্রিম চিররোগের মধ্যে পার্থক্য:

অলিক চিররোগ

স্বাস্থ্য বিধি লংঘনের ফলে মিথ্যা ১ চির রোগ সৃষ্টি হয়। যেমন- রাত্রি জাগরণ, মদপান, স্যাঁতস্যাঁতে স্থানে বসবাস ইত্যাদি।

ইহাতে বংশগত ধাতু প্রবণতার প্রভাব থাকে না।

ইহাতে বিনা ঔষধে রোগী আরোগ্য লাভ করে, শুধুমাত্র রোগের কারণ, পথ্য নিয়ন্ত্রণ, রোগীকে স্বাস্থ্যকর স্থানে স্থানান্তরিত করা, উপযুক্ত পরিচর্যার ব্যবস্থা করলে রোগী আরোগ্য হয়।

ইহাতে পরিপোষক কারণ নির্ণয় করে সদৃশ চিকিৎসা দিলে আরোগ্য ক্রিয়া সহজ হয়।

উদাহরণ- দুধ পানজনিত অজীর্ণতা, স্যাঁতস্যাঁতে ঘরে বসবাসের জন্য শ্বাসকষ্ট, রাত্রি জাগরণের জন্য অসুস্থতা মিথ্যা চির রোগ।

কৃত্রিম চিররোগ

বি-সদৃশ চিকিৎসা পদ্ধতির বারবার প্রয়োগকৃত বড় মাত্রার ঔষধ প্রয়োগের ফলে কৃত্রিম রোগ সৃষ্টি হয়।

ইহাতে বংশগত ধাতু প্রবণতার প্রভাব থাকে না। ভুল ঔষধ প্রয়োগের ফলে উৎপন্ন হয়।

ইহাতে আরোগ্য সর্বাপেক্ষায় কষ্টসাধ্য এবং সদৃশ চিকিৎসা দিলে আরোগ্য ক্রিয়া দেরী হয়।

ইহাতে প্রয়োগকৃত ভুল ঔষধে ক্রিয়ানাশক ঔষধ ব্যবহার করে পরবর্তীতৈ লক্ষণ সদৃশ ঔষধ ও উপযুক্ত পরিচর্যার ব্যবস্থা করলে রোগী আরোগ্য হয়।

উদাহরণ- হৃদরোগের ঔষধ সেবনে রক্তের লোহিত কনিকা ভেঙ্গে যায়, লিভারের রোগে ভুল ঔষধ প্রয়োগের কারণে সৃষ্ট রোগ ইত্যাদি।

প্রশ্নঃ  চিররোগ চিকিৎসায় রোগীলিপি প্রস্তুত প্রণালী আলোচনা কর। ২০১৪

চিররোগ চিকিৎসায় রোগীলিপি প্রস্তুতপ্রণালীঃ

(i) চিকিৎসক প্রথমে রোগীর নাম, বয়স, বিবাহিত অবস্থা, পেশা ও ঠিকানা লিখবেন। (ii) রোগী নিজেই চিকিৎসকের কাছে তার রোগ যন্ত্রনার কথা বলবে এবং চিকিৎসক রোগীর বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন বা পরিচর্যাকারীর কাছ থেকে শুনবেন।

(iii) তারপর চিকিৎসক রোগীর বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন বা পরিচর্যাকারীর কাছ থেকে শুনবেন।

(iv) রোগী যে ভাষায় বর্ণনা করে সেভাবেই লিপিবদ্ধ করতে হবে।

(v) তারপর চিকিৎসকের কিছু জানার থাকলে তা অন্য সকলের কাছ থেকে জানার চেষ্টা করবেন।

(vi) চিকিৎসককে ধৈর্য্য ও মনোযোগের সাথে রোগীকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করবেন। (vii) রোগীকে পরীক্ষার সময় তার দৈহিক গঠন, মানসিক লক্ষণ, ইচ্ছা অনিচ্ছা প্রভৃতি বিষয়ে জানতে হবে।

(viii) চিকিৎসক রোগীকে এমনভাবে প্রশ্ন করবেন না যাতে রোগী হাঁ বা না বলে উত্তর দেয়।

(ix) রোগীর বর্ণিত প্রত্যেকটি লক্ষণের বিবরণ, অবস্থান ও হ্রাস বৃদ্ধি সম্বন্ধে জানতে হবে।

(x) রোগীর বর্ণিত বিষয় লিখার সময় ফাঁকা রাখতে হবে যাতে পরে চিকিৎসক, অজানা লক্ষণাবলী সে স্থানে লিখতে পারে।

(xi) রোগী পূর্বে কোন চিকিৎসকের অধীনে ঔষধ খেয়ে থাকলে তা জানতে হবে।

পরিশেষে সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করার পর চিকিৎসক নিজে রোগীকে পর্যবেক্ষণ করে যে সমস্ত বিষয় জানবেন তা লিপিবদ্ধ করতে হবে। যেমন: রোগীর দৈহিক গঠন, আচরণ, ইচ্ছা-অনিচ্ছা, কিংবা নাড়ীর গতি প্রভৃতি বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করার পর তা লিপিবদ্ধ করতে হবে।

প্রশ্নঃ চিররোগের চিকিৎসা পদ্ধতি আলোচনা কর। ২০১৫, ১৬, ১৮

চিররোগের চিকিৎসা পদ্ধতি আলোচনা:

(i) চিকিৎসক প্রথমে রোগীর নাম, বয়স, বিবাহিত অবস্থা, পেশা ও ঠিকানা লিখবেন।

(ii) রোগী নিজেই চিকিৎসকের কাছে তার রোগ যন্ত্রনার কথা বলবে এবং চিকিৎসক রোগীর বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন বা পরিচর্যাকারীর কাছ থেকে শুনবেন।

(iii) তারপর চিকিৎসক রোগীর বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন বা পরিচর্যাকারীর কাছ থেকে শুনবেন।

(iv) রোগী যে ভাষায় বর্ণনা করে সেভাবেই লিপিবদ্ধ করতে হবে।

(v) তারপর চিকিৎসকের কিছু জানার থাকলে তা অন্য সকলের কাছ থেকে জানার চেষ্টা করবেন।

(vi) চিকিৎসককে ধৈর্য্য ও মনোযোগের সাথে রোগীর পালস, ব্লাড প্রেসার, বুক, জন্ডিস, এনিমিয়া ইত্যাদি পরীক্ষা নিরীক্ষা করবেন।

(vii) রোগীকে পরীক্ষার সময় তার দৈহিক গঠন, মানসিক লক্ষণ, ইচ্ছা অনিচ্ছা প্রভৃতি বিষয়ে জানতে হবে।

(viii) চিকিৎসক রোগীকে এমন ভাবে প্রশ্ন করবেন না যাতে রোগী হাঁ বা না বলে উত্তর দেয়।

(ix) রোগীর বর্ণিত প্রত্যেকটি লক্ষণের বিবরণ, অবস্থান ও হ্রাস বৃদ্ধি সম্বন্ধে জানতে হবে।

(x) রোগীর বর্ণিত বিষয় লিখার সময় ফাঁকা রাখতে হবে যাতে পরে চিকিৎসক, অজানা লক্ষণাবলী সে স্থানে লিখতে পারে।

(xi) রোগী পূর্বে কোন চিকিৎসকের অধীনে ঔষধ খেয়ে থাকলে তা জানতে হবে।

(xii) রোগীর সকল তত্ত্ব নিয়ে ও চিকিৎসক স্বয়ং পরীক্ষা করে রোগীর দেহে যে মায়াজমের লক্ষণাবলী বর্তমান থাকে সে মায়াজমের এন্টিমায়াজমেটিক ঔষধ প্রয়োগ করতে হবে।

(xiii) ঔষধ প্রয়োগের পর রোগীর অবস্থা ও উন্নতির দিক দেখে পরবর্তীতে রোগীর রোগ লক্ষণ নিয়ে আর একটি এন্টিমায়াজমেটিক ঔষধ প্রয়োগ করতে হবে।

(xiv) এভাবে রোগীর অবস্থার উপর নির্ভর করে এন্টিমায়াজমেটিক ঔষধ প্রয়োগ করে রোগী আরোগ্য হলে পরবর্তীতে একটি এন্টিসোরিক ঔষধ দিয়ে চিকিৎসা সমাপ্ত করতে হবে।

প্রশ্নঃ প্রতিরোধ ক্ষমতা কি? ২০১১, ১৩, ১৬ বা, ইমিউনিটির সংজ্ঞা ও শ্রেণীবিভাগ উল্লেখ কর।

প্রতিরোধ ক্ষমতার সংজ্ঞা (ইমিউনিটি): মানবদেহের টিস্যু বা অঙ্গ কোন জীবাণু বা টক্সিন দ্বারা আক্রান্ত হতে না পারে, সেই প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে ইমিউনিটি বলে। বা, মানবদেহ কোন সংক্রমনের বিরুদ্ধে যে প্রতিরোধকারী ক্ষমতা আছে, তাকে ইমিউনিটি বলে।

ইমিউনিটির শ্রেণীবিভাগঃ

ইমিউনিটিকে প্রধান দুই ভাগে ভাগ করা হয়। যথা- ১। ইনেট বা কনজেনিটাল ইমিউনিটি, ২। অর্জিত ইমিউনিটি।

আবার অর্জিত ইমিউনিটিকে নিম্নলিখিত ভাগে ভাগ করা যায়। যথা –

ইমিউন রেস্পনস এবং ইফেকটির মেকানিজমের উপর ভিত্তি করে ইমিউনিটি দুইভাগে ভাগ করা হয়। যথা-

(ক) একটিভ ইমিউনিটি

(খ) প্যাসিভ ইমিউনিটি

প্রশ্নঃ চির রোগীর উপর খাদ্য ও পানীয়ের প্রভাব লিখ। ১২

বা, চিররোগে চিকিৎসায় পথ্যের ভূমিকা কি? ১১

চিররোগীর উপর খাদ্য ও পানীয়ের প্রভাব:

খাদ্য ও পানীয়ের প্রতি রোগীর আকাঙ্খা ও অনিচ্ছার গুরুত্ব অচির ও চির উভয় প্রকারের রোগের ক্ষেত্রে অপরিহার্য। প্রাকৃতিক নীতি দ্বারা হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা পরিচালিত। প্রাকৃতিকভাবে রোগশক্তি মানবদেহে আবির্ভূত হয় এবং কিছু লক্ষণ ও চিহ্নের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। প্রকৃতি মানুষকে সুস্থ ও সবলভাবে জীবন ধারনের শিক্ষা দেয়। মানব দেহে কোন উপাদানের অভাব হলে বিভিন্নভাবে প্রকাশ করে। যেমন- হোমিওপ্যাথিক নেট্রাম মিউরে ঔষধের রোগী বেশি পরিমাণে লবণ খাওয়ার আকাঙ্খা থাকে। অবার সাইকোসিস মায়াজমের রোগী বা সাইকোটিক রোগী মাংসে অনিচ্ছা কারণ মাংস খেলে তার রোগ যন্ত্রণা বৃদ্ধি পায়। অচির রোগের রোগীর আকাঙ্খা অনুসারে খাদ্য-পানীয় ব্যবস্থা করতে হয়, রোগী রোগাগ্রস্ত অবস্থায় উক্ত খাদ্যবস্তু ক্ষতিকর হলেও প্রাকৃতিকভাবে রোগীর মনে তার আকাঙ্খার কারণে রোগে আরোগ্যে তা সহায়তা করে। আবার চিররোগে রোগীর খাদ্য ও পানীয় ঔষধের উপর নির্ভর করে। রোগীর আরোগ্য দ্রুত করার জন্য ঔষধ ও রোগের সাথে সম্বন্ধযুক্ত খাদ্য ও পানীয় ব্যবস্থা করতে হবে।

অতএব ডাঃ হ্যানিম্যানের রোগী চিকিৎসা অর্থাৎ আদর্শ আরোগ্যের জন্য রোগীর খাদ্য ও পানীয়ের প্রতি আকাঙ্খা ও অনিচ্ছার বিষয় গুরুত্ব দিয়াছেন। সে অনুসারে রোগীর আকাঙ্খা ও অনিচ্ছার গুরুত্ব দিয়ে চিকিৎসা করলে অচির ও চিররোগের আরোগ্য দ্রুত সম্পন্ন হবে।

প্রশ্নঃ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় রোগীর ধাতুগত বৈশিষ্ট্যের গুরুত্ব লিখ।

হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় রোগীর ধাতুগত বৈশিষ্ট্যের গুরুত্ব:

যে লক্ষণগুলি রোগীর বিশেষ ধাতুপ্রকৃতির পরিচয় নির্দেশ করে সেগুলিকে ধাতুগত লক্ষণ বলে। চিররোগের চিকিৎসা ক্ষেত্রে এ ধরনের লক্ষণের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশী। যাদের আপাত দৃষ্টিতে বিশেষ কোন রোগ আছে বলে মনে হয় না। অথচ সামান্য কারণেই অসুস্থ হয়ে পড়ে। এই ধরনের ক্ষেত্রে ধাতুগত লক্ষণের গুরুত্ব অপরিসীম। যেমন- প্রায়ই সর্দিতে ভোগা।

ডাঃ হ্যানিম্যান “অর্গানন অব মেডিসিন” গ্রন্থে লক্ষণের গুরুত্বের কথা বলতে গিয়ে ধাতুগত লক্ষণের উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। যেহেতু হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা পদ্ধতি লক্ষণ ভিত্তিক সেহেতু ধাতুগত বৈশিষ্ট্য রোগী চিকিৎসায় অপরিসীম ভূমিকা রাখে। প্রতিটি রোগী একে অন্য থেকে গঠনগত দিক দিয়ে আলাদা। সুতরাং ধাতুগত বৈশিষ্ট্যের গুরুত্ব না দিলে হোমিওপ্যাথিতে রোগী আরোগ্য করা সম্ভব নয়।

অতএব, উপরিউক্ত ইহাই প্রতীয়মান হয় যে, হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় মানসিক লক্ষণের পরে ধাতুগত লক্ষণের গুরুত্ব অপরিসীম ও অপরিহার্য।

প্রশ্নঃ চিররোগ চাপা বলতে কি বুঝ? ২০১৮

চিররোগ চাপা:

বিসদৃশ বিধান মতে কোন প্রকার চর্মরোগে মলম বা অন্য কোন প্রলেপাদি প্রয়োগ বা বিসদৃশ অতিরিক্ত স্কুলমাত্রা ঔষধ সেবন করে রোগকে আরোগ্যের জন্য সাময়িক বাহ্যিক ও আভ্যান্তরিন উপশম দেয়া চেষ্টা করা হয়, তাকে চিররোগ চাপা বলা হয়।

প্রশ্নঃ চিররোগে পথ্য ও পরিচর্যা কিরূপ হওয়া উচিৎ? ০৮, ১৩

চিররোগে পথ্য ও পরিচর্যা নিম্নরূপ হওয়া উচিত।

ডাঃ হ্যানিম্যান হোমিওপ্যাথির চিকিৎসা আইন গ্রন্থ “অর্গানন অব মেডিসিন” এর ২৫৯-২৬৩ নং অনুচ্ছেদে চিররোগের চিররোগে পথ্য ও পরিচর্যা সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন।

(i) চিকিৎসাকালে রোগীর পানাহার হতে বা তার অভ্যাসের মধ্যে যে দ্রব্যের কিছুমাত্র ঔষধ শক্তি আছে তা অবশ্যই বর্জন করতে হবে। নতুবা সে ক্ষুদ্র মাত্রাটির ক্রিয়া দ্বারা অন্যবিধ ঔষধজ প্রতিক্রিয়া অবিভূত, বিনষ্ট ও বাধাপ্রাপ্ত হতে পারে।

(ii) পুরাতন রোগীদের চিকিৎসার সময় রোগ আরোগ্যের অন্তরায়সমূহ সতর্কভাবে অনুসন্ধান করা একান্ত প্রয়োজন।

(iii) সেসব অনিষ্টকর প্রভাব এবং রোগ সৃষ্টিকারী পানাহারের দ্বারা সাধারণতঃ রোগের বৃদ্ধি ঘটায়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

(iv) চিররোগীকে চিকিৎসা করার সময় আরোগ্য পথের যে সব বাধাবিঘ্ন বিদুরিত করা ও প্রয়োজন মত তার বিপরীত অবস্থা অর্থাৎ আরোগ্যের অনুকূল আহার বিহার ও পরিবেশ সৃষ্টি করা একান্ত অপরিহার্য।

(v) নৈতিক ও বুদ্ধি বৃত্তির নির্দোষ আমোদে-প্রমোদ, প্রায় সকল ঋতুতেই উন্মুক্ত বায়ুতে শারীরিক ব্যায়াম, প্রত্যহ ভ্রমন, সামান্য দৈহিক পরিশ্রম, যথার্থ বলকারক ও ঔষধ গুণরহিত খাদ্য পানীয় প্রভৃতি রোগীর জন্য একান্ত প্রয়োজন।

 

ডিজিজ (রোগ) – একিউট ও ক্রনিক

প্রশ্ন: অর্গানন গ্রন্থের আলোকে চিররোগের সংজ্ঞা দাও। ১১, ২০

প্রশ্ন: চিররোগ কাকে বলে? ১৮, ১৯

চিররোগ (Chronic Disease) হলো সেই ধরনের রোগ যা দীর্ঘস্থায়ী, স্থায়ী বা ক্রমাগত প্রবাহিত হয়ে থাকে এবং সাধারণত সহজে সেরে না ওঠে। হোমিওপ্যাথির দৃষ্টিকোণ থেকে, চিররোগ এমন একটি রোগ যা মস্তিষ্ক বা স্নায়ুতন্ত্রের কোনো গভীর অস্বাস্থ্যকর অবস্থা বা অসামঞ্জস্য থেকে সৃষ্টি হয়, এবং এটি শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে প্রভাব ফেলতে থাকে।

অর্গানন গ্রন্থে স্যামুয়েল হাহনেম্যান চিররোগের সংজ্ঞা দিয়েছেন, যা মূলত শরীরের অন্তর্নিহিত অস্বাস্থ্যকর অবস্থা থেকে উদ্ভূত। এই রোগগুলি সাধারণত দীর্ঘকাল ধরে চলতে থাকে এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট উপসর্গগুলি পরিবর্তিত হতে পারে, তবে রোগের মূল কারণ চিরকাল অব্যাহত থাকে।

চিররোগের মধ্যে এমন লক্ষণ দেখা যায় যা এক দীর্ঘ সময় ধরে শরীর বা মনের উপর প্রভাব ফেলতে থাকে এবং পুনরায় দেখা দেয়, যেমন দীর্ঘস্থায়ী জ্বর, হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট, ডায়াবেটিস, সোরিয়াসিস, অ্যাজমা ইত্যাদি।

হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায়, চিররোগের চিকিৎসা মূলত রোগীর শারীরিক, মানসিক এবং অনুভূতিগত অবস্থা বিশ্লেষণ করে করা হয়, যাতে রোগের মূল কারণকে সঠিকভাবে নির্ণয় করা যায় এবং সঠিক ঔষধের মাধ্যমে তা দূর করা সম্ভব হয়।

প্রশ্ন: হোমিওপ্যাথিক দৃষ্টিকোণ থেকে রোগের সংজ্ঞা লিখ। বা, রোগ সম্পর্কে হোমিওপ্যাথির ধারনা কি? ২০১১

হোমিওপ্যাথিক দৃষ্টিকোণ থেকে, রোগ হলো শারীরিক এবং মানসিক দিক থেকে জীবের অভ্যন্তরীণ শক্তির অস্বাস্থ্যকর পরিবর্তন, যা জীবের সুস্থতার প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট করে এবং বিভিন্ন উপসর্গ বা লক্ষণের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। হোমিওপ্যাথি রোগকে একটি সামগ্রিক অবস্থান হিসেবে দেখে, যা জীবের শরীর, মন এবং আত্মার মধ্যে অস্বাস্থ্যকর ভারসাম্য সৃষ্টি করে।

হাহনেম্যান তাঁর অর্গানন গ্রন্থে রোগের সংজ্ঞা দেন, যেখানে তিনি রোগকে এক ধরনের অভ্যন্তরীণ অসামঞ্জস্য হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এটি মূলত বাহ্যিক পরিবেশ বা অভ্যন্তরীণ কারণে জীবের শক্তির ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি করে, যার ফলস্বরূপ রোগের লক্ষণ বা উপসর্গ দেখা দেয়।

হোমিওপ্যাথি অনুযায়ী:

  1. রোগের মূল কারণ: রোগটি তার উৎপত্তির মূল কারণ থেকে শুরু হয়, যা জীবের জীবনশক্তি বা Vital Force এর অস্বাভাবিক কার্যকলাপ। এই শক্তির অস্বাস্থ্যকর পরিবর্তন শরীরের প্রতিটি অঙ্গ এবং সিস্টেমের উপর প্রভাব ফেলতে থাকে।

  2. লক্ষণ বা উপসর্গ: রোগের প্রভাবের ফলে শরীরে ও মনে যে লক্ষণ প্রকাশিত হয়, সেগুলোই রোগের উপসর্গ। এই উপসর্গগুলো রোগীকে সংকেত দেয় যে তার শরীরে অস্বাস্থ্যকর পরিবর্তন ঘটেছে।

  3. সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি: হোমিওপ্যাথি রোগের চিকিৎসায় রোগীকে একটি পুরোপুরি একক সত্তা হিসেবে দেখে, অর্থাৎ শরীর, মন, অনুভূতি এবং আত্মার সুষম সমন্বয়ের মাধ্যমে। তাই হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় সব দিক থেকে রোগীর ব্যক্তিগত পরিস্থিতি বিবেচনায় নেওয়া হয়।

হোমিওপ্যাথিতে রোগের চিকিৎসা মূলত সঠিক হোমিওপ্যাথিক ঔষধের মাধ্যমে জীবের অস্বাস্থ্যকর শক্তির ভারসাম্য পুনঃস্থাপন করা, যাতে শরীরের নিজস্ব নিরাময় ক্ষমতা সক্রিয় হয় এবং রোগ সেরে যায়।

প্রশ্ন: রোগ কি? ইহার শ্রেণীবিভাগ কর।

প্রশ্ন: “পরিপোষক কারণ দূর না হলে রোগী আরোগ্য হয় না।”- ব্যাখ্যা কর। ২০

প্রশ্ন: মেটেরিয়া মেডিকার জ্ঞান থাকলেই চিকিৎসা চলে- সে ক্ষেত্রে চিররোগ তত্ত্ব পাঠের প্রয়োজন কি? আলোচনা কর।

প্রশ্ন: চিররোগের কারণসমূহ লিখ। ০৮, ০৯, ১১ বা, চিররোগ কি? চিররোগের কারণ লিখ। ১৩, ১৮, ২১

প্রশ্ন: চিররোগের বৈশিষ্ট্যসমূহ কি কি? ১৪, ১৯, ২১

প্রশ্ন: চিররোগের প্রকৃতি বর্ণনা কর। ০৯, ১০, ১২, ১৪, ১৮, ২০

৪৫

প্রশ্ন: অচির রোগের সংজ্ঞা দাও। অচির রোগের কারণসমূহ আলোচনা কর। ১১, ১৫, ১৬

৪৫

প্রশ্ন: তরুণ ও চিররোগের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় কর। ১৬

৪৬

৪৭

বা, চির ও অচির ব্যাধির মধ্যে পার্থক্য বর্ণনা কর। ১১, ১৫, ১৭

৪°

প্রশ্ন: চিররোগ চিকিৎসায় রোগীর কি কি বিষয় অনুসন্ধান আবশ্যক ? ০৮, ১২

৪৮

১২। মিথ্যা চিররোগ বলতে কি বুঝ? ১২, ১৪

৪৯

১৩। স্ব-প্রতিরোধ বলতে কি বুঝ? ১১, ১৩, ১৬

৪৯

১৪। প্রকৃত চিররোগ ও মিথ্যা চিররোগের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় কর।

৫০

১৫। রোগের পরিপোষক কারণগুলি লিখ। ২০ ১৫, ১৬

৫১
[7:59 pm, 26/12/2024] Md. Jahidul Islam: ক্রনিক ডিজিজ (চতুর্থ বর্ষ)

১৬। উত্তেজক কারণ বলতে কি বুঝ? উদাহরণসহ লিখ।

৫১

১৭। চিররোগ কখন আরোগ্য লাভ করে না?

১৩

৫২ ১৯ ৫৩

১৮। প্রাকৃতিক রোগ এবং কৃত্রিম রোগের মধ্যে পার্থক্য লিখ।

১৯। অলিক এবং কৃত্রিম চিররোগের মধ্যে পার্থক্য লিখ।

১৮

৫৪

২০। চিররোগ চিকিৎসায় রোগীলিপি প্রস্তুত প্রণালী আলোচনা কর। ১৪

৫৫

২১। চিররোগের চিকিৎসা পদ্ধতি আলোচনা কর। ১৬, ১৮, ২১ বা, চিররোগের চিকিৎসা পদ্ধতি কঠিন কেন? ১৯

৫৬

২২। প্রতিরোধ ক্ষমতা কি? ১১, ১৩, ১৬ বা, ইমিউনিটির সংজ্ঞা ও শ্রেণীবিভাগ উল্লেখ কর।

৩২

৫৭

২৩। চির রোগীর উপর খাদ্য ও পানীয়ের প্রভাব লিখ। ১২, ২১ বা, চিররোগের চিকিৎসায় পথ্যের ভূমিকা কি? ১১

৫৭

৫৮

২৪। হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় রোগীর ধাতুগত বৈশিষ্ট্যের গুরুত্ব লিখ। ৫৯

৬৮

২৫। চিররোগ চাপা বলতে কি বুঝ? ২০১৮

৫৯

২৬। চিররোগে পথ্য ও পরিচর্যা কিরূপ হওয়া উচিৎ?

৬০

দ্বিতীয় অধ্যায়

মায়াজম

১। উপবিষ বলতে কি বুঝ? এর প্রকারভেদ লিখ। ১৮

৬১

বা, মায়াজম কাকে বলে? এর প্রকারভেদ লিখ। ০৯, ১০, ১৪

৬১

২। মায়াজম সম্বন্ধে জ্ঞান লাভের প্রয়োজনীয়তা লিখ। ০৯, ১১, ১৩, ১৯

৬১

৩। মিশ্র মায়াজম বলতে কি বুঝ? ০৮, ১১, ১২, ১৭, ২০ বা, উদাহরণসহ মিক্সড মায়াজমের সংজ্ঞা দাও। ১৮

৬২

৪। মায়াজম অর্জিত না বংশগত? আলোচনা কর। ১৩

৬২

৬৩
[8:00 pm, 26/12/2024] Md. Jahidul Islam: ক্রনিক ডিজিজ (চতুর্থ বর্ষ)

বা, সোরা কি? মায়াজম অর্জিত না বংশানুক্রমিক? আলোচনা কর।

৬৩

৫। মায়াজম চাপা পড়ার কারণগুলি লিখ। ০৯, ১২, ১৪

৬৪ ৬। অচিররোগ চিকিৎসায় উপবিষ দোষনাশক ঔষধের প্রয়োজন আছে কি? ০৮

৬৪

বা, অচিররোগ চিকিৎসায় এন্টিমায়াজমেটিক ঔষধের প্রয়োজন আছে কি?

৬৪

৭। রোগের জটিলতায় উপবিষের (মায়াজম) ভূমিকা লিখ।

১২

৬৫

৮। উপবিষের (মায়াজম) চিকিৎসা পদ্ধতি আলোচনা কর। ১০, ১৮

০৮,

৯। চিররোগ চিকিৎসায় মায়াজমের ভূমিকা লিখ।

১৪, ২০

৬৫

বা, চিররোগ চিকিৎসায় মায়াজমের ভূমিকা বর্ণনা কর। ১৮

৬৬

৬৬

তৃতীয় অধ্যায়

সোরা (Psora)

১। সুপ্ত সোরা কি? ১৪, ১৯

৬৭

২। সুপ্ত সোরার বৈশিষ্ট্যসমূহ লিখ। ১৪, ২১ বা, সুপ্ত সোরার লক্ষণাবলী লিখ।

৬৭

৩। সোরা কাকে বলে? ১৪, ২১

৬৭

বা, সোরা বলতে কি বুঝ? ১০, ১৮, ২০

৬৯

৪। সোরার মানসিক লক্ষণ বর্ণনা কর।

৬৯

৫। সোরার ধাতুগত লক্ষণসমূহ লিখ।

৬৯

৬। কিভাবে সোরার উৎপত্তি হয়?

१०

বা, সোরার উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ কিভাবে হয়?

৭১

৭। সোরিক শিশুর মানসিক লক্ষণগুলি বর্ণনা কর। ০৯

৭১

বা, সোরায় আক্রান্ত শিশুর মানসিক লক্ষণাবলী লিখ।

৭২

৭২
[8:01 pm, 26/12/2024] Md. Jahidul Islam: ক্রনিক ডিজিজ (চতুর্থ বর্ষ)

৮। “সোরার প্রথম প্রকাশ মনে”- ব্যাখ্যা কর। ১০, ১২,

বা, “সোরা কুমননের ফল”-ব্যাখ্যা কর। ০৯, ১১,

১০

২০

১৫,২১

৭৩

৭৩

৯। সোরা কি? রোগ প্রবণতা সৃষ্টিতে সোরার ভূমিকা আলোচনা কর। ২০১৩, ১৫, ১৭, ১৯, ২১

বা, সোরাকে চিররোগের মূল কারণ বলা হয় কেন? ২০

১০। “সোরা সকল রোগের জননী”-ব্যাখ্যা কর।

৭৫

বা, “সোরা কুমননের ফল এবং সিফিলিস ও সাইকোসিস কুকার্যের ফল”-ব্যাখ্যা কর।

১১। সিউডো সোরা কি? ১১, ১৩

বা, সিউডো সোরা সম্পর্কে যা জান লিখ। ০৯

বা, সিউডো কথাটির অর্থ কি? সিউডো সোরা কাকে বলে?

১২। ক্রুফিউলা কি? ১৪, ১৮, ১৯

বা, স্কুফিউলা কাকে বলে? ক্রুফিউলা ডায়াথেসিস কিভাবে গঠিত হয়?

১৩। সোরার চরিত্রগত/নির্দেশক লক্ষণগুলি লিখ। ১০, ১৮

বা, বিকশিত সোরার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য লিখ।

১৪। সোরার রোগীর মস্তিষ্কের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

১৫। সোরার রোগীর চোখ ও দৃষ্টিশক্তির লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

১৬। সোরার রোগীর কানের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

১৭। সোরার রোগীর নাকের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

১৮। সোরার রোগীর মুখমন্ডলের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

১৯। সোরার রোগীর মুখগহ্বরের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

২০। সোরার রোগীর পরিপাকতন্ত্রের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

২১। সোরার রোগীর খাদ্যের ইচ্ছা-অনিচ্ছা বর্ণনা কর।

২২। সোরার রোগীর ক্ষুধার লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

২৩। সোরার রোগীর বক্ষস্থল ও শ্বাসতন্ত্রের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

২৪। সোরার রোগীর মলদ্বারের ও মলের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

৭৫

৭৬

৭৬

৭৬

৭৬

৭৬

११

११

৭৯

৮০

৮১

৮১

৮২

৮২

৮৩

৮৩

৮৪

৮৪

৮৫
[8:01 pm, 26/12/2024] Md. Jahidul Islam: ক্রনিক ডিজিজ (চতুর্থ বর্ষ)

১১

২৫। সোরার রোগীর হৃদপিন্ডের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর। বা, সোরার দোষগ্রস্ত ব্যক্তির হার্টের গোলযোগ সম্পর্কে লিখ। ৮৬ ৮৬

২৬। সোরার রোগীর মূত্রতন্ত্রের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

৮৭

২৭। সোরার রোগীর পুংজননেন্দ্রিয়ের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর। ৮৭

২৮। সোরার রোগীর স্ত্রী-জননেন্দ্রিয়ের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

৮৮

২৯। সোরার রোগীর লিউকোরিয়া বা শ্বেতপ্রদরের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

৮৮

৩০। সোরার চর্ম রোগের বৈশিষ্ট্য লিখ। ০৯, ১১, ১৩, ১৭ বা, সোরার রোগীর চর্মের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর। ১৯

৮৯

৮৯

৩১। সোরিক রোগীর খাদ্যের ইচ্ছা-অনিচ্ছা লিখ। ১১, ১৩ বা. সোরাগ্রস্থ রোগীর খাদ্যের ইচ্ছা অনিচ্ছা লিখ। ০৮, ১০ ৮৯

৮৯

বা, সোরা বলতে কি বুঝ? সোরিক রোগীর খাদ্যের ইচ্ছা-অনিচ্ছা লিখ। ১০, ১১, ১৩, ১৮

৮৯

৩২। সোরার রোগীর রোগলক্ষণসমূহের হ্রাস-বৃদ্ধি লিখ।

৯০

৩৩। সোরা গঠিত রোগীর পাঁচটি রোগের নাম লিখ। ০৮ বা, সোরা দোষ হতে উৎপন্ন কয়েকটি রোগের নাম লিখ।

৯০

৩৪। এন্টিসোরিক ঔষধ কাকে বলে? দশটি এন্টিসোরিক ঔষধের নাম লিখ।

৯০

৩৫। কনজামশন বা সাইকো-সোরা কাকে বলে? ০৯, ১৮

৯১

৩৬। কনজাম্পশনের লক্ষণাবলি বর্ণনা কর। ২০১৮

৯১

৩৭। সিউডো সোরা ও ক্রুফিউলার মধ্যে প্রভেদ কি? ১২

৯১

বা, স্ক্রুফিউলা সিউডো-সোরা হতে মারাত্মক কেন?-ব্যাখ্যা কর।

৯২

৩৮। স্ট্রমা কাকে বলে? কনজামশানকে কখন স্ট্রমা বলা হয়?

৯২

৩৯। সোরার চিকিৎসা পদ্ধতি বর্ণনা কর। ১৪, ১৫, ১৭

৯৩

৪০। সোরা মায়াজমের সাধারণ প্রকৃতি বর্ণনা কর।

৯৩

৪১। সোরা চাপা পড়ার কারণগুলো লিখ। ২০

৯৪

২২
[8:02 pm, 26/12/2024] Md. Jahidul Islam: ক্রনিক ডিজিজ (চতুর্থ বর্ষ)

১২

চতুর্থ অধ্যায়

সাইকোসিস মায়াজম

১। সাইকোসিস দোষ এর সংজ্ঞা দাও। ০৯ বা, সাইকোসিস কাকে বলে?

৯৫

২। যৌন রোগ কাকে বলে? সিফিলিস ও গণোরিয়াকে যৌন রোগ

৯৫

বলা হয় কেন? ১০, ১৪, ১৭

৯৫

৩। গণোরিয়া কাকে বলে?

१५

৪। গণোরিয়া ও সাইকোসিসের মধ্যে পার্থক্য লিখ।

৯৬

৫। গণোরিয়ার চিকিৎসা পদ্ধতি আলোচনা কর।

৯৬

৬। সুপ্ত সাইকোসিসের লক্ষণাবলী লিখ।

৯৭

৭। গণোরিয়া হতে কিভাবে সাইকোসিসের উৎপত্তি হয়?

৯৮

বা, সাইকোসিস এর উৎপত্তি কিরূপে হয়? ১৪, ১৬, ১৭

৯৮

৮। সাইকোসিসের ধাতুগত লক্ষণসমূহ লিখ।

৯৮

৯। সাইকোসিসের মানসিক লক্ষণাবলী লিখ।

১০। একজন বংশগত সাইকোটিক রোগীর বৈশিষ্ট্যগুলি লিখ।

১৩,

১৮

১০০

১১। বিকশিত বা সেকেন্ডারী সাইকোসিসের লক্ষণাবলী লিখ। বা, সাইকোসিসের চরিত্রগত লক্ষণগুলি লিখ। ১৭, ১৯

১০১

১২। একজন বংশগত সাইকোটিক শিশুর বৈশিষ্ট্যগুলি লিখ।

১০১

বা, সাইকোসিস দুষ্ট শিশু রোগীর রোগ লক্ষণগুলির বর্ণনা দাও।

১০২

১৩। সাইকোসিস সর্বাপেক্ষা মারাত্মক-ব্যাখ্যা কর। ১৭

১০২

বা, “চির উপবিষসমূহের মধ্যে সাইকোসিস সর্বাপেক্ষা

১০৩

মারাত্মক।”- ব্যাখ্যা কর। ০৮, ১২, ১৬, ২০

১০৩

১৪। সাইকোসিসের আঁচিলের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা কর। ১৩, ১৯

১০৪

১৫। সাইকোসিসের স্মৃতি সম্পর্কিত লক্ষণগুলি লিখ। ১৩, ২০

১০৪

বা, সাইকোসিসের স্মৃতি সম্পর্কিত লক্ষণগুলি বর্ণনা কর। ১০, ১৪, ১৬

১০৪
[8:02 pm, 26/12/2024] Md. Jahidul Islam: ক্রনিক ডিজিজ (চতুর্থ বর্ষ)

১৩

১৬। সাইকোসিসের মস্তিষ্কের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

১৭। সাইকোসিসের চোখ ও দৃষ্টিশক্তির লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

১৮। সাইকোসিসের মুখমন্ডলের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

১৯। সাইকোসিসের নাকের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

২০। সাইকোসিসের পরিপাকতন্ত্রের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

২১। সাইকোসিসের মলদ্বারের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

২২। সাইকোসিসের ক্ষুধার লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

২৩। সাইকোসিসের শ্বাসতন্ত্রের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

২৪। সাইকোসিসের হৃদপিন্ডের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

১০৫

১০৬

১০৬

১০৭

১০৭

১০৯

১০৯

১১০

১১১

বা, সাইকোসিস দোষগ্রস্ত ব্যক্তির হার্টের গোলযোগ সম্পর্কে লিখ।

১১১

২৫। সাইকোসিসের মলদ্বারের ও মলের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

২৬। সাইকোসিসের পুংজননেন্দ্রিয়ের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

১১২

১১২

২৭। সাইকোসিসের স্ত্রী-জননেন্দ্রিয়ের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

১১৩

বা, সাইকোসিসের লিউকোরিয়া বা শ্বেতপ্রদরের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

১১৩

২৮। সাইকোসিসের মূত্রতন্ত্রের লক্ষণাবলী লিখ।

১১৪

২৯। সাইকোসিসের নখের লক্ষণাবলী লিখ।

১১৪

৩০। সাইকোসিসের হ্রাস-বৃদ্ধি লিখ। ০৯, ১৬

১১৪

৩১। সাইকোসিসের প্রান্তদেশীয় লক্ষণাবলী লিখ।

১১৫

বা, সাইকোসিসের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে লক্ষণাবলী লিখ।

১১৫

৩২। “সাইকোসিস মায়াজমের রোগী রাতের পূজারী”- ব্যাখ্যা কর।

১১৬

৩৩। সাইকোসিস মায়াজমের চর্ম লক্ষণ লিখ। ০৮

১১৬

বা, সাইকোসিসের বাহ্যিক লক্ষণাবলী বর্ণনা কর। ০৯, ২০

১১৬

৩৪। সাইকোসিস মায়াজমের রোগী সনাক্ত করার উপায়সমূহ লিখ।

৩৫। সাইকোসিস এর ইচ্ছা-অনিচ্ছা লিখ।

১১৭

১১৮

৩৬। এন্টিসাইকোটিক ঔষধ কাকে বলে? দশটি এন্টিসাইকোটিক ঔষধের পূর্ণনাম লিখ। ১০, ১২, ১৬

১১৮
[8:02 pm, 26/12/2024] Md. Jahidul Islam: ক্রনিক ডিজিজ (চতুর্থ বর্ষ)

১৪

পঞ্চম অধ্যায়

সিফিলিস মায়াজম

১। সিফিলিস মায়াজম কি?

বা সিফিলিস মায়াজম বলতে কি বুঝ? ২০

২। সুপ্ত সিফিলিসের লক্ষণাবলী লিখ।

৩। সিফিলিস মায়াজম কোন কোন অঙ্গে প্রথম সংক্রামিত হয়?

৪। সিফিলিস দোষের ধাতুগত লক্ষণাবলি লিখ।

৫। সিফিলিসের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য/লক্ষণাবলী লিখ। ১৪

বা, সিফিলিস মায়াজমের প্রধান প্রধান নিদর্শনসমূহ কি কি? ২০

বা, বিকশিত সিফিলিসের লক্ষণাবলী লিখ। ১৩, ১৫, ১৭

বা, সিফিলিস দোষের চরিত্রগত লক্ষণাবলি লিখ। ০৯, ১৬

৬। সিফিলিস মায়াজমের মানসিকতা লিখ। ১১, ১২, ১৫

বা, সিফিলিস দোষের মানসিক লক্ষণাবলি লিখ। ১০, ২১

৭। কিভাবে সিফিলিস মায়াজম সৃষ্টি হয়? ১২ বা, কিভাবে সিফিলিটিক অবস্থা সৃষ্টি হয়? ১০

৮। সিফিলিস রোগের প্রকৃতি বা উৎস বর্ণনা কর।

৯। সিফিলিস ও সাইকোসিসের মানসিক অবস্থা তুলনা কর। ০৮, ১৩, ১৫, ১৭, ২০

বা, সিফিলিসের সহিত সাইকোসিসের মানসিক লক্ষণাবলী তুলনা কর।

১০। সিফিলিস রোগীর ক্ষতের বর্ণনা দাও। ০৯, ২০ বা, সিফিলিস ক্ষতের বর্ণনা কর। ১১, ১৩, ১৭

১১। সিফিলিসের শিশু চিত্র অংকন কর। ০৮

বা, সিফিলিটিক শিশুদের দাঁতে কি কি নৈদানিক পরিবর্তন দেখা দেয়?

১২। সিফিলিসের চোখ ও দৃষ্টিশক্তির লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

১৩। সিফিলিসের মস্তিষ্কের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

১৪। সিফিলিসের কানের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।
[8:03 pm, 26/12/2024] Md. Jahidul Islam: ক্রনিক ডিজিজ (চতুর্থ বর্ষ)

১৫। সিফিলিসের নাকের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

১২৬

১৬। সিফিলিসের মুখমন্ডলের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

১২৬

১৭/ সিফিলিসের মুখগহ্বরের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

১২৭

১৮। সিফিলিসের পরিপাকতন্ত্রের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

১২৭

১৯। সিফিলিসের দাঁত ও দাঁতের মাড়ির লক্ষণাবলী লিখ।

১২৮

২০। সিফিলিসের স্বাদ এর লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

১২৮

২১। সিফিলিসের শ্বাসতন্ত্রের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

১২৮

২২। সিফিলিসের হৃদপিন্ডের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

১২৯

বা, সিফিলিস দোষগ্রস্ত ব্যক্তির হার্টের গোলযোগ সম্পর্কে লিখ।

১২৯

২৩। সিফিলিসের মলদ্বারের ও মলের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

১২৯

২৪। সিফিলিসের পুংজননেন্দ্রিয়ের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

১২৯

২৫। সিফিলিসের স্ত্রী-জননেন্দ্রিয়ের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

১৫

১৩০

২৬। সিফিলিস দোষের কারণে নখের কিরূপ পরিবর্তন ঘটে? বর্ণনা কর।

১৩০

২৭। সিফিলিসের লিউকোরিয়া বা শ্বেতপ্রদরের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

১৩১

২৮। সিফিলিসের মূত্রতন্ত্রের লক্ষণাবলী লিখ।

১৩১

২৯। “সিফিলিস দুষ্ট রোগী দিনের পূজারী”- ব্যাখ্যা কর।

১৩১

৩০। সিফিলিসের প্রান্তদেশীয় লক্ষণাবলী লিখ। বা, সিফিলিস মায়াজমের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে লক্ষণাবলী লিখ।

১৩২

৩১। সিফিলিসের হ্রাস-বৃদ্ধি লিখ। ০৮, ১০, ১২, ১৮

১৩৩

৩২। সিফিলিস মায়াজমের চর্মের লক্ষণাবলী লিখ। ২০১৬

১৩

৩৩। সিফিলিস মায়াজমের খাদ্যের ইচ্ছা-অনিচ্ছা লিখ।

১৩

৩৪। অস্থির উপর সিফিলিসের ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ড লিখ।

১৩

৩৫। সিফিলিস মায়াজম ও সিফিলিস রোগের মধ্যে পার্থক্য লিখ।

১৪,

১৬১৩

১৪, ১৬
[8:04 pm, 26/12/2024] Md. Jahidul Islam: ক্রনিক ডিজিজ (চতুর্থ বর্ষ)

১৬

৩৬। এন্টিসিফিলিটিক ঔষধ কাকে বলে? দশটি এন্টিসিফিলিটিক ঔষধের নাম লিখ। ০৯

বা, পাঁচটি এন্টিসিফিলিটিক ঔষধের পূর্ণ নাম লিখ।

১৬

৩৭। সিফিলিস দুষ্ট রোগীর চিকিৎসা পদ্ধতি বর্ণনা কর।

ষষ্ঠ অধ্যায়

টিউবারকুলার মায়াজম

১। টিউবারকুলার মায়াজম কাকে বলে?

বা, টিউবারকুলার ধাতুগ্রস্ততা বলতে কি বুঝ?

২০, ২১

২। কিভাবে টিউবারকুলার মায়াজমের সৃষ্টি হয়? আলোচনা কর।

০৮,

০৯,

১৫,

১৭,

২১

বা, কিভাবে টিউবারকুলার ডায়াথেসিস সৃষ্টি হয়? ১৮

৩। টিউবারকুলার মায়াজমের মানসিক লক্ষণ লিখ।

১০

বা, টিউবারকুলার দোষের মানসিক লক্ষণাবলীর বর্ণনা দাও।

৪। টিউবারকুলার মায়াজমে আক্রান্ত শিশুর লক্ষণাবলী লিখ।

বা, একজন বংশগত টিউবারকুলার দোষজ শিশুর চিত্র অংকন

কর। ১৮, ২০

৫। টিউবারকুলার মায়াজমের রোগীর ধাতুগত লক্ষণ লিখ।

৬। টিউবারকুলার মায়াজমের আরোগ্যের প্রকৃত সময় কখন? ০৮,

১১, ১৫, ২০

৭। টিউবারকুলার রোগীর হার্টের গোলযোগসমূহ লিখ। ১০

৮। টিউবারকুলোসিস ও টিউবারকুলার মায়াজমের মধ্যে পার্থক্য

কি? ০৯

৯। টিউবারকুলার মায়াজমের চরিত্রগত লক্ষণ লিখ।

১২

১০। টিউবারকুলার মায়াজমের মস্তিষ্কের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।
[8:04 pm, 26/12/2024] Md. Jahidul Islam: ক্রনিক ডিজিজ (চতুর্থ বর্ষ)

১১। টিউবারকুলার মায়াজমের চোখ ও দৃষ্টিশক্তির লক্ষণাবলী

১৪৪

১২। টিউবারকুলার মায়াজমের কানের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

১৪৫

১৩। টিউবারকুলার মায়াজমের নাকের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

১৪৬

১৪। টিউবারকুলার মায়াজমের মুখমন্ডলের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

১৪৭

১৫। টিউবারকুলার মায়াজমের চোখের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

১৪৮

১৬। টিউবারকুলার মায়াজমের দাঁত ও দাঁতের মাড়ির লক্ষণাবলী লিখ।

১৪৮

১৭। টিউবারকুলার মায়াজমের মুখগহ্বরের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

১৪৯

১৮। টিউবারকুলার মায়াজমের পরিপাকতন্ত্রের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর। বা, টিউবারকুলার রোগীর উদর বা পাকাশয়ের রোগ লক্ষণাবলী লিখ।

১৫০

১৯। টিউবারকুলার মায়াজমের ক্ষুধার লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।১৫০

২০। টিউবারকুলার মায়াজমের শ্বাসতন্ত্রের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর। ২০১৮

১৫১

২১। টিউবারকুলার মায়াজমের হৃদপিন্ডের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর। বা, টিউবারকুলার দোষগ্রস্ত ব্যক্তির হার্টের গোলযোগ সম্পর্কে লিখ। ১৮

১৫

২২। টিউবারকুলার মায়াজমের পুংজননেন্দ্রিয়ের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

১৫

১০

২৩। টিউবারকুলার মায়াজমের মলদ্বারের ও মলের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

২৪। টিউবারকুলার মায়াজমের স্ত্রী-জননেন্দ্রিয়ের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর। ১৯

২৫। টিউবারকুলার মায়াজমের লিউকোরিয়া বা শ্বেতপ্রদরের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

১৭
[8:05 pm, 26/12/2024] Md. Jahidul Islam: ক্রনিক ডিজিজ (চতুর্থ বর্ষ)

১৮

বা, টিউবারকুলার দোষঘ্ন স্ত্রীলোকের শ্বেতপ্রদরের বৈশিষ্ট্য লিখ। ১০, ১১, ১৫, ১৭, ২০

২৬। টিউবারকুলার মায়াজমের মূত্রতন্ত্রের লক্ষণাবলী লিখ।

২৭। টিউবারকুলার মায়াজমের প্রান্তদেশীয় লক্ষণাবলী লিখ।

বা, টিউবারকুলার মায়াজমের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে লক্ষণাবলী লিখ।

২৮। টিউবারকুলার দোষের কারণে নখের কিরূপ পরিবর্তন ঘটে? বর্ণনা কর।

২৯। টিউবারকুলার মায়াজমের রোগীর গর্ভধারণ ও প্রসবকালীন জটিলতা এবং প্রসব পরবর্তী কুফলের লক্ষণাবলী লিখ।

د

৩০। টিউবারকুলার মায়াজমের চর্মের প্রকৃতি বর্ণনা কর।

د

৩১। এন্টিটিউবারকুলার ঔষধ কাকে বলে? দশটি এন্টিটিউবারকুলার ঔষধের নাম লিখ। ১০, ২১

বা, পাঁচটি প্রধান এন্টিটিউবারকুলার ঔষধের পূর্ণনাম লিখ।

১২

৩২। টিউবারকুলার রোগীর খাদ্যের ইচ্ছা-অনিচ্ছা লিখ। ০৯,

১২, ১৭

১১,

৩৩। টিউবারকুলার মায়াজমের চিকিৎসা পদ্ধতি বর্ণনা কর। ২১

৩৪। মিশ্র মায়াজমের চিকিৎসা পদ্ধতি লিখ। ১৩, ২০

৩৫। সোরা ও সিডোসোরার মধ্যে পার্থক্য লিখ।

৩৬। ক্রুফুলা ও কনজাম্পশনের মধ্যে পার্থক্য লিখ। ২১

১। “অচির রোগ চিররোগের সাময়িক উচ্ছ্বাস মাত্র”-আলোচনা কর।

২। মায়াজম ঘটিত রোগের চিকিৎসা এত কঠিন কেন? ২০

বা, চিররোগের চিকিৎসা পদ্ধতি কঠিন কেন? ১৯

১। দূরারোগ্য ব্যাধি (Incurable disease)

২। ক্রিয়ানাশক ঔষধ বা এন্টিডোট (Antidote)

১০

১০

১০

د


[8:05 pm, 26/12/2024] Md. Jahidul Islam: ক্রনিক ডিজিজ (চতুর্থ বর্ষ)

সপ্তম অধ্যায়

ব্যাক্টেরিয়া ও প্যাথলজি সম্পর্ক

Bacteria and their relation to pathology

১। ব্যাকটেরিয়া কি?

২। সংক্ষেপে ব্যাকটেরিয়ার শ্রেণীবিভাগ কর।

১৬৩

৩। ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের মধ্যে পার্থক্য কি?

১৬৩

বা, ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে পাঁচটি প্রধান পার্থক্য লিখ।

১৬৪

ব্যাকটেরিয়ার কালচার (Culture of Bacteria)

১৬৪

৪। কালচার কাকে বলে?

১৬৫

৫। ব্যাকটেরিয়া কালচারের উদ্দেশ্য কি?

১৬৫

৬। এনামনোসিস কি? ১২ বা, এনামনোসিস কাকে বলে?

১৬৫

৭। প্যাথলজির সংজ্ঞা দাও।

১৬৫

৮। রোগ নির্ণয় বলতে কি বুঝ? ০৮, ১০, ১২

১৬৬

৯। হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় ডায়াগনসিস ও এনামনোসিসের প্রয়োজনীয়তা বর্ণনা কর।

১৬৬

১০। রোগ জীবাণু বলতে কি বুঝ? ০৯

১৬৭

১১। জীবাণুসমূহের ধ্বংসের দ্বারা চিররোগ নিরাময় করা যায় না কেন? ০৯

১৬৭

১২। হোমিওপ্যাথিতে প্যাথলজীর স্থান নিরূপণ কর। ০৮

১৬৮

১৩। নিদান শাস্ত্রের বা প্যাথলজির সহিত রোগ জীবাণুর সম্পর্ক কি? ০৯

১৬৯

১৪। ব্যাক্টেরিয়া ও প্যাথলজির সম্পর্ক বর্ণনা কর। ১৯

১৬৯

১৫। প্যাথলজির হোমিওপ্যাথিক ও এলোপ্যাথিক দৃষ্টিভঙ্গীর মধ্যে পার্থক্য কি?

১৯

১৭০

১৭১
[8:06 pm, 26/12/2024] Md. Jahidul Islam: ক্রনিক ডিজিজ (চতুর্থ বর্ষ)

১৬। ব্যাকটেরিয়ার উপকারিতা বর্ণনা কর।

১৭। ব্যাকটেরিয়ার অপকারিতা বর্ণনা কর।

১৮। ভাইরাস কি? ইহা কে আবিষ্কার করেন? ২১

১৯। ভাইরাসের বৈশিষ্টসমূহ লিখ। ২১

14. Deflected current

২০। রুদ্ধগতি কি? ১২

বা, বাধাপ্রাপ্ত প্রবাহ বলতে কি বুঝ?

০৯, ১১, ১৯

বা, রুদ্ধ গতি বলিতে কি বুঝ? ইহার কারণগুলো কি কি? ২১

২১। রোগ প্রবণতা কাকে বলে?

২২। রোগ প্রবণতা কিভাবে বৃদ্ধি ও ধ্বংস হয়?-আলোচনা কর।

২৩। রোগ প্রতিরোধ ও রোগ প্রবণতার মধ্যে পার্থক্য কি?

২৪। সংবেদনশীলতা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার মধ্যে পার্থক্য

লিখ। ১১, ১২

২৫। প্রতিক্রিয়া কাকে বলে? রোগ প্রবণতা দূর করার উপায় কি?

২৬। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং সংবেদনশীলতা বলতে কি বুঝ?

২৭। কিভাবে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়?-

ব্যাখ্যা কর।

২৮। ধাতু প্রকৃতি বলতে কি বুঝ?

২৯। ধাতু প্রকৃতি কত প্রকার ও কি কি?

৩০। অদ্ভুত লক্ষণ কাকে বলে? ০৮, ১২

বা, অদ্ভুত লক্ষণ কি? ইহার উপর ভিত্তি করে ঔষধ নির্বাচন সহজ কেন?

৩১। ঔষধের পর্যায়শীল ক্রিয়া সম্বন্ধে লিখ। ১০, ২০

বা, ঔষধের পর্যায়শীল ক্রিয়া সম্পর্কে আলোচনা কর।

৩২। কখন বুঝা যায় রোগীর আদর্শ আরোগ্য সম্ভব নহে?

৩৩। রুদ্ধগতির ক্ষেত্রে চিকিৎসকের করণীয়গুলি কি কি? ২১

২০

১৭১

১৭৩

১৭৩

১৭৪

১৭৫

১৭৫

১৭৫

১৭৬

১৭৬

১৭৭

১৭৭

১৭৮

১৭৯

১৭৯

১৭৯

১৮০

১৮১

১৮১

১৮১

১৮১

১৮২

২১১
[8:06 pm, 26/12/2024] Md. Jahidul Islam: ক্রনিক ডিজিজ (চতুর্থ বর্ষ)

অষ্টম অধ্যায়

সোরা, সাইকোসিস, সিফিলিস ও টিউবারকুলার মায়াজমের তুলনামূলক

আলোচনা ৪

১। সোরা, সাইকোসিস, সিফিলিস ও টিউবারকুলার মায়াজমের মানসিক লক্ষণের তুলনা কর।

১৮৩ ২। সোরা, সাইকোসিস, সিফিলিস ও টিউবারকুলার মায়াজমের

আক্রমণের লক্ষ্যস্থল কি কি? ১৮৪ ৩। সোরা, সাইকোসিস, সিফিলিস ও টিউবারকুলার মায়াজমের চোখের

লক্ষণের তুলনা কর।

১৮৪ ৪। সোরা, সাইকোসিস, সিফিলিস ও টিউবারকুলার মায়াজমের মাথার লক্ষণের তুলনা কর।

১৮৫

৫। সোরা, সাইকোসিস, সিফিলিস ও টিউবারকুলার মায়াজমের কানের লক্ষণের তুলনা কর।

১৮৬

৬। সোরা, সাইকোসিস, সিফিলিস ও টিউবারকুলার মায়াজমের নাকের লক্ষণের তুলনা কর। ১৮৬

৭। সোরা, সাইকোসিস, সিফিলিস ও টিউবারকুলার মায়াজমের খাদ্যের ইচ্ছা-অনিচ্ছার তুলনা কর। ১৮৭

৮। সোরা, সাইকোসিস ও টিউবারকুলার মায়াজমের পাকস্থলীর লক্ষণাবলী তুলনা কর। ১৮৮

৯। সোরা, সাইকোসিস, সিফিলিস ও টিউবারকুলারের মলদ্বার, মল এর লক্ষণাবলী তুলনা কর।

১৮৯

১০। সোরা, সাইকোসিস ও টিউবারকুলার মায়াজমের প্রস্রাবের লক্ষণাবলী তুলনা কর।

১৮৯

১১। সোরা, সাইকোসিস, সিফিলিস ও টিউবারকুলার মায়াজমের হৃৎপিন্ডের লক্ষণাবলী তুলনা কর।

১৯০

১২। সোরা, সাইকোসিস, সিফিলিস ও টিউবারকুলার মায়াজমের চর্মের লক্ষণাবলী তুলনা কর।

১৯১

১৩। সোরা, সাইকোসিস, সিফিলিস ও টিউবারকুলার মায়াজমের হ্রাস- বৃদ্ধির তুলনা কর।

২১

১৯২
[8:07 pm, 26/12/2024] Md. Jahidul Islam: ক্রনিক ডিজিজ (চতুর্থ বর্ষ)

২২

নবম অধ্যায়

ব্যবস্থাপত্র (Prescription)

১। ব্যবস্থাপত্র কাকে বলে? ব্যবস্থাপত্রের কয়টি অংশ ও কি কি?

১৯৪

২। একটি ব্যবস্থাপত্রের নমুনা লিখ।

১৯৪

৩। দ্বিতীয় ব্যবস্থাপত্র সম্পর্কে আলোচনা কর।

১৯৫

অথবা দ্বিতীয় ব্যবস্থাপত্র বলতে কি বুঝ? ২০

১৯৫

অথবা, দ্বিতীয় ব্যবস্থাপত্র কি? দ্বিতীয় ব্যবস্থাপত্রে রোগীলিপির ভূমিকা কি? ১২

১৯৫

অথবা, দ্বিতীয় ব্যবস্থাপত্রে রোগীলিপির ভূমিকা কি? ০৮

১৯৫

৪। কখন এবং কেন দ্বিতীয় ব্যবস্থাপত্র প্রদান করা হয়। ১০

১৯৬

বা, কখন দ্বিতীয় ব্যবস্থাপত্রের প্রয়োজন হয়?

১৪, ২০, ২১

১৯৬

৫। কি ভাবে বুঝবে যে ব্যবস্থাপত্র ভুল হয়েছে?

১৯৭

৬। ব্যবস্থাপত্র লিখার সময় একজন চিকিৎসককে কি কি বিষয়ের প্রতি সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়?

১৯৭

৭। ব্যবস্থাপত্র ভুল হলে কি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে? বা, ব্যবস্থাপত্র ভুল হলে কি ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত?

১৯৮

৮। অদ্ভুত লক্ষণ কাকে বলে? “অদ্ভুত লক্ষণের উপর ভিত্তি করে

১৯৮

ঔষধ নির্বাচন করলে সাফল্য অনিবার্য “-ব্যাখ্যা কর।

১৯৯

বা, অদ্ভুত লক্ষণ কি? ইহার উপর ভিত্তি করে ঔষধ নির্বাচন সহজ কেন?

১৯৯

বা, দুর্লভ উপসর্গগুলি কি? রোগ নিরাময়ের ক্ষেত্রে ইহার কতটুকু মূল্য? ১০, ১৫

১৯৯

৯। আরোগ্যের বিশ্বজনীন নীতিটি বর্ণনা কর।

২০০

বা, সিমিলিয়া সিলিলিবাস কিউরেন্টার বর্ণনা কর।

২০০

১০। হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় ঔষধি গুণবিশিষ্ট খাদ্য ও পানীয় বর্জনীয় কেন?

২০১

১১। পর্যায়শীল রোগ কাকে বলে?

মায়াজম

প্রশ্নঃ উপবিষ বলতে কি বুঝ? ইহার প্রকারভেদ লিখ। ১০, ১৮ বা, মায়াজম কাকে বলে? ০৮, ০৯, ১৪

উপবিষ (মায়াজম): মায়াজম একটি গ্রীক শব্দ। এর অর্থ দাগ, অপবিত্রতা, দূষিত অবস্থা। যে সকল প্রাকৃতিক সূক্ষ্মশক্তি বা কারণসমূহ হতে রোগ উৎপত্তি হয়, সে সকল সূক্ষ্মশক্তি বা কারণসমূহকে, উপবিষ বা মায়াজম বলে। সুতরাং উপবিষ বা মায়াজম হচ্ছে এমন একটি অবস্থা যা মানবদেহে প্রবেশ করে এবং দেহের বিশৃংখলা সৃষ্টি করে রোগ লক্ষণাবলী উৎপন্ন করে।

মায়াজম তিন প্রকার। যথা-১। সোরা, ২। সিফিলিস ও ৩। সাইকোসিস।

প্রশ্নঃ মায়াজম সম্বন্ধে জ্ঞান লাভের প্রয়োজনীয়তা লিখ। ২০০৯, ১১, ১৩

মায়াজম সম্বন্ধে জ্ঞান লাভের প্রয়োজনীয়তা:

হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা একটি লক্ষণ ভিত্তিক চিকিৎসা। ডাঃ হ্যানিম্যান দেখলেন যে রোগী চিকিৎসার কিছুদিন পর আবার রোগ যন্ত্রণা নিয়ে ফিরে আসে। তখন তিনি দুশ্চিন্তায় পড়লেন এবং কারণ অনুসন্ধান করতে শুরু করলেন। তিনি দীর্ঘ ১২ বছর গবেষণার পর রোগের কারণ হিসাবে মায়াজম এর আবিষ্কার করলেন। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় প্রাকৃতিক নিয়মে আরোগ্য সাধিত হয়, অর্থাৎ সিমিলিয়া সিমিলিবাস কিউরেন্টার। ডাঃ হ্যানিম্যান হোমিওপ্যাথির আইন সম্বলিত গ্রন্থ “অর্গানন অব মেডিসিন” এর ৫নং অনুচ্ছেদে রোগের কারণ সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। ডাঃ হ্যানিম্যান রোগের কারণ বলতে মায়াজমকে বুঝিয়েছেন। সমগ্র পৃথিবীতে যত প্রকার দূরারোগ্য রোগ সৃষ্টি হচ্ছে তার পিছনে কিছু না কিছু কারণ রয়েছে, আর এ কারণকে ডাঃ হ্যানিম্যান মায়াজম হিসাবে নামকরণ করেছেন। মায়াজম তিন প্রকার। যথা- ১। সোরা ২। সিফিলিস ও ৩। সাইকোসিস। সোরা আদি মায়াজম যা সকল রোগ সৃষ্টিতে সহায়তা করে। তাহলে সোরা বংশগতভাবে মানুষের দেহে সংক্রমিত হয়ে চলে আসে। আবার সাইকোসিস ও সিফিলিস এক দিকে বংশানুক্রমিক চলে আসছে এবং অন্যদিকে ব্যক্তিগতভাবে কুকর্মের দ্বারা অর্জিত হতে দেখা যাচ্ছে। প্রত্যকটি মায়াজম এক একটি রোগের জীবন্ত প্রতিচ্ছবি। প্রতিটি রোগীর ক্ষেত্রে সঠিক রোগীলিপি প্রনয়ন করে, বিশুদ্ধ মেটেরিয়া মেডিকা হতে প্রকৃত এন্টিমায়াজমেটিক ঔষধ সেবনে আদর্শ আরোগ্য হয়। প্রত্যেকটি মায়াজমের নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য, নির্দেশক লক্ষণাবলী, গঠনগত ও মানসিক লক্ষণ, ইচ্ছা-অনিচ্ছা, হ্রাস-বৃদ্ধি প্রভৃতি আলাদা। সুতরাং প্রত্যেকটি মায়াজমে সম্বন্ধে বিস্তারিতভাবে জ্ঞান অর্জন করলে রোগী চিকিৎসা সহজতর হবে।

অতএব, মায়াজম সম্বন্ধে জ্ঞানলাভের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।

প্রশ্নঃ মিশ্র মায়াজম বলতে কি বুঝ? ০৮, ১১, ১২, ১৭ বা, উদাহরণসহ মিক্সড মায়াজমের সংজ্ঞা দাও। ২০১৮

মিশ্র মায়াজম এর সংজ্ঞাঃ দুই বা ততোধিক মায়াজম একত্রে একই দেহে মিলিত হয়ে যে জটিল অবস্থার সৃষ্টি হয়, তাকে মিশ্র মায়াজম বলে। মায়াজম তিন প্রকার। সোরা, সিফিলিস ও সাইকোসিস। মিশ্র মায়াজম হচ্ছে এরূপ অবস্থা যা সোরা + সাইকোসিস, সোরা সিফিলিস, সোরা + সিফিলিস + সাইকোসিস সংমিশ্রনে উৎপন্ন হয়। যেমন- স্ক্রোফিউলা, সিউডো-সোরা ইত্যাদি।

প্রশ্নঃ মায়াজম অর্জিত না বংশগত? আলোচনা কর। ১১, ১৩ বা, সোরা কি? মায়াজম অর্জিত না বংশানুক্রমিক? আলোচনা কর। ১৩ সোরার সংজ্ঞাঃ

সোরা (Psora) শব্দটি মূল হীক্র শব্দ ‘সোরাট’ (Tsorat) থেকে উদ্ভব হয়ে গ্রীক এবং ল্যাটিন এর মাধ্যমে এসেছে। সোরার আভিধানিক অর্থ হচ্ছে চুলকনা বা সদৃশ কিছু চর্মরোগ, কোষ পোকা, খাদ, দোষ, অপবিত্রতা ইত্যাদি।

সোরা হচ্ছে একটি মায়াজম, যা রোগ সৃষ্টিতে সাহায্য করে বা রোগ প্রবণতা তৈরি করে।

মায়াজম অর্জিত না বংশানুক্রমিক:

ডাঃ হ্যানিম্যান হোমিওপ্যাথির আইন সম্বলিত গ্রন্থ “অর্গানন অব মেডিসিন” এর ৫নং অনুচ্ছেদে রোগের কারণ সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। মায়াজম অর্জিত বা বংশানুক্রমিক উভয়ই হতে পারে।

ডাঃ হ্যানিম্যান রোগের কারণ বলতে মায়াজমকে বুঝিয়েছে। সমগ্র পৃথিবীতে যত প্রকার দূরারোগ্য রোগ সৃষ্টি হচ্ছে তার পিছনে কিছু না কিছু কারণ রয়েছে, আর এ কারণকে মহাত্মা ডাঃ হ্যানিম্যান মায়াজম হিসাবে নামকরণ করেছেন। মায়াজম তিন প্রকার। যথা- ১। সোরা ২। সিফিলিস ও ৩। সাইকোসিস। সোরা আদি মায়াজম যা সকল রোগ সৃষ্টিতে সহায়তা করে। তাহলে সোরা বংশগতভাবে মানুষের দেহে সংক্রমিত হয়ে চলে আসে। আবার সাইকোসিস ও সিফিলিস এক দিকে বংশানুক্রমিক চলে আসছে এবং অন্যদিকে ব্যক্তিগতভাবে কুকর্মের দ্বারা অর্জিত হতে দেখা যাচ্ছে। মায়াজম রোগের অন্যতম কারণ।

সুতরাং মায়াজম অর্জিত ও বংশগত উভয় প্রকারের হতে

পারে।

প্রশ্নঃ মায়াজম চাপা পড়ার কারণগুলি লিখ। ০৯, ১২, ১৪

মায়াজম চাপা পড়ার কারণগুলি:

(i) বিসদৃশ বিধান মতে কোন প্রকার চর্মরোগে মলম বা অন্য কোন প্রলেপাদি প্রয়োগ করা।

(ii) বিসদৃশ প্যাথির অতিরিক্ত ঔষধ সেবন।

(iii) ভুল ঔষধ সেবন করা।

(iv) রোগের গতি বহির্মুখী হতে অন্তর্মুখী চাপা পড়ার ফলে।

(v) বিনা কারণে বা ত্রুটিপূর্ণ অপারেশন।

(vi) চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসার ফলে।

(vii) বার বার চিকিৎসক পরিবর্তন করা।

প্রশ্নঃ অচিররোগ চিকিৎসায় উপবিষ দোষনাশক ঔষধের প্রয়োজন আছে কি? ০৮ বা, অচিররোগ চিকিৎসায় এন্টিমায়াজমেটিক ঔষধের প্রয়োজন আছে কি?

অচিররোগ চিকিৎসায় উপবিষ দোষনাশক ঔষধের প্রয়োজনীয়তাঃ

যে সকল রোগ হঠাৎ আবির্ভূত হয়ে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে, যাদের ভোগকাল স্বল্পসময় বা স্বল্পদিন স্থায়ী, ঐ সময়ের মধ্যে হয় রোগী আরোগ্য লাভ করে অথবা রোগ নিজে নিজেই ধ্বংস হয়ে যায় নতুবা ঐ সময়ের মধ্যে রোগীর পরিণতি ফল মৃত্যু হয়, তাকে অচির রোগ বা তরুণ রোগ বলে। ডাঃ হ্যানিম্যানের মতে অচির রোগ সৃষ্টির মূল কারণ হচ্ছে সোরার সাময়িক উচ্ছ্বাস। সুপ্ত সোরার জাগরনের ফলে অচির রোগের উৎপত্তি হয়। ডাঃ হ্যানিম্যানের মতে অচির রোগ চিকিৎসায় রোগী বর্তমান লক্ষণাবলী সংগ্রহ করে উপযুক্ত ঔষধ নির্বাচন করে প্রয়োগ করতে হবে। অচিররোগ চিকিৎসা শেষে উপবিষ দোষনাশক একটি এন্টিসোরিক ঔষধের প্রয়োজন আছে।

প্রশ্নঃ রোগের জটিলতায় উপবিষের (মায়াজম) ভূমিকা লিখ। ১০, ১২

রোগের জটিলতায় উপবিষের ভূমিকা:

রোগের জটিলতায় উপবিষ বা মায়াজমের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। মায়াজম সংমিশ্রত হয়ে জটিলতর রোগের সৃষ্টি করে। যেমন- টিউবারকুলোসিস, ক্যান্সার, শরীরের গুরুত্বপূর্ণ হাড় ক্ষয়সহ বিভিন্ন রোগ। এক্ষেত্রে রোগীর রোগ লক্ষণাবলীর মায়াজমেটিক অবস্থা দেখে একটির পর একটি এন্টিমায়াজমেটিক ঔষধ প্রয়োগ করলে রোগী দ্রুত আদর্শ আরোগ্য লাভ করে। সমগ্র পৃথিবীতে যত প্রকার দূরারোগ্য রোগের সৃষ্টি হচ্ছে তার পিছনে কিছু না কিছু কারণ রয়েছে, আর এ কারণকে মায়াজম হিসাবে নামকরণ করেছেন। এই মায়াজমসমূহ সংমিশ্রত হয়ে রোগের জটিল অবস্থা সৃষ্টি করে।

অতএব, রোগী চিকিৎসায় রোগের জটিলতায় উপবিষের (মায়াজম) ভূমিকা অপরিসীম।

প্রশ্নঃ উপবিষের (মায়াজম) চিকিৎসা পদ্ধতি আলোচনা কর। ২০০৮, ১০, ১৮

উপবিষের (মায়াজম) চিকিৎসা পদ্ধতি আলোচনাঃ

রোগ গ্রন্থ ব্যক্তি যখন রোগের যন্ত্রণা কাতর থাকে, তখন দেহ ও মনে কিছু লক্ষণাবলী প্রকাশিত হয়, উক্ত লক্ষণাবলী সদৃশ একটি ঔষধ ব্যবস্থা করে প্রয়োগ করতে হয়। এক্ষেত্রে রোগীর রোগ লক্ষণাবলীর মায়াজমেটিক অবস্থা দেখে একটির পর একটি এন্টিমায়াজমেটিক ঔষধ প্রয়োগ করলে রোগী দ্রুত আদর্শ আরোগ্য লাভ করে। প্রথমে যদি রোগীর দেহে সাইকোসিস মায়াজমে অধিক লক্ষণাবলী বর্তমান থাকে তাহলে রোগীকে এন্টিসাইকোটিক ঔষধ দিয়ে চিকিৎসা শুরু করতে হবে। তারপর যদি সিফিলিস মায়াজম অধিক থাকে তাহলে এন্টিসিফিলিটিক ঔষধ দিতে হবে। উপরিউক্ত মায়াজমেটিক অবস্থা দূর হলে যদি রোগীর সার্বিক লক্ষণাবলী নিয়ে রোগীকে এন্টিসোরিক প্রদান করতে হবে, তবেই রোগ সম্পূর্ণরূপে আরোগ্য হবে।

প্রশ্নঃ চিররোগ চিকিৎসায় মায়াজমের ভূমিকা লিখ। ২০১৪, বা, চিররোগ চিকিৎসায় মায়াজমের ভূমিকা বর্ণনা কর। ১৮

চিররোগ চিকিৎসায় মায়াজমের ভূমিকা:

হোমিওপ্যাথিক দৃষ্টিকোণ থেকে রোগের প্রকৃত কারণ মায়াজম। ডাঃ হ্যানিম্যান অর্গানন অব মেডিসিনের ৫ নং অনুচ্ছেদে রোগের কারণ (মায়াজম) সম্বন্ধে বিস্তারিত বর্ণনা দিয়েছেন। মায়াজম তিন প্রকার। যথা- ১। সোরা ২। সিফিলিস ও ৩। সাইকোসিস। সোরা আদি মায়াজম যা সকল রোগ সৃষ্টিতে সহায়তা করে। তাহলে সোরা বংশগতভাবে মানব দেহে সংক্রমিত হয়ে চলে আসে। আবার সাইকোসিস ও সিফিলিস এক দিকে বংশানুক্রমিক চলে আসছে এবং অন্যদিকে ব্যক্তিগতভাবে কুকর্মের দ্বারা অর্জিত হতে দেখা যাচ্ছে। প্রত্যকটি মায়াজম এক একটি রোগের জীবন্ত প্রতিচ্ছবি। প্রতিটি রোগীর ক্ষেত্রে সঠিক রোগীলিপি প্রনয়ন করে, বিশুদ্ধ মেটেরিয়া মেডিকা হতে প্রকৃত এন্টিমায়াজমেটিক ঔষধ সেবনে আর্দশ আরোগ্য হয়। প্রত্যেকটি মায়াজমের নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য, নির্দেশক লক্ষণাবলী, গঠনগত ও মানসিক লক্ষণ, ইচ্ছা-অনিচ্ছা, হ্রাস-বৃদ্ধি প্রভৃতি আলাদা। সুতরাং প্রত্যেকাট মায়াজম সম্বন্ধে বিস্তারিতভাবে জ্ঞান অর্জন করলে রোগী চিকিৎসা সহজতর হবে। চিররোগ চিকিৎসায় মায়াজমের গুরুত্ব অপরিসীম কারণ চিররোগ মিশ্রমায়াজমের ফলে সৃষ্টি হয়। চিররোগ আরোগ্য করতে হলে একটির পর একটি মায়াজম রোগীর দেহ হতে মুক্ত করতে হবে। সকল মায়াজম রোগীর দেহ হতে মুক্ত হলে তাকে আদর্শ আরোগ্য বলে।

সুতরাং চিররোগ চিকিৎসায় মায়াজমের গুরুত্ব অপরিসীম।

সোরা (Psora)

প্রশ্নঃ সুপ্ত সোরা কি? ১৪

সুপ্ত সোরা:

মানবদেহে সোরা মায়াজম সংক্রমনের পর তা সমগ্র জীবন সত্তায় ছড়িয়ে পড়ে। তারপর ইহা সংক্রমনের অনুকূল পরিবেশে পেলে আত্মপ্রকাশ করে। সংক্রমনের ও আত্মপ্রকাশের মধ্যবর্তী অবস্থাকে সুপ্ত সোরা বলে।

প্রশ্নঃ সুপ্ত সোরার বৈশিষ্ট্যসমূহ লিখ। ১৪ বা, সুপ্ত সোরার লক্ষণাবলী লিখ।

সুপ্ত সোরার লক্ষণাবলী:

(i) মাথায় ঘাম, রাতে শোয়ার পর। ঘন ঘন এমনকি সামান্য আবেগ জনিত মানসিক উত্তেজনায় একপার্শ্বিক মাথার ব্যথা।

(ii) চুল শুকনো, প্রচুর পরিমাণে মাথার চুল উঠে যায়। মাথায় প্রচুর খুস্কি।

(iii) প্রায়ই চোখের প্রদাহ হয়।

(iv) অল্প বয়স্কদের প্রচুর পরিমাণে নাক হতে রক্তক্ষরণ হয়।

(v) তীব্র ঠান্ডা আবহাওয়ায়ও কোনও সর্দি লাগে না বা যতদিন এ রকম আবহাওয়া থাকে ঘন ঘন বা ক্লান্তিকর শুকনো অথবা প্রচুর পরিমাণে সর্দিস্রাব বা শ্লেষ্মাসহ লাগাতর অসুস্থ্যতা।

(vi) ক্রমান্বয়ে অনেকদিন যাবৎ এক বা উভয় নাসারন্ধ বন্ধ থাকে।

নাসারন্ধ্রের ক্ষততা, ন্যাজাল পলিপ, নাকে অস্বস্তিকর শুষ্কতা অনুভূতি।

(vii) মুখমন্ডল ফ্যাকাশে, চামড়া কুচকানো। আকস্মিক তাপ প্রবাহে মুখমন্ডল রক্তিম হয়ে উঠে, এতই লাল হয়ে যায় যে উৎকণ্ঠায়ও এতটা লাল হয় না।

(viii) রাতে বা সকালে মুখ শুকনো ও টক স্বাদযুক্ত থাকে।

(ix) জিহ্বা সাদা বা খুব ফ্যাকাশে এবং প্রায়ই ফাটা ফাটা থাকে।

(x) ঘন ঘন গল প্রদাহ ও স্বরভঙ্গ। গলায় প্রচুর গয়ার উঠে। থাইরয়েড গ্রন্থির স্ফীতিভাব।

(xi) ঘন ঘন শ্বাসকষ্টের আক্রমণ।

(xii) পেটে খালি খালি অনুভূতি। অতৃপ্ত ক্ষুধা- কিছুক্ষণ পর ক্ষুধাহীনতা। সকালে বমি বমিভাব। প্রায়ই পেট ফাঁপা। প্রায়ই বা প্রতিদিন সকালে (বিশেষত শিশুদের) পেটে কেটে যাবার মত ব্যথা।

(xiii) রান্না করা খাদ্যে, গরম খাবারে বিশেষত মাংসে অনিচ্ছা এবং দুধে অভক্তি।

(xiv) প্রায়ই গোলকৃমি বা অন্যান্য কৃমির উৎপাত, বিশেষত শিশুদের। পরবর্তীতে মলদ্বারে অসহ্যকর চুলকানি হয়।

(xv) মলদ্বারের শিরাগুলি জট পাকিয়ে যায়, মলের সাথে রক্ত পড়ে। মলসহ বা মল ছাড়াই মিউকাস (আম) যায়। মলদ্বারে চুলকানি। শক্ত মল, প্রায়ই মিউকাসযুক্ত থাকে।

(xvi) প্রস্রাব ঘন ঘন হয়ে থাকে।

(xvii) তাড়াতাড়ি শয্যাত্যাগ খুবই ক্লান্তিকর। ঘুমের পর অবসন্নতা। স্বপ্ন- অস্বস্তিকর, আতঙ্কময় বা খুব প্রাণবন্ত স্বপ্ন।

(xviii) সকালে ঘুমের মধ্যে ঘাম। দিনের বেলায় একটুতেই, এমনকি সামান্য চলাফেরাতেও ঘাম বা ঘামহীনতা।

(xix) দুর্বল চর্ম, অতিসামান্য ক্ষতে পুঁজ হয়। হাত ও নিচের ঠোঁটের চর্ম ফাটে। হাত-পা, বাহু, উরু এবং সময়ে সময়ে বুকের চর্মের শুষ্কতা থাকে।

(xx) বৃদ্ধি- বিশ্রামে, রাতে, উত্তর ও উত্তর-পূর্ব বায়ু প্রবাহে, শীতকালে ও বসন্ত কালে বৃদ্ধি। হ্রাস- চলাফেরায়, গ্রীষ্মকালে।

প্রশ্নঃ সোরা কাকে বলে? ২০১৪ বা, সোরা বলতে কি বুঝ? ১০, ১৮

সোরার সংজ্ঞা (Psora):

ডাঃ রবার্টেসের মতে সোরা, হিব্রু শব্দ ‘সোরাট’ (Tsorat) হতে উৎপন্ন হয়েছে। ইহা পরবর্তীকালে গ্রীক ও ল্যাটিন ভাষার মধ্য দিয়ে রূপান্তরিত হয়ে Psora হয়েছে। ‘সোরাট’ (Tsorat) শব্দের অর্থ খাদ, ভুল বা দোষ, অপবিত্রতা, কলঙ্ক বা দাগ ইত্যাদি। সোরা আভিধানিক অর্থ হচ্ছে- ১। চুলকণা বা সদৃশ কিছু চর্মরোগ এবং ২। কুচ্ছুকীট বা কোষের পোকা।

সোরা হল রোগ উৎপাদনের এমন একটি কারণ যা মানবদেহে রোগ উৎপত্তি ও রোগ সংক্রমণ সৃষ্টি করে থাকে। অর্থাৎ যে সকল অদৃশ্য কারণসমূহ হতে রোগ সৃষ্টি হয়, সোরা তাদের মধ্যে অন্যতম প্রাচীন রোগবীজ। ডাঃ হ্যানিম্যান এর মতে সোরা হল মানুষের দেহে রোগ সৃষ্টিকারী আদি মায়াজম। পৃথিবীর সর্বাপেক্ষা প্রাচীন, ব্যাপক এবং মারাত্মক মায়াজম- সোরা যা মানবদেহে প্রবেশ করলে উহা সুচিকিৎসিত না হলে এমন একটি অবস্থার সৃষ্টি করে যা সারা জীবন ধরে চলতে থাকে এবং বংশ পরম্পরায় চলতে থাকে।

প্রশ্নঃ সোরার মানসিক লক্ষণ বর্ণনা কর।

সোরার মানসিক লক্ষণাবলী:

(i) অনুভূতিশীল, সতর্ক, চটপটে, নানা কল্পনায় পরিপূর্ণ কিন্তু তা কাজে পরিণত করার প্রবনতা নেই।

(ii) ভ্রান্ত বা বন্ধ্য দার্শনিক, সামান্য পরিশ্রমে মানসিক ও শারীরিক ক্লান্তি আসে।

(iii) দুঃখ ও শোক থেকে রোগের উৎপন্ন হয়, উৎকণ্ঠা ও উদ্ধেগ, আত্মবিশ্বাসহীন এবং মৃত্যু, অন্ধকার, একাকীত্ব ও ব্যর্থতার ভয়।

(iv) বর্তমান অবস্থা, পরিবেশ, আর্থিক অবস্থা ও বিবাহিতা জীবনে অতৃপ্ত।

(v) অস্থিরতা বর্তমান।

প্রশ্নঃ সোরার ধাতুগত লক্ষণসমূহ লিখ।

সোরার ধাতুগত লক্ষণসমূহঃ.

(i) চেহারা মলিন, বিমর্ষ, মেটে বর্ণেরসহ চোখ কোটরাগত, ঠোঁট দুইটি লালবর্ণের, ফোলা জ্বালা করে।

(ii) অত্যন্ত সংবেদনশীল, অনুভূতিশীল, সতর্ক, চটপটে, নানা কল্পনায় মন পরিপূর্ণ কিন্তু কাজে পরিণত করার প্রবণতা নাই।

(iii) সামান্য পরিশ্রমে মানসিক ও শারীরিক ক্লান্তি আসে।

(iv) চটপটে, ভীষণ চঞ্চলতা, সবসময় ব্যস্তবাগিস সময় খুব তাড়াতাড়ি বা খুব ধীরে কাটে।

(v) খুস্কি, মাথার চর্মে শুষ্কতা সহ অত্যন্ত চুলকানি, চুল শুষ্ক, সহজে জট বাঁধে, মাথায় স্থানে স্থানে সাদা হয়ে যায়।

(vi) কান থেকে অবিরত পাতলা দুর্গন্ধযুক্ত পুঁজ পড়ে, কর্ণমূলগ্রন্থি ফোলা, নানা রকম শব্দ, শুরশুরানি ও চুলকানি ইত্যাদি।

(vii) নাক শুদ্ধতা অনুভূতি, রক্তস্রাব, নাক বন্ধ, ঘ্রাণশক্তি অতি প্রবল বা দুর্বল ও লুপ্ত, সর্দি ঝরে, হাঁচি, ব্যথাপূর্ণ ফোঁড়া।

(viii) চর্মের বিশেষত্ব হল তীব্র চুলকানি ও জ্বালা, চুলকানি মধ্যরাতের আগে, বিছানার গরমে, পোশাক পরিবর্তনে তা খুব অসহনীয় হয়।

প্রশ্নঃ কিভাবে সোরার উৎপত্তি হয়?

বা, সোরার উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ কিভাবে হয়?

১। সংক্রমণ: চুলকনার ছোট ছোট ফুস্কুড়িসমূহের রসের মধ্যেই সোরার জীবাণু থাকে। এ রস যদি চর্মের সংস্পর্শে আসে তবে চুলকনা জীবাণু ঐ শরীরের ভিতরে প্রবেশ করে। প্রায় সব ধরনের পারিপার্শ্বিকতায় যে কোনও মানুষ এই রসের সংস্পর্শে আক্রান্ত হতে পারে।

২। আভ্যন্তরীণ বিকাশঃ

চর্মের সংস্পর্শে আসার সঙ্গে সঙ্গে এরা স্থানিক হিসাবে থাকে না। প্রথমে কিছুদিন চর্মের উপর কোনও ফুস্কুড়ি বা চুলকানি থাকে না। চর্ম অপরিবর্তনীয় ও স্বাভাবিক স্বাস্থ্যব্যঞ্জক থাকে। কিছুদিন পর যখন তার ক্রিয়া সমগ্র সত্ত্বার উপর আভ্যন্তরিক বিকাশ লাভ করে তখনই স্থানীয় লক্ষণ প্রকাশ করে থাকে।

৩। বাহ্যিক রোগের বিকাশ:

প্রাথমিক বিন্যাস- চুলকনা জীবাণুর পরিপূর্ণ আভ্যন্তরীণ বিকাশ লাভের পর তা চর্মের উপরে, ফুস্কুড়িযুক্ত চুলকনা হিসাবে বিকাশ লাভ করে। সোরা মায়াজমের রোগ লক্ষণ প্রকাশকাল ৬ থেকে ১৪ দিন। এ সময় কাল অতিবাহিত হবার পর সামান্য বা খুব বেশি হলে বিকালের দিকে শীত শীতভাব করে এবং রাতে সামান্য তাপ দিয়ে ও ঘাম হয়ে এই চুলকনার ফুস্কুড়িসমূহ চর্মে প্রকাশ পায়। একদম শুরুতে খুব অল্পই দেখা দেয়- যেন ত্বকের উত্তাপের জন্য হয়েছে। ধীরে ধীরে চর্মের উপর ছড়িয়ে পরে। প্রথম দিকে সংক্রামিত স্থানেই প্রকাশ পায়। এসব উদ্ভেদগুলিতে যে চুলকানি হয় তা ইন্দ্রিয়সুখের মত অনুভূতিযুক্ত। রোগীকে বাধ্য করায় খুব জোরে ঘষতে বা নখ দিয়ে চুলকাতে। এভাবে চুলকানোর পর কিছুক্ষণ রোগী উপশম পায় বটে কিন্তু অনেকক্ষণ পর্যন্ত তাতে জ্বালা থাকে। সন্ধ্যা থেকে প্রায় মাঝরাত পর্যন্ত ঘন ঘন চুলকানি হয় এবং আরও বেশি অসহ্যকর করে তোলে।

প্রথমদিকে চুলকনার ফুস্কুড়িগুলিতে পাতলা পানির মত রস থাকে যা অচিরেই খুঁজে পরিণত হয়ে ফুস্কুড়ির আগায় জমা হতে থাকে। অসম্ভব চুলকানির জন্য ফঙ্কুিড়িগুলি ফেটে গিয়ে রস বেরিয়ে গিয়ে রোগীর চারপাশকে, এমনকি অন্যান্য সুস্থ মানুষদেরও সংক্রমিত করে তোলে। যতদিন পর্যন্ত এসব উদ্ভেদগুলি স্বাভাবিক অবস্থায় থাকে ততদিন অভ্যন্তরিণ সোরা বা সোরার গৌণ দশা প্রকাশ পায় না। ঐ পর্যায়ে তা নিষ্ক্রিয় ও সুপ্তাবস্থায় থাকে। ঐসব অসহনীয় উদ্ভেদগুলি হলো অভ্যন্তরিস্থ রোগের প্রতিরূপ এবং এগুলি সোরার গৌণ অবস্থার অসুস্থতা থেকে রোগীকে রক্ষা করে। এ পর্যায়ে রোগীকে সুনির্বাচিত সদৃশ ঔষধ সেবন করানো হলে সহজেই আরোগ্য করা যায়।

প্রশ্নঃ সোরিক শিশুর মানসিক লক্ষণগুলি বর্ণনা কর। ০৯ বা, সোরার শিশুর মানসিক লক্ষণাবলী লিখ।

সোরিক শিশুর মানসিক লক্ষণগুলি বর্ণনা:

(i) ভীতিপূর্ণ, আশঙ্কাপরায়ন, স্বার্থপর, অপরিচ্ছন্ন, চঞ্চল ও পরিবর্তনশীল।

(ii) অপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী পাওয়ার ব্যাকুলতা।

(iii) অত্যন্ত খিটখিটে মেজাজ, রুক্ষ ও কর্কশ, মতের অমিল হলে রেগে যায়।

(iv) গোসল করতে চায় না, পরিচ্ছন্নতায় অনীহা, সব সময় নোংরাভাবে থাকে।

(v) অস্বাভাবিক দ্রব্যাদি খাওয়ার ইচ্ছা, যেমন- কয়লা, চক, পেন্সিল, পোড়ামাটি ইত্যাদি।

(vi) অস্থিরতা বর্তমান- উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠায় পরিপূর্ণ।

প্রশ্নঃসোরার প্রথম প্রকাশ মনে”- ব্যাখ্যা কর। ০৮, ১০, ১২ বা, “সোরা কুমননের ফল” ব্যাখ্যা কর। ০৯, ১১, ১৫

সোরার প্রথম প্রকাশ মনে-ব্যাখ্যা:

সোরা প্রথমে মানুষের মনকে কলুষিত করে তারপর চর্ম রোগ হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে। সোরা মানুষের মনকে বিকৃত করে, কুমনন সৃষ্টি করে এবং খারাপ কাজের জন্য মানষিকতা সৃষ্টি করে। ফলে সিফিলিস, সাইকোসিস মায়াজম দেহে প্রবেশ করার সুযোগ পায়। যেমন বিকশিত সোরা কোন ব্যক্তির মানুষিকতা কুলষিত করে দূষিত সঙ্গমের জন্য আকাংখা সৃষ্টি করে এবং দূষিত সঙ্গমের ফলে দেহে জননতন্ত্রে গনোরিয়ার জীবানু দ্বারা আক্রান্ত হয়। জীবাণু সংক্রমণের পর গনোরিয়ার লক্ষণাবলী প্রকাশিত হয়। এ গনোরিয়াকে বিসদৃশ পদ্ধতিতে চিকিৎসার ফলে জীবাণু চাপা পড়ে সাইকোসিস মায়াজম সৃষ্টি হয়। অনুরূপভাবে সিফিলিস রোগ চাপা পড়ে সিফিলিস মায়াজম সৃষ্টি হয়। সোরা, সিফিলিস এর সাথে মিলিত হয়ে অথবা সোরা সাইকোসিসের সাথে মিলিত হয়ে মিশ্র মায়াজম সৃষ্টি করে এবং সোরা, সিফিলিস ও সাইকোসিস একত্রে মিলিত হয়ে টিউবারকুলার মায়াজম সৃষ্টি করে। এ মিশ্র মায়াজম অত্যন্ত ভয়ংকর এবং বংশ পরস্পরায় পৃথিবীতে যুগযুগ ধরে মানবের ক্ষতি সাধন করে।

সুতরাং সোরা প্রথম মনের মধ্যে বিশৃঙ্খলা ‘সৃষ্টি করে, কুমননের সৃষ্টি করে। ফলশ্রুতিতে দেহে অন্যান্য মায়াজমের আর্বিভাব ঘটে। সোরা মায়াজম যদি মানুষের মানুষিকতা পরিবর্তন না করত তা হলে সিফিলিস ও সাইকোসিস কখনও মানব দেহে সংক্রমিত হতে পারত না।

প্রশ্নঃ সোরা কি? রোগ প্রবণতা সৃষ্টিতে সোরার ভূমিকা আলোচনা কর। ২০১৩, ১৫, ১৭

বা, সোরা সকল প্রকৃত চিররোগের মূলকারণ- আলোচনা কর।

প্রবণতা সৃষ্টিতে সোরার ভূমিকাঃ

মহাত্মা ডাঃ হ্যানিম্যান অর্গানন অব মেডিসিন গ্রন্থের ৫নং অনুচ্ছেদে রোগের কারণ সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। তিনি রোগের কারণকে দুইভাগে বিভক্ত করেছেন। মূল কারণ অর্থাৎ সোরা, সিফিলিস, সাইকোসি এবং উত্তেজক বা আনুসঙ্গিক কারণ। তিনি সকল দুরারোগ্য রোগের মূল কারণ হিসাবে সোরাকে চিহ্নিত করেছেন। সোরা প্রথমে মানুষের মনকে কলুষিত করে তারপর চর্ম রোগ হিসাবে আত্ম প্রকাশ করে। সোরা মানুষের মনকে বিকৃত করে, খারাপ কাজের জন্য মানষিকতা সৃষ্টি করে। ফলে সিফিলিস, সাইকোসিস মায়াজম দেহে প্রবেশ করার সুযোগ করে দেয়। যেমন- বিকশিত সোরা কোন ব্যক্তির মানসিকতা কুলষিত করে দূষিত সঙ্গমের জন্য আকাংখা সৃষ্টি করে এবং দূষিত সঙ্গমের ফলে জননতন্ত্রে গণোরিয়ার জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হয়। জীবাণু সংক্রমণের পর গণোরিয়ার লক্ষণাবলী প্রকাশিত হয়। এ গণোরিয়াকে বিসদৃশ পদ্ধতিতে চিকিৎসার ফলে জীবাণু চাপা পড়ে সাইকোসিস মায়াজম সৃষ্টি হয়। অনুরূপভাবে সিফিলিস রোগ চাপা পড়ে সিফিলিস মায়াজম সৃষ্টি হয়। সোরা, সিফিলিসের সাথে মিলিত হয়ে অথবা সোরা, সাইকোসিসের সাথে মিলিত হয়ে মিশ্র মায়াজম সৃষ্টি করে এবং সোরা, সিফিলিস ও সাইকোসিস একত্রে মিলিত হয়ে টিউবারকুলার মায়াজম সৃষ্টি করে। এই মিশ্র মায়াজম অত্যন্ত ভয়ংকর এবং বংশ পরম্পরায় পৃথিবীতে যুগযুগ ধরে মানবের ক্ষতি সাধন করে।

সুতরাং সোরা মায়াজম যদি মানুষের মানসিকতা পরিবর্তন না করত তা হলে সিফিলিস ও সাইকোসিস কখনও মানবদেহে সংক্রমিত হতে পারত না। অতএব নিঃসন্দেহে বলা যায়, সোরা প্রবণতা সৃষ্টিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

প্রশ্নঃ “সোরা সকল রোগের জননী”- ব্যাখ্যা কর।

বা, “সোরা কুমননের ফল এবং সিফিলিস ও সাইকোসিস কুকার্যের ফল”- ব্যাখ্যা কর।

সোরা সকল রোগের জননী:

ডাঃ হ্যানিম্যান “অর্গানন অব মেডিসিন” গ্রন্থের ৫নং অনুচ্ছেদে রোগের কারণ সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন তিনি রোগের কারণকে দুইভাগে বিভক্ত করেছেন। (১) মূল কারণ অর্থাৎ সোরা, সিফিলিস, সাইকোসিস। (২) উত্তেজক বা আনুসঙ্গিক কারণ। তিনি সকল দুরারোগ্য রোগের মূলকারণ হিসাবে সোরাকে চিহ্নিত করছেন। সোরা প্রথমে মানুষের মনকে কলুষিত করে তারপর চর্ম রোগ হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে। সোরা মানুষের মনকে বিকৃত করে, কুমনন সৃষ্টি করে এবং খারাপ কাজের জন্য মানসিকতা সৃষ্টি করে। ফলে সিফিলিস, সাইকোসিস মায়াজম দেহে প্রবেশ করার সুযোগ করে দেয়। যেমন- বিকশিত সোরা কোন ব্যক্তির মানুষিকতা কুলষিত করে দূষিত সঙ্গমের জন্য আকাংখা সৃষ্টি করে এবং দূষিত সঙ্গমের ফলে জননতন্ত্রে গণোরিয়ার জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হয়। জীবাণু সংক্রমণের পর গণোরিয়ার লক্ষণাবলী প্রকাশিত হয়। এই গণোরিয়াকে বিসদৃশ পদ্ধতিতে চিকিৎসার ফলে জীবাণু চাপা পড়ে সাইকোসিস মায়াজম সৃষ্টি হয়। অনুরূপভাবে সিফিলিস রোগ চাপা পড়ে সিফিলিস মায়াজম সৃষ্টি হয়। সোরা সিফিলিসের সাথে মিলিত হয়ে অথবা সোরা সাইকোসিসের সাথে মিলিত হয়ে মিশ্র মায়াজম সৃষ্টি করে এবং সোরা, সিফিলিস ও সাইকোসিস একত্রে মিলিত হয়ে টিউবারকুলার মায়াজম সৃষ্টি করে। এই মিশ্র মায়াজম অত্যন্ত ভয়ংকর এবং বংশ পরম্পরায় পৃথিবীতে যুগযুগ ধরে মানুষের ক্ষতি সাধন করে।

সুতরাং সোরা মায়াজম যদি মানুষের মানুষিকতা পরিবর্তন না করত তা হলে সিফিলিস ও সাইকোসিস কখনও মানব দেহে সংক্রমিত হতে পারত না। সোরা নিজে দৈহিক কাঠামোগত পরিবর্তন ঘটাতে পারে না। কোনও অঙ্গের কাঠামোগত বা আকৃতিগত পরিবর্তন আনয়নে সোরার সাথে নিশ্চিতভাবেই অন্য আরেকটি মায়াজম যুক্ত থাকে বা থাকবে।

অতএব উপরিউক্ত আলোচনা হতে ইহাই নিঃসন্দেহে বলা যায়, সোরা সকল রোগের জননী।

প্রশ্নঃ সিউডো সোরা কি? ১১, ১৩ বা, সিউডো সোরা সম্পর্কে যা জান লিখ। ০৯ বা, সিউডো কথাটির অর্থ কি? সিউডো সোরা কাকে বলে?

সিউডো সোরা: সিউডো শব্দের অর্থ হল অপ্রকৃত বা নকল। সিউডো

সোরা সম্পর্কে বলা যায় যে, ইহাকে সোরাজনিত লক্ষণ বলে মনে হয় কিন্তু ইহা হলো আসলে সিফিলিসের সাথে সোরার সংমিশ্রিত লক্ষণ। ভ্রমাতৃক সোরার লক্ষণসমূহকে সিউডো সোরা বলে। আবার অর্জিত সিফিলিস সোরার সঙ্গে যখন দেহের মধ্যে মিশ্রিত হয় এবং সে সিফিলিসকে বাহির থেকে চাপা দেয়া হয় বা বিসদৃশ পন্থায় চিকিৎসায় অন্তঃপ্রবিষ্ট করে দেয়া হয়। তখন তার পরিণতি স্বরূপ দেহাভ্যন্তরে যে গভীর দোষের সৃষ্টি হয়, তাকে সিউডোসোরা বলে।

১২। প্রশ্নঃ ফুলা কি? ১৪

বা,শ্রুফিউলা কাকে বলে? ক্রুফিউলা ডায়ইথসিস কিভাবে গঠিত হয়? ১৮

ফিউলা : ফিউলা হচ্ছে সোরা ও সিফিলিস মায়াজমের সংমিশ্রণজাত অবস্থা। তবে দোষের অবস্থা হিসাবে এটি একটি পৃথক প্রকৃতির। সোরা ও সিফিলিসের সংমিশ্রণজাত দোষ যখন স্কুল ঔষধ প্রয়োগে চাপা দেয়া হয় এবং বিভিন্ন পরিবেশ অবস্থায় এসে যখন রোগীর দেহের গ্রন্থিসমূহকে বিশেষ করে লসিকা গ্রন্থি আক্রমণ করে আধিপত্য বিস্তার করে, তখন তাকে, ব্রুফিউলা বলে।

প্রশ্নঃ সোরার চরিত্রগত/ নির্দেশক লক্ষণগুলি লিখ। ২০১০, ১৮ বা, বিকশিত সোরার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য লিখ।

সোরার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ:

(i) অত্যন্ত সংবেদনশীল, অনুভূতিশীল, সতর্ক, চটপটে, নানা কল্পনায় মন পরিপূর্ণ কিন্তু কাজে পরিণত করার প্রবণতা নাই।

(ii) সামান্য পরিশ্রমে মানসিক ও শারীরিক ক্লান্তি আসে, দুঃখ ও শোক থেকে রোগের উৎপত্তি হয়।

(iii) স্মৃতিশক্তি দুর্বলতা, ভয়, হতাশা, উদ্বেগ, বিষন্ন।

(iv) চটপটে, ভীষন চঞ্চলতা, সবসময় ব্যস্তবাগিস সময় খুব তাড়াতাড়ি বা খুব ধীরে কাটে।

(v) সহজেই আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়ে, আত্মবিশ্বাস প্রত্যাশা করে কিন্তু অক্ষম।

(vi) উদরাময়, প্রচুর পরিমাণ প্রস্রাব ও ঘাম নির্গত হলে রোগীর আরামবোধ।

(vii) চোখ বুজলে, হাঁটার সময়, যানবাহনে চড়লে, সমুদ্র ভ্রমণকালে বমি বমিভাব ও বমি এবং মাথাঘোরা।

(viii) খুস্কি, মাথার চর্মে শুষ্কতা সহ অত্যন্ত চুলকানি, চুল শুষ্ক, সহজে জট বাঁধে, মাথায় স্থানে স্থানে সাদা হয়ে যায়।

(ix) সূর্যের আলো অসহ্য, খুব সংবেদনশীল তাতে চোখের ব্যথা হয় এবং চোখ বুজে যায়, প্রদাহ চোখের কোণে পুঁজের মত স্রাব, চুলকানি ও জ্বালা।

(x) কান থেকে অবিরত পাতলা দুর্গন্ধযুক্ত পুঁজ পড়ে, কর্ণমূলগ্রন্থি ফোলা, নানা রকম শব্দ, শুরশুরানি ও চুলকানি ইত্যাদি।

(xi) নাক শুষ্কতা অনুভূতি, রক্তস্রাব, নাক বন্ধ, ঘ্রাণশক্তি অতি প্রবল বা দুর্বল ও লুপ্ত, সর্দি ঝরে, হাঁচি, ব্যথাপূর্ণ ফোঁড়া।

(xii) চেহারা মলিন, বিমর্ষ, মেটে বর্ণেরসহ চোখ কোটরাগত, ঠোঁট দুটি লাল বর্ণের, ফোলা জ্বালা করে।

(xiii) জ্বরে মুখমন্ডল খুব লালচে দেখায়, উত্তপ্ত ও উজ্জ্বল দেখায়।

(xiv) মুখের ভিতরের শ্লৈষ্মিকঝিল্লীতে প্রদাহ, দুর্গন্ধযুক্ত টক, মিষ্টি, পচা পুতিগন্ধময়, তিক্ত স্বাদ। রাতে বা সকালে মুখে শুষ্কতা অনুভূতি।

(xv) মিষ্টি, অম্ল, টকজাতীয় খাদ্যে আকাংখা, গরম খাদ্য ও পানীয়ে, ভাজা জাতীয় ও পাকা ফলের ইচ্ছা, সিদ্ধ খাদ্যে অনিচ্ছা।

(xvi) সমস্ত শরীরে ঝাকুনিসহ প্রচন্ড হৃদস্পন্দন, দুর্বলতা উদ্বেগ, ভীতি, পূর্ণতা ও ভার ভার অনুভূতি।

(xvii) সব সময় ক্ষুধার্ত, এমনকি পেট ভর্তি থাকলেও, পেটের মধ্যে পাথরের মত চাপবোধ, আহারের পর পেটের মধ্যে কম্প, ধড়ফড়ানি, গুড়গুড় কলকল শব্দ।

(XVIII) মলদ্বারে চুলকানি, মাশক্ত, ২৭, নির্গমনে কষ্ট।

(xix) চর্মের বিশেষত্ব হল তীব্র চুলকানি ও জ্বালা, চুলকানি মধ্যরাতের আগে, বিছানার গরমে, পোশাক পরিবর্তনে তা খুব অসহনীয় হয়।

(XX) স্বপ্ন-দুঃখদায়ক, আতংকজনক, উদ্বেগপূর্ণ, কামোদ্দীপক দেখে।

(xxi) বৃদ্ধি- দাঁড়ালে, ঘরের উত্তাপে, খাওয়ার পর, পূর্ণিমায়, সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত, চর্মরোগ ও স্রাব চাপা পড়লে বৃদ্ধি।

(xxii) হ্রাস- হাঁটলে, শুয়ে থাকলে, বিশ্রামে, ধীরে সঞ্চালনে, তাপে, চর্মরোগ ও স্রাব পুনঃপ্রকাশিত হলে।

১৪। প্রশ্নঃ সোরার রোগীর মস্তিষ্কের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

সোরার রোগীর মস্তিষ্কের লক্ষণাবলী:

(i) প্রাতঃকালীন মাথাব্যথা। সূর্য যত উপরের দিকে উঠতে থাকে মাথাব্যথা তত বাড়তে থাকে এবং যত অস্ত যাওয়ার সময় এগিয়ে আসে মাথাব্যথা তত কমতে থাকে।

(ii) মাথাব্যথার সময় মুখমন্ডল রক্তিম হয়ে উঠে বা করোটির ধমনী দপদপ করে। গরম কিছু প্রয়োগ করলে, চুপচাপ শান্ত হয়ে থাকলে, বিশ্রামে ও ঘুমালে হ্রাস।

(iii) উদ্ভেদ চাপা দেয়ার পর বা উদ্ভেদ চলে যাবার পর মাথাব্যথা।

(iv) মাথাব্যথার আগে বা সময়ে অত্যন্ত ক্ষুধা।

(v) মাথা ও মুখের চর্মের টান টান অনুভূতি।

(৫) গাম্পার চর্মের শুদ্ধতাসহ মাতাল চলকানি

(vii) খুস্কি- চুলকানিসহ বা ছাড়াই খুস্কিতে ভাত। মাথার চর্মের উপর মামড়ি।

(viii) মাথা সবসময় নোংরা দেখায় এবং চুল যেন তপ্ত ও শুকনো।

(ix) টাক বা টাকের মত দাগ- প্রায়ই মাথার চুল উঠে যায়, সামনের দিকে, চাঁদিতে, তালুতে।

(x) চুল ঔজ্জ্বল্যবিহীন, শুদ্ধ, সহজেই জট বাঁধে, ভঙ্গুর ও চিড় ধরে। চুল এতই শুদ্ধ যে না ভেজালে আঁচড়ানো যায় না।

(xi) মাথায় হঠাৎ রক্তাধিক্য ঘটে ও গরম এবং বেশী রৌদ্র-তাপ সহ্য হয় না।

(xii) মস্তিষ্কে গুঞ্জন, ঝিনঝিন, বজ্রপাতের মত বা হাতুড়ি মারার মত গোলমাল গর্জন।

১৫। প্রশ্নঃ সোরার রোগীর চোখ ও দৃষ্টিশক্তির লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

সোরার রোগীর চোখ ও দৃষ্টিশক্তির লক্ষণাবলী:

(i) দিনের আলোয় চোখ খুব সংবেদনশীল তাতে চোখে ব্যথা হয় এবং আপনা আপনি চোখ বুজে যায়।

(ii) চোখের যেকোনও রোগে চুলকানি আর জ্বালা থাকে।

(iii) আলোকাতঙ্ক- দিনের আলো বা সূর্যের আলো অসহ্য।

(iv) চোখের কোণ থেকে পুঁজের মত স্রাব।

(v) বিভিন্ন রকম চোখের প্রদাহ। তার সাথে চোখের পাতায় অত্যধিক চুলকানি ও জ্বালা।

(vi) চোখের পাতা বিশেষ করে সকালবেলায় যেন বুজে থাকে। চোখ খুলতে পারে না। চোখের পাতা এত ভারী মনে হয় যে আক্ষেপ হবার মত অসাড়ে চোখ বুজে আসে।

(vii) চোখের পাতার কিনারায় শুকনো শ্লেষ্মা।

(viii) চোখের সামনে মনে হয় মাছির মত কালো কালো বিন্দু বা জাল- সবই ভাসতে থাকে, বিশেষত সূর্যের দিকে তাকালে (হ্যানিম্যান)।

(ix) কর্ণিয়ার উপর অস্বচ্ছ বিন্দু। চোখ ফোলা। চোখে ছানি, টেরা দৃষ্টি (হ্যানিম্যান)।

(x) দূরদৃষ্টিসম্পন্ন- দুরদৃষ্টি ভাল কিন্তু কাছের ছোট বস্তুও পরখ করতে পারে না। অদূরদৃষ্টি, কেবল চোখের খুব কাছে আনলেই তা দেখতে পায়। আবার যত দূরে যায় ততই কম দেখতে পায়, তবে অতিদূরের কোনও কিছুই দেখতে পায় না।

১৬। প্রশ্নঃ সোরার রোগীর কানের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

সোরার রোগীর কানের লক্ষণাবলীঃ

(i) কান থেকে অবিরত পাতলা, সাধারণত দূর্গন্ধযুক্ত পুঁজ পড়ে।

(ii) শ্রবণেন্দ্রিয় অতিমাত্রায় উত্তেজনাপ্রবণ ও অনুভূতি সম্পন্ন।

(iii) কানের বহির ভাগে সূচ ফুটানো ব্যথা।

(iv) কানে উচ্চশব্দযুক্ত বা তা ছাড়াই বিভিন্ন ধরনের বধিরতা, এমনকি সম্পূর্ণ বধির। আবহাওয়ার তারতম্যে মাঝে মধ্যে বাড়ে।

(v) প্যারোটিড গ্ল্যান্ডে ফোলা।

(vi) কানের মধ্যে নানা রকম শব্দ ও আওয়াজ হতে থাকে।

(vii) কানের ভিতরে শুরশুরানি ও চুলকানি অনুভূত হয়।

(viii) কানে শুদ্ধতা ও কাঁপানোবোধ মনে হয়।

(ix) শ্রবণ শক্তি প্রতিবর্তক (রিফ্লেক্স) ধরনের বা স্নায়বিক প্রকৃতির হয়।

১৭। প্রশ্নঃ সোরার রোগীর নাকের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

সোরার রোগীর নাকের লক্ষণাবলী:

(i) নাক থেকে রক্তস্রাব পরিমাণে কখনো বেশি বা কম। কখনও ঘন

ঘন বা অনেক দিন পরপর নাক থেকে রক্ত পড়ে।

(ii) নাকে শুষ্কতা অনুভূতি- এমনকি বায়ু চলাচল করলেও শুদ্ধ লাগে।

(iii) ঘ্রাণশক্তি অতি প্রবল। আবার ঘ্রাণশক্তি লুপ্ত।

(iv) নাসারন্ধ্র বন্ধ, নাকে টিউবারকুলোসিস।

(v) কোন ধরনের গন্ধ সহ্য হয় না। বমিভাব, মাথাধরা, মাথাঘোরা আরম্ভ হয়।

(vi) নাকে মাংস বৃদ্ধি বা পলিপাস- ঘ্রাণশক্তিহীনতা।

(vii) সর্দি পাতলা পানির মত, ঝাঁঝালো ধরনের। নাকের সেপ্টামে ব্যথাযুক্ত ফোঁড়া ও রসবটি।

প্রশ্নঃ সোরার চর্ম রোগের বৈশিষ্ট্য লিখ। ২০০৯, ১১, ১৩, ১৭ বা, সোরার রোগীর চর্মের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

সোরার চর্ম রোগের বৈশিষ্ট্য:

(i) চর্মের বিশেষত্ব হল তীব্র চুলকানি ও জ্বালা, চুলকানি মধ্যরাতের আগে, বিছানার গরমে, পোশাক পরিবর্তনে তা খুব অসহনীয় হয়।

(ii) মলদ্বারে চুলকানি, মল শক্ত, শুষ্ক, পরিমাণে কম, কোষ্ঠবদ্ধতা, নির্গমনে কষ্ট।

(iii) খুস্কি, মাথার চর্মে শুষ্কতাসহ অত্যন্ত চুলকানি, চুল শুষ্ক, সহজে জট বাঁধে, মাথায় স্থানে স্থানে সাদা হয়ে যায়।

(iv) সামান্য পরিশ্রমে মানসিক ও শারীরিক ক্লান্তি আসে, দুঃখ ও শোক থেকে রোগের উৎপত্তি হয়।

(v) স্মৃতিশক্তি দুর্বলতা, ভয়, হতাশা, উদ্বেগ, বিষন্ন।

(vi) চটপটে, ভীষন চঞ্চলতা, সবসময় ব্যস্তবাগিস সময় খুব তাড়াতাড়ি বা খুব ধীরে কাটে।

(vii) দাঁড়ালে, ঘরের উত্তাপে, খাওয়ার পর, পূর্ণিমায়, সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত, চর্মরোগ ও স্রাব চাপা পড়লে বৃদ্ধি।

(viii) হ্রাস- হাঁটলে, শুয়ে থাকলে, বিশ্রামে, ধীরে সঞ্চালনে, তাপে, চর্মরোগ ও স্রাব পুনঃপ্রকাশিত হলে।

প্রশ্নঃ সোরিক রোগীর খাদ্যের ইচ্ছা-অনিচ্ছা লিখ। ১০, ১১, ১৩ বা. সোরাগ্রস্থ রোগীর খাদ্যের ইচ্ছা অনিচ্ছা লিখ। ০৮ বা, সোরা বলতে কি বুঝ? সোরিক রোগীর খাদ্যের ইচ্ছা-অনিচ্ছা লিখ। ১০, ১১, ১৩, ১৮

সোরিক রোগীর খাদ্যের ইচ্ছা-অনিচ্ছা:

খাদ্যে ইচ্ছা-

(i) মিষ্টি, টক, ভাজা জিনিস ইত্যাদি খাওয়ার ইচ্ছা, উত্তেজক জিনিস। যেমন- চা, কফি, তামাক প্রভৃতিতে আকাংখা স্নায়ুমন্ডলীকে সতেজ করার জন্য।

(ii) ভাজা জাতীয় ও পাকা ফলের আকাংখা।

(iii) গরম খাদ্য ও পানীয় আকাংখা।

(iv) চিনি, মিশ্রি, সিরাপ ইত্যাদি পছন্দ।

অনিচ্ছাঃ

গরম খাদ্য ও মাংস খাওয়ার আকাংখা, কিন্তু সিদ্ধ খাদ্যে অনিচ্ছা।

৩২। প্রশ্নঃ সোরার রোগীর রোগলক্ষণসমূহের হ্রাস-বৃদ্ধি লিখ। সোরার রোগীর রোগলক্ষণসমূহের হ্রাস-বৃদ্ধি:

বৃদ্ধি: দাঁড়ালে, ঘরের উত্তাপে, খাওয়ার পর, পূর্ণিমায়, মাসিকের সময় এসে গেলে (মহিলাদের ক্ষেত্রে), সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত, চর্মরোগ ও স্রাব চাপা পড়লে, ঘুমের পর।

উপশম/হ্রাস: হাঁটলে, শুয়ে থাকলে এবং বিশ্রামে, ধীর সঞ্চালনে, তাপে, কান্নাকাটি করলে, চর্মরোগ ও প্রাকৃতিক স্রাব পুনঃপ্রকাশিত হলে।

প্রশ্নঃ সোরা গঠিত রোগীর পাঁচটি রোগের নাম লিখ। ০৮ বা, সোরা দোষ হতে উৎপন্ন কয়েকটি রোগের নাম লিখ।

সোরা গঠিত রোগীর পাঁচটি রোগের নাম:

(i) টনসিলাইটিস,

(ii) উদরাময়,

(iii) আমাশয়,

(iv) হাম,

(v) বসন্ত।

৩৪। প্রশ্ন: এন্টিসোরিক ঔষধ কাকে বলে? দশটি এন্টিসোরিক ঔষধের নাম লিখ।

এন্টিসোরিক ঔষধঃ

যে সকল ঔষধ সুস্থ ব্যক্তির দেহে প্রয়োগ করলে দেহে খোস-পঁচড়া ও চর্মরোগের সদৃশ লক্ষণ সৃষ্টি করতে পারে এবং সোরা মায়াজমে আক্রান্ত ব্যক্তির দেহে প্রয়োগ করলে উহা সমূলে নিরাময় করতে পারে, সে সকল ঔষধসমূহকে এন্টিসোরিক ঔষধ বলে।

দশটি এন্টিসোরিক ঔষধের নামঃ

(i) অ্যালুমিনা,

(ii) অ্যামোনিয়াম কার্বনিকাম,

(iii) কস্টিকাম,

(iv) এপিস মেলিফিকা,

(v) আর্সেনিক এলবাম,

(vi) আর্সেনিক আয়োড,

(vii) অ্যান্টিমোনিয়াম ক্রুডাম,

(viii) গ্র্যাফাইটিস, 

(ix) সালফার ও (x) নেট্রাম মিউরিটিকাম।

প্রশ্নঃ : কনজাম্পশন বা সাইকো-সোরা কাকে বলে? ২০০৯ বা, কনজাম্পশন কি? ইহা কিভাবে সৃষ্টি হয়? ১৮

কনজাম্পশন বা সাইকো-সোরা:

সোরার সাথে সাইকোসিসের প্রাধান্যযুক্ত সংমিশ্রণজাত টিউবারকুলার অবস্থা যখন বয়ষ্কদের শুষ্কতা ও শীর্ণতাযুক্ত ক্ষয় উৎপাদন করে তখন, তাকে কনজাম্পশন বা সাইকো-সোরা বলে। ইহা সোরা সাথে সাইকোসিসের সংমিশ্রনে উৎপত্তি হয়। কনজামশান অবস্থায় ক্ষত ও পচনের পরিবর্তে একটি ক্রমিক শীর্ণতা দেখা দেয়।

প্রশ্নঃ কনজাম্পশনের লক্ষণাবলি বর্ণনা কর। ২০১৮

কনজাম্পশনের লক্ষণাবলি বর্ণনা:

খাবার চাহিদা বেশি কিন্তু হজমক্রিয়া সঠিকভাবে হয় না বা অঙ্গীভূত হয় না। সার্বদৈহিক পরিপোষনের কাজ বাধাপ্রাপ্ত হয় বিপাকের বিশৃঙ্খলাহেতু। এর ফলে শীর্ণতা দেখা দেয়, প্রচন্ড পিপাসা পায় ও

টিস্যুসমূহের শুষ্কতা জন্মে। অসমন্বয়, অঙ্গ শুকিয়ে শিশুকে খর্বাকৃতি বা অঙ্গহানি প্রকাশিত হয়। হাত পায়ে আঙ্গুলের সংখ্যা কম বা বেশি, হৃদপিন্ডের ভাল্বসমূত্রের ক্ষয় বা অস্বাভাবিকতা। অল্প বয়সে চুল পাকে অত্যাধিক চুল পাকে। মাথার চর্মের স্থানে স্থানে ছোট গোল আকারে চুল উঠে যায়। মাথায় আঁশটে গন্ধ। স্রেণাসহ পাতলা মল তেড়ে বেরিয়ে আসে, গন্ধযুক্ত, হাজাকারক, সবুজবর্ণের, পেটে সর্বদা খামটে ধরা যন্ত্রণা।

প্রশ্নঃ সিউডো সোরা ও ব্রুফিউলার মধ্যে প্রভেদ কি? ১২ বা, ব্রুফিউলা সিউডো-সোরা হতে যাঘ্রাত্মক কেন? ব্যাখ্যা কর।

সিউডো সোরা ও ব্রুফিউলার মধ্যে প্রভেদ:

সিউডো সোরা।

সিউডো শব্দের অর্থ হল অপ্রকৃত বা নকল। সিউডোসোরা সম্পর্কে বলা যায় যে, ইহাকে সোরাজনিত লক্ষণ বলে মনে হয় কিন্তু ইহা হলো আসলে সিফিলিসের সাথে সোরার সংমিশ্রিত লক্ষণ। আবার অর্জিত সিফিলিস সোরার সঙ্গে যখন দেহের মধ্যে মিশ্রিত হয় এবং সে সিফিলিসকে বাহির থেকে চাপা দেয়া হয় বা বিসদৃশ পন্থায় চিকিৎসায় অন্তঃপ্রবিষ্ট করে দেয়া হয়। তখন তার পরিণতি স্বরূপ দেহাভ্যন্তরে যে গভীর দোষের সৃষ্টি হয়, তাকে সিউডোসোরা বলে।

ফিউলা:

স্ক্রফিউলা হচ্ছে সোরা ও সিফিলিস মায়াজমের সংমিশ্রণজাত অবস্থা। তবে দোষের অবস্থা হিসাবে এটি একটি পৃথক প্রকৃতির, সোরা ও সিফিলিসের সংমিশ্রণজাত দোষ যখন স্কুল ঔষধ প্রয়োগে চাপা দেয়া হয় এবং বিভিন্ন পরিবেশ অবস্থায় এসে যখন রোগীর দেহের গ্রন্থিসমূহকে বিশেষ করে লসিকা গ্রন্থি আক্রমণ করে আধিপত্য বিস্তার করে, তখন তাকে ফিউলা বলে।

৩৮। প্রশ্নঃ স্ট্রমা কাকে বলে?

কনজামশানকে কখন স্ট্রমা বলা হয়?

স্ট্রমার সংজ্ঞা: সোরার সাথে সাইকোসিসের প্রাধান্যযুক্ত সংমিশ্রণজাত টিউবারকুলার অবস্থাটি যখন শুষ্কতা ও শীর্ণতাযুক্ত ক্ষয় উৎপন্ন করে তখন তাকে কনজামশান বলে। এই শীর্ণতা বা শুষ্কতাজনিত ক্ষয় যদি শিশু দেহে দৃষ্ট হয় এবং রিকেটের ন্যায় অবস্থা সৃষ্টি করে, তাকে স্টুমা বলে।

প্রশ্নঃ সোরার চিকিৎসা পদ্ধতি বর্ণনা কর। ২০১৪, ১৫, ১৭

সোরার চিকিৎসা পদ্ধতি বর্ণনা:

সোরাগ্রস্ত রোগীর চিকিৎসায় সুপ্ত অথবা বিকশিত যে কোন অবস্থাতেই রোগীর মানসিক, সার্বদৈহিক নির্দেশক ও ধাতুগত লক্ষণাবলী এবং বংশগত, ব্যক্তিগত ও অতীত রোগের ইতিহাস পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে সংগ্রহ করে লক্ষণসমষ্টির সামগ্রীক চিত্র দ্বারা রোগীলিপি তৈরী করে এরূপ একটি ঔষধ নির্বাচন করতে হবে যা এন্টিসোরিক এবং রোগীর ধাতুগত অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে সক্ষম। সদৃশ এন্টিসোরিক ঔষধ প্রয়োগ করার পরে রোগীর ইতিপূর্বে চাপাপড়া কোন রোগলক্ষণ থাকলে তা পুনরায় প্রকাশিত হবে এবং পূর্বাপেক্ষায় অধিকতর কষ্ট বৃদ্ধি পায়। যেমন- এ্যাজমা রোগলক্ষণ আরোগ্যের জন্য ঔষধ প্রয়োগ করার পরে চর্মরোগ ফিরে আসে।

পূর্বের চাপাপড়া লক্ষণ পুনরাবির্ভূত হয়ে যদি দীর্ঘকাল স্থিতিশীল থাকে এবং রোগীর অভ্যন্তরীন রোগলক্ষণসমূহ ক্রমশঃ দূরীভূত হতে থাকে তা হলে পূর্বে প্রয়োগকৃত ঔষধ অপেক্ষাকৃত উচ্চশক্তি পুনরায় প্রয়োগ করতে হবে। যদি চাপা দেয়া লক্ষণসমূহ • প্রকাশ পাবার পরও রোগী সামগ্রিকরূপে সুস্থতা অনুভব না করে তাহলে,

 সাইকোসিস মায়াজম

প্রশ্নঃ সাইকোসিস দোষ এর সংজ্ঞা দাও। ০৯ বা, সাইকোসিস কাকে বলে?

সাইকোসিস (sycosis): সাইকোসিস হচ্ছে ডাঃ হ্যানিম্যানের আবিষ্কৃত ক্রণিক তিনটি মায়াজমের একটি যা সর্বাপেক্ষা মারাত্মক। ইহার ধ্বংসাত্মক প্রকৃতি মানুষের বিস্মৃতি, ভুলো মন, অমনোযোগী। কথা ধীরে বলে, দ্রুত উত্তর দিতে অক্ষম, কথা খুজে পায় না। ব্যবহারেও অসমন্বয় যথা- সত্যকথা বলে না। অত্যধিক সন্দেহ পরায়ন হিংসুটে, রাগী। রুক্ষ ও নিষ্ঠুর প্রকৃতির। গোপন করা স্বভাব।

প্রশ্নঃ যৌন রোগ কাকে বলে? সিফিলিস ও গণোরিয়াকে যৌন রোগ বলা হয় কেন? ১০, ১৪, ১৭ বা, যৌন রোগ কাকে বলে? বর্ণনা দাও। ১৪

যৌন রোগ:

যে সকল রোগ পুরুষ ও মহিলার মুক্ত যৌনমিলনের ফলে আক্রান্ত পুরুষ হতে সুস্থ্য মহিলার দেহে এবং আক্রান্ত মহিলা হতে সুস্থ্য পুরুষের দেহে সংক্রমিত হয়, তাকে যৌনরোগ বলে।

সিফিলিস ও গণোরিয়াকে যৌন রোগ বলার কারণ:

সিফিলিস ও গণোরিয়াকে যৌন রোগ বলার কারণ হচ্ছে এ রোগগুলো সাধারণতঃ দূষিত যৌন মিলনের ফলে সৃষ্টি হয়। এই রোগসমূহকে সেক্সসুয়াল ট্রান্সমিটেট ডিজিজও বলা হয়।

৩। প্রশ্নঃ গণোরিয়া কাকে বলে?

গণোরিয়ার সংজ্ঞা: নাইসেরিয়া গনোরি নামক ব্যাকটেরিয়া পুরুষ বা মহিলার জননতন্ত্রে সংক্রমিত হয়ে গণোরিয়া রোগ উৎপন্ন করে। ইহা দ্বারা জননতন্ত্রে পুঁজ উৎপত্তিসহ বিভিন্ন রোগ লক্ষণ প্রকাশিত হয়।

৪। প্রশ্ন: গণোরিয়া ও সাইকোসিসের মধ্যে পার্থক্য লিখ।

গণোরিয়া ও সাইকোসিসের মধ্যে পার্থক্য:

গণোরিয়া

নাইসেরিয়া গনোরি নামক ১ ব্যাকটেরিয়া পুরুষ বা মহিলার জননতন্ত্রে সংক্রমিত হয়ে গণোরিয়া রোগ উৎপন্ন করে।

ইহা একটি সংক্রামক যৌন রোগ।

ইহা শুধুমাত্র অর্জিতরূপে রোগীর দেহে এসে থাকে।

ইহাতে প্রস্রাব ত্যাগে কষ্টকর অবস্থা ৪ ও জ্বালাপোড়া বিদ্যমান থাকে।

ইহাতে জেনিটাল অর্গানে প্রদাহ, ৫ জ্বালা, ব্যথা ও পুঁজস্রাব হয়।

সাইকোসিস

সাইকোসিস হচ্ছে ডাঃ হ্যানিম্যানের আবিষ্কৃত ক্রণিক তিনটি মায়াজমের একটি যা সর্বাপেক্ষা মারাত্মক। ইহার ধ্বংশাত্মক প্রকৃতি মানুষের বিস্মৃতি, ভুলো মন, অমনোযোগী।

ইহা একটি ধাতুগত অবস্থা বা মায়াজমেটিক অবস্থা।

ইহাতে রোগীরদেহে অর্জিত ও বংশানুক্রমিক উভয়রূপে আসতে পারে।

ইহাতে প্রস্রাব ত্যাগে কষ্টকর অবস্থা ও জ্বালাপোড়া বিদ্যমান থাকে না।

ইহাতে জেনিটাল অর্গানে প্রদাহ, জ্বালা, ব্যথা ও পুঁজস্রাব হয় না।

৫। প্রশ্নঃ গণোরিয়ার চিকিৎসা পদ্ধতি আলোচনা কর।

গণোরিয়ার চিকিৎসা পদ্ধতি আলোচনা:

(i) লক্ষণানুসারে হোমিওপ্যাথিক ঔষধ দিতে হবে।

(ii) আক্রান্ত অঙ্গ এন্টিসেপ্টিক লোশন দ্বারা ডেসিং করতে হবে।

(iii) রোগী বিছানায় বিশ্রামে রাখতে হবে।

(iv) তাপমাত্রা ও ব্লাড প্রেসার নিয়মিত চেক করতে হবে।

(v) রোগীকে তাজা ফল ও শাকসব্জি খেতে দিতে হবে।

(vi) ধুমপান ও মদ্যপান নিষেধ।

(vii) অতিরিক্ত মশলাযুক্ত খাদ্য নিষেধ।

(viii) সহজপাচ্য তরল ও অর্ধতরল পুষ্টিকর খাদ্য দিতে হবে।

(ix) রোগীর ব্যবহৃত কাপড় ও অন্যান্য বস্তু এন্টিসেপ্টিক দ্রব্য দ্বারা ধৌত করতে হবে।

(x) রোগীর মল-মূত্র নির্দিষ্ট স্থানে ফেলতে হবে।

৬। প্রশ্নঃ সুপ্ত সাইকোসিসের লক্ষণাবলী লিখ।

সুপ্ত সাইকোসিসের লক্ষণাবলী:

(i) মন- বদ্ধমূল ধারণা, সন্দেহ প্রবণ, অস্থিরতা, ঈর্ষাপরায়ন, নিষ্ঠুর প্রকৃতির। সাম্প্রিতিক ঘটনাবলী ভুলে যায়, কিন্তু অনেক পুরানো ঘটনা হুবহু মনে থাকে।

(ii) মাথায় গোলাকার টাক পড়ে।

(iii) নাক রক্তিমবর্ণের দেখায়।

(iv) সন্ধি- বাতগ্রস্থ।

(v) নখ- মোটা, অনমনীয়, ঢেউ খেলানোর মত।

(vi) মহিলাদের সাদাস্রাব নোনা মাছের গন্ধযুক্ত।

(vii) রক্তহীনতা।

(viii) তরুণ রোগ খুব ধীরে ধীরে আরোগ্য হয় বা রোগ ভোগার পর দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে অনেক সময় লাগে।

(ix) আঁচিল- আঁচিলের মত বিবৃদ্ধি বা জরুল।

(x) বৃদ্ধি- স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায়, মশলাযুক্ত খাদ্য, মদ, মাংস অসহ্য ও বৃদ্ধি পায়।

(xi) হ্রাস- হাঁটলে বা হালকা ব্যায়ামে, প্রাকৃতিক স্রাবে।

প্রশ্নঃ গণোরিয়া হতে কিভাবে সাইকোসিসের উৎপত্তি হয়? ১০,১৬ বা, সাইকোসিস এর উৎপত্তি কিরূপে হয়? ২০১৪, ১৭

গণোরিয়া হতে সাইকোসিস এর উৎপত্তি:

নাইসেরিয়া গণোরি নামক ব্যাকটেরিয়া পুরুষ বা মহিলার জননতন্ত্রে সংক্রমিত হয়ে গণোরিয়া রোগ উৎপন্ন করে। ইহা দ্বারা জননতন্ত্রে পুঁজ উৎপত্তিসহ বিভিন্ন রোগ লক্ষণ প্রকাশিত হয়। এ গনোরিয়া স্রাবকে বি-সদৃশ চিকিৎসা পদ্ধতির সাহায্যে চাপা দিলে সাইকোসিস মায়াজম সৃষ্টি হয়। চিররোগের কারণ ও প্রকৃত আরোগ্য জন্য গবেষণা করতে গিয়ে ডাঃ হ্যানিম্যান ইহা আবিষ্কার করেন।

৮। প্রশ্ন: সাইকোসিসের ধাতুগত লক্ষণসমূহ লিখ। সাইকোসিসের ধাতুগত লক্ষণসমূহঃ

(i) সাইকোসিস সর্বক্ষেত্রেই অসমন্বয় দেখা যায়। অস্বাভাবিক অঙ্গ বৃদ্ধি, যথা- টনসিল, টিউমার, গ্ল্যান্ড ইত্যাদিসহ আঁচিল, কন্ডাইলোমেটা, ফাইব্রাস টিউমার বা ফাইব্রোসিস দেখা দেয়।

(ii) দৈহিক গঠনগত অস্বাভাবিকতা, যেমন- হাত-পায়ে আঙ্গুলের সংখ্যা কম বা বেশি, হৃদপিন্ডের ভাল্বসমূহের ক্ষয় বা অস্বাভাবিকতা।

(iii) ছোট বৃত্তাকার একাংশে টাক। চুলে আঁশটে গন্ধ, শিশুদের টক গন্ধময়। মাথার চুল বৃত্তাকার হয়ে উঠে যায় এবং দাড়ি ঝরে পড়ে।

(iv) নাকের ক্ষতবিহীন ঘ্রানশক্তিহীনতা। নাকের মধ্যে আঁশটে গন্ধ। মাছের স্বাদের মতো বা বিস্বাদ।

(v) চর্ম- শক্ত পিন্ড আকারের অথচ তাতে কোন ব্যথা বা চুলকানি থাকে

না। আঁচিল, টিউমার, দাড়ির একজিমা দেখা যায়। মুখের চর্ম তৈলাক্ত।

(vi) নখ- অসমান, ভঙ্গুর, লম্বালম্বি উঁচু রেখাযুক্ত, বিকৃত, কুগঠিত।

১। প্রশ্ন: সাইকোসিসের মানসিক লক্ষণাবলী লিখ।

সাইকোসিসের মানসিক লক্ষণাবলী:

(ⅰ) বদমেজাজী। খিটখিটে। রাগের পর খিচুনি।

(ii) আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় মত ভারাক্রান্ত ও আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়ে।

(iii) সন্দেহবাতিক। যখন আত্মবিশ্বাস নষ্ট হয়ে যায় তখন সন্দেহপ্রবণতা ব্যাপ্ত হয়ে পড়ে।

(iv) সে যা বলেছিল বা করেছিল তা পুনরুক্তি করতে থাকে। যা বলতে বা করতে চেয়েছিল তা পেরেছে কিনা সেবিষয়ে সন্দিগ্ধ হয়েই পুনরুক্তি করে। সে যা বুঝাতে চেয়েছিল তা অন্যরা ভুল বুঝেছে বলে সন্দেহ করে।

(v) যখন এই সন্দেহ কোনও বন্ধুর প্রতি ঘটে তখন চরম প্রকৃতির ঈর্ষায় পর্যবসিত হয়, কারণ সে মনে করে বন্ধুরা তাকে সঠিকভাবে বুঝতেই পারেনি।

(vi) সবকিছু গোপন করার আশ্চর্য্য রকমের প্রবণতা।

(vii) কিছু লিখতে বা বলতে গেলে একই কথা বারংবার পুনরাবৃত্তি করে- তার সন্দেহ হয় যে সে তার বক্তব্যটি সঠিকভাবে প্রকাশ করতে পারেনি।

(viii) কোনও একটি বিষয় নিয়ে সে গভীরভাবে ভাবতে থাকে।

(ix) উন্মুক্ত অপরাধী ও অধিকাংশ আত্মহত্যাকারীর ভিত্তি হলো সোরা ও সাইকোসিসের যুগলবন্ধী।

(x) একমাত্র বিশেষ কয়েকটি বিষয়ে অন্যমনস্কতা।

প্রশ্নঃ একজন বংশগত সাইকোটিক রোগীর বৈশিষ্ট্যগুলি লিখ।২০১৩, ১৮

একজন বংশগত সাইকোটিক রোগীর বৈশিষ্ট্যগুলি:

(i) বিস্মৃতি, ভুলো মন, অমনোযোগী, কথা ধীরে বলে, দ্রুত উত্তর দিতে অক্ষম, কথা খুজে পায় না।

(ii) ব্যবহারেও অসমন্বয় যথা- সত্য কথা বলে না, অত্যধিক সন্দেহ পরায়ন হিংসুটে, রাগী, রুক্ষ ও নিষ্ঠুর প্রকৃতির, গোপন করা স্বভাব।

(iii) চোখ বন্ধ করলে মাথা ঘোরে তাকালে ঠিক হয়ে যায়, মাথার শীর্ষদেশে যন্ত্রণা, বিষন্নতাসহ কপালের দিকে যন্ত্রণা, দেহ ঠান্ডা।

(iv) অল্প বয়সে চুল পাকে অত্যাধিক চুল পাকে। মাথার চর্মের স্থানে স্থানে ছোট গোল আকারে চুল উঠে যায়। মাথায় আঁশটে গন্ধ।

(v) চোখ থেকে প্রচুর ঘন পুঁজ জন্মায় এবং পুঁজ বের হয়

(vii) নাকের ক্ষতবিহীন ঘ্রানশক্তিহীনতা। নাকের মধ্যে আঁশটে গন্ধ। মাছের আস্বাদের মতো বা বিস্বাদ।

(viii) পাকস্থলী- কোন প্রকার খাদ্য সহ্য হয় না। পেটের শূলব্যথা চাপে উপশম। পেটচেপে শূল উপশম।

(ix) মলদ্বার, মল- যন্ত্রণাসহ পাতলা মল তেড়ে বেরিয়ে আসে, গন্ধযুক্ত, হাজাকারক, সবুজবর্ণের, পেটে সর্বদা খামটে ধরা যন্ত্রণা।

(x) প্রস্রাব- শিশু মূত্রত্যাগ কালে চিৎকার করে উঠে।

(xi) হৃৎপিন্ড- বাত থেকে হৃদরোগ দেখা যায়। হৃৎকম্প ও শ্বাসঃকষ্ট হয় মাঝে মাঝে। যানবাহনে ও মৃদুব্যায়ামে উপশম।

(xii) চর্ম – শক্ত পিন্ড আকারের অথচ তাতে কোন ব্যথা বা চুলকানি থাকে না। আঁচিল, টিউমার, দাড়ির একজিমা দেখা যায়। মুখের চর্ম তৈলাক্ত।

(xiii) নখ- অসমান, ভঙ্গুর, লম্বালম্বি উঁচু রেখাযুক্ত, বিকৃত, কুগঠিত।

প্রশ্নঃ বিকশিত বা সেকেন্ডারী সাইকোসিসের লক্ষণাবলী লিখ। বা, সাইকোসিসের চরিত্রগত লক্ষণগুলি লিখ। ২০১৭

বিকশিত বা সেকেন্ডারী সাইকোসিসের লক্ষণাবলী:

(i) বিস্মৃতি, ভুলো মন, অমনোযোগী, কথা ধীরে বলে, দ্রুত উত্তর দিতে অক্ষম, কথা খুঁজে পায় না।

(ii) ব্যবহারেও অসমন্বয় যথা- সত্য কথা বলে না, অত্যধিক সন্দেহ পরায়ন হিংসুটে, রাগী, রুক্ষ ও নিষ্ঠুর প্রকৃতির, গোপন করা স্বভাব।

(iii) চোখ বন্ধ করলে মাথা ঘোরে তাকালে ঠিক হয়ে যায়, মাথার শীর্ষদেশে যন্ত্রণা, বিষন্নতাসহ কপালে দিকে যন্ত্রণা, দেহ ঠান্ডা। কাজকর্ম ও যানারোহনে বৃদ্ধি। সঞ্চালনে উপশম।

(iv) অল্প বয়সে চুল পাকে অত্যাধিক চুল পাকে। মাথার চামড়ায় স্থানে স্থানে অত্যাধিক চুল পাকে। মাথার চামড়ায় স্থানে স্থানে ছোট গোল আকারে চুল উঠে যায়। মাথায় আঁশটে গন্ধ।

(v) চক্ষু রোগ প্রচুর ঘন পুঁজ জন্মায় এবং পুঁজ বের হয়।

(vi) কর্ণ জমাট বাধা পিন্ড শিশুদের কানের মধ্যে দেখা যায়। সাইকোটিক পিতামাতার সন্তানের এরূপ হয়।

(vii) নাকের ক্ষতবিহীন ঘ্রানশক্তিহীনতা। নাকের মধ্যে আঁশটে গন্ধ। মাছের আস্বাদের মতো বা বিস্বাদ।

(viii) পাকস্থলী কোন প্রকার খাদ্য সহ্য হয় না। পেটের শূলব্যথা চাপে উপশম।

(ix) মলদ্বার, মল যন্ত্রণাসহ পাতলা মল তেড়ে বেরিয়ে আসে, গন্ধযুক্ত, হাজাকারক, সবুজবর্ণের, পেটে সর্বদা খামচে ধরা যন্ত্রণা।

(x) প্রস্রাব- শিশু মূত্রত্যাগ কালে চিৎকার করে উঠে।

(xi) হৃৎপিন্ড- বাত থেকে হৃদরোগ দেখা যায়। প্রত্যক্ষ অনুভূত লক্ষণ বিশেষ কিছু পাওয়া যায় না। হৃৎকম্প ও শ্বাসঃকষ্ট হয় মাঝে মাঝে। চলাফেরায় যন্ত্রণা। যানবাহনে ও মৃদু ব্যায়ামে উপশম।

(xii) চর্ম চর্মোদ্ভেদ পুরু বা শক্ত পিন্ড আকারের অথচ তাতে কোন ব্যথা বা চুলকানি থাকে না। আঁচিল, টিউমার, দাড়ির একজিমা দেখা যায়। মুখের চর্ম তৈলাক্ত। সংক্রামক ফুসকুড়ি, কড়া, গাত্রচর্মের বর্ণের নানা বিকৃতি স্থানে স্থানে বা বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে।

(xiii) নখ- অসমান, ভঙ্গুর, লম্বালম্বি উঁচু রেখাযুক্ত, বিকৃত, কুগঠিত।

১২। প্রশ্নঃ একজন বংশগত সাইকোটিক শিশুর বৈশিষ্ট্যগুলি লিখ। ১২ বা, সাইকোসিস দুষ্ট শিশু রোগীর রোগ লক্ষণগুলির বর্ণনা দাও।

একজন বংশগত সাইকোটিক শিশুর বৈশিষ্ট্যগুলি:

(i) একজন বংশগত সাইকোটিক শিশুর দেহে সাইকোসিস বিষ প্রবাহিত থাকলে তাদের নিউমোনিয়া, এনিমিয়া ও পরিপাকতন্ত্রের গোলযোগের লক্ষণাবলী প্রকাশ লাভ করে।

(ii) সাইকোটিকের সর্বক্ষেত্রে অসমন্বয়, অঙ্গ বৃদ্ধি বা শুকিয়ে শিশুকে খর্বাকৃতি বা অঙ্গহানি প্রকাশিত হয়।

(iii) শিশু ম্যারাসমাস বা ক্ষয়রোগগ্রস্ত হয়।

(iv) শিশুর বুদ্ধির বিকাশ ঘটে না। স্কুলবুদ্ধির বা হাবাগোবা প্রকৃতির হয়।

(v) শিশুর মুখমন্ডল বৃদ্ধের ন্যায় দেখায়।

(vi) মুখে ক্ষত ও দুর্গন্ধযুক্ত লালাস্রাব হয়।

(vii) শিশুর ইনফেকশাস রোগে আক্রান্ত হবার প্রবণতা বেশি থাকে বা আক্রান্ত হয়।

প্রশ্নঃ সাইকোসিস সর্বাপেক্ষা মারাত্মক-ব্যাখ্যা কর। ২০১২, ১৭ বা, “চির উপবিষসমূহের মধ্যে সাইকোসিস সর্বাপেক্ষা মারাত্মক।”- ব্যাখ্যা কর। ০৮, ১৬

সাইকোসিস সর্বাপেক্ষা মারাত্নক-ব্যাখ্যাঃ

(i) বিস্মৃতি, ভুলো মন, অমনোযোগী, কথা ধীরে বলে, দ্রুত উত্তর দিতে অক্ষম, কথা খুজে পায় না।

(ii) ব্যবহারেও অসমন্বয় যথা- সত্য কথা বলে না, অত্যধিক সন্দেহ পরায়ন হিংসুটে, রাগী, রুক্ষ ও নিষ্ঠুর প্রকৃতির, গোপন করা স্বভাব।

(iii) চোখ বন্ধ করলে মাথা ঘোরে অকালে ঠিক হয়ে যায়, মাথার শীর্ষদেশে যন্ত্রণা, বিষন্নতাসহ কপালের দিকে যন্ত্রণা, দেহ ঠান্ডা।

(iv) অল্প বয়সে চুল পাকে অত্যাধিক চুল পাকে। মাথার চর্মের স্থানে স্থানে ছোট গোল আকারে চুল উঠে যায়। মাথায় আঁশটে গন্ধ।

(v) চোখ থেকে প্রচুর ঘন পুঁজ জন্মায় এবং পুঁজ বের হয়।

(vii) নাকের ক্ষতবিহীন ঘ্রানশক্তিহীনতা। নাকের মধ্যে আঁশটে গন্ধ। মাছের স্বাদের মতো বা বিস্বাদ।

(viii) পাকস্থলী কোন প্রকার খাদ্য সহ্য হয় না। পেটের শূলব্যথা চাপে উপশম। পেটচেপে শূল উপশম।

(ix) মলদ্বার, মল যন্ত্রণাসহ পাতলা মল তেড়ে বেরিয়ে আসে, গন্ধযুক্ত, হাজাকারক, সবুজবর্ণের, পেটে সর্বদা খামচে ধরা যন্ত্রণা।

(x) প্রস্রাব- শিশু মূত্রত্যাগ কালে চিৎকার করে উঠে।

(xi) হৃৎপিন্ড- বাত থেকে হৃদরোগ, হৃৎকম্প ও শ্বাসঃকষ্ট হয়।

(xii) চর্ম – শক্ত পিন্ড আকারের অথচ তাতে কোন ব্যথা বা চুলকানি থাকে না। আঁচিল, টিউমার, একজিমা দেখা যায়। মুখের চর্ম তৈলাক্ত।

(xiii) নখ- অসমান, ভঙ্গুর, লম্বালম্বি উঁচু রেখাযুক্ত, বিকৃত, কুগঠিত।

উপরিক্ত লক্ষণাবলী হতে ইহাই প্রতীয়মান হয় যে, চির উপবিষসমূহের মধ্যে সাইকোসিস সর্বাপেক্ষা মারাত্মক।

প্রশ্নঃ সাইকোসিসের আঁচিলের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা কর। ১০, ১৩ সাইকোসিসের-এর আঁচিল-এর বৈশিষ্ট্য বর্ণনাঃ

(i) আঁচিল ও আঁচিল জাতীয় বিবৃদ্ধি।

(ii) দেহের বিভিন্ন স্থানে ডুমুর বা ফুলকপির ন্যায় আঁচিল।

(iii) জননেন্দ্রিয় অঞ্চলে ফুলকপির ন্যায় আঁচিল।

(iv) মলদ্বারে আঁচিল।

(v) দীর্ঘ সূক্ষ্ম আগা বিশিষ্ট আঁচিল, মোরগ ঝুঁটির মত উদ্ভেদ ও আঁচিল।

(vi) সমতল আঁচিল বংশগত ইতিহাস বহন করে।

(vii) বদমেজাজী, খিটখিটে, রাগের পর খিচুনি।

(viii) চর্মোদ্ভেদ পুরু বা শক্ত পিন্ড আকারের অথচ তাতে কোন ব্যথা বা চুলকানি থাকে না।

(ix) মুখের চর্ম তৈলাক্ত, আঁচিল, টিউমার, দাড়ির একজিমা দেখা যায়।

(x) বিস্মৃতি, ভুলো মন, অমনোযোগী।

প্রশ্নঃ সাইকোসিসের স্মৃতি সম্পর্কিত লক্ষণগুলি লিখ। ০৮, ১৩ বা, সাইকোসিসের স্মৃতি সম্পর্কিত লক্ষণগুলি বর্ণনা কর। ১০, ১৪, ১৬ সাইকোসিসের স্মৃতি সম্পর্কিত লক্ষণগুলি বর্ণনা:

(i) বিস্মৃতি, ভুলো মন, অমনোযোগী।

(ii) কথা ধীরে বলে, দ্রুত উত্তর দিতে অক্ষম, কথা খুজে পায় না।

(iii) ব্যবহারেও অসমন্বয় যথা- সত্যকথা বলে না।

(iv) অত্যধিক সন্দেহ পরায়ন হিংসুটে, রাগী।

(v) রুক্ষ ও নিষ্ঠুর প্রকৃতির।

(vi) গোপন করা স্বভাব।

২৮। প্রশ্নঃ সাইকোসিসের মূত্রতন্ত্রের লক্ষণাবলী লিখ।

সাইকোসিসের মূত্রতন্ত্রের লক্ষণাবলীঃ

(i) সাইকোসিসগ্রস্ত শিশুরা প্রস্রাব করার সময় চিৎকার করে উঠে।

(ii) মূত্রনালী ও মূত্রথলীতে যন্ত্রণাপূর্ণ আক্ষেপ।

(iii) মূত্রথলীর সন্ধিবাত।

(iv) সাইকোসিসগ্রস্তদের মূত্রনালীতে সন্ধিবাতগ্রস্ত শক্ত টিবলী।

(v) সাইকোসিস মায়াজমগ্রস্ত রোগীদের যদি বহুমূত্র রোগ হয় তবে তা খুব সাংঘাতিক অবস্থা ও মারাত্মক কষ্টদায়ক হয়।

(vi) কিডনী রোগ- কিডনীর তন্ত্রকলাসমূহের রূপান্তর ঘটে।

(vii) সাইকোসিসের উত্তেজক মাধ্যম হিসাবে কাজ করে প্রষ্টেট গ্রন্থির বিবৃদ্ধি সৃষ্টি হয়।

২৯। প্রশ্ন: সাইকোসিসের নখের লক্ষণাবলী লিখ।

সাইকোসিসের নখের লক্ষণাবলী:

(i) নখ দেখতে অসমান, ভঙ্গুর প্রকৃতির হয়।

(ii) নখ লম্বালম্বি উঁচু রেখাযুক্ত দেখা যায়।

(iii) নখ মোটা, ভারী, বিকৃত, কুগঠিত হয়।

প্রশ্নঃ সাইকোসিসর হ্রাস-বৃদ্ধি লিখ। ২০০৯, ১৬

সাইকোসিসের হ্রাস-বৃদ্ধিঃ

হ্রাস: শ্লৈষ্মিক পথ দিয়ে অস্বাভাবিক নিঃসরনে উপশম হয়। যেমন- লিউকোরিয়া, নাকের সর্দি ইত্যাদি। শরীরবৃত্তীয় নিষ্কাশনে কোন উপশম হয় না। উপসর্গ কমে ধীরে সঞ্চালনে, হাত-পা টানটান করলে, শুভ আবহাওয়ায়। শুলে, চাপলে এবং চাপা পড়া স্রাব পুনরায় ফিরে এলে। বৃদ্ধি: ঠান্ডা বা ভিজা আবহাওয়ায় বিশ্রামে এবং মাংস খেলে।

৩২। প্রশ্নঃ “সাইকোসিস মায়াজমের রোগী রাতের পূজারী”- ব্যাখ্যা কর।

“সাইকোসিস মায়াজমের রোগী রাতের পূজারী”- ব্যাখ্যাঃ

সাইকোসিস মায়াজমের আক্রান্ত রোগী রাতের অন্ধকারে বা রাতের বেলায় তার সকল প্রকার রোগলক্ষণের উপশম বোধ করে। কিন্তু দিনের আলোয় অর্থাৎ সূর্যাদয় হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত রোগীর সকল রোগ যন্ত্রণা বৃদ্ধি পায়। যেহেতু সূর্যাদয় হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত রোগীর সকল রোগ যন্ত্রণা বৃদ্ধি পায় সেহেতু রোগী রাতের জন্য অপেক্ষা করে। তাই সাইকোসিস মায়াজমের রোগীকে রাতের পূজারী বলা হয়।

৩৩। প্রশ্ন: সাইকোসিস মায়াজমের চর্ম লক্ষণ লিখ। ২০০৮ বা, সাইকোসিসের বাহ্যিক লক্ষণাবলী বর্ণনা কর। ০৯

সাইকোসিস মায়াজমের চর্ম লক্ষণ:

(i) চর্মোদ্ভেদ পুরু বা শক্ত পিন্ড আকারের অথচ তাতে কোন ব্যথা বা চুলকানি থাকে না।

(ii) আঁচিল, টিউমার, দাড়ির একজিমা দেখা যায়। মুখের চর্ম তৈলাক্ত।

(iii) সংক্রামক ফুস্কুড়ি, কড়া, দেহ চর্মের নানা বর্ণের বিকৃতি স্থানে স্থানে বা বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে।

(iv) আঁচিল ও আঁচিল জাতীয় বিবৃদ্ধি। দেহের বিভিন্ন স্থানে ডুমুর বা ফুলকপির ন্যায় আঁচিল।

(v) জননেন্দ্রিয় অঞ্চলে ফুলকপির ন্যায় আঁচিল এবং মলদ্বারে আঁচিল।

(vi) দীর্ঘ সূক্ষ্ম আগা বিশিষ্ট আঁচিল, মোরগ ঝুঁটির মত উদ্ভেদ ও আঁচিল।

৩৫। প্রশ্ন: সাইকোসিস এর ইচ্ছা-অনিচ্ছা লিখ।

সাইকোসিসের ইচ্ছা-অনিচ্ছাঃ

(i) মদ্য পানে ইচ্ছা।

(ii) সাইকোসিস মায়াজমগ্রস্ত রোগীদের বেশি পরিমাণে বাদাম, সীম, মটরশুটি, পনির খাওয়ার ইচ্ছা।

(iii) গরম খাদ্য বা ঠান্ডা খাদ্য পছন্দ করে।

অনিচ্ছা:

(iv) মাংস খাওয়ার পর সুপ্ত সাইকোসিস সক্রিয় হয়ে ওঠে।

(v) সন্ধিবাতগ্রস্ত রোগীরা বাদাম হজম করতে পারে না, তাই অনিচ্ছা।

প্রশ্নঃ এন্টিসাইকোটিক ঔষধ কাকে বলে? দশটি এন্টিসাইকোটিক ঔষধের পূর্ণনাম লিখ। ২০১০, ১২, ১৬

এন্টিসাইকোটিক ঔষধের সংজ্ঞা:

যে সকল ঔষধ সুস্থ ব্যক্তির দেহে প্রয়োগ করলে গনোরিয়া রোগের সদৃশ লক্ষণ সৃষ্টি করতে পারে এবং সাইকোসিস মায়াজমে আক্রান্ত ব্যক্তির দেহে প্রয়োগ করলে উহা সমূলে নিরাময় করতে পারে, সে সকল ঔষধসমূহকে এন্টিসাইকোটিক ঔষধ বলে।

দশটি এন্টিসাইকোটিক ঔষধের পূর্ণনাম:

(i) আর্জেন্টাম মেটালিকাম,

(ii) আর্জেন্টাম নাইট্রিকাম,

(iii) মেডোরিনাম,

(iv) নাইট্রিকাম এসিডাম,

(v) নেট্রাম মিউরিটিকাম। (vi) গ্র্যাফাইটিস

(vii) হিপার সালফার, (viii) আয়োডিয়াম

(ix) লাইকোপডিয়াম

(x) নাইট্রিক অ্যাসিড

সিফিলিস মায়াজম

প্রশ্নঃ সিফিলিস মায়াজম কি?

সিফিলিস মায়াজমের সংজ্ঞা: সিফিলিস রোগ বিসদৃশ প্রক্রিয়া চাপা দেয়ার ফলে দেহের মধ্যে যে প্রভাব সৃষ্টি হয়, তাকে সিফিলিস মায়াজম বলে।

২। প্রশ্ন: সুপ্ত সিফিলিসের লক্ষণাবলী লিখ।

সুপ্ত সিফিলিসের লক্ষণাবলী:

(i) মানসিক- বিষাদগ্রস্ত, অবসন্নতা। উপলব্ধি করার ক্ষমতা কম, স্মৃতিশক্তিও বিলুপ্ত হয়ে পড়ে।

(ii) সন্দেহবাতিক, অন্তর্মুখী, সঙ্গী পছন্দ করে না। একা থাকতে চায়, বদ্ধমূল ধারণা, প্রবল আত্মহত্যার প্রবণতা, বেঁচে থাকার অনিচ্ছা, সবসময় আত্মহত্যার সুযোগ খোঁজে।

(iii) চাপা স্বভাব। সবকিছু গোপন রাখতে চায়, এমনকি নিজের অসুস্থতার কথাও প্রকাশ করে না।

(iv) মাথার লক্ষণাবলী : চুল পাটের মত, পুরনো দড়ির, শনের মত শুকনো। চুল তেলতেল বা চকচকে দেখায়। মাথার ধার থেকে বা তালু থেকে চুল পড়ে যায়। গোছা গোছা চুল পড়ে বা তালুর শুধু এক জায়গা থেকে চুল পড়ে।

(v) মোটা হলুদ বর্ণের ছালযুক্ত খুস্কি। শরীরের তুলনায়ও কান বড়। ঘুমের মধ্যে মাথা এপাশ-ওপাশ গড়ায়। শিশুদের মাথা- দুর্গন্ধময়, টকগন্ধযুক্ত, তেলা গন্ধযুক্ত।

(vi) ঘ্রাণেন্দ্রিয়তার হ্রাস বা অবলুপ্তি।

(vii) মুখমন্ডলে শক্ত ব্রণ।

(viii) সামনের দাঁতের অগ্রভাগ ক্রমশঃ অর্ধচন্দ্রের মত আকার নেয়।

(ix) নখ- কাগজের মত পাতলা ও চামচের মত বাঁকা আকৃতির।

(x) ইচ্ছা-অনিচ্ছাঃ ইচ্ছা- টক, মিষ্টি, খড়ি, মদ, পেন্সিল, চুন খেতে।

অনিচ্ছা- মাংসে।

(xi) হ্রাস-বৃদ্ধিঃ হ্রাস- ঠান্ডায়, সূর্যোদয়ের থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত। সাদা স্রাব বা যে কোনও অস্বাভাবিক স্রাবে।

বৃদ্ধি- রাতে, গরমে, ঘামসহ প্রাকৃতিক স্রাবে।

৩। প্রশ্নঃ সিফিলিস মায়াজম কোন কোন অঙ্গে প্রথম সংক্রামিত হয়? সিফিলিস মায়াজমের প্রথম সংক্রামিত অঙ্গঃ

(i) মেসোডারমাল টিস্যু, সফ্ট টিস্যু, অস্থি, গ্রন্থির টিস্যু (বিশেষত লসিকাসংক্রান্ত) আক্রমণ করে।

(ii) সিফিলিস সর্বত্রই ধ্বংসাত্মক, বিপথগামী, ন্যায়ভ্রষ্ট, স্বেচ্ছাচারী, পুঁজ, ক্ষত, ফাটা ঘা ইত্যাদি সৃষ্টিকারী।

(iii) দেহমধ্যস্থ খনিজ বস্তুর বিপাকে বিকৃতি ঘটিয়ে মস্তিষ্কের অস্থি এবং রক্ত বৃদ্ধির ক্ষমতা খর্ব করে। অস্থি ও দন্তের গঠনবিকৃতি ঘটায়। রক্তের বিকৃতি ঘটিয়ে রক্তস্বল্পতা এবং খর্বাকৃতি রোগ সৃষ্টি করে।

৪। প্রশ্ন: সিফিলিস দোষের ধাতুগত লক্ষণাবলি লিখ।

সিফিলিস দোষের ধাতুগত লক্ষণাবলিঃ

(i) সিফিলিস ধাতুবিশিষ্ট রোগীদের গ্রন্থি শক্ত ও ফুলা থাকে।

(ii) মূর্খতা, বোকা, স্থলবুদ্ধির, একগুঁয়ে, বিষন্ন, বদ্ধমূল ধারনা, কোন উদ্দেশ্য বা যুক্তি খুঁজে পায় না কারও সঙ্গে মেলামেশার।

(iii) আত্মহত্যার প্রবনতা, নিজেকে ধ্বংস করতে চায়।

(iv) পাপী, সমাজের ক্ষতিকারক মস্তিষ্কবিকৃতি।

(v) সিফিলিস মায়াজম মুখের ভিতরে প্রকৃত ঘা বা ক্ষত সৃষ্টি করে।

প্রশ্নঃ সিফিলিসের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য/লক্ষণাবলী লিখ। বা, সিফিলিস মায়াজমের প্রধান প্রধান নিদর্শনগুলি কি কি? ১৩, ১৫,১৭,০৯, ১৪বা, বিকশিত সিফিলিসের লক্ষণাবলী লিখ। বা, সিফিলিস দোষের চরিত্রগত লক্ষণাবলি লিখ। ০৯, ১৬

সিফিলিসের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপ:

(i) বোকা, স্থুলবুদ্ধি, একগুয়ে, বিষন্ন, বদ্ধমূল ধারণা, কোন উদ্দেশ্য বা যুক্তি খুঁজে পায় না কারও সাথে মেশার।

(ii) ঠান্ডা মাথায় মূল্যবান দ্রব্য ধবংস করে, নিজেকে ধবংস করতে চায়, আত্মহত্যার প্রবণতা।

(iii) ধীর প্রতিক্রিয়া সম্পন্ন, জড়বুদ্ধি সম্পন্ন, দয়ামায়াহীন, ঈর্ষাপরায়ণ।

(iv) মুখমন্ডল তৈলাক্ত দেখায়, মুখে ধাতব স্বাদ, বিষেশতঃ তামাটে ‘ধাতুর ন্যায় স্বাদ।

(v) চুলকানিবিহীন চর্মোদ্ভেদ ও পচনের প্রবণতারূপে চর্মের উপর আত্মপ্রকাশ করে, ইহার মামড়ি বা শল্ক সর্বদা পুরু ও ভারী থাকে।

(vi) ইহার রোগীর নখ কাগজের মত পাতলা, দেখতে ঠিক চামচের ন্যায় এবং সহজেই বেঁকে যায়।

(vii) চোখের অস্বাভাবিক গঠন বা বিকৃতি, লেন্সের ক্ষত, পাতার ক্ষত,

কৃত্রিম আলো সহ্য করতে পারে না। গ্রন্থিবাতজনিত চোখে রোগ। রাত্রে, উত্তাপে লক্ষণাবলী বৃদ্ধি।

(viii) নাক দিয়ে রক্ত পড়ে, সবুজ বা কালো চাপচাপ মাঁমডি ঘ্রাণশক্তি ও নাকের হাড় নষ্ট হয়ে যায়।

(ix) কানের ছিদ্র পথে ক্ষত, পুরু দুর্গন্ধযুক্ত পুঁজ, ইহার পাশে ফাটা ও পিছনে একজিমা।

(x) ঠান্ডা খাবার খেতে ভালবাসে, মাংসে অনীহা।

(xi) উদরাময়ে যেন শরীরের সব কিছু নিংড়ে বেরিয়ে যায়, বিশেষতঃ

শিশু কলেরায়। রাতে বৃদ্ধি।

প্রশ্নঃ  সিফিলিস মায়াজমের মানসিকতা লিখ। ১১, ১২, ১৫ বা, সিফিলিস দোষের মানসিক লক্ষণাবলি লিখ। ১০

সিফিলিস দোষের মানসিক লক্ষণাবলি:

(1) বোকা, স্থূলবুদ্ধি, একগুঁয়ে, বিষন্ন, বদ্ধমূল ধারনা, কোন উদ্দেশ্য বা যুক্তি খুঁজে পায় না কারও সঙ্গে মেলামেশার।

(ii) আত্মহত্যার প্রবনতা, নিজেকে ধ্বংস করতে চায়।

(iii) পাপী, সমাজের ক্ষতিকারক মস্তিষ্কবিকৃতি।

(iv) ঠান্ডা মাথায় মূল্যবান বস্তু ধ্বংস করে। ধর্মমত ধ্বংসকারী।

(v) একা থাকতে চায়, নিজের কষ্টের কথা কাউকে বলতে চায় না।

(vi) স্বপ্নে অগ্নিকান্ড, হত্যা, কালো জীবজন্তু ও বিভিষিকা দেখে।

(vii) কথার মাঝে বা পড়ার মঝে সূত্র হারিয়ে ফেলে

প্রশ্নঃ কিভাবে সিফিলিস মায়াজম সৃষ্টি হয়। ১২ বা, কিভাবে সিফিলিটিক মায়াজম সৃষ্টি হয়? ১০

নিম্নলিখিতভাবে সিফিলিটিক মায়াজম সৃষ্টি হয়:

ট্রিপোনিয়ামা প্যালিডাম নামক ব্যাকটেরিয়া পুরুষ বা মহিলা জননতন্ত্রে সংক্রমিত হয়ে সিফিলিস রোগ উৎপন্ন করে। ইহা দ্বারা জননতন্ত্রে ক্ষত ও পুঁজ উৎপত্তিসহ বিভিন্ন রোগ লক্ষণ প্রকাশিত হয়। এ সিফিলিস রোগকে বি-সদৃশ চিকিৎসা পদ্ধতি সাহায্যে চাপা দিলে দেহের মধ্যে যে প্রভাবের সৃষ্টি হয় তা থেকে সিফিলিস মায়াজম সৃষ্টি হয়। চিররোগের কারণ ও প্রকৃতি অনুসন্ধান করার জন্য গবেষণা করতে গিয়ে ডাঃ হ্যানিম্যান ইহা আবিষ্কার করেন।

৮। প্রশ্নঃ সিফিলিস রোগের প্রকৃতি বা উৎস বর্ণনা কর।

রোগের প্রকৃতি বা উৎস: ধ্বংসমূলক বিশৃঙ্খলা, অঙ্গের বিকৃতি, অস্থির ভঙ্গুর প্রবনতা, ক্ষত, পচনশীল ক্ষত সৃষ্টি করে। ধ্বংসমূলক এই মায়াজম হানিকর বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। যেমন- রিকেটস্, অ্যাকোনড্রো- প্ল্যাসিয়া অর্থাৎ তরুণাস্থির বিকৃতির ফলস্বরূপ খর্বাকৃতি। অস্টিওম্যালেসিয়া, অর্থাৎ ভিটামিন ডি-র ন্যূনতাহেতু ক্যালসিয়ামের পরিশোষণে অস্থির কোমলতা সৃষ্টি করে। ইহা রক্তহীনতা, নানান গঠনবিকৃতি ও বারবার গর্ভস্রাব ঘটায়।

প্রশ্নঃ সিফিলিস ও সাইকোসিস এর মানসিক অবস্থা তুলনা কর। ২০০৮, ১৩, ১৫, ১৭ বা, সিফিলিসের সহিত সাইকোসিসের মানসিক লক্ষণাবলী তুলনা কর।

সিফিলিসের সহিত সাইকোসিসের মানসিক লক্ষণাবলী তুলনা:

সিফিলিসের মানসিক লক্ষণাবলী:

(i) বোকা, স্থুলবুদ্ধির, একগুঁয়ে, বিষন্ন, বদ্ধমূল ধারণা, কোন উদ্দেশ্য বা যুক্তি খুঁজে পায় না কারও সঙ্গে মেলামেশার।

(ii) আত্মহত্যার প্রবণতা, নিজেকে ধ্বংস করতে চায়।

(iii) পাপী, সমাজের ক্ষতিকারক মস্তিষ্কবিকৃতি।

(iv) ঠান্ডা মাথায় মূল্যবান বস্তু ধ্বংস করে। ধর্মমত ধ্বংসকারী।

সাইকোসিসের মানসিক লক্ষণাবলী:

(i) মনোস্তরে নানা অসঞ্চয়,

(ii) বিস্মৃতি, ভুলো মন, অমনোযোগী।

(iii) কথা ধীরে বলে, দ্রুত উত্তর দিতে অক্ষম, কথা খুঁজে পায় না।

(iv) ব্যবহারে অসমন্বয় দেখা দেয়। যথা- সত্য কথা বলে না, অত্যধিক সন্দেহ পরায়ন হিংসুটে।

(v) রাগী, রুক্ষ ও নিষ্ঠুর প্রকৃতির, গোপন করা স্বভাব।

প্রশ্নঃ সিফিলিস রোগীর ক্ষতের বর্ণনা দাও। ০৯ বা, সিফিলিস ক্ষতের বর্ণনা কর। ২০১১, ১৩, ১৭

সিফিলিস ক্ষতের বর্ণনাঃ

চর্মের উদ্ভেদ সহজেই পুঁজ ও ক্ষতে পরিণত হয়। এতে যন্ত্রণা থাকে। উদ্ভেদ চটাপড়া এবং তা থেকে পুঁজ বের হয়। চর্ম তৈলাক্ত, ঘর্মাক্ত ও অত্যন্ত দুর্গন্ধযুক্ত। চর্মের উপরে তামার মতো দাগ। দিন যত যায় সিফিলিস ক্ষতের আকার ও তীব্রতা বাড়েতে থাকে। ক্ষতের ধারগুলো উচ্চ ও শক্ত থাকে। প্রস্রাব অঙ্গসমূহের ক্ষত, মেরুমজ্জার ক্ষত, লম্বা অস্থির ক্ষত, হাত-পায়ের আঙ্গুলের ফাঁকে ক্ষত সবই সিফিলিস ক্ষতের অন্তর্ভূক্ত।

প্রশ্নঃ সিফিলিসের শিশু চিত্র অংকন কর। ২০০৮

বা, সিফিলিটিক শিশুদের দাঁতে কি কি নৈদানিক পরিবর্তন দেখা দেয়?

সিফিলিটিক শিশুদের দাঁতে নিম্নলিখিত নৈদানিক পরিবর্তন:

(i) সিফিলিটিক শিশুদের দাঁতগুলি অসম, ক্ষয়প্রাপ্ত, দাঁতের প্রান্তভাগে করাতের ন্যায় খাঁজ কাটা এবং দন্তমূল আলগা।

(ii) মুখগহ্বরে মেটালিক স্বাদ। লালা ক্ষরন, জিহ্বায় গভীর ফাটা ও দাঁতের ছাপ।

(iii) শিশুদের প্রতিটি দাঁত ওঠার সময় অসুখে পড়ে।

(iv) মলদ্বার, মল উদরাময়ে যেন দেহের সব কিছু নিংড়ে বেরিয়ে যায়, বিশেষ করে শিশু কলেরায়। রাত্রে বৃদ্ধি।

(v) হৃৎপিন্ড যান্ত্রিক বিনাশ, হঠাৎ হৃৎক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। ইহা মানসিক ক্লেশের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়।

১২। প্রশ্নঃ সিফিলিসের চোখ ও দৃষ্টিশক্তির লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

সিফিলিসের চোখ ও দৃষ্টিশক্তির লক্ষণাবলী বর্ণনাঃ

(i) সিফিলিস মায়াজম চোখের কাঠামোতে গুরুতরভাবে আক্রমন করে।

(ii) অক্ষিপুটীয় স্নায়ুশূল, চোখের পাতার প্রদাহ সিফিলিটিক জাত।

(iii) সন্ধি প্রদাহ বা বাতগ্রস্ত রোগীদের চোখের কষ্টগুলি সাধারণতঃ রাতে বা সূর্যাস্তের পরে এবং গরমে বাড়ে।

(iv) সিফিলিটিক রোগীরা সূর্যের আলো অপেক্ষা কৃত্রিম আলোতে বেশী আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়ে, যদিও দুটোতেই তাদের কষ্ট বাড়ে।

৩০। প্রশ্ন: সিফিলিসের প্রান্তদেশীয় লক্ষণাবলী লিখ। বা, সিফিলিসের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে লক্ষণাবলী লিখ।

সিফিলিসের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে লক্ষণাবলী:

(i) চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ও বৃদ্ধির সময়- উভয় দিক দিয়ে টিউবারকুলার ও সিফিলিটিক হাড়ের ব্যথা প্রায় একই প্রকৃতির।

(ii) অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের অস্থি আবরকে অথবা দীর্ঘাস্থিতে সূঁচ ফুটানোর মত, তীরবিদ্ধের মত অথবা তীব্র ব্যথা।

(iii) সিফিলিসের রোগীদের পা বাঁকা দেখতে পাওয়া যায়।

(iv) সিফিলিটিক নখের বিভিন্ন রকম প্রদাহবিশিষ্ট পরিবর্তন দেখা যায়।

যেমন- সাদা দাগযুক্ত পাতলা নখ, সহজে বেঁকে যায়, কখনও চামচের মত আকৃতির।

(v) সিফিলিসের ক্ষেত্রেই যথার্থ আঙ্গুলহাড়া দেখা যায়।

(vi) পক্ষাঘাতগ্রস্ত রোগ, শোথজনিত ফোলা, সর্বাঙ্গীণ ফোলা ইত্যাদি সিফিলিস, সাইকোসিস, টিউবারকুলার সবক্ষেত্রেই পাওয়া যায়।

(vii) বৃদ্ধি: রাতে বা রাত্রি উপস্থিত হওয়ার সময় তীব্র বৃদ্ধি হয়। আবহাওয়া পরিবর্তনে, ঠান্ডা ও স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় অবনতি বৃদ্ধি ঘটে।

প্রশ্নঃ সিফিলিসের হ্রাস-বৃদ্ধি লিখ। ০৮, ১০, ১২, ১৮

সিফিলিসের হ্রাস-বৃদ্ধি:

১। হ্রাস: পুঁজ নিঃসরন ও পুরাতন ক্ষত উন্মুক্ত হলে উপশম। উদরাময়

এবং প্রস্রাব হলে কোন উপশম হয় না।

২। বৃদ্ধি : সূর্যাস্ত থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত, রাত্রিকালে, গ্রীষ্মকালে। বিছানার গরমে এবং ঘর্মে।

৩২। প্রশ্ন: সিফিলিস মায়াজমের চর্মের লক্ষণাবলী লিখ। ২০১৬

সিফিলিস মায়াজমের চর্মের লক্ষণাবলী:

(i) সন্ধিতে, শরীরের যেকোনও ভাঁজে চর্ম উদ্ভেদ।

(ii) উদ্ভেদগুলি বৃত্তাকার দলবদ্ধভাবে থাকে, কোথাও গোলাকার বা বৃত্তাংশের মত।

(iii) উদ্ভেদগুলির তলদেশ তামার মত, কাঁচা মাংসের মত, বাদামী বা খুব লালচে রঙের।

(iv) সামান্য যন্ত্রণা থাকে কিন্তু কোনও চুলকানি থাকে না।

(v) মামড়ি খুব পুরু ও ভারী, উদ্ভেদগুলির উপর প্রলেপ দেয়ার মত অবস্থায় থাকে এবং তাতে চারিদিকে বেষ্টন করে থাকার মত ছাপ থাকে।

(vi) চর্মরোগের সাথে গ্রন্থির রোগের একটা সংযোগ থাকে। এই সংযুক্তি থাকলেই প্রমাণিত হয় এটা সিফিলিস জাতীয়।

(vii) গ্যাংগ্রীন- শরীরের কোথাও শুষ্ক গ্যাংগ্রীন থাকলেই সবসময় মনে রাখতে হবে সেখানে সিফিলিস বর্তমান আছে।

(viii) শরীরের কোথাও আঁচিলের মত মাংসল গুটি সিফিলিস বা সাইকোটিকের লক্ষণ।

(x) বংশগতভাগে সিফিলিসে ভূগতে থাকা শিশুদের সাধারণ আঁচিল দেখা যায়।

(xi) অর্জিত সিফিলিসের তৃতীয় পর্যায়ে কোষকলার বিকৃতি হিসাবে সূত্রাকার আঁচিল দেখা যায়।

(xii) সিফিলিসের ধ্বংসাত্বক অবস্থাদি চল্লিশ বছর বয়স থেকেই আরম্ভ হয়ে থাকে।

৩৩। প্রশ্ন: সিফিলিস মায়াজমের খাদ্যের ইচ্ছা-অনিচ্ছা লিখ। সিফিলিস মায়াজমের খাদ্যের ইচ্ছা-অনিচ্ছাঃ

(i) ঠান্ডা খাবার খেতে ভালবাসে।

(iii) ইহা অপাচ্য খাদ্য- চক, চুন, স্লেট, পেন্সিল ইত্যাদি খেতে চায়।

এসব লক্ষণগুলি বিশেষত তরুণী, শিশু ও গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে বেশী দেখা যায়।

(vi) অদ্ভুত জাতীয় খাদ্য, যেমন- লবণ খেতে ভীষণ আগ্রহ এবং অতিরিক্ত লবণ খায়।

(vii) উদ্দীপক খাদ্য, মদ অথবা আকর্ষণীয় খাদ্যে আকাঙ্খা। আলু ও মাংস আগ্রহ।

(viii) সিফিলিস রোগীদের মাংসে অনীহা। এরা ঠান্ডা পানাহার পছন্দ করে।

প্রশ্নঃ অস্থির উপর সিফিলিসের ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ড লিখ। ১৪,১৬

অস্থির উপর সিফিলিসের ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ড:

(i) চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ও বৃদ্ধির সময়- উভয় দিক দিয়ে সিফিলিটিক হাড়ের ব্যথা প্রায় একই প্রকৃতির।

(ii) আপার-লোয়ার অস্থি আবরকে অথবা দীর্ঘাস্থিতে সূঁচ ফুটানোর মত, তীর বিদ্ধের মত অথবা তীব্র ব্যথা।

(iii) রাতে বা রাত্রি উপস্থিত হওয়ার সময় তীব্র হয়। আবহাওয়া পরিবর্তনে, ঠান্ডা ও স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায় অবনতি ঘটে।

(iv) বক্রচরণঃ সিফিলিসের পা বাঁকা দেখতে পাই।

(v) সিফিলিটিক নখের বিভিন্ন রকম প্রদাহবিশিষ্ট পরিবর্তন দেখা যায়।

(vi) সিফিলিসের ক্ষেত্রেই যথার্থ আঙ্গুলহাড়া দেখতে পাওয়া যায়।

(vi) পাতলা নখ। সহজে বেঁকে যায়। কখনও চামচের মত আকৃতির। সাদা দাগসহ পাতলা নখ।

প্রশ্নঃ সিফিলিস মায়াজম ও সিফিলিস রোগের মধ্যে পার্থক্য লিখ। ১৪, ১৬

সিফিলিস মায়াজম ও সিফিলিস রোগের মধ্যে পার্থক্য:

সিফিলিস মায়াজম

সিফিলিস রোগ বিসদৃশ প্রক্রিয়া ১ চাপা দেয়ার ফলে দেহের মধ্যে যে প্রভাব সৃষ্টি হয়, তাকে সিফিলিস মায়াজম বলে।

এটি দেহের মধ্যে একটি মায়াজমেটিক অবস্থা যা রোগ প্রবনতা সৃষ্টি করে।

মানবদেহে অসংখ্য চিররোগ ৩ সৃষ্টিতে ইহা সহায়তা করে।

ইহা বংশ ও অর্জিত হতে পারে।

8

ইহার চিকিৎসায় ৫ এন্টিমায়াজমেটিক ঔষধ প্রয়োগ না করলে বংশ পরম্পরায় প্রভাব বিস্তার করে।

সিফিলিস রোগ

ট্রিপোনিয়ামা প্যালিডাম নামক ব্যাকটেরিয়া পুরুষ বা মহিলার জননতন্ত্রে সংক্রমিত হয়ে সিফিলিস রোগ উৎপন্ন করে। ইহা দ্বারা জননতন্ত্রে ক্ষত ও পুঁজ উৎপত্তিসহ বিভিন্ন রোগ লক্ষণ প্রকাশিত হয়।

এটি একটি রোগ যা দেহে বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ প্রকাশ করে।

ইহা ব্যাক্টেরিয়া ঘটিত একটি সংক্রামক রোগ।

ইহা অর্জিত যৌন রোগ।

ইহার চিকিৎসা সদৃশ বিধান মতে এন্টিমায়াজমেটিক ঔষধ দ্বারা করলে জটিলতা ছাড়াই আর্দশ আরোগ্য হয়।

প্রশ্নঃ এন্টিসিফিলিটিক ঔষধ কাকে বলে? দশটি এন্টিসিফিলিটিক ঔষধের নাম লিখ। বা, পাঁচটি এন্টিসিফিলিটিক ঔষধের পূর্ণ নাম লিখ। ০৯, ১৬

এন্টিসিফিলিটিক ঔষধ এর সংজ্ঞাঃ

যে সকল ঔষধ সুস্থ ব্যক্তির দেহে প্রয়োগ করলে সিফিলিসের রোগ লক্ষণ সৃষ্টি করতে পারে এবং সিফিলিটিক মায়াজমে আক্রান্ত

ব্যক্তির দেহে প্রয়োগ করলে উহা সমূলে নিরাময় করতে পারে, সে সকল ঔষধসমূহকে এন্টিসিফিলিটিক ঔষধ বলে।

পাঁচটি এন্টিসিফিলিটিক ঔষধের পূর্ণনাম:

(i) টিউবাকুলিনাম বভিনাম, (ii) আর্সেনিক আয়োড

(iii) সিফিলিনাম, (iv) কার্বো এনিমিলিস

(v) আর্সেনিক আয়োড, (vi) মার্কিউরিয়াস কর

(vii) নাইট্রিক এসিড, (vii) ফাইটোলক্কা

(ix) সোরিনাম, (x) সাইলিসিয়া।

৩৭। প্রশ্নঃ সিফিলিস দুষ্ট রোগীর চিকিৎসা পদ্ধতি বর্ণনা কর।

সিফিলিস দুষ্ট রোগীর চিকিৎসা পদ্ধতি বর্ণনা:

ডাঃ হ্যানিম্যানের অর্গানন অব মেডিসিন এর ৮৪ থেকে ১০২ নং অনুচ্ছেদে বর্ণিত নিয়মানুযায়ী রোগীলিপি প্রস্তুত করতে হবে। রোগীলিপি অনুসারে রোগীর দেহ ও মনে প্রকাশিত লক্ষণাবলী যদি সিফিলিস মায়াজমকে নির্দেশ করে তাহলে এন্টিসিফিলিস ঔষধ প্রয়োগ করতে হবে। ঔষধ প্রয়োগের পর আরোগ্য পথে বাধা থাকলে তা দূর উপদেশ ও ব্যবস্থা নিতে হবে। তারপর যদি রোগীর দেহে সাইকোসিস মায়াজমের অধিক লক্ষণাবলী বর্তমান থাকে তাহলে রোগীকে এন্টিসাইকোটিক ঔষধ দিয়ে চিকিৎসা শুরু করতে হবে। এরপর যদি টিউবারকুলার মায়াজম অধিক লক্ষণাবলী থাকে তাহলে এন্টিটিউবারকুলার ঔষধ দিতে হবে। উপরিউক্ত মায়াজমেটিক অবস্থা দূর হলে যদি রোগীর সার্বিক লক্ষণাবলী নিয়ে রোগীকে এন্টিসোরিক প্রদান করতে হবে, তবেই রোগ সম্পূর্ণরূপে আরোগ্য হবে।

টিউবারকুলার মায়াজম

প্রশ্নঃ টিউবারকুলার মায়াজম কাকে বলে?

টিউবারকুলার মায়াজম: সোরার সাথে সাইকোসিস, সোরার সাথে সিফিলিস বা সোবার সাথে সাইকোসিস ও সিফিলিস একত্রে সংমিশ্রত হয়ে যে রোগপ্রবণতা সৃষ্টিকারী মিশ্র মায়াজমেটিক অবস্থা সৃষ্টি হয়, তাকে টিউবারকুলার মায়াজম বলে। অর্থাৎ দুই বা ততোধিক মায়াজম একত্রে মিশ্রিত হয়ে দেহের মধ্যে যে রোগ অবস্থা সৃষ্টি করে, তাকে টিউবারকুলার মায়াজম বলে।

প্রশ্নঃ কিভাবে টিউবারকুলার মায়াজমের সৃষ্টি হয়? আলোচনা কর। ২০০৮, ০৯, ১৫. ১৭, বা, কিভাবে টিউবারকুলার ডায়াথিসিস সৃষ্টি হয়? ১৮

টিউবারকুলার মায়াজমের সৃষ্টি :

সোরার সাথে সাইকোসিস বা সিফিলিসের সংমিশ্রনে টিউবারকুলার মায়াজমের সৃষ্টি হয়। পিতা-মাতার দেহে সোরা ও সিফিলিসের মিলন ঘটিলে সন্তানের দেহে বংশগতভাবে প্রাপ্ত দোষের ভিত্তিতে ঐ সংমিশ্রিত অবস্থাটি টিউবারকুলার মায়াজমে রূপান্তরিত হয়। এছাড়াও কোন ব্যক্তির দেহে বিকশিত সোরা বর্তমান থাকলে তার সাথে অর্জিত সাইকোসিস বা সিফিলিস যুক্ত হয়ে এ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে।

৩। প্রশ্ন: টিউবারকুলার মায়াজমের মানসিক লক্ষণ লিখ। ১০ বা, টিউবারকুলার দোষের মানসিক লক্ষণাবলীর বর্ণনা দাও।

টিউবারকুলার মায়াজমের মানসিক লক্ষণ:

মানসিক লক্ষণাবলী:

(i) মানসিক অবস্থা পরিবর্তনশীল এবং প্রায় পরস্পরবিরোধী।

(ii) নিজের রোগের গুরুত্ব সম্পর্কে উদাসীন ও ভ্রুক্ষেপবিহীন।

(iii) আরোগ্য সম্বন্ধে সর্বদাই আশান্বিত। অভ্যাস দ্রুত পরিবর্তন করে।

(iv) বাসস্থানের পরিবর্তন চায়।

(v) পেশা ও চিকিৎসা পরিবর্তন চায়। সর্বদা অন্য কিছু কাজ করতে চায়, অর্থাৎ এক কাজে বেশি ক্ষণ মন দিতে পারে না।

(vi) ক্ষত প্রকাশ পেলে রোগীর মানসিক লক্ষণ উপশম হয়।

৪। প্রশ্ন: টিউবারকুলার মায়াজমে আক্রান্ত শিশুর লক্ষণাবলী লিখ। বা, একজন বংশগত টিউবারকুলার দোষজ শিশুর চিত্র অংকন কর। ১৮

টিউবারকুলার মায়াজমে আক্রান্ত শিশুর লক্ষণাবলী:

(i) টিউবারকুলার মায়াজমের শিশুরা অতিরিক্ত গরম বা ঠান্ডা কিছুই সহ্য করতে পারে না।

(ii) দাঁত থেকে মাড়ি আলগা হয়ে যায়। মাড়ি খুব নরম ও স্পঞ্জের মত।

(iii) দাঁত অনিয়মিত- ত্রুটিপূর্ণভাবে গজায়, প্রায় ক্ষেত্রে মাড়ি থেকে সমস্ত দাঁত বের হওয়ার আগেই ক্ষয় হতে থাকে বা গলে যেতে থাকে।

(iv) সকাল বেলায় কোন ক্ষুধা থাকে না কিন্তু অন্য সময় ক্ষুধা পায়।

(v) কোন জিনিস খেতে হয়তো খুব মন চায় কিন্তু যখন সে তা পায় তখন খেতে চায় না, বাস্তবে সেসবের প্রতি বিরক্ত হয়।

(vi) চর্বি ও চর্বি জাতীয় খাদ্য খেয়ে সতেজ হয়ে স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে, সাথে বেশি লবণও তার প্রয়োজন।

৫। প্রশ্ন: টিউবারকুলার মায়াজমের রোগীর ধাতুগত লিখ।

টিউবারকুলার মায়াজমের রোগীর ধাতুগত:

(i) মানসিক অবস্থা পরিবর্তনশীল এবং প্রায় পরস্পরবিরোধী।

(ii) নিজের রোগের গুরুত্ব সম্পর্কে উদাসীন ও ভ্রুক্ষেপবিহীন।

(iii) রোগীর মুখমন্ডল বিবর্ণ ও মলিন কিন্তু চোয়াল দুইটি সামান্য রক্তিম। মুখমন্ডলের এক পাশ গরম এবং অন্য পাশ ঠান্ডা অনুভূত হয়।

(iv) রোগীর ঠোঁট দুইটি লালবর্ণ ধারণ করে।

(v) ঠান্ডা ও সর্দি লাগার প্রবণতা।

(vi) প্রচুর পরিমাণ খাওয়া সত্বেও কোন কারণ ছাড়াই ক্রমিক শীর্ণতা, শুষ্কতা ও দুর্বলতা প্রকাশ পায়।

(vii) খাদ্যবস্তু হজম করে সারাংশ শোষন করার ক্ষমতা হ্রাস।

(viii) দেহের যাবতীয় প্ল্যান্ডসমূহের স্ফীতি দেখা যায়।

(ix) মাথার চুল রুক্ষ, কর্কশ, জটাবাঁধা এবং অগ্রভাগ ফাটা ফাটা।

৬। প্রশ্ন: টিউবারকুলার মায়াজমের আরোগ্যের প্রকৃত সময় কখন? ০৮, ১১, ১৫

টিউবারকুলার মায়াজমের আরোগ্যের প্রকৃত সময়:

টিউবারকুলার মায়াজমটি যতক্ষণ পর্যন্ত টিউবারকুলোসিসে রূপান্তরিত না হয় ততক্ষণ পর্যন্ত ইহার আরোগ্যের প্রকৃত সময়। বিশেষ করে টিউবারকুলার মায়াজমটি বিকশিত হওয়ার পূর্বে সুপ্ত অবস্থায় থাকাকালীন চিকিৎসা করা উচিত। টিউবারকুলার মায়াজম এমন একটি অবস্থা যা পিতা-মাতার কাছ হতে বংশগতভাবে প্রাপ্ত মায়াজমের ভিত্তিতে গড়ে উঠে। বংশগত সোরা, সিফিলিসের ধারাটিই টিউবারকুলোসিস, তাই রোগীর বংশগত ইতিহাস সংগ্রহ করে মায়াজমেটিক অবস্থা অনুসারে সুপ্তাবস্থাতেই সদৃশ বিধান মতে এই মায়াজমের আরোগ্য প্রকৃত সময়।

৭। প্রশ্ন: টিউবারকুলার রোগীর হার্টের গোলযোগসমূহ লিখ। ১০ টিউবারকুলার রোগীর হার্টের গোলযোগসমূহঃ

সোরা ধাতুর সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত রোগী। হৃদরোগী স্থিরভাবে থাকতে চায়। উঁচুতে উঠতে পারে না, অতি উচ্চস্থানে উঠলে রোগ বৃদ্ধি পায়। দীর্ঘ শ্বাস নিলে হৃদকম্প বেড়ে যায়। অতিরিক্ত ইন্দ্রিয়ের ব্যবহার রোগীর জন্য ক্ষতিকর তবুও রোগী তাই করে। বসে থাকলে ইহার রোগীর হার্টের রোগ লক্ষণ বেড়ে যায় কিন্তু শুয়ে থাকলে উপশম।

৮। প্রশ্ন: টিউবারকুলোসিস ও টিউবারকুলার মায়াজমের মধ্যে পার্থক্য কি? ০৯

টিউবারকুলোসিস ও টিউবারকুলার মায়াজমের মাধ্যে পার্থক্য:

টিউবারকুলোসিস

টিউবারকুলোসিস হচ্ছে একটি সংক্রামক রোগ যা মাইকোব্যাক্টেরিয়াম টিউবারকুলোসিস নামক জীবাণু দ্বারা সৃষ্টি হয়।

এটি একটি রোগ অবস্থা।

এটি সংক্রামক রোগ, এক ব্যক্তি হতে অন্য ব্যক্তিতে সংক্রামিত হয়।

এতে জীবাণুর সংক্রমনের ফলে ৪ রোগের সৃষ্টি হয়।

টিউবারকুলার মায়াজম

সোরার সাথে সাইকোসিস বা সিফিলিসের সংমিশ্রনে টিউবারকুলার মায়াজমের সৃষ্টি হয়। পিতা-মাতার দেহে সোরা ও সিফিলিসের মিলন ঘটিলে সন্তানের দেহে বংশগতভাবে প্রাপ্ত দোষের ভিত্তিতে ঐ সংমিশ্রিত অবস্থাটি টিউবারকুলার মায়াজমে রূপান্তরিত হয়।

এটি একটি মায়াজমেটিক অবস্থা।

এটি বংশানুক্রমিক।

এটি দেহে বর্তমান থাকা অবস্থায় উত্তেজক কারণে সংস্পশে আসলে রোগের সৃষ্টি হয়।

প্রশ্নঃ টিউবারকুলার মায়াজমের চরিত্রগত লক্ষণ লিখ। ০৮, ১২

টিউবারকুলার মায়াজমের চরিত্রগত লক্ষণ:

(i) মাথার যন্ত্রণায় নিচের দিকে মুখ করে ঝুকে থাকে, বিষন্ন হয়ে পড়ে এবং মনমরা ভাব থাকে।

(ii) মাথাব্যথা হ্রাস বিশ্রামে, শান্ত হয়ে থাকলে, নিদ্রায়, আহারে।

(iii) টিউবারকুলার মাথাব্যথা সারাদিন ধরে থাকে। তা খুব তীব্র, প্রায়ই অসহ্যকর, মনে হয় মাথা কোন বন্ধনী দিয়ে বেঁধে রেখেছে।

(iv) শিশুদের এই জাতীয় মাথাব্যথার সময় তাদের হাত দিয়ে বা কোনও কিছু দিয়ে তারা মাথায় আঘাত করে।

(v) চুল পাটের মত শুকনো, পুরনো দড়ির মত শুকনো, মরা। চুল ভেজা, একটার সাথে একটা লেগে ধরে, মাথায় দুর্গন্ধ।

(vi) চুল খুব তেলতেলে, চকচকে, চুলের গোড়ায় রসযুক্ত উদ্ভেদ। ভেজা, দুর্গন্ধ, জট বাঁধা চুলসহ তালুতে খুব তীব্র চুলকানী।

(vii) চোখের পাতা ফোলা, চোখের পাতা লালবর্ণ। কৃত্রিম আলো সহ্য করতে পারে না।

(viii) প্রচুর পরিমাণে ঘন পুঁজ উৎপাদন বা নির্গমন, বিশেষত তা যদি সবুজ বা হলদে মিশ্রিত সবুজ বর্ণের হয়।

(ix) আঁশের মত রক্তিম অক্ষিপট, রাগান্বিত দৃষ্টি।

(x) সিলিয়ারী পেশীর স্নায়শূল, চোখে আঞ্জনী।

(xi) কানে ফোড়া ও পুঁজ হয়। ঠান্ডা লাগার দরুন কানে পুঁজ, গলায় ক্ষত হয়। ফোঁড়া থেকে গলিত প্রাণীর মাংসের মত স্বতন্ত্র দুর্গন্ধ নির্গত • হয়। স্রাবগুলি প্রায় পনির বা দইয়ের মত।

(xii) স্বাদ- পঁচা, পুঁজের, রক্তের, মেটালিকের মতো স্বাদ। মাড়ী থেকে খুব রক্তপড়ে। কাশির সাথে যে গয়ার নির্গত হয় তার স্বাদ মিষ্টি। লবণাক্ত স্বাদ যা একধরনের পচা ডিমের স্বাদ। সব ধরনের ধাতব স্বাদ টিউবারকুলার উপাদানের উপস্থিতির নির্দেশ করে।

(xiii) খাবার পরেও প্রচন্ড ক্ষুধা। দুর্বলতা নিমগ্নভাব, লবণাক্ত মাছ খেতে চায়। ঠান্ডা খাদ্য ও পানীয় আসক্তি।

(xiv) চর্বি ও চর্বিজাতীয় খাদ্য খেয়ে সতেজ হয়ে স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে, সাথে বেশী লবণ ও চায়।

(xv) মলদ্বার, মল স্থায়ী উদরাময়হেতু দৈহিক রক্ত রসের ক্ষয়। মল আমযুক্ত, রক্তযুক্ত, মাটির মতো গন্ধযুক্ত। মলদ্বার থেকে রক্তপাত হয়। মলদ্বারে ফিস্টুলা।

(xvi) অবিরত মূত্রত্যাগহেতু স্থায়ীভাবে জীবনীশক্তির ক্ষয়ক্ষতি। মূত্র ফসফেট, শর্করা বা প্রোটিন পূর্ণ থাকে।

(xvii) হৃদরোগী স্থিরভাবে থাকতে চায়। উচুতে উঠতে পারে না, অতি উচ্চস্থানে উঠলে রোগ বৃদ্ধি পায়।

(xviii) চর্মে উদ্ভেদ এবং আঘাতপ্রাপ্ত ক্ষত আরোগ্য হতে বিলম্ব হয়।

গালে চক্রাকার দাগ দেখা যায়।

(xix) নখ অসমান, ভঙ্গুর, সহজে টুকরা হয়ে ভেঙে যায়। নখের পাশ থেকে চামড়া ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে নখ সরে ও ঝুলে যায়। খুবই মসৃন্ চকচকে নখ। সাদা ছোট দাগযুক্ত নখ।

প্রশ্নঃ : টিউবারকুলার মায়াজমের শ্বাসতন্ত্রের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর। ২০১৮

টিউবারকুলার মায়াজমের শ্বাসতন্ত্রের লক্ষণাবলী:

(i) বক্ষস্থলটি শীর্ণ, শুষ্ক প্রায় অপ্রশস্ত বলে বক্ষদেশটি সম্পূর্ণরূপে প্রসারিত ও সংকুচিত করতে পারে না।

(ii) ফুসফুসে দুর্বলতা, সংকোচন-প্রসারণের অক্ষমতার ফলে রোগী প্রয়োজনীয় অক্সিজেন গ্রহন করতে পারে না।

(iii) এনিমিয়ার কারণে পেশী ও তন্ত্রসমূহ অপুষ্ট থাকে ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায় এবং শ্বাসতন্ত্রে জীবাণু সংক্রামিত হয়।

(iv) ঠান্ডায় রোগের বৃদ্ধি, তাই ঠান্ডা লাগার ভয়ে রোগী সব সময় বুক ঢাকা দিয়ে রাখে।

(v) খুসখুসে কাশি- শ্বাসতন্ত্রে দুর্বলতার কারণে বক্ষ প্রসারিত করতে পারে না। কফ পানিতে ভাসে।

(vi) সর্দি কাশির সাথে টনসিল, লিম্ফনোড স্ফীত হতে দেখা যায়।

(vii) বক্ষস্থলে স্নায়ুবিক ব্যথা অনুভূত হতে থাকে। সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠার সময় প্রচন্ড শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়।

(viii) অর্শ, মাথাব্যথা প্রভৃতি রোগের সাথে পর্যায়ক্রমে শ্বাসতন্ত্রের রোগ দেখা দেয়।

(ix) স্বরভঙ্গ হয়, গলা খুসখুস করে শুকনো আপেক্ষিক কাশি হয় এবং সবশেষে যথার্থ টিউবারকুলার অবস্থা প্রকাশ পায়।

২১। প্রশ্নঃ টিউবারকুলার মায়াজমের হৃদপিন্ডের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর। বা, টিউবারকুলার দোষগ্রস্ত ব্যক্তির হার্টের গোলযোগ সম্পর্কে লিখ।১৮ টিউবারকুলার মায়াজমের হৃদপিন্ডের লক্ষণাবলীঃ

(1) হৃদপিন্ডের দপদপানি, দুর্বলতা ও জীবনীশক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে।

(ii) রোগীর চোখের চারপাশে কালো দাগ পড়ে এবং চোখ কোটরাগত।

(iii) হৃৎপিন্ডের মত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের রোগলক্ষণ রোগীর মনে কোন প্রকার উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা বা আশংকা সৃষ্টি করতে পারে না।

(iv) বুকে রক্ত সংবহন তীব্র, বিশেষত যুবকদের।

(v) হৃদপিন্ডের অসুস্থতার সাথে দেখা দেয় মূর্ছা যাওয়া, সাময়িক দৃষ্টিহীনতা, কানে ভোঁ ভোঁ শব্দ হওয়া, বিমর্ষতা এবং নিদারুন দুর্বলতা।

উঠে বসলে কষ্ট বাড়ে এবং শুলে সাধারণত কষ্ট কমে।

(vi) রক্ত সংবহনের অসুবিধার জন্য এরা পর্বতারোহন করতে পারে না, মস্তিষ্ক আক্রান্ত হয়ে এদের মাথা ঝিমঝিম করে, নিস্তেজ হয়ে পড়ে।

(vii) খুব উচ্চস্থানে উঠলে এদের মস্তিষ্ক রক্তশূন্য হয়ে পড়ে।

(viii) নাড়ি ক্ষীণ ও অতিশয় দ্রুত চলে।

(ix) এই মায়াজমের রোগীদের শরীর ক্রমশঃ শুকিয়ে যায়, বুকে ও মুখমন্ডলে রক্তাধিক্য ঘটে।

(x) টিউবারকুলার রোগীদের শ্বাসকষ্ট প্রায়ই ব্যথাদায়ক।

(xi) সাইকোটিক রোগীদের তুলনায় সোরিক বা টিউবারকুলার রোগীদের আঙ্গিক বা সর্বাঙ্গীন শোথ সবসময় বেশী।

(xii) অর্শ ও ভগন্দর চাপা পড়লে পর্যায়ক্রমে হৃদরোগ দেখা দেয়।

২২। প্রশ্ন: টিউবারকুলার মায়াজমের পুংজননেন্দ্রিয়ের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর।

টিউবারকুলার মায়াজমের পুংজননেন্দ্রিয়ের লক্ষণাবলী:

(i) ঘুমের ঘোরে স্বপ্ন না দেখেই বীর্যপাত বা শুক্রক্ষরণ।

(ii) মন সব সময়ই উৎসাহশূন্য ও বিষন্ন থাকে।

(iii) প্রায়ই হস্তমৈথুনের মাধ্যেমে বা অনৈতিক পন্থায় শুক্রক্ষরণ করে।

(iv) বীর্যক্ষরণের কারণে স্মৃতিশক্তি হ্রাস পায়।

(v) প্রস্রাব ও মলত্যাগ করার সময় কিংবা সামান্য মানসিক উত্তেজনায় বীর্যপাত হয়।

প্রশ্নঃ টিউবারকুলার মায়াজমের লিউকোরিয়া বা শ্বেতপ্রদরের লক্ষণাবলী বর্ণনা কর। বা, টিউবারকুলার দোষঘ্ন স্ত্রীলোকের শ্বেতপ্রদরের বৈশিষ্ট্য লিখ। ১০, ১১, ১৫, ১৭

টিউবারকুলার মায়াজমের লিউকোরিয়া বা শ্বেতপ্রদরের লক্ষণাবলী:

(i) সাদাস্রাব সাধারণত পুঁজযুক্ত কিন্তু জলীয় শ্লেষ্মার মতও হতে পারে। বা ভাতের মাড়ের মত বা পানির মত।

(ii) রোগীরা প্রায়ই স্রাবের আগে বা অব্যবহিত পড়ে খুব দুর্বল হয়ে তাদের অবস্থার অবনতি ঘটে। ঋতুস্রাবের অব্যবহিত পূর্বে বা পরে দুর্বলকর শ্বেতস্রাব দেখা দেয়।

(iii) লিউকোরিয়া ঘন, হলুদ বর্ণের, সবুজাভ হলুদ, ক্রিমের মত এবং মিষ্ট গন্ধযুক্ত।

(iv) স্রাবের গন্ধ – বাসী গন্ধযুক্ত।

(v) স্রাব প্রচুর পরিমাণে, ঘন ঘন ও দীর্ঘস্থায়ী, এর সাথে কোমর ব্যথা, সমগ্র পেশীতন্ত্রের শিথিলতা, সহজে পরিশ্রান্ত হয়ে পড়ে, ক্লান্ত হয়ে পড়ে।

(vi) চেহারা ক্রমশ ফ্যাকাশে, হলদেটে ছাইবর্ণ ধারণ করে।

(vii) ভাতের মাড়ের মত বা পানির মত শ্বেতস্রাব দেখা দেয়, সাথে হৃদপিন্ডের দপদপানি, দুর্বলতা ও জীবনীশক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে।

(viii) মুখমন্ডল লাল হয়ে উঠে, মাথা ঘোরে, কানে হৈ-চৈ শব্দ হয়।

(ix) খুব বিষন্ন, হতাশ, উদ্বিগ্ন, কল্পনাপ্রসূর ধারণায় পরিপূর্ণ। পূর্বানুমান হয়ে প্রচন্ড ভীতি।

(x) প্রচন্ড অনুভূতিসম্পন্ন, স্নায়বিক উত্তেজক ও ক্রন্দনশীল হয়।

প্রশ্ন: এন্টিটিউবারকুলার ঔষধ কাকে বলে? দশটি এন্টিটিউবারকুলার ঔষধের নাম লিখ।বা, পাঁচটি প্রধান এন্টিটিউবারকুলার ঔষধের পূর্ণনাম লিখ। ১০, ১২

এন্টিটিউবারকুলার ঔষধের সংজ্ঞা:

যে সকল ঔষধ সুস্থ ব্যক্তির দেহে প্রয়োগ করলে সুপ্ত সোরা বিকশিত হয়ে সাইকোসিস বা সিফিলিসের সাথে সংমিশ্রন ঘটে– টিউবারকুলার মায়াজমের অবস্থা সৃষ্টি করতে পারে এবং টিউবারকুলার মায়াজমগ্রন্থ ব্যক্তির দেহে প্রয়োগ করলে তা পর্যায়ক্রমে আদর্শ আরোগ্য করতে পারে, সে সকল ঔষধসমূহকে এন্টিটিউবারকুলার ঔষধ বলে।

দশটি প্রধান এন্টিটিউবারকুলার ঔষধের পূর্ণনামঃ

(i) ক্যালকেরিয়া কার্বোনিকাম

(ii) আয়োডিয়াম

(iii) মেডোরিনাম

(iv) সিফিলিনাম

(v) টিউবারকুলিনাম বভিনাম

(vi) থুজা অক্সিডেন্টালিস।

(vii) সালফার

(viii) স্ট্যাফিসেগ্রিয়া

(ix) কার্বো-ভেজিটেবিলিস

(x) ব্যারাইটা কার্বনিকা।

প্রশ্নঃ টিউবারকুলার রোগীর খাদ্যের ইচ্ছা-অনিচ্ছা লিখ। ২০০৯, ১১, ১২, ১৭

টিউবারকুলার রোগীর খাদ্যের ইচ্ছা-অনিচ্ছাঃ

(i) খাবার পরেও প্রচন্ড ক্ষুধা। দুর্বলতা নিমগ্নভাব, লবণাক্ত মাছ খেতে চায়। ঠান্ডা খাদ্য ও পানীয় ইচ্ছা।

(ii) চর্বি ও চর্বিজাতীয় খাদ্য খেয়ে সতেজ হয়ে স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে, সাথে বেশী লবণ ও চায়।

অনিচ্ছা:

(iii) টিউবারকুলার- মায়াজম শর্করা জাতীয় খাদ্য সহজে হজম করতে পারে না।

৩৩। প্রশ্ন: টিউবারকুলার মায়াজমের চিকিৎসা পদ্ধতি বর্ণনা কর।

টিউবারকুলার মায়াজমের চিকিৎসা পদ্ধতি:

ডাঃ হ্যানিম্যানের অর্গানন অব মেডিসিন এর ৮৪ থেকে ১০২ নং অনুচ্ছেদে বর্ণিত নিয়মানুযায়ী রোগীলিপি প্রস্তুত করতে হবে। রোগীলিপি অনুসারে রোগীর দেহ ও মনে প্রকাশিত লক্ষণাবলী টিউবারকুলার মায়াজমকে নির্দেশ করে তাহলে এন্টিটিউবারকুলার ঔষধ প্রয়োগ করতে হবে। ঔষধ প্রয়োগের পর আরোগ্য পথে বাধা থাকলে তা দূর করার উপদেশ ও ব্যবস্থা নিতে হবে। তারপর যদি রোগীর দেহে সাইকোসিস মায়াজমের অধিক লক্ষণাবলী বর্তমান থাকে তাহলে রোগীকে এন্টিসাইকোটিক ঔষধ দিয়ে চিকিৎসা শুরু করতে হবে। এরপর যদি সিফিলিস মায়াজমের অধিক লক্ষণাবলী থাকে তাহলে এন্টিসিফিলিটিক ঔষধ দিতে হবে। উপরিউক্ত মায়াজমেটিক অবস্থা দূর হলে রোগীর সার্বিক লক্ষণাবলী নিয়ে রোগীকে এন্টিসোরিক প্রদান ককালে রোগ সম্পূর্ণরূপে আরোগ্য হবে।

৩৪। প্রশ্নঃ মিশ্র মায়াজমের চিকিৎসা পদ্ধতি লিখ। ১৩ মিশ্র মায়াজমের চিকিৎসা পদ্ধতিঃ

রোগীর সম্পূর্ণ রোগীলিপি প্রস্তুত করতে হবে। রোগীলিপি প্রস্তুতের পর রোগীর মধ্যে যে মায়াজম অবস্থা তখন প্রকট অবস্থায় আছে সেই মায়াজমের এন্টিমায়াজমেটিক ঔষধ দিতে হবে।

রোগারোগ্যের প্রতিবন্ধকতা থাকলে বা আরোগ্যের পথে বাধা থাকলে তা দূর করার ব্যবস্থা করতে হবে। ঔষধের ও রোগের সাথে সম্পর্ক রেখে রোগীর পথ্যাপথ্যের ব্যবস্থা করতে হবে। অতপর প্রথমে যদি রোগীর দেহে সাইকোসিস মায়াজমের অধিক লক্ষণাবলী বর্তমান থাকে তাহলে রোগীকে এন্টিসাইকোটিক ঔষধ দিয়ে চিকিৎসা শুরু করতে হবে। তারপর যদি সিফিলিস মায়াজমের লক্ষণাবলী অধিক থাকে তাহলে এন্টিসিফিলিটিক ঔষধ দিতে হবে। একইরূপে টিউবারকুলার মায়াজমের ঔষধ দিতে হবে। উপরিউক্ত মায়াজমেটিক অবস্থা দূর হলে যদি রোগীর সার্বিক লক্ষণাবলী নিয়ে রোগীকে এন্টিসোরিক প্রদান করতে হবে, তবেই রোগ সম্পূর্ণরূপে আরোগ্য হবে।

সুতরাং মিশ্র মায়াজমের চিকিৎসা পদ্ধতি অত্যন্ত জটিল ও কঠিন যা চিকিৎসক ও রোগীর উভয়ের ধৈর্য্য থাকতে হবে এবং প্রয়োজনীয় নিয়মকানুন মানতে হবে।

ব্যাক্টেরিয়া ও প্যাথলজি সম্পর্ক

১। প্রশ্ন: ব্যাকটেরিয়া কি?

ব্যাকটেরিয়া (bacteria): ব্যাক্টেরিয়া একপ্রকার অতি ক্ষুদ্র সরলতম ক্লোরোফিলবিহীন প্রোক্যারিওটিক আনুবীক্ষনিক এককোষী প্রাণী। অনুবীক্ষণ যন্ত্র ছাড়া এদেরকে খালি চোখে দেখা যায় না। ক্লোরোফিলবিহীন বলে এরা নিজের খাদ্য নিজেরা প্রস্তুত করতে পারে না। পাঁচটি ব্যাক্টেরিয়ার: স্ট্রেপটোকক্কাস, স্ট্যাফাইলোকক্কাস, সারসিনা, ক্লসট্রিডিয়াম, ভিব্রিও কলেরি।

২। প্রশ্ন: সংক্ষেপে ব্যাকটেরিয়ার শ্রেণীবিভাগ কর।

– ব্যাকটেরিয়ার শ্রেণীবিভাগ:

ক) আকৃতি অনুযায়ী ব্যাকটেরিয়াকে নিম্নলিখিত ভাগে ভাগ করা যায়।

যথা-

১। কক্কাস-এদের দেহ গোলাকার।

২। ব্যাসিলাস- এদের দেহ দন্ডাকার।

৩। ভিব্রিও এদের দেহ ‘কমা’ আকৃতি।

৪। স্পাইরিলাম-এদের দেহ সর্পিল।

৫। স্পাইরোকীট- এদের দেহ সরু, নমনীয় এবং ক্রুর মত পাকানো।

খ) রঞ্জন বৈশিষ্ট্য অনুসারে ব্যাকটেরিয়ার শ্রেণীবিভাগঃ

রঞ্জন বৈশিষ্ট্য অনুসারে ব্যাকটেরিয়াকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। যথা- (i) গ্রাম নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়া ও (ii) গ্রাম পজেটিভ ব্যাকটেরিয়া

গ) অক্সিজেনের নির্ভরশীলতা অনুসারে ব্যাকটেরিয়াকে দুই ভাগে ভাগ

করা হয়। যথা- (i) এরোবিক বা বায়ুজীবী ও (ii) আনএরোবিক বা অবায়ুজীবী।

ব্যাকটেরিয়ার কালচার

(Culture of Bacteria)

৪। প্রশ্ন: কালচার কাকে বলে?

কালচার (Culture):

যে সব বস্তুর মধ্যে ব্যাকটেরিয়া সহজে জন্মায় এবং বংশবৃদ্ধি করে সে সব পদার্থ বা বস্তুকে কালচার মিডিয়াম বলে। ব্যাকটেরিয়াদের পৃথকভাবে নিয়ে ভালো মিডিয়ামে রেখে উপযুক্ত তাপে তাদের বংশ বৃদ্ধি করার ব্যবস্থা করাকে কালচার বলে।

৫। প্রশ্ন: ব্যাকটেরিয়া কালচারের উদ্দেশ্য কি?

ব্যাকটেরিয়া কালচারের উদ্দেশ্য:

ল্যাবরেটরীতে নানা উদ্দেশ্য ব্যাকটেরিয়া কালচার করা হয়। যেমন-

(i) এন্টিজেন তৈরী বা অন্যান্য পরীক্ষাতে ইহা প্রয়োজন হয়ে থাকে।

(ii) ব্যাকটেরিও ফাজ তৈরিতে ইহা প্রয়োজন হয়।

(iii) ব্যাকটেরিয়াদের নিজস্ব গুণাগুণ পরীক্ষা করার জন্য।

(iv) কোন কোন এন্টিবায়োটিকে সেনসিটিভ তা পরীক্ষা করা হয়।

(v) ইহাদের গননা করার জন্য কালচার প্রয়োজন হয়।

৬। প্রশ্ন: এনামনোসিস কি? ১২ বা, এনামনোসিস কাকে বলে?

এনামনোসিস:

এনামনোসিসের অর্থ রোগীর লক্ষণ সমষ্টি। রোগীর বর্তমান ও অতীত লক্ষণ, রোগ লক্ষণের ক্রমবিকাশ, লক্ষণ বৃদ্ধির কারণ, রোগীর বংশানুক্রমিক ইতিহাস, রোগীর দৈহিক গঠনমূলক লক্ষণ, রোগ নিরাময়ের পারিপার্শ্বিক বাধা বিপত্তি, জীবাণুঘটিত রোগের জটিল প্রকৃতি প্রভৃতি এনামনোসিসের অন্তর্ভুক্ত। অর্থাৎ রোগী সম্বন্ধে পুংখানুপুংখভাবে জানার নাম এনামনোসিস। হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় এনামনোসিস অপরিহার্য। রোগে আক্রমণে দেহ ও মনের উপর কিরূপ প্রতিক্রিয়া ঘটেছে এবং তাদের প্রতিরোধ ব্যবস্থা কিরূপ সে সম্বন্ধে পরিচয় লাভ করাই এনামনোসিসের লক্ষ্য।

৭। প্রশ্ন: প্যাথলজির সংজ্ঞা দাও।

প্যাথলজির সংজ্ঞা (Definition of pathology):

চিকিৎসা বিজ্ঞানের যে শাখা রোগের কারণ, রোগ বিস্তারের পদ্ধতি, রোগের ফলে দেহের বিভিন্ন অঙ্গের পরিবর্তন এবং উপাদানের তারতম্য, সঠিকভাবে রোগের কারণ অনুসন্ধান ও লক্ষণাবলী নির্ণয় এবং রোগারোগ্য ঔষধের নির্দেশনা প্রভৃতি নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা, পর্যলোচনা ও গবেষণা করা হয়, তাকে প্যাথলজি বলে।

৮। প্রশ্নঃ রোগ নির্ণয় বলতে কি বুঝ? ০৮, ১০, ১২

ডায়াগনসিস:

“Diagnosis” শব্দটি চিকিৎসার ইতিহাসে অত্যন্ত পুরাতন এবং পরিচিত। “Diagnosis” শব্দের অর্থ রোগ নির্ণয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানে যা দ্বারা রোগের উৎপত্তি, প্রকৃতি ও কারণ নির্ণয় করা হয়, তাকে ডায়াগনসিস বলা হয়। তথাকথিত এলোপ্যাথিক চিকিৎসায় ডায়াগনসিস মুখ্য ভূমিকা এবং হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় সহায়ক ভূমিকা পালন করে। ডায়াগনসিস এর দ্বারা (Clinical diagnosis, Laboratory diagnosis, Pathological diagnosis) রোগের প্রকৃতি নির্ণয় করে, পরিচিত নামের একটি রোগের তালিকায় ইহাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয় বা প্রয়োজন বোধে নতুন নাম দেয়া হয়।

৯। প্রশ্নঃ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় ডায়াগনসিস ও এনামনোসিসের প্রয়োজনীয়তা কর।

হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় ডায়াগনসিস ও এনামনোসিসের প্রয়োজনীয়তা বর্ণনা:

রোগীকে সার্বিকভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে রোগ সম্বন্ধে একটা সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায়। এই প্রকার রোগের পরিচিতিকে বলে ডায়াগনসিস। নিদানশাস্ত্র অনুসারে রোগের তথ্য নির্ণয় হল ডায়াগনসিসের মূল লক্ষ্য। কিন্তু এনামনোসিসের প্রয়োজন হল তার চাইতে আরও একটু বেশী। আরও একটু সূক্ষ্ম, রোগীর ব্যক্তিত্ব নিয়ে তার কারবার। হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় ঔষধ নির্বাচনে এনামনোসিস অপরিহার্য। কিন্তু ডায়াগনসিস না হলেও ঔষধ নির্বাচনে কোন বাধা হয় না। খুব নিপুণভাবে রোগীলিপি প্রস্তুত হলে ডায়াগনসিস ও এনামনোসিস এই উভয়ই বিধ প্রয়োজনই সিদ্ধ হতে পারে। মূলকথা হল দেহতন্ত্রের বিভিন্ন উপাদান ও কোষের কতখানি ক্ষতি সাধিত হয়েছে এবং সেজন্য কোন প্রকার জীবাণু বা অন্যকোন কারণ কতখানি দায়ী তথা নির্ধারণ করাই হল ডায়াগনসিসের কাজ। অপর পক্ষে রোগের আক্রমণে দেহ ও মনের উপর কিরূপ প্রতিক্রিয়া ঘটেছে এবং তাদের প্রতিরোধ ব্যবস্থা কিরূপ সে সম্বন্ধে পরিচয় লাভ করাই এনামনোসিসের লক্ষ্য।

সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় উভয়েরই প্রয়োজনীয়তা আছে।

১০। প্রশ্ন: রোগ জীবাণু বলতে কি বুঝ? ০৯

রোগ জীবাণুর সংজ্ঞা:

রোগজীবাণু হচ্ছে রোগ সৃষ্টির কারণ এবং রোগ সৃষ্টির বাহক যা মানুষের দেহে রোগ উৎপন্ন করে। ইহা পোষক দেহে বাস করে

নিজের জীবন ধারণ ও বংশ বৃদ্ধি করে। ফলে পোষক দেহে বিভিন্ন ধরনের রোগের উৎপন্ন করে। এরা আনুবীক্ষণিক। শক্তিশালী অনুবীক্ষণ যন্ত্র ছাড়া এদেরকে খালি চোখে দেখা যায় না।

১১। প্রশ্ন: জীবাণুসমূহের ধ্বংসের দ্বারা চিররোগ নিরাময় করা যায় না কেন? ০৯

জীবাণুসমূহের ধ্বংসের দ্বারা চিররোগ নিরাময় করা যায় না কারণঃ

নাইসেরিয়া গনোরি নামক ব্যাকটেরিয়া পুরুষ বা মহিলার জননতন্ত্রে সংক্রমিত হয়ে গনোরিয়া রোগ উৎপন্ন করে। ইহা দ্বারা জননতন্ত্রে পুঁজ উৎপত্তিসহ বিভিন্ন রোগ লক্ষণ প্রকাশিত হয়। এ গনোরিয়া স্রাবকে বি-সদৃশ চিকিৎসা পদ্ধতির সাহায্যে চাপা দিলে সাইকোসিস মায়াজম সৃষ্টি হয়। চিররোগের কারণ ও প্রকৃত আরোগ্য জন্য গবেষণা করতে গিয়ে ডাঃ হ্যানিম্যান ইহা আবিষ্কার করেন।

ট্রিপোনিয়ামা প্যালিডাম নামক ব্যাকটেরিয়া পুরুষ বা মহিলা জননতন্ত্রে সংক্রমিত হয়ে সিফিলিস রোগ উৎপন্ন করে। ইহা দ্বারা জননতন্ত্রে ক্ষত ও পুঁজ উৎপত্তিসহ বিভিন্ন রোগ লক্ষণ প্রকাশিত হয়। এ সিফিলিস রোগকে বি-সদৃশ চিকিৎসা পদ্ধতি সাহায্য চাপা দিলে দেহের মধ্যে যে প্রভাবের সৃষ্টি হয় তা থেকে সিফিলিস মায়াজম সৃষ্টি হয়। চিররোগের কারণ ও প্রকৃত আরোগ্য জন্য গবেষণা করতে গিয়ে ডাঃ হ্যানিম্যান ইহা আবিষ্কার করেন।

সুতরাং উপরিউক্ত আলোচনা হতে ইহাই প্রতীয়মান হয় যে, জীবাণুসমূহের ধ্বংসের দ্বারা চিররোগ নিরাময় করা যায় না। অতএব যদি চিররোগের সম্পূর্ণ আদর্শ আরোগ্য করার জন্য মায়াজমকে ভিত্তি করে এন্টিমায়াজমেটিক ঔষধ প্রয়োগ করলে প্রকৃত আরোগ্য হবে যা ডাঃ হ্যানিম্যান নির্দেশ করেছেন।

১২। প্রশ্ন: হোমিওপ্যাথিতে প্যাথলজীর স্থান নিরূপণ কর। ০৮ হোমিওপ্যাথিতে প্যাথলজীর স্থান নিরূপণ:

হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা পদ্ধতি একটি বিজ্ঞান ভিত্তিক চিকিৎসা। জীবন বিরোধী কোন শক্তি বা প্রভাবের দ্বারা মানুষের জীবনী শক্তির বিশৃংখলা হেতু দেহ ও মনে প্রকাশিত অস্বাভাবিক চিহ্ন ও লক্ষণাবলীকে রোগ বলা হয়। রোগ হলো অজড়, অশুভ, প্রাকৃতিক শক্তি যা জীবনী শক্তির উপরে প্রভাব বিস্তার করলে দেহ ও মনে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। অর্থাৎ জীবনী শক্তি বিশৃংখলার ফলে শারীরিক ও মানসিক অস্বাভাবিক পরিবর্তন হওয়াকেই রোগ বলে। বর্তমান বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রার ফলে প্রত্যেকটি রোগের কারণ, রোগ বিস্তারের পদ্ধতি, রোগের ফলে দেহের বিভিন্ন অঙ্গের পরিবর্তন এবং উপাদানের তারতম্য, সঠিকভাবে রোগের কারণ অনুসন্ধান এবং রোগারোগ্য ঔষধের নির্দেশনা প্রভৃতি প্যাথলজির জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে সম্ভব। আর রোগ নির্ণয়ে চিকিৎসকে সহায়তা করে। চিকিৎসক প্যাথলজির জ্ঞান নিয়ে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা কার্য পরিচালনা করে অর্গানন অব মেডিসিনে বর্ণিত প্রকৃত চিকিৎসকের গুণাবলীসমূহ পরিপূর্ণ করা হয়।

সুতরাং হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে প্যাথলজির স্থান অত্যন্ত গুরুত্ব অবস্থানে যা রোগী প্রগনোসিস ও জটিলতা এড়ানো এবং আদর্শ আরোগ্য করা যায়।

১৩। প্রশ্ন: নিদান শাস্ত্রের বা প্যাথলজির সহিত রোগ জীবাণুর সম্পর্ক কি? ০৯

নিদান শাস্ত্রের সহিত রোগ জীবাণুর সম্পর্ক:

জীবাণু দ্বারা রোগে সৃষ্টি হয় বা রোগ প্রবণতা তৈরি হয়। বিভিন্ন ধরনের জীবাণু মানবদেহের সংস্পর্শে আসলে রোগের সৃষ্টি হয়। জীবাণু দেহে প্রবেশ করার পর একটা নির্দিষ্ট সময় পরে রোগে সূচনা

করে, তাকে রোগের সুপ্তিকাল বলে। রোগের দ্বারা বিকৃতি ও পরিবর্ধিত অঙ্গের গঠনবিন্যাস ও জীবাণু সম্বন্ধে আলোচনা, পর্যালোচনা ও গবেষণা করাই নিদানশাস্ত্রের কাজ। জীবাণু রোগ বিস্তারে সাহায্য করে আর নিদান শাস্ত্র বিকৃত অঙ্গ ও জীবাণু সম্পর্কে গবেষণা করে। নিদান শাস্ত্র বা প্যাথলিজর জ্ঞান দ্বারা রোগ জীবাণুকে সনাক্ত করতে হয়।

১৪। প্রশ্ন: ব্যাক্টেরিয়া ও প্যাথলজির সম্পর্ক বর্ণনা কর।

ব্যাক্টেরিয়া ও প্যাথলজির সম্পর্ক বর্ণনা:

ব্যাকটেরিয়া (bacteria):

ব্যাক্টেরিয়া একপ্রকার অতি ক্ষুদ্র সরলতম ক্লোরোফিলবিহীন প্রোক্যারিওটিক আনুবীক্ষনিক এককোষী প্রাণী। অনুবীক্ষণ যন্ত্র ছাড়া এদেরকে খালি চোখে দেখা যায় না। ক্লোরোফিলবিহীন বলে এরা নিজের খাদ্য নিজেরা প্রস্তুত করতে পারে না। পাঁচটি ব্যাক্টেরিয়ার: স্ট্রেপটোকক্কাস, স্ট্যাফাইলোকক্কাস, সারসিনা, ক্রসট্রিডিয়াম, ভিব্রিও কলেরি।

প্যাথলজি (pathology):

চিকিৎসা বিজ্ঞানের যে শাখা রোগের কারণ, রোগ বিস্তারের পদ্ধতি, রোগের ফলে দেহের বিভিন্ন অঙ্গের পরিবর্তন এবং উপাদানের তারতম্য, সঠিকভাবে রোগের কারণ অনুসন্ধান ও লক্ষণাবলী নির্ণয় এবং রোগারোগ্য ঔষধের নির্দেশনা প্রভৃতি নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা, পর্যলোচনা ও গবেষণা করা হয়, তাকে প্যাথলজি বলে।

সুতরাং ব্যাক্টেরিয়া ও প্যাথলজির মধ্যে সম্পর্ক বলতে গেলে বলা যায়, ব্যাক্টেরিয়া রোগ সৃষ্টি করে এবং প্যাথলজি রোগ নির্ণয়ে সাহায্য করে।

রুদ্ধগতি (Deflected current)

২০। প্রশ্নঃ রুদ্ধগতি কি? ১২ বা, বা প্রাপ্ত প্রবাহ বলতে কি বুঝ? ০৯ বা, রুদ্ধ গতি বলিতে কি বুঝ? ইহার কারণগুলো কি কি? ১১

রুদ্ধগতি এর সংজ্ঞাঃ

রোগ বিকাশের সমস্ত ক্রমবর্ধমান গতিটিই ভিতর হতে বাহিরের দিকে। রোগের কারণ অর্থাৎ সোরা, সিফিলিস, সাইকোসিস এর বিকাশিত মূর্তির গতিও ভিতর হতে বাহিরের দিকে। বাহ্যিক প্রকাশমান লক্ষণ হচ্ছে অভ্যন্তরীণ রোগের অবস্থা জানার একমাত্র উপায়। বিসদৃশ চিকিৎসা মতে রোগ বিকাশের গতিকে বা বাহ্যিক প্রকাশমান লক্ষণাবলীকে সাময়িক আরোগ্য জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহন করে চাপা দেয়া চিকিৎসায় অন্তর্মুখী প্রধান অঙ্গে কেন্দ্রীভূত করা হয়, তাকে রুদ্ধগতি বা বাধাপ্রাপ্ত প্রবাহ বলে।

রুদ্ধ গতি কারণসমূহ:

(i) বিসদৃশ চিকিৎসা পদ্ধতিতে যে কোন প্রকার চর্মরোগ সাময়িক উপশমের জন্য ঔষধি প্রলেপ লাগানো। >

(ii) বিসদৃশ ঔষধ মাত্রাতিরিক্ত সেবন করা।

(iii) বিসদৃশ চিকিৎসা পদ্ধতিতে যে কোন প্রকার স্রাব বন্ধ করা।

(vi) চিকিৎসক কর্তৃক ভুল ঔষধ প্রয়োগ করা।

(v) আরোগ্য হয়েছে এরূপ ব্যক্তির মুখে শুনে রোগী নিজে ঔষধ সেবন ও বাহ্যিক প্রয়োগ করা।

(vi) দ্রুত আরোগ্য লাভের জন্য বার বার চিকিৎসক পরিবর্তন করা।

২১। প্রশ্নঃ রোগ প্রবণতা কাকে বলে?

রোগ প্রবণতার সংজ্ঞাঃ

যখন কোন মায়াজমেটিক অবস্থা যে কোন উত্তেজক কারণে সহায়তা না পাওয়ায় বিকশিত না হয়ে দেহের মধ্যে সুপ্ত অবস্থায় থেকে যায়, তাকে রোগ প্রবণতা বলে। যেমন- সুপ্ত সোরা উপযুক্ত পরিবেশে সেকেন্ডারী অবস্থা প্রাপ্ত হয়।

২২। প্রশ্ন: রোগ প্রবণতা কিভাবে বৃদ্ধি ও ধ্বংস হয়? – আলোচনা কর।

রোগ প্রবণতা নিম্নলিখিতভাবে বৃদ্ধি ও ধ্বংস হয়:

রোগ প্রবনতা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অবস্থা ধারণ করে। ইহা পরিবর্তনশীল।

(i) বয়স: শিশু, তরুণ ও যুবক এর রোগ প্রবণতা বেশী এবং বয়স বৃদ্ধি সাথে রোগ প্রবণতা কমে।

(ii) দেহের ধাতু প্রকৃতি: রক্ত প্রধান, নার্ভাস ও উত্তেজনা প্রধান ধাতুর অনুভূতি প্রবণতা বেশী এবং শ্লেষ্মা প্রধান ধাতুর ও যাদের দেহে প্রতিক্রিয়া শক্তির অভাব তাদের রোগ প্রবণতা কম।

(iii) অভ্যাস ও বৃত্তি: বুদ্ধিমান, কল্পনা ও ভাবাবেগ প্রবণ ব্যক্তি, যারা

ঘরে বসে কাজ করে, যারা দীর্ঘ নিদ্রায় অভ্যস্ত তাদের প্রবণতা বেশী। যারা কঠোর শারীরিক পরিশ্রম করে, ঘরের বাহিরে যাদের বেশী সময় থাকতে হয়, যারা কম ঘুমান, তাদের প্রবণতা কম।

(iv) অতিরিক্ত ঔষধ গ্রহনে বা উগ্র ঔষধের স্কুলমাত্রা প্রয়োগে প্রবণতা

কমে যায়।

২৩। প্রশ্নঃ রোগ প্রতিরোধ ও রোগ প্রবণতার মধ্যে পার্থক্য কি? ১৪

রোগ প্রতিরোধ ও রোগ প্রবণতার মধ্যে পার্থক্য:

রোগ প্রতিরোধ

কোন সংক্রমনের বিরুদ্ধে ১ জীবন্ত দেহের যে প্রতিরোধকারী ক্ষমতা আছে, তাকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বলে।

দেহের প্রতিটি জীবিত কোষে ২ অবস্থিত জীবনী শক্তি ইহা সৃষ্টি করে।

ইহা দুই ভাবে সংগঠিত হয়। জন্মগত ও অর্জিত।

রোগ প্রবণতা

যখন কোন মায়াজমেটিক অবস্থা যে কোন উত্তেজক কারণে সহায়তা না পাওয়ায় বিকশিত না হয়ে দেহের মধ্যে সুপ্ত অবস্থায় থেকে যায়, তাকে রোগ প্রবণতা বলে।

বিভিন্ন ধরনের জীবাণু, জীবন যাপনের অনিয়ম এবং মাইক্রোঅর্গানিজম দ্বারা ইহা সংঘটিত হয়।

দেহতন্ত্রে কোন কিছুর অভাব বা আধিক্যের দ্বারা সংগঠিত হয়।

২৪। প্রশ্ন: সংবেদনশীলতা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার মধ্যে পার্থক্য লিখ। ১১, ১২

সংবেদনশীলতা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার মধ্যে পার্থক্য:

সংবেদনশীলতা (Susceptibility)

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা (Immunity)

উদ্দীপনের প্রতি সংবেদনশীল জীবন্ত দেহের প্রতিক্রিয়াকে, সংবেদনশীলতা বলে।

কোন সংক্রমনের বিরুদ্ধে জীবন্ত দেহের যে প্রতিরোধকারী ক্ষমতা আছে, তাকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বলে।

ইহা রোগ উৎপাদনে সাহায্য করে।

ইহা রোগারোগ্যে সাহায্য করে।

ইহা আঙ্গিক বা সার্বদৈহিক ৩ হতে পারে।

ইহা সার্বদৈহিক।

২৬। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং সংবেদনশীলতা বলতে কি বুঝ? ১২

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা (Immunity) :

কোন সংক্রমনের বিরুদ্ধে জীবন্ত দেহের যে প্রতিরোধকারী ক্ষমতা আছে, তাকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা (ইম্মিউনিটি) বলে।

সংবেদনশীলতা (Susceptibility) : উদ্দীপনের প্রতি সংবেদনশীল জীবন্ত দেহের প্রতিক্রিয়াকে, সংবেদনশীলতা বলে।

২৭। প্রশ্ন: কিভাবে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়?- ব্যাখ্যা কর।

বা, মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কিভাবে হ্রাস পায়?-ব্যাখা কর।

নিম্নলিখিতভাবে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়:

i) দেহের প্রয়োজনের তুলনায় কম পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ।

ii) বিভিন্ন ধরনের মেটাবলিক রোগ। যেমন- লিভার রোগ, পরিপাকতন্ত্রের রোগ।

iii) বংশগত বিভিন্ন রোগের কারণে।

iv) দেহে মিশ্র মায়াজম এর ক্ষতিকর প্রভাবে।

v) দীর্ঘদিন বিসদৃশ ঔষধ সেবনের ক্ষতিকর প্রভাবের ফলে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়।

vi) দেহ গঠনে প্রয়োজনীয় ভিটামিনের অভাবে।

২৮। প্রশ্নঃ ধাতু প্রকৃতি বলতে কি বুঝ?

ধাতু প্রকৃতি এর সংজ্ঞা:

আকৃতি ও প্রকৃতিগত কিছু বিশিষ্টতা নিয়ে প্রত্যকটি মানুষ এ পৃথিবীতে আসে। এ সকল বৈশিষ্ট্যাবলী তার দৈহিক ও মানসিক গড়ন,

দেহতন্ত্রের ক্রিয়া ধারা এবং পরিবেশ ও পরিস্থিতি অনুযায়ী সার্বদৈহিক প্রতিক্রিয়ার ধারাকে নিয়ন্ত্রণ করে। জন্মসূত্রে প্রাপ্ত প্রত্যেকটি ব্যক্তি বিশেষের এ সকল বৈশিষ্ট্যাবলীকে ধাতুপ্রকৃতি বলে। অর্থাৎ ধাতু প্রকৃতি বলতে রোগীর দেহতন্ত্রে এমন এক অবস্থা বুঝায় যার উপর তার দৈহিক ও মানসিক গড়ন ও পারিপার্শ্বিক প্রভাবের প্রতিক্রিয়ার প্রকৃতি বহুলাংশে নির্ভর করে।

২৯। প্রশ্ন: ধাতু প্রকৃতি কত প্রকার ও কি কি?

ধাতু প্রকৃতির প্রকারভেদঃ

ধাতু প্রকৃতি প্রধানতঃ চার প্রকার। যথা-

(i) পিত্ত প্রধান (Bilious),

(ii) শ্লেষ্মা প্রধান (Phlegmatic),

(iii) রক্ত প্রধান (Sanguinous),

(iv) স্নায়ু প্রধান (Nervous)।

(i) পিত্ত প্রধান (Bilious): পিত্ত প্রধান ধাতুতে লিভারের ক্রিয়ার বিশৃংখলা বিশেষভাবে পরিলক্ষিত হয়।

(ii) শ্লেষ্মা প্রধান (Phlegmatic): শ্লেষ্মা প্রধান ধাতুতে প্রতিক্রিয়া শক্তির খুবই অভাব দেখা দেয়।

(iii) রক্ত প্রধান (Sanguinous): রক্ত প্রধান ধাতুতে প্রতিক্রিয়া শক্তি অত্যন্ত প্রবল থাকে।

(iv) স্নায়ু প্রধান (Nervous): স্নায়ু প্রধান ধাতু প্রধানতঃ উত্তেজনা প্রবণ হয় এবং দেহের যাবতীয় ক্রিয়াঅতি দ্রুত চলে।

৩০। প্রশ্নঃ অদ্ভুত লক্ষণ কাকে বলে? ০৮, ১২ খা, অদ্ভুত লক্ষণ কি? ইহার উপর ভিত্তি করে ঔষধ নির্বাচন সহজ কেন?

অদ্ভুত লক্ষণ (Peculiar symptom) : ডাঃ হানিম্যান ‘অর্গানন অব মেডিসিন’ গ্রন্থের ১৫৩নং

অনুচ্ছেদে অদ্ভুত লক্ষণ সম্বন্ধে বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন। যে সব অদ্ভুত অবস্থা রোগী ও ঔষধের বিশেষ চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যকে নির্দেশ করে, উহাকে অদ্ভুত লক্ষণ (Peculiar symptom) বলে যেমন- বুক ধড়ফড়ানি, তাড়াতাড়ি হাঁটলে উপশম- আর্জেন্টাম নাইট্রিকাম ও সিপিয়া ইত্যাদি। অদ্ভুত লক্ষণের উপর ভিত্তি করে ঔষধ নির্বাচন সহজ। যে সব লক্ষণ ঔষধ বা রোগের সাধারণ বৈশিষ্ট্য অপেক্ষা ব্যতিক্রমধর্মী বা যা অদ্ভুত চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যসূচক, যা দৃষ্টি আকর্ষনীয় বা সুস্পষ্ট বা একটা মাত্র লক্ষণ একটা ঔষধকে নির্দেশ করে এ ধরনের লক্ষণকে সামগ্রিকভাবে অসাধারণ লক্ষণ বলে।

৩১। প্রশ্নঃ ঔষধের পর্যায়শীল ক্রিয়া সম্বন্ধে লিখ। ১০ বা, ঔষধের পর্যায়শীল ক্রিয়া সম্পর্কে আলোচনা কর।

ঔষধের পর্যায়শীল ক্রিয়া বর্ণনা:

ঔষধের পর্যায়শীল ক্রিয়া (পর্যায়ক্রমিক ক্রিয়া) সম্বন্ধে ডাঃ হ্যানিম্যান অর্গানন অব মেডিসিনের ১১৫নং অনুচ্ছেদে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। তাঁর মতে, এ সমস্ত লক্ষণরাজীর মধ্যে কতগুলি ভেষজের ক্ষেত্রে এমন অনেক লক্ষণ দৃষ্টিগোচর হয় যে গুলি আংশিকভাবে বা কোন বিশেষ অবস্থায় পূর্ববর্তী বা পরবর্তী লক্ষণসমূহের ঠিক বিপরীত কিন্তু সেজন্য তাদের বাস্তবিক গৌনক্রিয়া বা জীবনী শক্তির প্রতিক্রিয়া বলে ধরা উচিত নয়। তারা প্রাথমিক ক্রিয়ারই পর্যায় ক্রমাগত পরিবর্তনশীল বা বিভিন্ন উচ্ছাসময় বিপরীত অবস্থা। তাদেরকে পর্যায়ক্রমিক ক্রিয়া বলা হয়।

প্রাথমিক ক্রিয়াগত লক্ষণগুলির মধ্যে এমন অনেক লক্ষণ দেখা যায়, যারা পূর্বে বা পরে লক্ষিত লক্ষণসমূহের ঠিক বিপরীত। যেমন- ব্রাইওনিয়া, এপিস প্রভৃতি ঔষধের কখনও তৃষ্ণাহীনতা কখনও বা অতিরিক্ত তৃষ্ণা দেখা যায়।

৩২। প্রশ্ন: কখন বুঝা যায় রোগীর আদর্শ আরোগ্য সম্ভব নহে? ০৮ রোগীর আদর্শ আরোগ্য সম্ভব নহে কারণ:

ডাঃ হ্যানিম্যান বলেন- কোন ঔষধ রোগীর ক্ষেত্রে সদৃশ বিধানমতে উপযোগী হওয়া সত্বেও মাত্রা অত্যন্ত বড় হলে তার প্রতিটি মাত্রায় ক্ষতি সাধন করে এবং ঔষধ যত বেশী রোগের সদৃশ হয় ও যতই উচ্চশক্তিতে নির্বাচিত হয় তার বড় মাত্রাসমূহ ততোধিক ক্ষতি করে। উহা অসদৃশ ও রুগ্নাবস্থায় সম্পূর্ণ অনুপযোগী ঔষধের ঐরূপ বড় মাত্রা অপেক্ষা আরো বেশী ক্ষতিকর হয়ে থাকে। সুনির্বাচিত হোমিওপ্যাথিক ঔষধের বড় মাত্রাসমূহ বিশেষ করে ঘনঘন প্রয়োগ করা হলে স্বাভাবিক নিয়মেই প্রভূত ক্ষতি সাধন করে। এরা অর্থাৎ বড় মাত্রাসমূহ প্রায়ই রোগীর জীবন বিপন্ন করে তোলে বা রোগকে অসাধ্য করে দেয়। জীবনীশক্তির অনুভূতির দিক হতে এরা প্রাকৃতিক রোগকে ধ্বংস করে দেয় এবং হোমিওপ্যাথিক ঔষধের বড়মাত্রা ব্যবহারের সময় হতে রোগ আর মূলরোগ ভোগ করে না ঠিকই কিন্তু তার ফলে রোগী সদৃশ অধিকতর উগ্র ঔষধজাত রোগের দ্বারা অধিকতর রুগ্ন হয়ে পড়েন। সেই রোগ দূর করা সর্বাপেক্ষা দূরসাধ্য ও চিররোগ আরোগ্যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। আবার এলোপ্যাথিক ঔষধের যথেচ্ছা ব্যবহারের ফলে যে কৃত্রিম রোগ সৃষ্টি হয়, তার কারণেও রোগীর আদর্শ আরোগ্য অসম্ভব হয়।

সুতরাং উপরিউক্ত আলোচনা হতে বলা যায় যে, রোগীর আদর্শ আরোগ্য সম্ভব নয়।

ব্যবস্থাপত্র (Prescription)

১। প্রশ্নঃ ব্যবস্থাপত্র কাকে বলে? ব্যবস্থাপত্রের কয়টি অংশ ও কি কি?

ব্যবস্থাপত্র (Prescription):

চিকিৎসক রোগীর নিজের বর্ণনা, আপনজনের বর্ণনা, সেবাকারীর বর্ণনা হতে বৈশিষ্ট্যপূর্ণ লক্ষণসমষ্টি ও এই লক্ষণগুলোর কারণের গুরুত্ব অনুসারে এবং চিকিৎসক স্বয়ং রোগীর স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষা করে রোগের বিষয় অবগত হয়ে রোগীর আরোগ্য উপযোগী মনে করে রোগীলিপি অনুযায়ী যে সদৃশতম ঔষধ নির্বাচন করে সেবন করার জন্য লিখিত নির্দেশ প্রদান করেন, তাকেই ব্যবস্থাপত্র বলে।

ব্যবস্থাপত্রের অংশ: ব্যবস্থাপত্রের অংশ ৪টি। যথাঃ

(1) সুপারস্ক্রিপশন (Superscription),

(ii) ইন্সক্রিপশন (Inscription),

(iii) সাবস্ক্রিপশন (Subscription),

(iv) সিগনেচার (Signature)।

(1) সুপারস্ক্রিপশন (Superscription) : ইহাতে রোগীর নাম, বয়স, ঠিকানা প্রভৃতি উল্লেখ থাকে। এ অংশে ব্যবস্থাপত্র লেখার সময়ে প্রথমে Rx লেখা হয়।

(ii) ইন্সক্রিপশন (Inscription) : ব্যবস্থাপত্রের এই অংশে ঔষধের নাম, শক্তি ও পরিমাণ এবং ভেষজবহের নাম ও পরিমাণ উল্লেখ করা থাকে।

(iii) সাবস্ক্রিপশন (Subscription) : সাবস্ক্রিপশন অংশে কম্পাউন্ডারকে নির্দেশ প্রদান করা হয়। যাতে কম্পাউন্ডার নির্দেশ মোতাবেক ঔষধ তৈরী করবে।

(iv) সিগনেচার (Signature): সিগনেচার অংশে রোগীর প্রতি নির্দেশ থাকে কখন ঔরং সেবন করতে হবে। কি পরিমাণে সেবন করতে হবে এবং পরবর্তী সময়ে কতদিন পর রোগীকে দেখা করতে হবে প্রভৃতির নির্দেশ থাকে। পরে চিকিৎসকের স্বাক্ষরসহ রেজিট্রেশন নম্বর ও তারিখ লিখা হয়।

২। প্রশ্ন: একটি ব্যবস্থাপত্রের নমুনা লিখ।

একটি ব্যবস্থাপত্রের নমুনা নিম্নরূপঃ

সুপারস্ক্রিপশন

রোগীর ঠিকানা….. নাম, বয়স, পুরুষ/মহিলা ধর্ম/ বৈবাহিক অবস্থা:

Rx

ইন্সক্রিপশন

গ্রাফাইটিস ২০০ শক্তি ১ ফোঁটা ১ আউন্স ডিস্টিল ওয়াটার

সাবস্ক্রিপশন

১ ফোঁটা ২০০ শক্তির গ্রাফাইটিস ১ আউন্স ডিষ্টিন ওয়াটার এর সাথে মিশ্রিত করে ৬ দাগ করে দাও।

সিগনেচার

প্রতিদিন সকালে খাওয়ার আগে ১ দাগ সেবন করবেন। ১০ দিন পর পুনরায় দেখা করতে হবে।

স্বাক্ষরঃ

রেজি নং-

তারিখঃ

৩। প্রশ্নঃ দ্বিতীয় ব্যবস্থাপত্র সম্পর্কে আলোচনা কর।

অথবা দ্বিতীয় ব্যবস্থাপত্র বলতে কি বুঝ?

অথবা, দ্বিতীয় ব্যবস্থাপত্র কি? দ্বিতীয় ব্যবস্থাপত্রে রোগীলিপির ভূমিকা কি? ১২

অথবা, দ্বিতীয় ব্যবস্থাপত্রে রোগীলিপির ভূমিকা কি? ০৮

দ্বিতীয় ব্যবস্থাপত্র সম্পর্কে বর্ণনা:

প্রথম ব্যবস্থাপত্র করার পর রোগীর লক্ষণগুলোর ভিতরে যে সব পরিবর্তন পাওয়া যায়, উহার অবস্থা অনুসারে অবশিষ্ট লক্ষণসমষ্টি সাদৃশ্যে একটি ঔষধ নির্বাচন করতে হবে। কিন্তু এই লক্ষণগুলোর সাথে যদি একাধিক ঔষধের আংশিক সাদৃশ্য থাকে, তবে রোগীর লক্ষণসমষ্টি ও অসুস্থতার কারণের প্রাধান্য অনুসারে অধিক গুরুত্বপূর্ণ বা অধিকাংশ গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণসমষ্টির সাথে যে ঔষধের লক্ষণের বেশি সাদৃশ আছে, তা প্রয়োগ করতে হবে। অথবা ঐ লক্ষণসমষ্টি যদি প্রথম ব্যবস্থাপত্রের সময় ব্যবহারিত ঔষধের লক্ষণের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ হয়, তবে ঐ ঔষধকেই উচ্চতর শক্তি ও পরিবর্তিত সূক্ষ্মমাত্রায় প্রয়োগ করতে হবে। এভাবে অবস্থা বিশেষে ঔষধের শক্তি ও মাত্রার পরিবর্তন ঘটিয়ে ও লক্ষণ সাদৃশ্যে এক সময় একটা করে ঔষধ প্রয়োগ করে রোগীকে সামগ্রীকভাবে আরোগ্য করতে হবে। রোগীকে প্রথম ব্যবস্থাপত্র করার পর এইভাবে দ্বিতীয় বা পরবর্তী সময়ে ঔষধের শক্তি ও মাত্রার ভিতর পরিবর্তন করে প্রয়োগ করা বা পরবর্তী উপযোগী ঔষধ প্রয়োগ করাকে দ্বিতীয় ব্যবস্থাপত্র (Second Prescription) বলে।

৪। প্রশ্নঃ কখন এবং কেন দ্বিতীয় ব্যবস্থাপত্র প্রদান করা হয়। ১০ বা, কখন দ্বিতীয় ব্যবস্থাপত্রের প্রয়োজন হয়? ১৪

দ্বিতীয় ব্যবস্থাপত্র প্রদান সময় ও কারণ:

প্রথম ব্যবস্থাপত্রের ক্রিয়া পর্যবেক্ষণে যখন রোগীর অবস্থার পরিবর্তন লক্ষিত হয় তখন দ্বিতীয় ব্যবস্থাপত্র প্রদান করা হয়। দ্বিতীয় ব্যবস্থাপত্র পরিপূরক হিসাবে প্রদান করা যেতে পারে। প্রথম ব্যবস্থা পত্রের পর দেখা গেল যে ধীরে ধীরে রোগীর অবস্থা ক্রমাগত উন্নতির দিকে যাচ্ছে। এইরূপ উন্নতি বেশ কিছুদিন চলার পর আর কোন ক্রমোন্নতি অথবা কোন অবনতি পরিলক্ষিত হয় না। কিন্তু প্রথম ব্যবস্থাপত্রে ঔষধের লক্ষণাবলী তখনও বর্তমান আছে। দ্বিতীয় ব্যবস্থাপত্র প্রথম ব্যবস্থাপত্রের পূর্ণমূল্যায়ন হিসাবে প্রদান করা হয়।

আবার যদি প্রথম ব্যবস্থাপত্রের ঔষধের লক্ষণাবলী বর্তমান না থাকে, অন্য কোন একটি ঔষধের লক্ষণাবলীর সদৃশ হয়, তখন দ্বিতীয় ব্যবস্থাপত্র প্রথম ব্যবস্থাপত্রের অনুপূরক হিসাবে প্রদান করা হয়। যখন প্রথম ব্যবস্থাপত্রের পর রোগীর অবস্থা ক্রমাগত উন্নতির দিকে না গিয়ে

ক্রমাগত অবনতির দিকে যায়, তখন দ্বিতীয় ব্যবস্থাপত্র প্রথম ব্যবস্থাপত্রের প্রতিষেধক হিসাবে গণ্য হয়। এইভাবে প্রথম ব্যবস্থাপত্রের ঔষধ প্রয়োগের পর রোগীর লক্ষণের অবস্থা উপলদ্ধি করে, রোগীর

অবস্থা বিশেষভাবে পর্যবেক্ষণ এবং প্রতিটি লক্ষণের সুচিন্তিত বিশ্লেষণ দ্বারা আমরা দ্বিতীয় ব্যবস্থাপত্র সম্বন্ধে একটি সঠিক সিদ্ধান্তে পৌছাতে পারি। এইভাবে প্রথম ব্যবস্থাপত্রের পর দ্বিতীয় ব্যবস্থাপত্রের দ্বারা ঔষধ নির্বাচনে যুক্তিপূর্ণ সতর্কতা অবলম্বন করে রোগীকে সম্ভাব্য ক্ষেত্রে নিশ্চিতভাবে আবোগ্যের পথে অগ্রসর হতে সাহায্য করে, কখনও

বিপথে যায় না।

উপরিউক্ত সময় ও কারণে দ্বিতীয় ব্যবস্থাপত্র প্রদান করতে করা হয়। দ্বিতীয় ব্যবস্থাপত্রের প্রয়োজনীয়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও সুদূরপ্রসারী।

৮। প্রশ্নঃ অদ্ভুত লক্ষণ কাকে বলে? “অদ্ভুত লক্ষণের উপর ভিত্তি করে ঔষধ নির্বাচন করলে সাফল্য অনিবার্য-ব্যাখ্যা কর। ২০০৯, ১০ বা, অদ্ভুত লক্ষণ কি? ইহার উপর ভিত্তি করে ঔষধ নির্বাচন সহজ কেন? বা, দুর্লভ উপসর্গগুলি কি? রোগ নিরাময়ের ক্ষেত্রে ইহার কতটুকু মূল্য? ১৫

অদ্ভুত লক্ষণ (Peculiar symptom) : যে সব অদ্ভুত অবস্থা রোগী ও ঔষধের বিশেষ চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যকে নির্দেশ করে, উহাকে অদ্ভুত লক্ষণ (Peculiar symptom) বলে। যেমন- বুক ধড়ফড়ানি, তাড়াতাড়ি হাঁটলে উপশম-আর্জেন্টাম নাইট্রিকাম ও সিপিয়া ইত্যাদি।

“অদ্ভুত লক্ষণের উপর ভিত্তি করে ঔষধ নির্বাচন করলে সাফল্য অনিবার্য “-ব্যাখ্যা:

ডাঃ হানিম্যান ‘অর্গানন অব মেডিসিন’ গ্রন্থের ১৫৩-১৫৪ নং অনুচ্ছেদে উক্ত লক্ষণ সম্বন্ধে বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন।

যে ঔষধে সংখ্যায়-সাদৃশ্যে সর্বাপেক্ষা বেশি বিশেষ, অসাধারণ, একক এবং পরিচায়ক লক্ষণগুলোর বর্তমান থাকে, সর্বাপেক্ষা উপযোগী ঔষধের লক্ষণসমূহের তালিকা হতে যে প্রতিচ্ছবি প্রস্তুত করা হয়, যদি তা যে রোগারোগ্য করতে হবে তার সাথে মিলে যায় তাহলে ইহাই হবে এই রুগ্নাবস্থার সর্বাপেক্ষা উপযোগী আরোগ্যদায়ক ঔষধ। রোগটি বেশি দিনের পুরাতন না হলে বিশেষ কোন গোলযোগ ছাড়াই প্রথম মাত্রাতে তা দূরীভূত ও বিনাশ প্রাপ্ত হয়। মানবস্বাস্থ্য পরিবর্তন করার শক্তি সম্বন্ধে যে সকল ঔষধ অনুসন্ধান করা হয়েছে তাদের মধ্যে যে ঔষধটির লক্ষণাবলী-সহিত কোন প্রাকৃতিক রোগের লক্ষণসমষ্টির সর্বাধিক সাদৃশ্য হবে সে ঔষধটিই ঐ রোগের সর্বাপেক্ষা উপযোগী ও সুনিশ্চিত হোমিওপ্যাথিক ঔষধ।

অতএব, হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় অদ্ভুত লক্ষণের উপর ভিত্তি করে ঔষধ নির্বাচন করলে সাফল্য অনিবার্য এবং সহজেই রোগী আরোগ্যে হয়।

Disclaimer:
This blog post is for study purposes only. It is not a substitute for professional medical advice. Please consult a healthcare professional for personalized guidance and treatment. Self-medication is strongly discouraged.

Scroll to Top