রেপার্টরীর পরিচিতি ও সংজ্ঞা
১। প্রশ্ন: রেপার্টরীর আভিধানিক অর্থ কি? ১১, ১৪ বা, রেপার্টরীর অর্থ কি?
রেপার্টরীর শব্দের আভিধানিক অর্থ:
ল্যাটিন শব্দ Repertorium এবং ফ্রেঞ্জ শব্দ Reperire- Repertoire হতে Repertory শব্দের উদ্ভব হয়েছে। উভয় শব্দই কোন স্থান হতে কোন কিছু খুঁজে বের করা বুঝায়। রেপার্টরী শব্দের আভিধানিক অর্থ অনেক প্রকার হতে পারে। যেমন- ঔষধ কোষ, ভান্ডার, দ্রব্যাদির তালিকা, কোষাগার, সংগ্রহশালা, বিশেষ তথ্যালয়, সূচীপত্র, দলিল ইত্যাদি।
আবার Repertory শব্দের অর্থ পূণরায় পর্যালোচনার অংশ বুঝায়। অর্থাৎ এমনই একটি ছক বা সংক্ষিপ্তসারপূর্ণ তথ্যালয় যেখানে বিষয়সমূহ এমনভাবে সুবিন্যস্ত থাকে যে তা সহজেই খুঁজে পাওয়া যায়।
২। প্রশ্নঃ হোমিওপ্যাথিক রেপার্টরীর সংজ্ঞা লিখ। ০৯
হোমিওপ্যাথিক রেপার্টরীর সংজ্ঞা:
ডাঃ হ্যানিম্যান রচিত “অর্গানন অব মেডিসিন” গ্রন্থে বর্ণিত হোমিওপ্যাথিক নিয়মনীতি অনুসরণ করে স্বল্পতম সময়ে, সুনির্বাচিত, সদৃশ, একক হোমিওপ্যাথিক ঔষধ নির্বাচনের সুবিধার্থে-
(i) সুস্থ মানব দেহের পরীক্ষিত
(ii) বিষবিজ্ঞান হতে আহরিত জ্ঞান
(iii) ক্লিনিক্যালভাবে সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে পরীক্ষিত-
ঔষধসমূহের রোগলক্ষণ উৎপাদনকারী বা আরোগ্যকারী গুণাবলীর দ্বারা লিপিবদ্ধ হোমিওপ্যাথিক মেটেরিয়া মেডিকায় অন্তর্ভূক্ত মানব দেহ-মনে প্রকাশিত প্রায় সর্বপ্রকার রোগ লক্ষণাবলীকে ধারাবাহিকভাবে প্রতিটি লক্ষণের নির্দেশিত ঔযধাবলীকে বর্ণমালার ক্রমানুসারে এবং ঔষধের গুরুত্ব অনুযায়ী সাজিয়ে অর্থাৎ আভিধানিক পদ্ধতি অনুসরণ করে যে বিশেষ ধরনের লক্ষণ নির্দেশিকা বা ঔষধ কোষ রচিত হয়েছে, তাকে হোমিওপ্যাথিক রেপার্টরী বলা হয়।
৩। প্রশ্নঃ সাধারণ রেপার্টরী কাকে বলে? উদাহারণসহ রেপার্টরীর শ্রেণীবিভাগ কর। ১৩, ১৫, ১৮ বা, হোমিওপ্যাথিক রেপার্টরীর প্রকারভেদ লিখ?
সাধারণ রেপার্টরীর সংজ্ঞা:
প্রথম শ্রেণীর রেপার্টরীকে সাধারণ রেপার্টরী বলে। এই রেপার্টরীতে লক্ষণসমূহকে গুরুত্ব দিয়ে ব্যাপকভাবে সাজানো হয়েছে। এই রেপার্টরীর লক্ষণ সহজে ও স্বল্প সময়ের মধ্যে বাহির করা যায়।
ডাঃ কেন্ট ও ডাঃ বোনিং হাউসেনের রেপার্টরী এই শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত।
হোমিওপ্যাথিক রেপার্টরীর প্রকারভেদ:
(i) ব্যাপক সাধারণ রেপার্টরী বা লাক্ষণিক রেপার্টরী: ইহা ২টি প্রধান বিভাগ-
ক) বিশুদ্ধতাবাদী ব্যাপক সাধারণ রেপার্টরী।
খ) যুক্তিসিদ্ধ উপযোগীতাবাদী ব্যাপক সাধারণ রেপার্টরী।
(ii) সিন্থেটিক রেপার্টরী।
(iii) আঙ্গিক বা বিশেষ অঙ্গ ভিত্তিক রেপার্টরী।
(iv) নৈদানিক রেপার্টরী। (v) নির্ঘন্ট রেপার্টরী।
(vi) বর্ণমালা ক্রমিক রেপার্টরী। (vii) কার্ড রেপার্টরী।
(viii) যন্ত্র নির্ভর রেপার্টরী।
(ix) কম্পিউটার প্রযুক্তি নির্ভর রেপার্টরী।
৪। প্রশ্নঃ রেপার্টরীর অর্থ এবং নামকরণের সার্থকতা বর্ণনা কর। ১২ বা, হোমিওপ্যাথিক রেপার্টরীর নামকরণের সার্থকতা বর্ণনা কর।
রেপার্টরী অর্থ এবং নামকরণের সার্থকতা বর্ণনা:
ল্যাটিন শব্দ Repertorium এবং ফ্রেঞ্জ শব্দ Reperire- Repertoire হতে Repertory শব্দের উদ্ভব হয়েছে। উভয় শব্দই কোন স্থান হতে কোন কিছু খুঁজে বের করা বুঝায়। রেপার্টরী শব্দের আভিধানিক অর্থ অনেক প্রকার হতে পারে। যেমন- ঔষধ কোষ, ভান্ডার, দ্রব্যাদির তালিকা, কোষাগার, সংগ্রহশালা, বিশেষ তথ্যালয়, সূচীপত্র, দলিল ইত্যাদি।
আবার Re অর্থ পুনরায় Part অর্থ অংশ Ary অর্থ আলোচনা, বিষয়বস্তু ইত্যাদি। অর্থাৎ Repertory শব্দের অর্থ পুণরায় পর্যালোচনার অংশ বুঝায়। অর্থাৎ এমনই একটি ছক যা সংক্ষিপ্তসারপূর্ণ তথ্যালয় যেখানে বিষয়সমূহ এমনভাবে সুবিন্যস্ত থাকে যে তা সহজেই খুঁজে পাওয়া যায়।
উপরিউক্ত বর্ণনা হতে ইহাই প্রতীয়মান হয় যে, রেপার্টরীর নাম, গঠন এবং কাজের মধ্যে যথেষ্ট প্রাসঙ্গিকতা ও মিল খুঁজে পাওয়া যায়। সুতরাং রেপার্টরীর নামকরণটি যথেষ্ট সার্থকতা ও যুক্তিসঙ্গত হয়েছে।
৫। প্রশ্ন: লেখকের নামসহ ৫টি প্রধান রেপার্টরীর নাম লিখ। ১১, ১৪ লেখকের নামসহ ৫টি প্রধান রেপার্টরীর নাম:
(i) ডাঃ জে.টি কেন্ট M.D রচিত রেপার্টরী অব দ্যা হোমিওপ্যাথিক মেটেরিয়া মেডিকা।
(ii) ডাঃ জে এইচ ক্লার্ক রচিত- A Clinical Repertory to the Dictionary of Materia Medica
(iii) Dr. William Boericke রচিত- Pocket Manual of Homoeopathic Materia Medica
(iv) Dr. Robin Murphy N.D রচিত- Homoeopathic
Medical Repertory
(v) Dr. C. M. Bogar রচিত- Boaninghausen’s
Characteristics & Repertory
৬। প্রশ্নঃ ডাঃ হ্যানিম্যান এর লিখিত রেপার্টরীর বর্ণনা দাও।
ডাঃ হ্যানিম্যান এর লিখিত রেপার্টরীর বর্ণনা:
ডাঃ হ্যানিম্যান তার চিকিৎসা কর্মে নিত্য ব্যবহারের জন্য ল্যাটিন ভাষায় একটি হস্তলিখিত রেপার্টরী সংকলন করেন। ইহার পৃষ্ঠার সংখ্যা ছিল চার হাজার দুই শত উনচল্লিশ। শুধু মুখ্য লক্ষণ সমন্বয়ে লিখিত এ রেপার্টরীর নামকরণ করা হয়েছিল ” Repertorium.” তৎপর ডাঃ হ্যানিম্যান তাঁর ছাত্র Dr. Gustav Wilhelm Gross- এর দ্বারা হস্ত লিখিত অপেক্ষাকৃত ব্যাপক ধরণের দুই খন্ডে বিভক্ত একটি রেপার্টরী লিখান। ইহার প্রতি খন্ডে প্রায় দেড় হাজার পৃষ্ঠা ছিল। ডাঃ
হ্যানিম্যান নিজ হাতে ইহার সংশোধনী লিখেন।
হোমিওপ্যাথিক রেপার্টরীর ইতিহাস
১। প্রশ্ন: রেপার্টরীর ইতিহাস সম্বন্ধে যা জান লিখ।
রেপার্টরীর ইতিহাস সম্বন্ধে বর্ণনাঃ
ডাঃ হ্যানিম্যান কর্তৃক হোমিওপ্যাথি আবিষ্কারের পর হতে বহু ঔষধ সুস্থ্য দেহে পরীক্ষা করে উহার সমুদয় লক্ষণসমূহ মেটেরিয়া মেডিকা গ্রন্থে লিপিবদ্ধ করেন। সুস্থদেহে পরীক্ষিত ঔষধের লক্ষণসমূহ ডাঃ হ্যানিম্যান “মেটেরিয়া মেডিকা পিউরা” নামক গ্রন্থে লিপিবদ্ধ করেন। আবিষ্কৃত ঔষধের সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে মেটেরিয়া মেডিকার আয়তন বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাই চিকিৎসা ক্ষেত্রে রোগীর বিশেষ বিশেষ লক্ষণ অনুযায়ী ঔষধ নির্বাচন করা প্রায় দুরুহ হয়ে পড়ে। উক্ত অবস্থা হতে পরিত্রাণের জন্য ডাঃ হ্যানিম্যান বহু চিন্তার পর এ অভিনব পদ্ধতি রেপার্টরী আবিষ্কার করেন।
ডাঃ স্যামুয়েল হ্যানিম্যান সদৃশনীতি অর্থাৎ হোমিওপ্যাথিক আবিষ্কারের পর বহু ঔষধ নিজ দেহ এবং বন্ধু-বান্ধবের উপর প্রুভিং করেন, এ ঔষধ পরীক্ষায় ফলাফল মেটেরিয়া মেডিকা পিউরা, ক্রনিক ডিজিজ ও বিভিন্ন জার্নালে প্রকাশ করেন। ডাঃ হ্যানিম্যান ১৮০০ সালে তার বিখ্যাত পুস্তক “Fragnunta de veribus medicamentorum positivis sive in Sano corpore observatis” ল্যাটিন ভাষায় প্রকাশ করেন। এ পুস্তকের প্রথম অংশ লক্ষণাবলী ও দ্বিতীয় অংশে লক্ষণের সূচীপত্র দেয়া ছিল, যা ছিল একটি প্রাথমিক রেপার্টরী। তিনি দেখতে পান যে, দিন দিন হোমিওপ্যাথিক ঔষধ ও লক্ষণের সংখ্যা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং হোমিওপ্যাথিক ঔষধাবলীর বৈচিত্রপূর্ণ লক্ষণাবলীর সংখ্যা এত বিশাল যে তা সর্বদা স্মরনে রাখা কোন চিকিৎসকের পক্ষেই সম্ভব নহে। এ অসুবিধা দূর করার জন্য ডাঃ হ্যানিম্যান বহু চিন্তার পর ১৮১৭ সালে প্রধান প্রধান লক্ষণাবলীর বিপরীতে একটি ঔষধের তালিকা ল্যাটিন ভাষায় লিপিবদ্ধ করেন। ডাঃ হ্যানিম্যান রচিত এ পুস্তকটির নাম ছিল Symptomdictionaries मा সর্বপ্রথম লিপিবদ্ধ রেপার্টরী, আর এভাবেই হোমিওপ্যাথিক রেপার্টরী প্রথম সূচনা হয় এবং সে জন্য ডাঃ হ্যানিম্যানকেই রেপার্টরী প্রথম প্রবর্তক বলা হয়।
২। রেপার্টরী প্রণয়নে কারা অগ্রপথিক ছিলেন? ২০০৮, ১০
রেপার্টরী প্রণয়নে অগ্রপথিক:
(১) ডাঃ হ্যানিম্যান
(ii) ডাঃ বোনিং হাউসেন
(iii) ডাঃ জে.টি কেন্ট MD
(iv) ডাঃ জে এইচ ক্লার্ক
(v) Dr. William Boericke
(vi) Dr. Robin Murphy N.D
(vii) Dr. C. M. Bogar
৩। প্রশ্নঃ প্রথম রচিত হোমিওপ্যাথিক রেপার্টরীর নাম কি? ইহার ভূমিকা কে লিখেছিলেন?
প্রথম রচিত হোমিওপ্যাথিক রেপার্টরীর নাম:
Repatory of the Antipsoric Medicine প্রথম ১৮৩২ সালে মুদ্রিত অবস্থায় প্রকাশিত হয়। ইহা ডাঃ বোনিং হাউসেন কর্তৃক রচিত ও জার্মানী ভাষায় মূদ্রিত হয়। প্রথম রচিত হোমিওপ্যাথিক রেপার্টরীর ভূমিকা ডাঃ হ্যানিম্যান স্বয়ং লিখেছিলেন। বোনিং হাউসেনের রেপার্টরীর পূর্বে যদিও Hartlaub ১৮২৮ সালে ও Weber Peschiner ১৮৩০ সালে রেপার্টরী নামে লক্ষণ সূচী প্রকাশ করেছিলেন, কিন্তু পূর্ণাঙ্গ রেপার্টরীর যে সকল বৈশিষ্ট্য থাকার কথা তা উক্ত দুইটি রেপার্টরীতে ছিল না। তাই পূর্ণাঙ্গ রেপার্টরী মূদ্রিত হয়ে প্রকাশের কৃতিত্ব ডাঃ বোনিং হাউসেনের।
৪। প্রশ্ন: রেপার্টরীর অর্থ কি? কে হোমিওপ্যাথিক রেপার্টরী আবিষ্কার করেন? ১১, ১৪, ১৫ বা, রেপার্টরীর আভিধানিক অর্থ কি? হ্যানিম্যান কিভাবে এবং কেন হোমিওপ্যাথিক রেপার্টরী আবিষ্কার করেন? ০৮, ১০ বা রেপার্টরী প্রণয়নে ডাঃ হ্যানিম্যানের অবদান বর্ণনা কর।
রেপার্টরীর আভিধানিক অর্থঃ
ল্যাটিন শব্দ Repertorium এবং ফ্রেঞ্জ শব্দ Reperire- Repertoire হতে Repertory শব্দের উদ্ভব হয়েছে। উভয় শব্দই কোন স্থান হতে কোন কিছু খুঁজে বের করা বুঝায়। রেপার্টরী শব্দের আভিধানিক অর্থ অনেক প্রকার হতে পারে। যেমন- ঔষধ কোষ, ভাঙার, দ্রব্যাদির তালিকা, কোষাগার, সংগ্রহশালা, বিশেষ তথ্যালয়, সূচীপত্র, দলিল ইত্যাদি।
আবার Repertory শব্দের অর্থ পূণরায় পর্যালোচনার অংশ বুঝায়। অর্থাৎ এমনই একটি ছক বা সংক্ষিপ্তসারপূর্ণ তথ্যালয় যেখানে বিষয়সমূহ এমনভাবে সুবিন্যস্ত থাকে যে তা সহজেই খুঁজে পাওয়া যায়।
হোমিওপ্যাথিক রেপার্টরী আবিষ্কার:
সর্বপ্রথম ডাঃ স্যামুয়েল হ্যানিম্যান হোমিওপ্যাথিক রেপার্টরী আবিষ্কার করেন।
ডাঃ স্যামুয়েল হ্যানিম্যান সদৃশনীতি অর্থাৎ হোমিওপ্যাথিক আবিষ্কারের পর বহু ঔষধ নিজ দেহ এবং বন্ধু-বান্ধবের উপর প্রুভিং করেন, এ ঔষধ পরীক্ষার ফলাফল মেটেরিয়া মেডিকা পিউরা, ক্রনিক ডিজিজ ও বিভিন্ন জার্নালে প্রকাশ করেন। ডাঃ হ্যানিম্যান ১৮০০ সালে তার বিখ্যাত পুস্তক “Fragnunta de veribus medicamentorum positivis sive in Sano corpore observatis” ল্যাটিন ভাষায় প্রকাশ করেন। এ পুস্তকের প্রথম অংশ লক্ষণাবলী ও দ্বিতীয় অংশে লক্ষণের সূচীপত্র দেয়া ছিল, যা ছিল একটি প্রাথমিক রেপার্টরী। তিনি দেখতে পান যে, দিন দিন হোমিওপ্যাথিক ঔষধ ও লক্ষণের সংখ্যা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং হোমিওপ্যাথিক ঔষধাবলীর বৈচিত্রপূর্ণ লক্ষণাবলীর সংখ্যা এত বিশাল যে তা সর্বদা স্মরনে রাখা কোন চিকিৎসকের পক্ষেই সম্ভব নহে। এ অসুবিধা দূর করার জন্য ডাঃ হ্যানিম্যান বহু চিন্তার পর ১৮১৭ সালে প্রধান প্রধান লক্ষণাবলীর বিপরীতে একটি ঔষধের তালিকা ল্যাটিন ভাষায় লিপিবদ্ধ করেন। ডাঃ হ্যানিম্যান রচিত এ পুস্তকটির নাম ছিল Symptomdictionaries যা সর্বপ্রথম লিপিবদ্ধ রেপার্টরী, আর এভাবেই হোমিওপ্যাথিক রেপার্টরী প্রথম সূচনা হয় এবং সে জন্য ডাঃ হ্যানিম্যানকেই রেপার্টরী প্রথম প্রবর্তক বলা হয়।
৫। প্রশ্নঃ কোন লেখকের রেপার্টরী কোন ভাষায় ও কখন সর্ব প্রথম মুদ্রিত হয়? উক্ত রেপার্টরীর নাম লিখ?
লেখকের নাম:
ডাঃ বোনিং হাউসেন কর্তৃক রচিত রেপার্টরীর জার্মানী ভাষায় সর্বপ্রথম মূদ্রিত হয়। সর্বপ্রথম মূদ্রিত রেপার্টরীর নাম Repatory of the Antipsoric Medicine প্রথম ১৮৩২ সালে মূদ্রিত অবস্থায় প্রকাশিত হয়। ইহা প্রথম রচিত হোমিওপ্যাথিক রেপার্টরীর এবং এর ভূমিকা ডাঃ হ্যানিম্যান স্বয়ং লিখেছিলেন। বোনিং হাউসেনের রেপার্টরীর পূর্বে যদিও Hartlaub ১৮২৮ সালে ও Weber Peschiner ১৮৩০ সালে রেপার্টরী নামে লক্ষণ সূচী প্রকাশ করেছিলেন, কিন্তু পূর্ণাঙ্গ রেপার্টরীর যে সকল বৈশিষ্ট্য থাকার কথা তা উক্ত দুইটি রেপার্টরীতে ছিল না। তাই পূর্ণাঙ্গ রেপার্টরী মূদ্রিত হয়ে প্রকাশের কৃতিত্ব ডাঃ বোনিং হাউসেনের।
৬। রেপার্টরী প্রণয়ন এবং প্রণয়নে অগ্রপথিকদের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস লিখ। ১২
রেপার্টরী প্রণয়ন এবং প্রণয়নে অগ্রপথিকদের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস:
১। ডাঃ হ্যানিম্যান: ডাঃ ক্রিশ্চিয়ান ফ্রেড্রিক স্যামুয়েল হ্যানিম্যান ১৭৫৫ সালের ১০ই এপ্রিল মাঝরাতের পর জার্মানির সাক্সনী রাজ্যের ক্ষুদ্র নগরী মিসেলে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৮৪৩ ইং সালের ২রা জুলাই রোববার ভোর ৫টায় প্যারিসে নিজের ঘরে ‘রুই দ্য মিলান, নং-১’ স্থানে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
ডাঃ হ্যানিম্যানের জীবনের বিভিন্ন কর্মকান্ডকে বৈশিষ্ট্য অনুসারে নিম্নোক্ত পাঁচ ভাগে বর্ণনা করা যায়। যথা-
(i) ১৭৫৫-১৭৯২ সাল-শিশুকাল, শিক্ষানবিশী কাল ও ছাত্রজীবন।
(ii) ১৭৯২-১৮১১ সাল-দুঃখময় যুগ ও ভ্রমনকাল
(iii) ১৮১১-১৮২১ সাল-সংগ্রাম কাল ও লাইপজিকের সংঘাতময় জীবন।
(iv) ১৮২২-১৮৩৫ সাল-শিক্ষাদানের কাল ও কোথেনের শান্তিময় জীবন এবং
(v) ১৮৩৫-১৮৪৩ সাল বার্ধক্যের সুখময় কাল, প্যারিসের উজ্জ্বল জীবন ও শান্তিময় পরিসমাপ্তি।
২। ডাঃ বোনিং হাউসেন: বোনিং হাউসেনের পূর্ণনাম Baron Clemens Maria Franz von Boenninghausen বোনিংহাউসেন ১৮৩০ সাল হতে ডাঃ হ্যানিম্যানের মৃত্যুর পূর্বই পর্যন্ত তাঁর স্পর্শে থেকে সকল কর্মকান্ডের সহযোগী ছিলেন। ডাঃ হ্যানিম্যানের সকল রচনাবলী তিনি অধ্যয়ন করে ছিলেন। হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকদের সদৃশ ঔষধ নির্বাচনের সুবিধার্থে তিনি হোমিওপ্যাথি বিষয়ক অনেক পুস্তক রচনা করে ছিলেন। তাঁর রচিত- Repertory of the Antipsoric Medicine প্রথম ১৮৩২ সালে মুদ্রিত অবস্থায় প্রকাশিত হয়। এটি জার্মান ভাষায় লিখিত ছিল এবং এর ভূমিকা স্বয়ং ডাঃ হ্যানিম্যান লিখেছিলেন।
৭। প্রশ্নঃ “ডাঃ হ্যানিম্যানই রেপার্টরীর জনক”- আলোচনা কর। “ডাঃ হ্যানিম্যানই রেপার্টরীর জনক” আলোচনাঃ
ডাঃ স্যামুয়েল হ্যানিম্যান সদৃশনীতি অর্থাৎ হোমিওপ্যাথিক আবিষ্কারের পর বহু ঔষধ নিজ দেহ এবং বন্ধুবান্ধবের উপর প্রুভিং করেন, এ ঔষধ পরীক্ষার ফলাফল মেটেরিয়া মেডিকা পিউরা, ক্রণিক ডিজিজ ও বিভিন্ন জার্নালে প্রকাশ করেন। ডাঃ হ্যানিম্যান ১৮০০ সালে তার বিখ্যাত পুস্তক “Fragnunta de veribus medicamentorum positivis sive in Sano corpore observatis” ল্যাটিন ভাষায় প্রকাশ করেন। এ পুস্তকের প্রথম অংশ লক্ষণাবলী ও দ্বিতীয় অংশে লক্ষণের সূচীপত্র দেয়া ছিল, যা ছিল একটি প্রাথমিক রেপার্টরী। তিনি দেখতে পান যে, দিন দিন হোমিওপ্যাথিক ঔষধ ও লক্ষণের সংখ্যা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং হোমিওপ্যাথিক ঔষধাবলীর বৈচিত্রপূর্ণ লক্ষণাবলীর সংখ্যা এত বিশাল যে তা সর্বদা স্মরনে রাখা কোন চিকিৎসকের পক্ষেই সম্ভব নহে। এ অসুবিধা দূর করার জন্য ডাঃ হ্যানিম্যান বহু চিন্তার পর ১৮১৭ সালে প্রধান প্রধান লক্ষণাবলীর বিপরীতে একটি ঔষধের তালিকা ল্যাটিন ভাষায় লিপিবদ্ধ করেন। ডাঃ হ্যানিম্যান রচিত এ পুস্তকটির নাম ছিল Symptomdictionaries যা সর্বপ্রথম লিপিবদ্ধ রেপার্টরী, আর এভাবেই হোমিওপ্যাথিক রেপার্টরী প্রথম সূচনা হয় এবং সে জন্য ডাঃ হ্যানিম্যানকেই রেপার্টরী প্রথম প্রবর্তক বলা হয়।
৮। প্রশ্নঃ ডাঃ হ্যানিম্যান কর্তৃক অনুমোদিত রেপার্টরী কোনটি? তার বৈশিষ্ট্য লিখ।
ডাঃ হ্যানিম্যান কর্তৃক অনুমোদিত রেপার্টরী:
ডাঃ হ্যানিম্যান কর্তৃক অনুমোদিত রেপার্টরী হচ্ছে ডাঃ বোলিং হাউসেন কর্তৃক রচিত রেপার্টরী, যা জার্মানী ভাষায় সর্বপ্রথম মৃদ্রিত হয়। সর্বপ্রথম ১৮৩২ সালে মুদ্রিত অবস্থায় প্রকাশিত হয়। ইহা প্রথম রচিত হোমিওপ্যাথিক রেপার্টরীর এবং এর ভূমিকা ভাঃ হ্যানিম্যান স্বয়ং লিখেছিলেন।
ডাঃ বোনিং হাউসেন রেপার্টরীর বৈশিষ্ট্য।
(১) ডাঃ বোনিং হাউসেনের রেপার্টরীতে সাধারণ লক্ষণাদির উপর অধিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
(ii) ডাঃ বোনিং হাউসেনের রেপার্টরীতে সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম ও ত্রুটিপূর্ণ পদ্ধতি পরিলক্ষিত হয়। যেমন- বেদনা সাধারণতঃ ২য় বিভাগে স্থান পেয়েছে। কিন্তু বেদনার প্রকার ৩য় বিভাগে, হাসবৃদ্ধি ৬ষ্ঠ বিভাগে এবং প্রয়োজনীয় ঔষধাবলী ৭ম বিভাগে স্থান পেয়েছে।
(iii) ডাঃ বোনিং হাউসেনের রেপার্টরীর সর্বশেষ শাখাটি হল, ঔষদের পরস্পর সম্পর্ক এবং ১ম হতে ৬ষ্ঠ বিভাগে বর্ণিত সকল লক্ষণাদির প্রয়োজনীয় ঔষধসমূহ।
(iv) ডাঃ বোনিং হাউসেনের রেপার্টরীতে কোন লক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় ঔষধগুলিকে পাঁচটি গ্রেডে ভাগ করে দেখানো হয়েছে। যেমন- ঔষধের গুরুত্ব অনুসারে ১ম, ২য়, ৩য়, ৪র্থ ও ৫ম গ্রেডে। এই হিসাবে এদের আংকিক মান ধরা হয়েছে যথাক্রমে ৫, ৪, ৩, ২ এবং ১।
৯। প্রশ্নঃ কোন লেখকের রচিত রেপার্টরী আদর্শ স্থানীয় এবং আজ পর্যন্ত শ্রেষ্ঠত্বের দাবিদার?
নিম্নলিখিত লেখকের রচিত রেপার্টরী আদর্শ স্থানীয় এবং আজ পর্যন্ত শ্রেষ্ঠত্বের দাবিদার: ডাঃ কেন্ট রচিত রেপার্টরী আদর্শ স্থানীয় এবং আজ পর্যন্ত শ্রেষ্ঠত্বের দাবিদার। কারণ হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় আজ পর্যন্ত বহু রেপার্টরী লেখা হয়েছে যার সংখ্যা প্রায় ২০০ টি। কোন রেপার্টরীই চিকিৎসকদের মন জয় করতে পারে নাই। শুরুমাত্র ডাঃ কেন্টের রেপার্টরীই এর ব্যতিক্রম। ১৮৭৭ সালে ডাঃ কেন্ট যে রেপার্টরী রচনা করেন তাই আদর্শ স্থানীয় এবং আজও সকল হোমিওপ্যাথিক চিকিৎকের জন্য আলো দিশারী ও শ্রেষ্ঠত্বের দাবীদার।
১০। প্রশ্ন: মেটেরিয়া মেডিকা সংযুক্ত রেপার্টরী কে সর্বপ্রথম লিখেন? উক্ত রেপার্টরীর বৈশিষ্ট্য লিখ।
মেটেরিয়া মেডিকা সংযুক্ত রেপার্টরী ডাঃ উইলিয়াম বোরিক ১৯২৭ সালে সর্বপ্রথম প্রকাশ করেন।
(i) ডাঃ বোরিকের রেপার্টরীতে চিকিৎসা বিষয়ক শব্দের ব্যবহার অধিক।
(ii) ডাঃ বোরিকের রেপার্টরী আকারে ছোট ও সংক্ষিপ্ত, ইহা মেটিরিয়া মেডিকার সহিত সংযুক্ত।
(iii) থেরাপিউটিক বিন্যাসের ক্ষেত্রে ডাঃ বোরিকের রেপার্টরীতে শিরঃঘূর্ণনকে মাথার এবং ওষ্ঠকে মুখগহ্বর অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।
(iv) বোরিকের রেপার্টরীতে প্রান্তদেশ ও পৃষ্ঠের জন্য আলাদা কোন শাখা নাই। এদেরকে Locomotor system শাখার আওতায় নেয়া হয়েছে।
(v) ডাঃ বোরিক রেপার্টরীতে শাখা সংখ্যা ২৫টি।
(vi) ডাঃ বোরিকের রেপার্টরীতে কোন লক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় ঔষধগুলিকে দুইটি গ্রেডে ভাগ করা হয়েছে। ঔষধের গুরুত্ব অনুসারে বাকা অক্ষরে ও সাধারণ অক্ষরে বাকা অক্ষরের মূল্য অধিক আংকিক মান যথাক্রমে ২, সাধারণ অক্ষরের মূল্য আংকিক মান ১।
রেপার্টরী ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা
১। প্রশ্ন: রেপার্টরীর প্রয়োজনীয়তা উদাহরণসহ ব্যাখ্যা কর। ১২ বা, সঠিক ঔষধ নির্বাচনের ক্ষেত্রে রেপার্টরীর প্রয়োজনীয়তা কি? রেপার্টরীর প্রয়োজনীয়তাঃ
হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা একটি লক্ষণভিত্তিক চিকিৎসা পদ্ধতি, আর মেটেরিয়া মেডিকা হল সেই লক্ষণের সমুদ্রতুল্য সমাহার। মেটেরিয়া মেডিকার অসংখ্য লক্ষণাবলীর বিপরীতে রোগীর দেহ-মনে প্রকাশিত লক্ষণসমষ্টির সদৃশ ঔষধ নির্বাচনের মাধ্যমে চিকিৎসা কর্ম পরিচালিত হয়। মেটেরিয়া মেডিকায় প্রায় ৩০০০ এর উর্দ্ধে ঔষধাবলীর বৈচিত্রপূর্ণ লক্ষণাবলী এত বিশাল যে তা সর্বদা স্মরণে রাখা কোন চিকিৎসকের পক্ষে সম্ভব নহে, কেননা মানুষের স্মৃতিশক্তির ধারণ ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা আছে। কিন্তু রেপার্টরী সেই অসম্ভবকে প্রায় সম্ভব করেছে। মেটেরিয়া মেডিকায় যে কোন লক্ষণে কোন কোন ঔষধ আছে তার তালিকা প্রদান করে রেপার্টরী হোমিওপ্যাথিক মেটেরিয়া মেডিকায় বিশালত্বকে একটি কার্যোপযোগী অবস্থানে আনতে সক্ষম হয়েছে। ফলে চিকিৎসক রেপার্টরী হতে যে কোন লক্ষণের কি কি ঔষধ হতে পারে তা স্বল্পতম সময়ে অবগত হতে পারেন। রোগী চিকিৎসাকালে কোন নির্দিষ্ট লক্ষণে কোন কোন ঔষধ হতে পারে তা দ্রুত জানার জন্য স্বয়ং হ্যানিম্যান স্বহস্তে লিখিত লক্ষণসূচী বা রেপার্টরী প্রণয়ন করেছিলেন। আমরাও একই উদ্দেশ্যে রেপার্টরীর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করি।
রেপার্টরী আদর্শ পূর্ণাঙ্গ রোগীলিপি প্রণয়ণে, অচির ও চিররোগের ঔষুধ নির্বাচনে, একদৈশিক পীড়ার ঔষুধ নির্বাচনে, একই লক্ষণের একাধিক বিভিন্ন ঔষধের মূল্যায়নে ও তুলনাকরণে, অদ্ভূত, বিরল, অসাধারণ, আশ্চার্যজনক লক্ষণের মাধ্যমে ঔষধ নির্বাচনে, হোমিওপ্যাথিক মেটেরিয়া মেডিকার সমুদ্রতুল্য লক্ষণাবলীর বিশাল ভান্ডার হতে স্বল্পতম সময়ে লক্ষণ ও ঔষধ খুঁজে বের করতে, সুনির্বাচিত এক বা একাধিক লক্ষণের সমন্বয়ে তৈরী রোগীচিত্রের সদৃশ ঔষধ তালিকা প্রাতিতে ও পরিশেষে মেটেরিয়া মেডিকা পাঠ করে একক সদৃশ ঔষধ নির্বাচন করতে নির্দেশ দিয়ে চিকিৎসা কর্মকে আরোগ্যকলায় বা আরোগ্যবিজ্ঞানে পরিণত করতে সক্ষম হয়েছে।
২। প্রশ্নঃ ঔষধ নির্বাচন বা বাছাইয়ের ক্ষেত্রে রেপার্টরীর ভূমিকা কি? লিখ। ০৮, ১০
ঔষধ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে রেপার্টরীর ভূমিকাঃ
ঔষধ নির্বাচন বা বাছাইয়ের ক্ষেত্রে রেপার্টরীর ভূমিকা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। রেপার্টরী হতে সঠিক ঔষধ নির্বাচন করতে হলে প্রথমেই সঠিকভাবে বিধিবদ্ধ নিয়মে রোগীলিপি প্রস্তুত করতে হবে। রোগীলিপি হতে লক্ষণসমূহকে নিম্নলিখিতভাবে সাজাতে হবে।
(৫) রোগীর প্রধান প্রধান কষ্ট বা অসুবিধাসমূহ- এদের স্থান, অনুভূতি
এবং সকল প্রকার হ্রাস-বৃদ্ধি।
(ii) মানসিক লক্ষণ। স্মৃতিশক্তি।
(iv) রোগীর ইচ্ছা- অনিচ্ছা,
(v) সার্বদৈহিক লক্ষণ- যেমন- শীত-গরম, দিবা-রাত্রি, ঝড়-বৃষ্টি ইত্যাদি।
শীর্ষ স্থানীয় রেপার্টরীতে সূচীপত্র দেয়া আছে, চিকিৎসক সহজেই তা ব্যবহা করতে পারেন। মানসিক লক্ষণ, দেহের বিভিন্ন আঙ্গিক লক্ষণ, প্রান্তদেশের লক্ষণ, নিদ্রা, শীত, চর্ম, ঘর্ম, সাধারণ লক্ষণ সুসংবদ্ধভাবে প্রয়োজনীয় লক্ষণসমূহ সাধারণ অনুভূতিসহ বর্ণিত আছে। রেপার্টরীর অনুশীলন করে রোগীলিপি প্রস্তুত করে লক্ষণের গুরুত্ব নির্ধারন করে লক্ষণ সাপেক্ষে ঔষধের গাণিতিক মূল্যায়ন করা হলে সহজেই রেপার্টরী হতে ঔষধ নির্বাচন করা সম্ভব।
.৩। প্রশ্নঃ রেপার্টরী ব্যবহারের সুবিধাগুলো লিখ। ২০১৭
রেপার্টরী ব্যবহারের সুবিধাগুলোঃ
(i) রেপার্টরী মেটেরিয়া মেডিকার সূচীপত্র হিসাবে কাজ করে এবং অসংখ্য লক্ষণের মধ্য হতে বিশেষ লক্ষণটির মাধ্যমে সম্ভাব্য ঔষধ তালিকা প্রদান করে।
(ii) রেপার্টরী অনির্দেশিত ঔষধসমূহকে বর্জন করতে সাহায্য করে।
(iii) রেপার্টরী রোগীর দেহ ও মনে প্রকাশিত লক্ষণ সমষ্টির সদৃশ ঔষব নির্বাচনে পথপ্রর্দশকের ভূমিকা পালন করে রোগী ও ঔষধের মধ্যে সাদৃশতা আনয়ন করে।
(iv) ইহাতে রোগীর লক্ষণাবলী ও মেটেরিয়া মেডিকার লক্ষণাবলীর তুলনা করে।
(v) রেপার্টরী মেটেরিয়া মেডিকার সকল ঔষধকে সমদৃষ্টিতে রাখে, ফলে চিকিৎসকের কোন ঔষধের প্রতি দুর্বলতা থাকলেও তা নির্বাচন করা হতে বিরত রাখতে সাহায্য করে।
(vi) ইহার দ্বারা অনেক সময় চিকিৎসকের অজানা বা অপ্রচলিত ঔষধ নির্বাচন করাও সম্ভব হয়।
(vii) রেপার্টরী ব্যবহার করতে হলে পূর্ণাঙ্গ রোগীলিপি প্রণয়ন আবশ্যক, সে দিক থেকে ইহা রোগীলিপি প্রস্তুত ও পর্যালোচনায় উৎসাহ প্রদান করে এবং রোগীকে প্রশ্ন করার কৌশল শিক্ষা দেয়।
৪। প্রশ্ন: রেপার্টরী ব্যবহারের অসুবিধাসমূহ লিখ। ০৯, ১১, ১২, ১৪, ১৫
রেপার্টরী ব্যবহারের অসুবিধাসমূহঃ
রেপার্টরীর বহুবিধ সুবিধা ও গুরুত্ব থাকা সত্ত্বেও বহু অসুবিধা ও সীমাবদ্ধতা রয়েছে, নিম্নে তা আলোচিত হলঃ
(i) সংখ্যাঃ কোন রেপার্টরীই স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়, বিভিন্ন রেপার্টরীতে ঔষধ সংখ্যা বিভিন্ন, লক্ষণ সংখ্যা বিভিন্ন, বহু নতুন আবিষ্কৃত ঔষধ যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত হয়নি, লক্ষণের বিপরীতে ঔষধতালিকা সম্পূর্ণ
নহে, ফলে চিকিৎসককে কোন কোন ক্ষেত্রে ব্যবস্থাপত্র প্রণয়নে নিরাশ বা ব্যর্থ হতে হয়।
(ii) ঔষধের মূল্যায়ন: বিভিন্ন রেপার্টরীতে ঔষধের মূল্যায়ন বা গ্রেড এক এক প্রকার করা হয়েছে। যেমন- বোনিং হাউসেন-৫, নার-৪, কেন্ট-৩, লিপে-২, বোরিক-২। বিভিন্ন রেপার্টরীতে ঔষধের গ্রেডের চিহ্ন ভিন্ন ভিন্ন। ফলে গ্রেড ও চিহ্নের বিভিন্নতার জন্য চিকিৎসককে জটিলতার সম্মুখীন হতে হয়।
(iii) পদ্ধতি: এক এক রেপার্টরীর গঠন পদ্ধতি এক এক রকম। লক্ষণের বিন্যাস, লক্ষণের গ্রেড, লক্ষণ সাজানোর পদ্ধতি এবং রেপার্টরীকরণের পদ্ধতির বিভিন্নতার জন্য একই লক্ষণসমষ্টি নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন রেপার্টরীতে অনুসন্ধান করলে ভিন্ন ভিন্ন উত্তর আসতে পারে। ফলে চিকিৎসক ঔষধ নির্বাচনে বিভ্রান্তির সম্মুখীন হন।
(iv) রেপার্টরী সজ্জিতকরণের বিভিন্নতা: বিভিন্ন রেপার্টরীতে অধ্যায়, শাখা অধ্যায়, রুব্রিক (লক্ষণের সংক্ষিপ্ত রূপ), সাব-রুব্রিক, ঔষধের সংখ্যা, ঔষধের গ্রেডিং, ঔষধের বিন্যাস ইত্যাদির বিভিন্নতার জন্য চিকিৎসকে জটিলতার পড়তে হয়।
(v) অদ্ভূত, অসাধারণ, বিরল, একক বৈশিষ্ট্যপূর্ণ লক্ষণ এক এক রেপার্টরী রচয়িতার দৃষ্টিতে এক এক রকমভাবে মূল্যায়িত হয়েছে, ফলে চিকিৎসককে লক্ষণ মূল্যায়নে অসুবিধার মধ্যে পড়তে হয়।
(vi) রেপার্টরীতে পারিবারিক ইতিহাস, পারিপার্শ্বিক ইতিহাস, রোগের মূল কারণ, উত্তেজক কারণ, মায়াজমের প্রভাব, সংক্রামক রোগের প্রভাব, অতীত রোগভোগের ইতিহাস, রোগের নৈদানিক বিকৃতি ইত্যাদি যথাযথভাবে স্থান লাভ করে নাই, ফলে চিকিৎসককে রেপার্টরীকরণের মাধ্যমে প্রাপ্ত ফলাফলকে সর্তকতার সাথে বিবেচনা করতে হয়।
৫। প্রশ্নঃ রেপার্টরীকরনের বিভিন্ন ধাপসমূহ লিখ।
রেপার্টরীকরনের বিভিন্ন ধাপসমূহঃ
(i) পূর্ণাঙ্গ রোগীলিপি প্রস্তুতকরণ করা।
(ii) লক্ষণের গুরুত্ব অনুসারে রেপার্টরীকরণের জন্য লক্ষণ নির্বাচর করা।
(iii) রোগীর ভাষাকে রেপার্টরীর ভাষায় অর্থাৎ রুব্রিকে রূপান্তরিত করা।
(iv) রোপার্টরী পুস্তকে রুব্রিক খুঁজে বের করা এবং রুব্রিকের বিপরীতে প্রদত্ত ঔষধসমূহকে মানসহ লিপিবদ্ধ করা।
(v) কমপক্ষে ৫০% রুব্রিক পূরণকৃত ঔষধসমূহের মান গণনা করা।
(vi) সর্বোচ্চ মান প্রাপ্ত প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত ঔষধসমূহকে মেটেরিয়া মেডিকায় যাচাই করে রোগীর জন্য চূড়ান্ত একক ঔষধ নির্বাচন করা।
৬। প্রশ্ন: রুব্রিক অর্থ কি? রুব্রিক কাকে বলে? লক্ষণ ও রুব্রিকের মধ্যে পার্থক্য লিখ। ২০০৯, ১১
বা, রুব্রিক শব্দের আভিধানিক অর্থ লিখ। রুব্রিক ও লক্ষণের মধ্যে পার্থক্য লিখ। ২০০৯
বা, রুব্রিক কি? রুব্রিক ও লক্ষণের পার্থক্য কি লিখ। ২০১১
বা, রুব্রিক ও লক্ষণের মধ্যে পার্থক্য বর্ণনা কর। ২০০৮, ১০
রুব্রিক অর্থ: রুব্রিক শব্দের আভিধানিক অর্থ বিভিন্ন প্রকার হতে পারে। যেমন- শিরোনাম ব্যবস্থা, বিধি, বিশেষ অক্ষরে লিখিত লক্ষণ, নির্দিষ্ট বিষয়, ধর্ম বিধি বিশেষ ইত্যাদি।
রুব্রিকের সংজ্ঞা: হোমিওপ্যাথিক রেপার্টরীতে লক্ষণের মূল অর্থের পরিবর্তন না করে যে মূল শব্দ দ্বারা লক্ষণকে সংক্ষিপ্ত করে বা শব্দান্তরে প্রকাশ করে বর্ণিত হয়েছে বা বিশেষ অক্ষর দ্বারা চিহ্নিত করে বিভিন্ন অধ্যায় শিরোনাম হিসাবে দেখানো হয়েছে, তাদেরকে রুব্রিক বলা হয়।
লক্ষণ ও রুব্রিকের মধ্যে পার্থক্য নিম্নরূপঃ
রোগীর অসুস্থতার নিজস্ব বর্ণনার ১ ভাষা, যা যারা রোগী নিজের কষ্টকর অভিযোগ সমূহ চিকিৎসককে জানায় বা বর্ণনা করে এবং চিকিৎসক রোগীর দেহ মনে প্রকাশিত যে সকল অস্বাভাবিক অবস্থা প্রত্যক্ষ করেন, রোগীর পরিচর্যাকারীদের রোগীর, অস্বাভাবিক অবস্থার বর্ণনা করে, তাদেরকে লক্ষণ বলা হয়।
লক্ষণ শব্দটি মেটেরিয়া মেডিকাসহ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা পদ্ধতির সকল পুস্তকে ব্যবহৃত হয়।
লক্ষণ বর্ণনার জন্য বিশেষ কোন তায়ার প্রয়োজন পরে না।
লক্ষণের নির্দিষ্ট কিছু উপাদান থাকে ৪ যেমন কারণ, অবস্থান, বিস্তৃতি, অনুভূতি, প্রকৃতি, আনুসঙ্গিক বা সহচর অবস্থা, হ্রাস-বৃদ্ধি ইত্যাদি।
একটি লক্ষণ বিস্তারিতভাবে বর্ণনার ৫ জন্য অনেকগুলো শব্দের প্রয়োজন হয় এবং ব্যাকরণগত নিয়মনীতি পালন করে বাক্য গঠন করতে হয়।
লক্ষণ রোগী পরিচর্যাকারী চিকিৎসক ৬ সকলেই বর্ণনা করতে ও অনুধানব করতে পারেন।
উদাহরণ- ঘুমের মধ্যে রোগী ক্রন্দন করে।
২
৩
রুব্রিক
হোমিওপ্যাথিক রেপার্টরাতে লক্ষণের মূল অর্থের পরিবর্তন না। করে যে মূলশব্দ দ্বারা লক্ষণকে। সংক্ষিপ্ত করে বা শব্দান্তরে প্রকাশ করে বর্ণিত হয়েছে বা বিশেষ অক্ষর দ্বারা চিহ্নিত করে বিভিন্ন অধ্যায়ে। শিরোনাম হিসেবে দেখানো হয়েছে তাদেরকে রুব্রিক বলা হয়।
রুব্রিক শব্দটি কেবল রেপার্টরীতে। ব্যবহৃত হয়।
রুব্রিক বর্ণনার জন্য রেপার্টরীর নিজস্ব ভাষার প্রয়োজন হয়।
রুব্রিকের লক্ষণের মত নির্দিষ্ট কোন উপাদান নেই, লক্ষণের প্রতিটি উপাদানই ভিন্ন ভিন্ন রুব্রিক বা সাব রুব্রিক বা সাব রুব্রিক হতে পারে।
রুত্রিক লক্ষণের সংক্ষিপ্তরূপ বিধায় ব্যাকরণগত নিয়মনীতি পালন করে বাক্য গঠন করতে হয় না।
রুব্রিক কেবলমাত্র রেপার্টরী বিষয়ে অভিজ্ঞ চিকিৎসক বর্ণনা ও অনুধাবন করতে পারেন।
উদাহরণ-রুব্রিক Weeping/ Sleep in ব্যাখ্যা অধ্যায়: মনঃ মূল রুব্রিক: ক্রন্দন করেসাব-সাব রুব্রিক: ঘুমের মধ্যে
৭। প্রশ্নঃ রেপার্টরীর ব্যবহারের সাধারণ পদ্ধতিগুলি বর্ণনা কর। ০৮ বা, রেপার্টরী সঠিকভাবে ব্যবহারের পূর্বশর্ত কি কি? ১০, ১২
রেপার্টরীর ব্যবহারের সাধারণ পদ্ধতিগুলি বর্ণনা:
(i) একটি আদর্শ স্থানীয় রেপার্টরী সংগ্রহ করে ভালভাবে পাঠ করতে হবে এবং এর গঠন, ব্যবহার, কলাকৌশল প্রভৃতি আয়ত্ব করতে হবে।
(ii) সঠিকভাবে সম্পূর্ণরূপে রোগীলিপি প্রস্তুত করতে হবে।
(iii) রেপার্টরীর উপযোগী করে রোগীর লক্ষণগুলিতে ধারাবাহিকভাবে সজ্জিত করা এবং লক্ষণের গুরুত্ব অনুসারে মূল্য নির্ধারন করতে হবে।
(iv) উত্তমরূপে মেটেরিয়া মেডিকা আয়ত্ব করা এবং রেপার্টরীর সাথে মেটেরিয়া মেডিকার সম্পর্ক অনুধাবন করা।
(v) রোগীকে জিজ্ঞাসা করে, রোগীর আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, সেবাকারী ও পারিপার্শ্বিক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসা করে এবং রোগীকে পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষন করে রোগী সম্পর্কে সকল অজানা তথ্য সংগ্রহ করতে হবে।
(vi) রোগীর অব্যক্ত ও অসমাপ্ত লক্ষণগুলি বুদ্ধিমত্তার দ্বারা সংগ্রহ করতে হবে।
(vii) রোগীলিপির সংগৃহীত লক্ষণসমূহকে রোগীর ভাষা হতে রেপার্টরীর পরিভাষায় রূপান্তর করতে হবে।
(viii) লক্ষণের গুরুত্ব নির্ধারন করতে হবে। যেমন- মানসিক, অদ্ভূত বা বিরল লক্ষণের গুরুত্ব সর্বাধিক এবং স্থানীয় লক্ষণ অপেক্ষা সর্বাঙ্গীন লক্ষণের গুরুত্ব অধিক।
(ix) লক্ষণ সাপেক্ষে ঔষধের গাণিতিক মূল্যায়ন করতে হবে।
৮। প্রশ্নঃ “রেপার্টরী হোমিওপ্যাথিক মেটেরিয়া মেডিকার বিকল্প নয়”- ব্যাখ্যা কর। ১২
“রেপার্টরী হোমিওপ্যাথিক মেটেরিয়া মেডিকার বিকল্প নয়”-
ব্যাখ্যাঃ হোমিওপ্যাথিক মেটেরিয়া মেডিকার লক্ষণাবলীর সমাহারে এত বিশাল যে, কোন মানুষের পক্ষে সকল লক্ষণাবলীকে সর্বদা স্মরণে রাখা সম্ভব নহে। কিন্তু প্রয়োজনের সময় কোন লক্ষণে কোন কোন ঔষধ সেটি জানা না থাকলে সঠিক ঔষধ নির্বাচন করা সম্ভব হবে না ফলে চিকিৎসাকার্য ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে। এ অসুবিধা দূর করার জন্য। মেটেরিয়া মেডিকার সকল লক্ষণাবলীর একটি সূচীপত্র প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা ডাঃ হ্যানিম্যান উপলব্ধি করেন এবং তিনি মেটেরিয়া মেডিকার লক্ষণাবলীর একটি সূচীপত্র প্রণয়ন করেন। তার অনুসরণে সৃষ্ট মেটেরিয়া মেডিকা এ সুবিন্নত সূচীপত্রই নানা রকম পরিবর্তন ও পরিবর্ধনের মাধ্যমে রেপার্টরী নামক সতন্ত্র পুস্তক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। অর্থাৎ মেটেরিয়া মেডিকার বর্ণিত ঔষধের লক্ষণাবলীর সুশৃঙ্খল সূচীপত্রকে রেপার্টরী বলে। রেপার্টরী রোগীর ঔষধের তালিকা প্রদান করে আর মেটেরিয়া মেডিকার জ্ঞান দ্বারা রোগীর জন্য সঠিক ও সদৃশ ঔষধ নির্বাচিত হয়। অতএব রেপার্টরী হোমিওপ্যাথিক মেটেরিয়া মেডিকার বিকল্প নয়।
৯। প্রশ্নঃ “রেপার্টরী হতে সঠিক ঔষধ নির্বাচন করতে হলে মেটেরিয়া মেডিকার জ্ঞান অপরিহার্য” ব্যাখ্যা কর। ২০০৯, ১২
“রেপার্টরী হতে সঠিক ঔষধ নির্বাচন করতে হলে মেটেরিয়া মেডিকার
জ্ঞান অপরিহার্য” ব্যাখ্যাঃ
মেটেরিয়া মেডিকার বিশাল লক্ষণাবলী হতে স্বল্প সময়ে সঠিক ঔষধ নির্বাচনের দিক নির্দেশনা দান করাই রেপার্টরীর প্রধান কাজ কিন্তু কোন অবস্থাতেই মেটেরিয়া মেডিকার পরিবর্তে বা বিকল্প হিসেবে
রেপার্টরীকে চিকিৎসার একমাত্র কেন্দ্রবিন্ধুরূপে গ্রহণ করা যায় না। সুনির্বাচন ও লক্ষণের নির্ভুল মূল্যায়নের মাধ্যমে সর্বোত্তম ব্যবস্থাপত্র প্রদানে রেপার্টরীর ব্যবহার একটি উৎকৃষ্ট আর্ট এবং হোমিওপ্যাথিক ঔষধ নির্বাচনের সর্বোত্তম কৌশল হলেও এটি সম্পূর্ণরূপে মেটেরিয়া মেডিকার উপর নির্ভরশীল। কারণ হোমিওপ্যাথিক মেটেরিয়া মেডিকা সুস্থ মানুষের দেহে পরীক্ষিত ঔষধের লক্ষণাবলীর সমাহার যা প্রাকৃতিকভাবে আক্রান্ত মানুষের রোগ লক্ষণের সদৃশ রোগে প্রয়োগ করলে আরোগ্য হয়। সুতরাং রেপার্টরী রোগীর ঔষধের তালিকা প্রদান করে আর মেটেরিয়া মেডিকার জ্ঞান দ্বারা রোগীর জন্য সঠিক ও সদৃশ ঔষদ নির্বাচিত হয়। সুতারং রেপার্টরী হতে সঠিক ঔষধ নির্বাচন করতে হলে মেটেরিয়া মেডিকার জ্ঞান অপরিহার্য ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
১০। প্রশ্নঃ রেপার্টরী ব্যবহারের সাফল্য কিভাবে অর্জিত হয়? ০৮
রেপার্টরী ব্যবহারের সাফল্য অর্জন:
(১) রেপার্টরীর সূচীপত্র অনুসারে অধ্যায়সমূহের মধ্যে কোন অধ্যায় কি বিষয় বর্ণনা আছে তা আয়ত্ব করতে হবে।
(ii) প্রতিটি অধ্যায় রুব্রিক, সাব-রুব্রিক, সাব-সাব-রুব্রিক এর বর্ণনা সমূহ বিশেষভাবে আয়ত্ব করতে হবে।
(iii) অর্গানন অব মেডিসিনের বর্ণিত নির্দেশানুসারে রোগীর রোগীলিপি নিতে হবে।
(iv) মেটেরিয়া মেডিকায় বর্ণিত ঔষধসমূহের সম্বন্ধে বিস্তারিত জ্ঞান অর্জন করতে হবে।
(v) বিভিন্ন রেপার্টরী গঠন সম্বন্ধে বিস্তারিতভাবে জ্ঞান অর্জন করতে হবে।
(vi) হোমিওপ্যাথিক মেটেরিয়া মেডিকা একটি লক্ষণ সমুদ্র বিশেষ। এ মহাগ্রন্থে সুস্থ মানবদেহে পরীক্ষিত প্রতিটি ঔষধের নামের পার্শ্বে উক্ত ঔষধে দ্বারা সৃষ্ট বা আরোগ্যদায়ক লক্ষণসমূহ ধারাবাহিকভাবে উপযোগী করে সাজিয়ে লিপিবদ্ধ করতে হবে।
১১। রেপার্টরীর রুব্রিক ও মেটেরিয়া মেডিকার লক্ষণের মধ্যে পার্থক্য লিখ। ২০১২
রেপার্টরীর রুব্রিক ও মেটেরিয়া মেডিকার লক্ষণের মধ্যে পার্থক্য ১
রেপার্টরীর রুব্রিক
হোমিওপ্যাথিক রেপার্টরীতে লক্ষণের ১ মূল অর্থের পরিবর্তন না করে যে মূলশব্দ দ্বারা লক্ষণকে সংক্ষিপ্ত করে বা শব্দান্তরে প্রকাশ করে বর্ণিত হয়েছে বা বিশেষ অক্ষর দ্বারা চিহ্নিত করে বিভিন্ন অধ্যায়ে শিরোনাম হিসেবে দেখানো হয়েছে তাদেরকে বেপার্টরীর কব্রিক বলা হয়।
রুব্রিক শব্দটি কেবল রেপার্টরীতে ২ ব্যবহৃত হয়।
রুব্রিক বর্ণনার জন্য রেপার্টরীর ৩ নিজস্ব ভাষার প্রয়োজন হয়।
রেপার্টরীর রুব্রিকের, লক্ষণের ৪ মত নির্দিষ্ট কোন উপাদান নেই, লক্ষণের প্রতিটি উপাদানই ভিন্ন ভিন্ন রুব্রিক বা সাব রুব্রিক বা সাব সাব রুব্রিক হতে পারে।
রুব্রিক কেবলমাত্র রেপার্টরী বিষয়ে ৫ অভিজ্ঞ চিকিৎসক বর্ণনা অনুধাবন করতে পারেন। ও
মেটেরিয়া মেডিকার লক্ষণ
অর্গানন অব মেডিসিনের নির্দেশানুসারে সুস্বদোহ পরীক্ষিত ঔষধের প্রকাশিত লক্ষণাবলীসমূহকে মেটেরিয়া মেডিকায় লিপিবদ্ধ হয়েছে। করা
লক্ষণ শব্দটি মেটেরিয়া মেডিকাসহ সকল ক্ষেত্র ব্যবহৃত হয়।
লক্ষণ বর্ণনার জন্য মেটেরিয়া মেডিকার বিশেষ কোন ভাষার। প্রয়োজন পরে না।
মেটেরিয়া মেডিকার লক্ষণের নির্দিষ্ট কিছু উপাদান থাকে। যেমন- কারণ, অবস্থান, বিস্তৃতি, অনুভূতি, প্রকৃতি, আনুষাঙ্গিক বা সহচর অবস্থা, হ্রাস-বৃদ্ধি ইত্যাদি
মেটেরিয়া মেডিকার লক্ষণ সুস্থদেহে পরীক্ষিত চিকিৎসক বা ব্যক্তিই বর্ণনা করতে ও অনুধানব করতে পারেন।
১২। মেটেরিয়া মেডিকা ও অর্গাননের মধ্যে সম্পর্ক বর্ণনা কর। ১১ মেটেরিয়া মেডিকা ও অর্গাননের মধ্যে সম্পর্ক বর্ণনাঃ
(i) চিকিৎসা বিজ্ঞান ডাঃ হ্যানিম্যান কর্তৃক রচিত অর্গানন অব মেডিসিন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা কার্য পরিচালনার যাবতীয় নির্দেশ ও নিয়মনীতি বর্ণিত গ্রন্থ। আর অর্গানন অব মেডিসিন গ্রন্থের নির্দেশ অনুসারে সুস্থ মানবদেহে ঔষধ পরীক্ষিত হয়ে মেটেরিয়া মেডিকা রচিত হয়েছে এবং মেটেরিয়া মেডিকার লক্ষণাবলীর সদৃশ ঔষধ দ্বারা রোগীর চিকিৎসাকার্য সম্পাদিত হচ্ছে।
(ii) অর্গানন অব মেডিসিন গ্রন্থে বর্ণিত হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসাকার্যের মূলনীতি হল ঔষধ শক্তিকৃত, পরীক্ষিত সদৃশ, একক এবং সূক্ষ্মমাত্রায় হতে হবে। আর মেটেরিয়া মেডিকার লক্ষণ ভান্ডার হতে এই ধরণের লক্ষণ সংগ্রহ করে রোগী আরোগ্য সহায়তা করা।
(iii) চিকিৎসককে অর্গানন অব মেডিসিন গ্রন্থের নির্দেশ বাস্তবায়নে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা প্রদান করে যা রোগ আরোগ্য ও নিয়ন্ত্রণের সাথে সুগভীর সম্পর্ক স্থাপন করেছে। আর মেটেরিয়া মেডিকার নির্দেশ অনুসারে রোগ ও লক্ষণের হ্রাস-বৃদ্ধি উপর ভিত্তি করে ঔষধ নির্বাচন করে।
১৩। প্রশ্ন: মেটেরিয়া মেডিকা ও রেপার্টরীর মধ্যে সম্পর্ক কি লিখ। ১১, ১৪, ১৫
মেটেরিয়া মেডিকা ও রেপার্টরীর মধ্যে সম্পর্ক:
হোমিওপ্যাথিক মেটেরিয়া মেডিকা একটি লক্ষণ সমুদ্র বিশেষ। এ মহাগ্রন্থে সুস্থ মানবদেহে পরীক্ষিত প্রতিটি ঔষধের নামের পাশে উক্ত ঔষধ দ্বারা সৃষ্ট বা আরোগ্যদায়ক লক্ষণসমূহ ধারাবাহিকভাবে বা কার্যসিদ্ধির উপযোগী করে সাজিয়ে লিপিবদ্ধ করা থাকে। ফলে প্রতিটি ঔষধের অসংখ্য লক্ষণের সমাহারের মাধ্যমেই সৃষ্টি হয় হোমিওপ্যাথিক মেটেরিয়া মেডিকার। হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা বিধানে রোগী চিকিৎসাকালে লক্ষণের সাদৃশ্যতা নির্ণয় করাই মূল লক্ষ্য। আদর্শ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক রোগীর লক্ষণাবলীকে মেটেরিয়া মেডিকার লক্ষণাবলীর সাথে সাদৃশ্যতা নির্ণয় করেই ব্যবস্থাপত্র প্রদান করেন।
কিন্তু হোমিওপ্যাথিক মেটেরিয়া মেডিকার লক্ষণাবলীর সমাহারে এত বিশাল যে, কোন মানুষের পক্ষে সকল লক্ষণাবলীকে সর্বদা স্মরণে রাখা সম্ভব নহে। কিন্তু প্রয়োজনের সময় কোন লক্ষণে কোন কোন ঔষধ সেটি জানা না থাকলে সঠিক ঔষধ নির্বাচন করা সম্ভব হবে না ফলে চিকিৎসাকার্য ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে। এ অসুবিধা দূর করার জন্য মেটেরিয়া মেডিকার সকল লক্ষণাবলীর একটি সূচীপত্র প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা ডাঃ হ্যানিম্যান উপলব্ধি করেন এবং তিনি মেটেরিয়া মেডিকার লক্ষণাবলীর একটি সূচীপত্র প্রণয়ন করেন। তার অনুসরণে সৃষ্ট মেটেরিয়া মেডিকা এ সুবিন্যাস্ত সূচীপত্রই নানা রকম পরিবর্তন ও পরিবর্ধনের মাধ্যমে রেপার্টরী নামক সতন্ত্র পুস্তক হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। অর্থাৎ মেটেরিয়া মেডিকার বর্ণিত ঔষধের লক্ষণাবলীর সুশৃঙ্খল সূচীপত্রের অপর নাম রেপার্টরী।
রেপার্টরী মেটেরিয়া মেডিকাকে ঘিরেই আর্বতিত হচ্ছে। মেটেরিয়া মেডিকার বিশাল লক্ষণাবলী হতে স্বল্প সময়ে সঠিক ঔষধ নির্বাচনের দিক নির্দেশনা দান করাই রেপার্টরীর প্রধান কাজ কিন্তু কোন অবস্থাতেই মেটেরিয়া মেডিকার পরিবর্তে বা বিকল্প হিসেবে রেপার্টরীকে চিকিৎসার একমাত্র কেন্দ্রবিন্ধুরূপে গ্রহণ করা যায় না। সুনির্বাচন ও লক্ষণের নির্ভুল মূল্যায়নের মাধ্যমে সর্বোত্তম ব্যবস্থাপত্র প্রদানে রেপার্টরীর ব্যবহার একটি উৎকৃষ্ট আর্ট এবং হোমিওপ্যাথিক ঔষধ নির্বাচনের সর্বোত্তম কৌশল হলেও এটি সম্পূর্ণরূপে মেটেরিয়া মেডিকার উপর নির্ভরশীল।
১৪। প্রশ্নঃ অর্গানন ও রেপার্টরীর মধ্যে সম্পর্ক বর্ণনা কর। ২০০৯, ১৩ অথবা, অর্গানন ও রেপার্টরীর গঠন প্রণালী বর্ণনা কর।
অর্গানন ও রেপার্টরীর মধ্যে সম্পর্ক:
চিকিৎসা বিজ্ঞান ডাঃ হ্যানিম্যান কর্তৃক রচিত অর্গানন অব মেডিসিন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা কার্য পরিচালনার যাবতীয় নির্দেশ ও’ নিয়মনীতি বর্ণিত গ্রন্থ। অর্গানন অব মেডিসিন গ্রন্থের নির্দেশানুসারে সুস্থ মানবদেহে ঔষধ পরীক্ষিত হয়ে মেটেরিয়া মেডিকা রচিত হয়েছে এবং মেটেরিয়া মেডিকার লক্ষণাবলীর সদৃশ ঔষধ দ্বারা রোগীর চিকিৎসাকার্য সম্পাদিত হচ্ছে। অন্যদিকে রেপার্টরী মেটেরিয়া মেডিকার লক্ষণাবলীর সূচীপত্র হিসেবে কাজ করে ও লক্ষণসমষ্টির মাধ্যমে একক সদৃশ ঔষধ নির্বাচনে সর্বোচ্চ সহায়তা প্রদান করে ও লক্ষণসমষ্টির মাধ্যমে একক সদৃশ ঔষধ নির্বাচনে সর্বোচ্চ সহায়তা প্রদান করে অর্গাননের নির্দেশ বাস্তবায়নে সহযোগিতার মধ্যমে আদর্শ আরোগ্য সাধন করে। ডাঃ হ্যানিম্যান অর্গানন অব মেডিসিন গ্রন্থের ১৫৩ নং অনুচ্ছেদে বলেন- চিকিৎসা ক্ষেত্রে সেই লক্ষণগুলিই সর্বাপেক্ষা মূল্যবান যা চিকিৎসককে একটি ঔষধের সাথে পরিচয় করে দেয়। তিনি আরও বলেন- সুস্পষ্ট দৃষ্টি আকর্ষক, একক, অসাধারণ, অদ্ভূত, নির্দেশক ও বিরল চিহ্ন ও লক্ষণের মূল্যই সর্বাধিক। একই অনুচ্ছেদের অন্তর্গত ১০৯নং পাদটীকায় বলেন- সবচেয়ে মূল্যবান লক্ষণের সদৃশ ঔষধ অনুসন্ধানের জন্য রেপার্টরী ব্যবহারের ইঙ্গিত ডাঃ হ্যানিম্যান দিয়েছেন।
অর্গানন অব মেডিসিন গ্রন্থে বর্ণিত হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসাকার্যের মূলনীতি হল ঔষধ শক্তিকৃত, পরীক্ষিত সদৃশ, একক এবং সূক্ষ্মমাত্রায় হতে হবে। তন্মধ্যে সদৃশ একক ঔষধ নির্বাচনের ক্ষেত্রে সর্বোত্তম সহযোগিতা প্রদান করাই রেপার্টরীর প্রধান কাজ।
রেপার্টরী আদর্শ পূর্ণাঙ্গ রোগীলিপি প্রণয়নে অচির ও চিররোগের ঔষধ নির্বাচনে, একদৈশিক রোগের ঔষধ নির্বাচনে, একই লক্ষণের একাধিক বিভিন্ন ঔষধের মূল্যায়নে অদ্ভূত, বিরল, অসাধারণ লক্ষণের মাধ্যমে ঔষধ নির্বাচনে হোমিওপ্যাথিক মেটেরিয়া মেডিকার সমুদ্রতুল্য লক্ষণাবলীর বিশাল ভান্ডার হতে স্বল্পতম সময়ে লক্ষণ ও ঔষধ খুঁজে বের করতে, সুনির্বাচিত এক বা একাধিক লক্ষণের সমন্বয়ে তৈরী রোগীর চিত্রের সদৃশ ঔষধের তালিকা প্রাপ্তিতে ও পরিশেষে মেটেরিয়া মেডিকা পাঠ করে একক সদৃশ ঔষধ নির্বাচন করতে নির্দেশ দিয়ে চিকিৎসা ব্যবস্থাকে আরোগ্য বিজ্ঞানে পরিণত করেছে। এভাবে অর্গানন অব মেডিসিনের নির্দেশকে ব্যবহারিক ক্ষেত্রে বাস্তবায়নের কৌশল শিক্ষা দিয়ে রেপার্টরী পুস্তকটি ইহার সাথে গভীর সম্পর্ক স্থাপন করেছে।
সুতরাং রেপার্টরী সদৃশ লক্ষণে একক হোমিওপ্যাথিক ঔষধ নির্বাচনের সবচাইতে কঠিনতম কর্মসম্পাদনের দিক নির্দেশনা দান করে এবং চিকিৎসককে অর্গানন অব মেডিসিন গ্রন্থের নির্দেশ বাস্তবায়নে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা প্রদান করে চিকিৎসাবিদ্যা ও অর্গাননের সাথে সুগভীর সম্পর্ক স্থাপন করেছে।
১৫। প্রশ্নঃ রেপার্টরীকে মেটেরিয়া মেডিকার সূচীপত্র বলায় হয় কেন?
২০১১
রেপার্টরীকে মেটেরিয়া মেডিকার সূচীপত্র বলার কারণ:
ডাঃ হ্যানিম্যান সদৃশ বিধান আবিষ্কারের পর বহু ঔষধ নিজ দেহে বা বন্ধু-বান্ধবের উপর প্রুভিং করেন এবং এ ড্রাগ প্রুভিংয়ের ফলাফল মেটেরিয়া মেডিকা পিউরা, ক্রনিক ডিজিজ ও বিভিন্ন জার্নালে প্রকাশ করেন। তিনি দেখতে পান যে, দিন দিন হোমিওপ্যাথিক ঔষধ ও লক্ষণের সংখ্যা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং হোমিওপ্যাথিক ঔষধাবলীর বৈচিত্রপূর্ণ লক্ষণাবলীর সংখ্যা এত বিশাল যে তা সর্বদা স্মরণে রাখা কোন চিকিৎসকের পক্ষেই সম্ভব নহে। এ অসুবিধা দূর করার জন্য ডাঃ হ্যানিম্যান বহু চিন্তার পর ১৮১৭ সালে প্রধান প্রধান লক্ষণাবলীর বিপরীতে একটি ঔষধের তালিকা ল্যাটিন ভাষায় লিপিবদ্ধ করেন। ডাঃ হ্যানিম্যান রচিত এ পুস্তকটির নাম ছিল Symptomdictiorlaries যা ছিল সর্বপ্রথম লিপিবদ্ধ রেপার্টরী।
রেপার্টরী মেটেরিয়া মেডিকার সূচীপত্র হিসাবে কাজ করে এবং অসংখ্য লক্ষণের মধ্যে হতে বিশেষ লক্ষণটির মাধ্যমে সম্ভাব্য ঔষধ তাগিদ প্রদান করে। ইহা রোগীর দেহ মনে প্রকাশিত লক্ষণ সমষ্টির সদৃশ ঔষধ নির্বাচনে পথ প্রদর্শকের ভূমিকা পালন করে রোগী ও ঔষধের মধ্যে সাদৃশতা আনয়ন করে। অর্গানন অনুযায়ী চিকিৎসককে লক্ষণ সমষ্টির সদৃশ একক ঔষধ নির্বাচনে যে সর্বোত্তম সহযোগিতা রেপার্টরী প্রদান করে মেটেরিয়া মেডিকা ছাড়া হোমিওপ্যাথির অন্য কোন বিষয়ের সাথে এর তুলনা করা চলে না। অর্থাৎ মেটেরিয়া মেডিকার বর্ণিত ঔষধের লক্ষণাবলীর সুশৃঙ্খল সূচীপত্রকে রেপার্টরী বলা হয়।
১৬। প্রশ্নঃ রেপার্টরীকরণ কি? রেপার্টরীকরণের আধুনিক পদ্ধতি বর্ণনা কর।
রেপার্টরীকরণের সংজ্ঞাঃ
হোমিওপ্যাথিক নিয়মনীতি অনুসারে বৈশিষ্ট্যপূর্ণ রোগ লক্ষণের বিপরীতে ঔষধের গাণিতিক মূল্যমান নিরূপনের মাধ্যমে ঔষধের সাদৃশ্যতা ও স্বাতন্ত্র্যতা নির্ণয়ের যে পদ্ধতি রেপার্টরী পুস্তক দ্বারা সম্পাদিত হয়, তাকে রেপার্টরীকরণ বলে।
রেপার্টরীকরণের আধুনিক পদ্ধতি বর্ণনা:
আধুনিক পদ্ধতিতে রেপার্টরীকরণে পূর্ণাঙ্গ রোগীলিপি প্রণয়নের পর রোগীর দেহ-মনে প্রকাশিত সকল বৈশিষ্ট্যপূর্ণ লক্ষণসমূহকে রুব্রিকে রূপান্তরিত করার পর রেপার্টরীকরণ করা হয়।
এখানে সর্বাঙ্গিন মানসিক লক্ষণ, দৈহিক সর্বাঙ্গিন লক্ষণ, আঙ্গিক লক্ষণ,
পারিপার্শ্বিক সর্বাঙ্গিন লক্ষণ, কারণগত লক্ষণ, সর্বাঙ্গিন হ্রাস-বৃদ্ধি, আঙ্গিক হ্রাস-বৃদ্ধি, নিদানগত লক্ষণ, আক্রান্ত পার্শ্ব, অসাধারণ, অদ্ভুত, বিরল, পরিচায়ক এবং বিশেষ বৈশিষ্ট্যপূর্ণ লক্ষণ ইত্যাদি সকল প্রকার লক্ষণকে যথাযথ গুরুত্ব দেয়া হয় এবং সকল রুব্রিকের বা লক্ষণের সকল ঔষধের মান গননা করা হয়।
এ পদ্ধতিতে রেপার্টরীকরণের সময় একটি ছাপানো ছক ব্যবহার করা হয় এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রুব্রিকের নির্দেশিত ঔষধ তালিকা নিয়ে বা অধিক সংখ্যক ঔষধ আছে এ ধরনের রুব্রিকের ঔষধ তালিকা নিয়ে প্রথমে কাজটি আরম্ভ করতে হবে। সকল রুব্রিকের বিপরীতে ঔষধের মূল্যমান লেখার পর ঔষধের যোগফল বের করে কোন ঔষধ কয়টি রুব্রিক পূরণ করেছে তা বের করে ছকের নির্দিষ্ট স্থানে লিখতে হবে। মান গননার পর ঔষধসমূহকে তাদের সর্বোচ্চ মান থেকে ক্রম নিম্নমানে সাজিয়ে নেয়া হয়। সর্বাধিক মূল্যমান প্রাপ্ত ঔষধ নির্ণয় করা হয় এবং পরিশেষে কোন ভাল মেটেরিয়া মেডিকায় যাচাই করে সর্বাধিক সদৃশ একক ঔষধ রোগীর জন্য ব্যবস্থাপত্র প্রদান করা হয়।
১৭। প্রশ্নঃ নৈদানিক রেপার্টরী কি? ২০১০, ১১ বা নৈদানিক রেপার্টরী কাকে বলে? ০৯ বা, ক্লিনিক্যাল রেপার্টরীর কাকে বলে?
নৈদানিক রেপার্টরীর সংজ্ঞাঃ
যে সকল রেপার্টরী বিশেষ কোন রোগের নামের উপর ভিত্তি করে বা রোগের নামকে প্রাধান্য দিয়ে প্রথমে শুরু করে ও পরে প্রয়োজন অনুসারে লক্ষণাবলীকে বর্ণনা করে যে সকল রেপার্টরী রচিত হয়েছে, সেই সকল রেপার্টরীসমূহকে, নৈদানিক রেপার্টরা বা ক্লিনিক্যাল রেপার্টরী বলা হয়। ইহা দ্বিতীয় শ্রেণীর রেপার্টরী। উদাহরণ- ডাঃ উইলিয়াম বোরিকের রেপার্টরী।
১৮। প্রশ্নঃ নৈদানিক রেপার্টরীর সুবিধা ও অসুবিধা লিখ। ২০১০, ১১ বা নৈদানিক রেপার্টরীর সীমাবদ্ধতা লিখ। ০৯ বা, ক্লিনিক্যাল রেপার্টরীর ব্যবহারের সুবিধা বর্ণনা কর। ১৮
নৈদানিক রেপার্টরীর সুবিধা:
(i) নৈদানিক রেপার্টরীতে মেডিকেল টার্ম বেশি ব্যবহৃত হয়, যার ফলে ডাঃ হ্যানিম্যান রচিত ‘অর্গানন অব মেডিসিন’ গ্রন্থের ৩নং অনুচ্ছেদে বর্ণিত একজন আদর্শ চিকিৎসকের গুণাবলীর প্রথম গুণ রোগ সম্বন্ধে জান অর্থাৎ মানবদেহের এনাটমীক্যাল ও ফিজিওলজিক্যাল এবং প্যাথলজিক্যাল পরিবর্তন সম্পর্কে চিকিৎসক বিশাদ জ্ঞান অর্জন করতে পারে।
(ii) বর্তমানে আধুনিক বিজ্ঞানের মেডিকেলের অর্থাৎ রোগ নির্ণয়ের বিশেষ যন্ত্র যেমন- এক্স-রে, আল্ট্রাসনোগ্রাফি, সিটি স্ক্যান, এমআরআই, ইসিজি-সহ সকল প্রকার যন্ত্রপাতি দ্বারা নির্ণীত রোগের সুচিকিৎসা এবং অন্যান্য প্যাথির সাথে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা ব্যবস্থাকে আধুনিকায়ন ও রোগীর সন্তুষ্টির ব্যবস্থা করা।
(iii) এ রেপার্টরীতে রুব্রিক প্রণয়নে রোগের অবস্থান, অনুভূতি, কারণ, বৃদ্ধি-হ্রাস সহযোগী লক্ষণাবলীকে গুরুত্ব দিয়ে যথাযথ স্থানে লিপিবদ্ধ করা হয়।
(iv) তরুণ রোগীর চিকিৎসায় এ শ্রেণীর রেপার্টরীর ব্যবহার চিকিৎসককে দ্রুত ঔষধ নির্বাচনে সহায়তা করতে পারে।
(v) একামেডিক শিক্ষিত হোমিওপ্যাথদের এ ধরনের রেপার্টরী জ্ঞানের সীমা-রেখা বর্ধিত করে ও আধুনিক চিকিৎসকের কাতারে দাঁড় করায় এবং হোমিওপ্যাথি সুপ্রতিষ্ঠিত হয়।
নৈদানিক রেপার্টরী সীমাবদ্ধতা/অসুবিধা: নৈদানিক রেপার্টরীর অনেক
সুবিধা থাকলেও এর কিছু সীমাবদ্ধতা বা অসুবিধা হয়েছে:
(i) এ জাতীয় রেপার্টরী সংক্ষিপ্ত, বহু প্রয়োজনীয় অধ্যায় বা বিষয় এতে অন্তর্ভূক্ত নয়।
(ii) তথ্যের স্বল্পতার কারণে চিকিৎসকদের সর্বাবিধ চাহিদা পূরণে এরা সক্ষম নয়।
(iii) এ জাতীয় রেপার্টরী রোগীকে সামগ্রীকভাবে বিচার না করে কেবল বিশেষ কোন লক্ষণের বা অঙ্গের বা অবস্থার ঔষধ তালিকা প্রদান করতে পারে।
(iv) সর্তকতার সাথে ব্যবহার না করলে এ জাতীয় রেপার্টরী চিকিৎসককে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার মূলনীতি “রোগের চিকিৎসা নহে রোগীর চিকিৎসা কর” হতে বিচ্যুত করে তথাকথিত রোগের চিকিৎসক হতে প্ররোচিত করে।
১৯। প্রশ্নঃ কার্ড রেপার্টরীর সুবিধা অসুবিধাগুলি লিখ। ০৯
কার্ড রেপার্টরীর সুবিধাঃ
(i) অন্যান্য পুস্তক রেপার্টরীর মত কার্ড রেপার্টরীও নির্দিষ্ট রুব্রিকের বিপরীতে গুচ্ছ ঔষধ তালিকা প্রদান করে।
(ii) কার্ড রেপার্টরী দ্বারা স্বল্প সময়ে রেপার্টরীকরণ সম্পন্ন করা যায়। মাত্র ১০- ১৫ মিনিটের মধ্যে একটি জটিল রোগীর রেপার্টরীকরণ করে ঔষধ নির্বাচন করা যায়, যা পুস্তক রেপার্টরীর মাধ্যমে ৫/৬ ঘন্টা সময় ব্যয় হত, এতে করে চিকিৎসকের সময় ও পরিশ্রম কম হয়।
(iii) এ রেপার্টরী নিয়ে কাজ করার সময় কোন প্রকার রেপার্টরীকরণের শীট প্রয়োজন হয় না।
(iv) কার্ড রেপার্টরীর মাধ্যমে রেপার্টরীকরণ চিকিৎসক এবং রোগী উভয়েই এটি আকর্ষণ করে।
(v) কার্ড রেপার্টরীর ফলাফল প্রাপ্তির পর মেটেরিয়া মেডিকা যাচাই করে রোগীর জন্য চূড়ান্ত ঔষধ নির্বাচন করতে হয়, এতে করে কার্ড রেপার্টরী চিকিৎসককে মেটেরিয়া মেডিকা পাঠে উদ্বুদ্ধ করে, ফলে চিকিৎসক মেটেরিয়া মেডিকায় বিশেষ পারদর্শিতা অর্জন করেন।
কার্ড রেপটরীর অসুবিধা:
(i) কার্ড রেপটরীতে ঔষধ অসংখ্য ও রুব্রিক সংখ্যা কম বা সীমিত। এতে বহু প্রয়োজনীয় রুব্রিক ও ঔষধ বাদ পড়েছে। ফলে হোমিওপ্যাথির মূলনীতি সামগ্রীক লক্ষণ সহায়তা নির্ণয় করা সম্ভব হয় না।
(ii) পুস্তক রেপার্টরীতে ঔষধের গ্রেডিং করা আছে কিন্তু কার্ড রেপার্টরীতে ঔষধের কোন গ্রেডিং করা নাই।
(iii) রেপার্টরীকরণের ফলাফলের ড্রাগ স্কোর বা ঔষধের মান প্রদান করে না। (iv) পুস্তক রেপার্টরী একই সাথে সকল ঔষধের গ্রেডিংয়ের তুলনা প্রদর্শন করে কিন্তু কার্ড রেপার্টরী সেটি প্রদর্শন করে না।
(v) কার্ড রেপার্টরীতে অধিকাংশ সাব-রুব্রিক, সাব রুব্রিক অন্তর্ভুক্ত হয়নি ফলে বহুক্ষেত্রে দৃষ্টি আকর্ষণীয় বা সুস্পষ্ট, একক, অসাধারণ এবং অদ্ভূত ধরণের লক্ষণ কার্ড রেপার্টরীতে অন্তর্ভুক্ত হয়নি।
২০। প্রশ্নঃ নির্ঘন্ট রেপার্টরী কাকে বলে? ইহার সীমাবদ্ধতা লিখ। নির্ঘন্ট রেপার্টরীর সংজ্ঞাঃ
অনেক চিকিৎসক তাদের রচিত মেটেরিয়া মেডিকার শেষ অংশ Key Note হিসাবে ঔষধের প্রধান প্রধান লক্ষণগুলির একটি সংক্ষিপ্ত রেপার্টরী সংযুক্ত করেছেন, এ ধরনের রেপার্টরীকে নির্ঘন্ট রেপার্টরী বলে। ইহা তৃতীয় শ্রেণীর রেপার্টরী। যেমন- ডাঃ নার, ডাঃ ন্যাস, ডাঃ রয়েলের রেপার্টরী এ ধরনের।
নির্ঘন্ট রেপার্টরীর সীমাবদ্ধতা বা অসুবিধাঃ
(i) এ জাতীয় রেপার্টরী সংক্ষিপ্ত না হলেও অনেক প্রয়োজনীয় অধ্যায় বা বিষয় এতে অন্তর্ভুক্ত নয়।
(ii) এতে ঔষধের সংখ্যা স্বল্প, অনেক প্রয়োজনীয় ঔষধ অন্তর্ভুক্ত নয়।
(iii) রুব্রিক প্রণয়নে ও তথ্যের উপস্থাপনে জটিলতা থাকার কারণে চিকিৎসকদের সর্বাধিক চাহিদা পূরণে ইহা সক্ষম নয়।
(iv) রুব্রিকের অনুগামী নির্ঘন্টসমূহ বর্ণমালার ক্রমানুসারে সর্বক্ষেত্রে সজ্জিত নয় বিধায় প্রয়োজনীয় লক্ষণ বা রুব্রিকটি খুঁজে বের করার জন্য চিকিৎসককে অনেক ক্ষেত্রে প্রচুর সময় ব্যয় করে নির্দিষ্ট ঔষধটি খুঁজে বের করতে হয়, যা বিরক্তিজনক সময় সাপেক্ষ।
(v) এ জাতীয় রেপার্টরী রোগীকে সামগ্রীকভাবে বিচার না করে কেবল বিশেষ কোন লক্ষণের বা অঙ্গের বা অবস্থার ঔষধ তালিকা প্রদান করে।
(vi) আধুনিক নব নব আবিষ্কৃত ঔষধ, নোসড, বাওয়েল নোসড, সারকোডিস, ইমপন্ডারেবিলিয়া ইত্যাদি শ্রেণীভূক্ত ঔষধ সমূহ যথাযথ ভাবে অন্তর্ভুক্ত নয়।
(vii) এতে তথ্য খুঁজে পাওয়ার সুবিধা অন্য রেপার্টরীর চেয়ে জটিলতর। রোগীচিত্রের সদৃশ করার জন্য একটি বিভাগ বা অধ্যায় যাথেটি নয়, কয়েকটি বিভাগ বা অধ্যায় অনুসন্ধানের পর ঔষধটি প্রাপ্ত হয়।
২১। প্রশ্নঃ নির্ঘন্ট রেপার্টরীর ব্যবহারের সুবিধাগুলি লিখ। ১৩, ১৫, ১৮
নির্ঘন্ট রেপার্টরীর ব্যবহারের সুবিধাসমূহঃ
(1) ইহাতে দেহের বিভিন্ন অঙ্গের নামের উপর ভিত্তি করে অধ্যায় সজ্জিত করা হয়েছে।
(ii) লক্ষণের বা রুব্রিকের বর্ণমালার ক্রমিক সূচী অন্তর্ভুক্ত করে সদৃশ ঔষধের তালিকা প্রদান করা হয়েছে।
(iii) এ রেপার্টরীতে লক্ষণের প্রথম তিনটি অক্ষরকে রুব্রিক হিসাবে নির্বাচন করে সে তিনটি অক্ষর দ্বারা যত লক্ষণ হতে পারে তার উল্লেখ করে বিভিন্ন ঔষধের নাম দেয়া হয়েছে।
(iv) এ রেপার্টরী উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য ঔষধের নামের পূর্বে বা পরে সে- ঔষধের বিশেষ ইঙ্গিতপূর্ণ লক্ষণাবলীর বর্ণনা প্রদান করে।
(y) এ রেপার্টরীতে ঔষধ পরীক্ষকদের বা সংশিষ্ট চিকিৎসকের বিবৃতি অবিকল অবিকৃতভাবে, সে ভাষাতেই লিপিবদ্ধ করা হয়েছে ফলে লক্ষণের বিশুদ্ধতা রক্ষিত হয়েছে।
(vi) এ রেপার্টরী তথ্যাবলী অধিকতর বিশ্বাস যোগ্য ও গুরুত্বপূর্ণ।
উপরিউক্ত তত্ত্বাবলী থেকে ইহাই প্রতীয়মান নির্ঘন্ট রেপার্টরী ব্যবহারের সুবিধা একজন চিকিৎসকের জন্য সুদূরপ্রসারী।
২২। প্রশ্ন: লাক্ষণিক রেপার্টরীর সংজ্ঞা দাও। লাক্ষণিক রেপার্টরীর বৈশিষ্ট্য লিখ।
লাক্ষণিক রেপার্টরীর সংজ্ঞা:
যে সকল রেপার্টরী লক্ষণকে গুরুত্ব দিয়ে রুব্রিক সজ্জিত করা হয়েছে, সেগুলোকে লাক্ষণিক রেপার্টরী বলা হয়। যেমন- ডাঃ উইলিয়াম বরিক রেপার্টরী, বোনিংহাউসেন থেরাপিটিক্স পকেট বুক।
লাক্ষণিক রেপার্টরীর বৈশিষ্ট্য:
(i) মানুষের দেহ মনে প্রকাশিত সকল সাধারণ ও অসাধারণ লক্ষণাবলীর ধারাবাহিক বর্ণনার মাধ্যমে এ প্রকার রেপার্টরীর রচিত হয়েছে।
(ii) এ জাতীয় রেপার্টরীতে লক্ষণ ও লক্ষণের বৈশিষ্ট্যকে অধিকতর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।
(iii) এ জাতীয় রেপার্টরীতে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসানীতিতে রোগীর দেহ ও মনে প্রকাশিত লক্ষণ সমষ্টিই রোগীর রোগের পরিচয় বহন করে। ইহা প্রতিফলিত হয়েছে।
(iv) এ ধরনের রেপার্টরীতে লক্ষণ সমষ্টির মাধ্যমে একক সদৃশ ঔষধ নির্বাচনে চিকিৎসককে সর্বাধিক সুবিধা প্রদান করা হয়েছে।
(v) রোগীর রোগ লক্ষণকে রুব্রিকে উল্লেখ করে এর বিপরীতে যতগুলো ঔষধ হতে পারে তা এ শ্রেণীর রেপার্টরীতে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।
(vi) ব্যক্তিনিষ্ঠ, বস্তুনিষ্ঠ, মানসিক, সাবদৈহিক, দৈহিক বা আঙ্গিক, অদ্ভুত, অসাধারণ, একক দৃষ্টি আকর্ষক, পরিচায়ক লক্ষণসহ সকল প্রকার লক্ষণের অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে এ জাতীয় রেপার্টরী রচিত হয়েছে।
(vii) ইহাতে সকল প্রকার রোগ লক্ষণাবলীকে বিশেষ কায়দায় সাজানো হয়েছে যাতে রেপার্টরীতে পূর্ণাঙ্গ রেপার্টরী হিসেবে ব্যবহার করা যায় এবং প্রয়োজনে ভবিষ্যতে লক্ষণ ও ঔষধ সংযোজন করে আরও পূর্ণাঙ্গ করা যায়।
(viii) উদাহরণ- বোনিংহাউসেন, ডাঃ জার, ডাঃ নার, ডাঃ কেন্ট, ডাঃ রবিন মারফি রচিত রেপার্টরী এ জাতীয় রেপার্টরী।
উপরিউক্ত বৈশিষ্ট্যাবলী একজন চিকিৎসকে সফলতা অর্জনে সাহায্যে করে। সুতরাং লাক্ষণিক রেপার্টরীর প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।
২৩। প্রশ্নঃ রেপার্টরীর সংজ্ঞাসহ লাক্ষণিক ও নৈদানিক রেপার্টরীর মধ্যে পার্থক্য লিখ। ২০০৯
রেপার্টরীর সংজ্ঞা:
Repertory শব্দের অর্থ পূণরায় পর্যালোচনার অংশ বুঝায়। অর্থাৎ এমনই একটি ছক বা সংক্ষিপ্তসারপূর্ণ তথ্যালয় যেখানে বিষয়সমূহ এমনভাবে সুবিন্যস্ত থাকে যে তা সহজেই খুঁজে পাওয়া যায়।
লাক্ষণিক ও নৈদানিক রেপার্টরীর মধ্যে পার্থক্য:
লাক্ষণিক রেপার্টরী
যে সকল রেপার্টরী লক্ষণকে ১ গুরুত্ব দিয়ে রুব্রিক সজ্জিত করা হয়েছে, সেগুলোকে লাক্ষণিক রেপার্টরী বলা হয়। যেমন- ডাঃ উইলিয়াম বরিক রেপার্টরী, বোনিংহাউসেন পকেট বুক। থেরাপিটিক্স
নৈদানিক রেপার্টরী
যে সকল রেপার্টরী বিশেষ কোন রোগের নামের উপর ভিত্তি করে বা রোগের নামকে প্রাধান্য দিয়ে প্রথমে শুরু করে ও পরে প্রয়োজন অনুসারে লক্ষণাবলীকে বর্ণনা করে যে সকল রেপার্টরী রচিত হয়েছে সে রেপার্টরীসমূহকে, নৈদানিক রেপার্টরী বা ক্লিনিক্যাল রেপার্টরী বলা হয়। ইহা দ্বিতীয় শ্রেণীর রেপার্টরী। উদাহরণ- ডাঃ উইলিয়াম বোরিকের রেপার্টরী।
মানুষের দেহ মনে প্রকাশিত সকল সাধারণ ও অসাধারণ লক্ষণাবলীর ধারাবাহিক বর্ণনার মাধ্যমে এ প্রকার রেপার্টরীর রচিত হয়েছে।
নৈদানিক রেপার্টরীতে মেডিকেল টার্ম বেশি ব্যবহৃত হয়, যার ফলে রোগ সম্বন্ধে জ্ঞান অর্থাৎ মানবদেহের এনাটমী ও ফিজিওলজিক্যাল এবং প্যাথলজিক্যাল পরিবর্তন সম্পর্কে চিকিৎসক বিশাদ জ্ঞান অর্জন করতে পারে।
এ জাতীয় রেপার্টরীতে লক্ষণ ও ৩ লক্ষণের বেশিয়াকে অধিকতর গুরুত্ব দেয়া হয়েছে
রোগীর রোগ লক্ষণকে রুব্রিকে উল্লেখ করে এর বিপরীতে যতগুলো ঔষধ হতে পারে তা এ শ্রেণীর রেপার্টরীতে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।
জাতীয় রেপার্টরাতে ৫
হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসানীতিতে রোগীর দেহ মনে প্রকাশিত লক্ষণ সমষ্টিই রোগীর রোগের পরিচয় বহন করে। ইহা প্রতিফলিত হয়েছে।
বর্তমানে আধুনিক বিজ্ঞানের মেডিকেলের অর্থাৎ রোগ নির্ণয়ের বিশেষ যন্ত্র যেমন- এক্স-রে, আল্ট্রাসনোগ্রাফি, সিটি স্ক্যান, এমআরআই, ইসিজি-সহ সকল প্রকার যন্ত্রপাতি দ্বারা নির্ণীত যোগের সুচিকিৎসা এবং অন্যান্য প্যাথির সাথে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা ব্যবস্থাকে আধুনিকায়ন ও রোগীর সন্তুষ্টির ব্যবস্থা করা।
৪.
এ রেপার্টরীতে রুব্রিক প্রণয়নে রোগের অবস্থান, অনুভূতি, কারণ, বৃদ্ধি-হাস সহযোগী লক্ষণাবলীকে গুরুত্ব দিয়ে যথাযথ স্থানে লিপিবদ্ধ করা হয়।
একামেডিক শিক্ষিত হোমিওপ্যাথদের এ ধরনের রেপার্টরী জ্ঞানের সীমা-রেখা বর্ধিত করে ও আধুনিক চিকিৎসকের কাতারে দাঁড় করায় এবং হোমিওপ্যাথি সুপ্রতিষ্ঠিত হয়।
২৪। প্রশ্নঃ কার্ড ও সিনথেটিক রেপার্টরীর মধ্যে পার্থক্য লিখ। ১৫, ১৮ কার্ড ও সিনথেটিক রেপার্টরীর মধ্যে পার্থক্য:
কার্ড রেপার্টরী
কার্ড রেপার্টরা প্রচলিত পুস্তক ১ রেপার্টরী নয়, এটি পুস্তক রেপার্টরীকে ভিত্তি করে বেপার্টরীকরণের একটি কৌশল মাত্র।
১৮৮৮ সালে সর্বপ্রথম কার্ড ২ রেপার্টরীর উদ্ভাবন হয়। এতে ২৫০০ কার্ড ছিল।
এ রেপার্টরীর দুর্বিিট অংশ। যদা ৩ পুস্তক অংশ ও কার্ড সমূহ।
রোগীলিপি প্রণয়নের পর ৪ লক্ষণসমূহকে রুব্রিকে রূপান্তর করে নেয়ার পর বুকলেট হতে প্রয়োজনীয় রুব্রিকের কার্ডের কোড নং জেনে নিতে হয়।
কার্ড রেপার্টরীর ফলাফল প্রাপ্তির ৫ পর মেটেরিয়া মেডিকা যাচাই করে রোগীর জন্য চূড়ান্ত ঔষধ নির্বাচন করতে হয়, এতে করে কার্ড রেপার্টরী চিকিৎসককে মেটেরিয়া মেডিকা পাঠে উদ্বুদ্ধ করে, ফলে চিকিৎসক মেটেরিয়া মেডিকায় বিশেষ পারদর্শিতা অর্জন করেন।
সিনথেটিক রেপার্টরী
জার্মানীর দু’জন প্রখ্যাত চিকিৎসক Dr. H. Barthels Dr. W. Klunker কেন্ট রেপার্টরীকে নব নব আবিষ্কারকে কেন্ট রেপার্টরীতে অন্তর্ভুক্ত করে তাদের এই নতুনভাবে সমন্বয়কৃত রেপার্টরার নামকরণ করেন Synthetic Repertory
এ রেপার্টরী ১৯৭৪ সালে ২৪৮৭ পৃষ্ঠার স্বতন্ত্র রেপার্টরী হিসেবে এটি প্রকাশিত হয়।
এ রেপার্টরী তিন খন্ডে বিভক্ত। যথা- ১ম খন্ড মানসিক লক্ষণাবলী, ২য় খন্ড সার্বদৈহিক লক্ষণাবলী, ৩য় খন্ডে নিদ্রা, স্বপ্ন ও জেনিটাল অর্থানসমূহ লক্ষণাবলী অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
রোগীলিপি প্রণয়নের পর লক্ষণসমূহকে রুব্রিকে রূপান্তর করে। নেয়ার পর রেপার্টরীতে অধ্যায় অনুসারে রুব্রিক দেখে সহজেই ঔষধ নির্বাচন করা সম্ভব হয়।
এ রেপার্টরাতে মেটেরিয়া মেডিকার যাচাই করে রোগীর জন্য চূড়ান্ত ঔষধ নির্বাচন করতে হয় না, এতে করে সিনথেটিক রেপার্টরী চিকিৎসককে মেটেরিয়া মেডিকা পাঠে উদ্বুদ্ধ করে না, ফলে চিকিৎসক মেটেরিয়া মেডিকায় বিশেষ পারদর্শিতা অর্জন করেন না।
২৫। প্রশ্নঃ রেপার্টরীকরণের বিভিন্ন পদ্ধতি বর্ণনা কর। ০৮, ১৪
রেপার্টরীকরণের বিভিন্ন পদ্ধতিঃ
সদৃশ, একক ঔষধ নির্বাচনের উদ্দেশ্যে রেপার্টরীকরণের বিভিন্ন পদ্ধতি প্রচলিত আছে। তন্মধ্যে প্রধান তিনটি পদ্ধতি হল-
(i) হ্যানিম্যান-বোনিংহাউসেন পদ্ধতি (Hahnemann Boeighausen’s Method) :- এই পদ্ধতিতে পূর্ণাঙ্গ রোগীীলপি প্রস্তুতের পর বৈশিষ্ট্যপূর্ণ লক্ষণাবলীকে স্থান, অনুভূতি ও অভিযোগ, হ্রাস-বৃদ্ধি, আনুষঙ্গিক বা সহচর লক্ষণ এই সুনির্দিষ্ট বিভাগে বিভক্ত করা হয় এবং কারণগত লক্ষণকে হ্রাস-বৃদ্ধি অন্তর্গত করে ভাগ করা হয়। এরপর লক্ষণকে রুব্রিকে রূপান্তর করা হয়।
(ii) কেন্ট পদ্ধতি (Kent’s Method) :- এই পদ্ধতিতে পূর্ণাঙ্গ
রোগীলিপি প্রস্তুতের পর বৈশিষ্ট্যপূর্ণ লক্ষণাবলীকে সর্বাঙ্গিন মানসিক লক্ষণ, সর্বাঙ্গিন দৈহিক লক্ষণ এবং সর্বশেষ আঙ্গিক লক্ষণ হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করার পর রুব্রিকে পরিবর্তত করা হয়।
(
iii) আধুনিক পদ্ধতি (Modern Method): আধুনিক পদ্ধতিতে
রেপার্টরীকরণে পূর্ণাঙ্গ রোগীলিপি প্রণয়নের পর রোগীর দেহ-মনে প্রকাশিত সকল বৈশিষ্ট্যপূর্ণ লক্ষণসমূহকে রুব্রিকে রূপান্তরিত করার পর রেপার্টরীকরণ করা হয়। এখানে সর্বাঙ্গিন মানসিক লক্ষণ, দৈহিক সর্বাঙ্গিন লক্ষণ, আঙ্গিক লক্ষণ, পারিপার্শ্বিক সর্বাঙ্গিন লক্ষণ, কারণগত লক্ষণ, সর্বাঙ্গিন হ্রাস-বৃদ্ধি, আঙ্গিক হ্রাস-বৃদ্ধি, নিদানগত লক্ষণ, আক্রান্ত পার্শ্ব, অসাধারণ, অদ্ভূত, বিরল, ‘পরিচায়ক এবং বিশেষ বৈশিষ্ট্যপূর্ণ লক্ষণ ইত্যাদি সকল প্রকার লক্ষণকে যথাযথ গুরুত্ব দেয়া হয় এবং সকল রুব্রিকের বা লক্ষণের সকল ঔষধের মান গণনা করা হয়।
বোরিক রেপার্টরী
ডাঃ উইলিয়াম বোরিক, এম.ডি
১। প্রশ্ন: বোরিক রেপার্টরীর বৈশিষ্ট্যগুলি লিখ।
বোরিক রেপার্টরীর বৈশিষ্ট্যগুলি নিম্নরূপঃ
(i) পুস্তকটির প্রথম অংশ মেটেরিয়া মেডিকা এবং দ্বিতীয় অংশ রেপার্টরী। ইতিপূর্বে আর কেহ মেটেরিয়া মেডিকার সংযুক্ত করে, রেপার্টরী প্রনয়ণ করেন নাই। তাই মেটেরিয়া মেডিকা সংযুক্ত রেপার্টরীর কারণে এর গুরুত্ব অপরিসীম।
(ii) মেটেরিয়া মেডিকায় একটি ঔষধের সূচীপত্র দেয়া হয়েছে। এ ঔষধ তালিকায় ১৩৫১টি ঔষধের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অনুমান করা হয় যে, রেপার্টরীতে প্রায় সমসংখ্যক ঔষধ অন্তর্ভূক্ত রয়েছে।
(iii) ঔষধসমূহকে তাদের গুরুত্ব অনুযায়ী ২টি শ্রেণীতে বা গ্রেডিং এ মূল্যায়িত করা হয়েছে।
(iv) ইংরেজী মূল বইতে বাঁকা অক্ষরে বা ইটালিক লিখিত ঔষধের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশী ১ম শ্রেণীর গাণিতিক মান ২ এবং সাধারণ অক্ষরে লিখিত ঔষধের গুরুত্ব তার চেয়ে কম। ২য় শ্রেণীর গাণিতিক মান ১। বাংলা অনুবাদকৃত বইয়ের মোটা অক্ষরে লিখিত প্রথম শ্রেণীর ঔষধের গাণিতিক মান ২ এবং সাধারণ অক্ষরে লিখিত ২য় শ্রেণীর ঔষধের গাণিতিক মান ১।
(v) এ রেপার্টরীতে মোট ২৫টি অধ্যায় রয়েছে।
(vi) বোরিক রেপার্টরী ডাঃ হ্যানিম্যান বোনিং হাউসেন পদ্ধতিতে সজ্জিত অর্থাৎ পীড়ার অবস্থান, অনুভূতি, কারণ, বৃদ্ধি-হ্রাস এবং সহযোগী লক্ষণাবলী যথাযথ স্থানে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।
(vii) এতে চিকিৎসাগত ভাষা (মেডিকেল টার্ম) বা রোগের নামে রুব্রিক প্রণয়ন বহু স্থানে ব্যবহৃত হয়েছে। সে জন্য এ রেপার্টরীকে ক্লিনিক্যাল রেপার্টরী বলা হয়।
(viii) এতে রুব্রিকসমূহকে বর্ণমালার ক্রমানুসারে সাজানোর চেষ্টা করা হয়েছে। কব্রিকের বিপরীতে নির্দেশিত ঔষধ তালিকা বর্ণমালার ক্রমানুসারে ও দুইটি গ্রেডিং করে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।
(Ix) রেপার্টরীর রুব্রিক বা লক্ষণাবলীর একটি বর্ণমালা ক্রমিক সূচীপত্র রেপার্টরীর শেষে দেয়া আছে, ফলে রুব্রিক অনুসন্ধান সহজ। ঔষধ তালিকা পাওয়াও সহজ।
উপরিউক্ত বৈশিষ্টাবলীর কারণে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা জগতে যে পুস্তকটি সকল শ্রেণীর হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকদের মন জয় করতে সক্ষম হয়েছে তা হচ্ছে বোরিক রেপার্টরী।
২। প্রশ্নঃ ডাঃ উইলিয়াম বোরিকের রেপার্টরী কয়টি শাখায় বিভক্ত এবং প্রথম ও শেষ শাখায় বা অধ্যায় কি আছে?
ডাঃ উইলিয়াম বোরিকের রেপার্টরী ২৫ টি শাখায় বিভক্ত। এর প্রথম শাখায় বা অধ্যায়: মন:- মানসিক লক্ষণাবলী প্রথমেই এ অংশে স্থান দেয়া হয়েছে।
শেষ শাখায় বা অধ্যায়: বৃদ্ধি- হ্রাস: বোরিক রেপার্টরীর সর্বশেষ অধ্যায় বৃদ্ধি-হ্রাস, এ অধ্যায়ের দুটি শাখা-
ক) বৃদ্ধিঃ এ শাখায় বিভিন্ন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে রোগের বৃদ্ধি সমূহ বর্ণমালার ক্রমানুসারে লিখিত হয়েছে।
খ) হ্রাস : এ শাখায় বিভিন্ন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে রোগের হ্রাস সমূহ বর্ণমালার ক্রমানুসারে লিখিত হয়েছে।
৩। প্রশ্ন: বোরিক রেপার্টরীর গঠন প্রণালী লিখ। ২০০৯, ১১, ১৩, ১৮ বোরিক রেপার্টরীর গঠন প্রণালী:
ডাঃ উইলিয়াম বোরিকের রেপার্টরীতে সর্বমোট ২৫টি অধ্যায় আছে। প্রথমে মন সর্বশেষ বৃদ্ধি-হ্রাস দেয়া রয়েছে। ধারাবাহিকভাবে নিম্নরূপঃ
মনঃ- মানসিক লক্ষণাবলী প্রথমেই এ অংশে স্থান দেয়া হয়েছে।
২। মস্তক ঃ- এ অধ্যায়ের মস্তিষ্কের নানাবিধ রোগ, ব্যথা, অনুভূতি ইত্যাদি এবং শিরঃঘূর্ণন স্থান পেয়েছে।
৩। চক্ষু ঃ- চোখের নানাবিধ অসুস্থতা এবং দৃষ্টিশক্তি সম্পর্কীত লক্ষণাবলী এ অধ্যায়ের স্থান পেয়েছে।
৪। কর্ণ :- কর্ণের নানাবিধ অসুস্থতা এবং শ্রবণশক্তি সম্পর্কীত লক্ষণাবলী।
৫। নাসিকা :- নাকের নানাবিধ অসুস্থতা এবং ঘ্রানশক্তি সম্পর্কীত লক্ষণাবলী এ অধ্যায় বর্ণিত হয়েছে।
৬। মুখমন্ডল :- চেহারার বৈশিষ্ট্য, মুখমন্ডলের বিভিন্ন অসুস্থতা এই অধ্যায়ে স্থান পেয়েছে। ওষ্ঠকে এ অধ্যায়ের স্থান দেয়া হয় নাই।
৭। মুখবিবর :- ওষ্ঠ ও মুখগহ্বরের বিভিন্ন অসুস্থতা এ অধ্যায়ে স্থান পেয়েছে।
৮। জিহ্বা :- জিহ্বার বিভিন্ন অবস্থা ও অসুস্থতা এ অধ্যায়ে স্থান পেয়েছে,
তবে স্বাদ এতে স্থান পায়নি।
১। স্বাদ: বিভিন্ন স্বাদ এ অধ্যায়ে স্থান পেয়েছে।
১০। মাড়িঃ দন্তকে পৃথক অধ্যায়ে স্থান দিয়ে এ অধ্যায়ে মাড়ির বিভিন্ন উপসর্গ আলোচিত হয়েছে।
১৯। দন্ত: দন্তের বিভিন্ন অসুস্থতা এ অধ্যায়ের আলোচিত বিষয়।
১২। গলদেশ: গলার বিভিন্ন অসুস্থতা এ অধ্যায়ে স্থান পেয়েছে।
১৩। পাকস্থলী: পাকস্থলীর বিভিন্ন অসুস্থ্যকর অবস্থা এ অধ্যায়ে স্থান পেয়েছে।
১৪। উদর বা তলপেট: মলদ্বার ও মলকে এ অধ্যায়ের অন্তর্ভুক্ত করে উদর বা নিপেটের নানাবিধ অসুস্থতা এ অধ্যায়ে স্থান পেয়েছে।
সমূহ যেমন- ব্লাডার, কিডনী, ইউরেটার, ইউরেস্তা ইত্যাদি অর্ণনসমূহের বিভিন্ন অসুস্থতা এ অধ্যায়ে বর্ণিত হয়েছে।
১৯। শৃংজননেন্দ্রিয়। পুংজননেন্দ্রিয়ের নানাবিধ রোগ, যৌন সমস্যা, যৌনরোগ এ অধ্যায়ের বিষয়বস্তু
১৭। স্ত্রীজননেন্দ্রিয়। স্ত্রী জননেন্দ্রিয়র নানাবিধ রোগ, লিউকোরিয়া, যৌন সমস্যা, মাসিকের গোলযোগ, প্রসব সংক্রান্ত উপসর্গ এ অধ্যায়ের আলোচিত রয়েছে।
১৮। রক্ত সঞ্চালন পদ্ধতি: শিরা ও ধমনীকে এ শাখায় অন্তর্ভুক্ত করে যাবতীয় রক্ত গঠিত রোগ, হৃৎপিন্ডের নানাবিধ অসুস্থতা এ অধ্যায়ে স্থান পেয়েছে।
৪৯। গতিশক্তি সৃষ্টিকারক তন্ত্র। অঙ্গ-প্রত্যঙ্গাদি সংক্রান্ত যাবতীয় লক্ষণাবলী এ অধ্যায়ে স্থান পেয়েছে।
১০। শ্বাস-প্রশ্বাস তন্ত্র। এ অধ্যায়ে শ্লেষ্মা, কাশি, ফুসফুসের উপসর্গ ও শ্বাস প্রশ্বাসের যাবতীয় অসুস্থতার লক্ষণাবলী অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
২১। হর্থ। চর্মের বিভিন্ন অসুস্থতার লক্ষণাবলী এ অধ্যায়ে স্থান পেয়েছে।
১৫। জ্বর। নানা জাতীয় জ্বর ও জ্বরের বিভিন্ন অবস্থার বিবরণ এ অধ্যায়ে স্থান পেয়েছে।
২৩। স্নায়ুতর। স্নায়ুর প্রদাহ, স্নায়ুর নানাবিধ রোগ, খিঁচুনী, নিদ্রা, স্বপ্ন, অবসন্নতা, মৃগী, মেরুমজ্জা ইত্যাদি অসুস্থতাসহ স্নায়ুগঠিত রোগ এ অধ্যায়ে স্থান গেয়েছে।
১৪। সাধারণ বিভাগ। সংক্ষিপ্ত এ অধ্যায়ে বিশেষ কিছু রোগের নামের বিপরীতে ঔষধ তালিকা উপস্থাপিত হয়েছে, যেমন- বিষাক্ততা, কর্ণমূল প্রদাহ, গ্রন্থিস্ফীতি, রোগ প্রতিষেধক আঘাতজনিত রোগ ইত্যাদি।
২৫। বৃদ্ধি-হ্রাস। বোরিক রেপার্টরীর সর্বশেষ অধ্যায় বৃদ্ধি-হ্রাস, এ অধ্যায়ের
ক) বৃদ্ধি : এ শাখায় বিভিন্ন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে রোগের বৃদ্ধি সমূহ বর্ণমালার ক্রমানুসারে লিখিত হয়েছে।
খ) হ্রাস। এ শাখায় বিভিন্ন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে রোগের হ্রাস সমূহ বর্ণমালার ক্রমানুসারে লিখিত হয়েছে।
৪। প্রশ্ন: বোরিক রেপার্টরীকে কেন নৈদানিক রেপার্টরী বলা হয়? বা, ডাঃ বোরিকের রেপার্টরী চিকিৎসা বিষয়ক জ্ঞান বৃদ্ধিতে সহায়তা করে- ব্যাখা কর।
বোরিক রেপার্টরীকে নৈদানিক রেপার্টরী বলার কারণ:
(ⅰ) চিকিৎসাগত ভাষা বা মেডিকেল টার্ম বেশি ব্যবহৃত হয়েছে।
(ii) রোগের নাম রুবিক প্রণয়নের ক্ষেত্রে অনেক ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়েছে।
(iii) লক্ষণকে গুরুত্ব দিয়েও আবার অনেক ক্ষেত্রে রুব্রিক সজ্জিত করা হয়েছে।
(iv) রোগের কারণ, অবস্থান, অনুভূতি, বৃদ্ধি- হ্রাস এবং সহযোগী লক্ষণাবলী নির্দিষ্ট স্থানে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।
(v) এতে রুব্রিকসমূহকে বর্ণমালার ক্রমানুসারে সাজানোর চেষ্টা করা হয়েছে।
(vi) এতে রুব্রিকের বিপরীতে নির্দেশিত ঔষধের তালিকা বর্ণমালার ক্রমানুসারে ও দুটি গ্রেডিং করে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।
উপরোক্ত আলোচনা হতে ইহাই প্রতীয়মান হয় যে, বোরিক রেপার্টরীকে নৈদানিক রেপার্টরী বলার অন্যতম কারণ হচ্ছে এতে মেডিকেল টার্ম এর অতিরিক্ত এবং রোগের নামে রুব্রিক সজ্জিত করা।
৫। প্রশ্ন: বোরিক রেপার্টরীর সুবিধাগুলো লিখ। বা ডাঃ বোরিকের রেপার্টরীর আকর্ষণীয় দিক কি কি?
বোরিক রেপার্টরীর সুবিধাসমূহ নিম্নরূপঃ
ডাঃ উইলিয়াম বোরিক মেটেরিয়া মেডিকায় সংযুক্ত করে ১৯২৭ সালে এ রেপার্টরী প্রকাশ করেন। ডাঃ অসকায় ই. বোরিক রেপার্টরী অংশের সংশোধন ও তথ্যের সংযোজন করেছেন।
(1) বোরিক রেপার্টরী ডাঃ হ্যানিম্যান- বোনিংহাউসেন পদ্ধতিতে সজ্জিত অর্থাৎ রোগের অবস্থান, অনুভূতি, কারণ, বৃদ্ধি হ্রাস এবং সহকারী লক্ষণাবলী যথাযথ স্থানে লিপিবদ্ধ করা আছে। সে জন্য এ রেপার্টরীকে “বোনিংহাউসেন টাইপ যুক্তিসিদ্ধ উপযোগীতাবাদী ব্যাপক সাধারণ রেপার্টরী” বলা হয়।
(ii) এতে সাধারণ লক্ষণের বর্ণনা থাকলেও চিকিৎসাগত ভাষা (মেডিকেল টার্ম) বা রোগের নাম রুব্রিক প্রণয়নের ক্ষেত্রে বহুস্থানে ব্যবহৃত হয়েছে। সে জন্য এ রেপার্টরীকে ক্লিনিক্যাল রেপার্টরীও বলা হয়।
(iii) ইহাতে লক্ষণকে গুরুত্ব দিয়ে রুব্রিক সজ্জিত করার কারণে এ রেপার্টরীকে লাক্ষণিক রেপার্টরীও বলা হয়। মূলত বোরিক রেপার্টরী একটি মিশ্র পদ্ধতির রেপার্টরী।
(iv) ইহাতে লক্ষণ হিসেবে বা রোগের নামে যেভাবে সুবিধা হয় সেভাবেই রুব্রিক খুঁজে ঔষধের তালিকা প্রাপ্তি সহজ হয়।
(v) বোরিক রেপার্টরীতে রুব্রিকসমূহকে বর্ণমালার ক্রমানুসারে সাজানোর চেষ্টা করা হয়েছে। রুব্রিকের বিপরীতে নির্দেশিত ঔষধ তালিকা বর্ণমালার ক্রমানুসারে ও দুটি গ্রেডিং করে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।
(vi) রেপার্টরীকরণের পর সর্বদা মেটেরিয়া মেডিকা পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত ঔষধ নির্বাচন করতে হয়। মেটেরিয়া মেডিকা ও রেপার্টরী একত্রে সংযুক্ত থাকার কারণে ঔষধ মিলিয়ে দেখার জন্য একই সাথে মেটেরিয়া মেডিকার সুবিধাও পাওয়া যায়।
(vii) ইহাতে মেটেরিয়া মেডিকার কোন নির্দিষ্ট লক্ষণে আর কি কি ঔষধ হতে পারে তা জানতে হলেও একই সাথে রেপার্টরী ও মেটেরিয়া মেডিকার তুলনামূলক ব্যবহার করা যায়।
(viii) ঔষধ সমূহকে ২টি শ্রেণীতে বা গ্রেডিং এ মূল্যায়িত করা হয়েছে। ১ম শ্রেণীর গানিতিক মান ২ এবং ২য় শ্রেণীর গাণিতিক মান ১।
৬। প্রশ্নঃ বোরিক রেপার্টরীর সীমাবদ্ধতা/অসুবিধা লিখ।
বোরিক রেপার্টরীর সীমাবদ্ধতা বা অসুবিধাসমূহঃ
ডাঃ উইলিয়াম বোরিকের রেপার্টরীতে ব্যাপক বা অপরিসীম সুবিধা থাকার পরেও ইহাতে কিছু সীমাবদ্ধতা বা অসুবিধা আছে, তা নিম্নরূপ:
(i) বোরিক রেপার্টরী সংক্ষিপ্ত, বহু প্রয়োজনীয় অধ্যায় বা বিষয় এতে অন্তর্ভুক্ত হয়নি, বহু প্রয়োজনীয় রুব্রিক বা লক্ষণাবলী এতে অর্ন্তভূক্ত হয়নি, ফলে চিকিৎসা ক্ষেত্রে চিকিৎসকদের সম্পূর্ণ প্রয়োজনীয়তা পূরণ সক্ষম নহে।
(ii) অনেক রুব্রিকের বিপরীতে ঔষধ তালিকা সংক্ষিপ্ত, ফলে বহু প্রয়োজনীয় ঔষধ বাদ পড়ে গিয়েছে।
(iii) রোগীর ভাষার পরিবর্তে মেডিকেল টার্ম অধিক ব্যবহারের ফলে রোগী ও ঔষধের সমন্বয় সাধন কষ্টকর হয়ে পড়ে, কারণ রোগীর ভাষা ও মেডিকেল শব্দ অনেকক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথিক দৃষ্টিভঙ্গিতে সমার্থক হয় না।
(iv) এ রেপার্টরীতে রোগের নাম অধিক ব্যবহৃত হওয়ার কারণে চিকিৎসক রোগীর উপর গভীর দৃষ্টিপাত সংকোচন করে রোগ নামের উপর নির্ভরশীল হয়ে অর্গানন অব মেডিসিনের মূলনীতি ‘রোগের নয় রোগীর চিকিৎসা কর’ এ নীতি হতে বিচ্যুত হয়ে তথাকথিত রোগের চিকিৎসক হয়ে পড়তে পারেন।
(v) বোরিক রেপার্টরীতে ঔষধের গ্রেডিং ২টি করায় ঔষধের মূল্যায়ন সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে।
(vi) এ রেপার্টরীতে অনেক ক্ষেত্রে রুব্রিক বর্ণনায় বর্ণমালার ধারা বাহিকতায় অসংগতি রয়েছে। মুদ্রন ত্রুটি অনেক ক্ষেত্রে সাব রুব্রিককে পূর্ণ রুব্রিক হিসেবে দেখানো হয়েছে।
(vii) ঔষধ নির্বাচনে মানসিক লক্ষণাবলী অত্যাধিক গুরুত্বপূর্ণ হলেও এ রেপার্টরীতে মন অধ্যায় অতি সংক্ষিপ্ত ফলে চিকিৎসক সদৃশ ঔষধ নির্বাচনে আশানুরূপ সহযোগিতা লাভে ব্যর্থ হন।
(viii) রেপার্টরীতে অন্তর্ভুক্ত ঔষধসমূহের নামের তালিকা উষবের নামের সংক্ষিপ্তরূপের তালিকা দেয়া হয়নি। ফলে এ রেপার্টরীতে প্রকৃত ঔষধ সংখ্যা কত তা জানা হয়নি।
৭। প্রশ্ন। ডাঃ বোরিকের রেপার্টরীর ব্যবহার পদ্ধতি লিখ।
ডাঃ বোরিকের রেপার্টরীর ব্যবহার পদ্ধতিঃ
ডাঃ উইলিয়াম বোরিকের রেপার্টরী ব্যবহার করতে হলে প্রথমে রোগীর লক্ষণাবলী সংগ্রহ বা একক, সদৃশ ঔষধ নির্বাচনের উদ্দেশ্যে রেপার্টরীকরণের বিভিন্ন পদ্ধতি প্রচলিত আছে তার মধ্যে প্রধান তিনটি পদ্ধতি হল-
(1) ডাঃ হ্যানিম্যান- বোনিংহাউসেন পদ্ধতি
(ii) কেন্ট পদ্ধতি
(iii) আধুনিক পদ্ধতি
ডাঃ বোরিক রেপার্টরীর দ্বারা রেপার্টরীকরণের জন্য উপরিউক্ত যে কোন পদ্ধতি অনুসরণ করা যায়।
৮। প্রশ্নঃ রেপার্টরীতে ডাঃ উইলিয়াম বোরিকের অবদান লিখ।
রেপার্টরীতে ডাঃ উইলিয়াম বোরিকের অবদানঃ
ডাঃ উইলিয়াম বোরিক তাঁর বিখ্যাত পুস্তক “Pocket Manual of Homocopathic Materia Medica” এর প্রথম অংশ মেটেরিয়া মেডিকা এবং দ্বিতীয় অংশ রেপার্টরী রচনা করছেন।
(i) ডাঃ উইলিয়াম বোরিকের রেপার্টরী ডাঃ হ্যানিম্যান বোনিংহাউসেন পদ্ধতিতে সজ্জিত অর্থাৎ রোগের অবস্থান, অনুভূতি, শয়ন, বৃদ্ধি, হ্রাস এবং সহযোগী লক্ষণাবলী যথাযথ স্থানে লিপিবদ্ধ করেছেন।
(ii) চিকিৎসকদের চিকিৎসা বিষয়ক জ্ঞান বৃদ্ধির জন্য মেডিকেল ভাষা এ রেপার্টরীতে ব্যাপক ব্যবহার করেছেন।
(iii) লক্ষণকে গুরুত্ব দিয়ে রুব্রিক সজ্জিত করেছেন।
(iv) মেটেরিয়া মেডিকা ও রেপার্টরী একত্রে সংযুক্তভাবে রেপার্টরী প্রকাশ করেন ফলে সর্বদা সাথে রাখা বা বহন করা সুবিধাজনক।
(v) রেপার্টরীকরণের পর সর্বদা মেটেরিয়া মেডিকা পর্যালোচনা করে চূড়ান্ত ঔষধ নির্বাচন করতে হয়, ইহাতে মেটেরিয়া মেডিকা একত্রে সংযুক্ত থাকার ফলে ঔষধ মিলিয়ে দেখার জন্য একই সাথে মেটিরিয়া মেডিকার সুবিধাও পাওয়া যায়।
(vi) ঔষধসমূহকে তাদের গুরুত্ব অনুযায়ী ২টি শ্রেণীতে মূল্যায়িত করেন।
(vii) পুস্তকের শেষে সূচীপত্র বর্ণমালার ক্রমে দেয়া আছে। উক্ত সূচীপত্র ব্যবহার করে প্রয়োজনীয় ঔষধও অতিসহজে পাওয়া যায়।
উপরিউক্ত কারণে ডাঃ উইলিয়াম বোরিকের রেপার্টরী প্রণয়নে ও প্রকাশনায় যথেষ্ট অবদান রয়েছে। যার ফলে বিশ্বের বহুখ্যাতনামা হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকদের নিকট তাঁর অবদান সুদূরপ্রসারী।
৯। প্রশ্নঃ বোরিক ও কেন্টের রেপার্টরীর তুলনা কর।
বোরিক ও কেন্টের রেপার্টরীর তুলনা:
বোরিক রেপার্টরী
ইহার লেখক ডাঃ উইলিয়াম বোরিক, এম.ডি
ডাঃ উইলিয়াম বোরিক তাঁর ২ বিখ্যাত পুস্তক Manual “Pocket of Homocopathic Materia Medica” এর প্রথম অংশ মেটেরিয়া মেডিকা এবং দ্বিতীয় অংশ রেপার্টরী রচনা করছেন।
ডাঃ উইলিয়াম বোরিকের রেপার্টরী ২৫ টি শাখায় বিভক্ত।
ঔষধসমূহকে তাদের গুরুত্ব ৪ অনুযায়ী ২টি শ্রেণীতে বা গ্রেডিং এ মূল্যায়িত করা হয়েছে।
উইলিয়াম বোরিকের ৫ রেপার্টরী রুব্রিক সংখ্যা অনির্দিষ্ট।
কেন্টের রেপার্টরী
ইহার লেখক ডাঃ জে. টি. কেন্ট এ.এম. এম. ডি।
ডাঃ জে. টি. কেন্ট এ, এম, এম, ডি কর্তৃক রচিত কেন্ট রেপার্টরীর অধ্যায় বিন্যাসের ক্ষেত্রে প্রথমে Mind বা মন অধ্যায় (Alpha) এবং সর্বশেষে (Generalities) বা সাধারণ লক্ষণ অধ্যায় (Omega) বর্ণিত হয়েছে।
ডাঃ কেন্ট রেপার্টরীতে শাখা বা অধ্যায়: মানসিক অংশ- ১ টি অধ্যায়, আঙ্গিক অংশ- ৩৫টি অধ্যায়, সাধারণ লক্ষণাবলী – ১টি অধ্যায়। এই তিনটি মূল বিভাগের অধিনে কেন্ট রেপার্টরীতে ৩৭ টি অধ্যায় আছে।
ঔষধসমূহকে তাদের গুরুত্ব অনুযায়ী ৩টি শ্রেণীতে বা গ্রেডিং এ মূল্যায়িত করা হয়েছে।
ডাঃ কেন্ট রেপার্টরীতে রুব্রিক: ৭৫,০০০ টি রুব্রিক আছে।
Boenninghausen’s Therapeutic pocket Book,
১। প্রশ্নঃ বোনিং হাউসেন রেপার্টরীর গঠন প্রণালী বর্ণনা কর। ১৪, ১৮ বোনিং হাউসেন রেপার্টরীর গঠন প্রণালী:
বোনিং হাউসেন থেরাপিউটিক পকেট বুকে রেপার্টরী অংশকে প্রথমতঃ ৭টি প্রধান বিভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিটি বিভাগকে প্রয়োজনে উপবিভাগে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২য় বিভাগটিকেই সবচেয়ে বেশি উপবিভাগে ভাগ করা হয়েছে। অধিকাংশ উপবিভাগকে আবার শাখা বিভাগে বিভক্ত করে রেপার্টরীতে সজ্জিত করা হয়েছে। ইহার মূল গঠন প্রণালী নিম্নে বর্ণিত হয়।
(i) মানসিক ও চিত্ত বৈকল্যের লক্ষণ (Mind and Intellect Symptoms)- ২টি সাব অধ্যায় ও ৩৬টি রুব্রিক।
(ii) দেহের বাহ্যিক ও আভ্যন্তরীক অঙ্গ প্রত্যঙ্গ (Parts of the body and organs)- ইহাতে ১৭টি অধ্যায়, ৩৭ সাব অধ্যায় এবং ৮৪৭টি রুব্রিক আছে।
(iii) দেহের বহিরাঙ্গের অনুভূতি, অস্থি, চর্ম এবং গ্ল্যান্ড (Sensations, Bones, Skins and glands)-ইহাতে ৪ সাব অধ্যায় এবং ৮২৫টি রুব্রিক আছে।
(iv) নিদ্রা ও স্বপ্ন সম্বন্ধীয় (Sleep and Dreams)- ইহাতে ৩ সাব অধ্যায় এবং ৯৪টি রুব্রিক আছে।
(v) জ্বর ও সার্কুলেশন (Fevers and circulation)-ইহাতে ২ সাব অধ্যায় এবং ১১৬টি রুব্রিক আছে।
(vi) রোগের হ্রাস-বৃদ্ধি (Alteration of state of Health- Aggravations and Ameliorations) – ইহাতে ২ সাব অধ্যায় এবং ৫০২টি রুব্রিক আছে।
(vii) বিভিন্ন ঔষধের সম্পর্ক (Relationship of remedies)-ইহাতে ১৪৮টি মেডিসিন দেওয়া আছে।
Relationship of remedies অধ্যায়ন ব্যতীত ‘সমগ্র রেপার্টরীতে মোট ২২টি অধ্যায় ও ৫টি শাখা অধ্যায়ে বিভক্ত।
প্রতিটি অধ্যায়, শাখা অধ্যায়, বর্ণমালা ক্রমিকভাবে বিভিন্ন শিরোনাম ব্যবহৃত হয়ে তার বিপরীতে নির্দেশিত ঔষধ সমূহ বর্ণমালার ক্রমানুসারে ও গ্রেডিং অনুসারে সজ্জিত করা হয়েছে।
২। প্রশ্নঃ ডাঃ বোনিং হাউসেনের রেপার্টরীর ব্যবহার লিখ।
ডাঃ বোনিং হাউসেনের রেপার্টরীর ব্যবহার:
ডাঃ বোনিং হাউসেনের রেপার্টরী খানা যদিও সাধারণ লক্ষণ সমষ্টি দ্বারা পূর্ণ তবুও ইহার পদ্ধতি খুবই দ্রুত ও সহজ প্রাপ্তির উপযোগী। প্রথমে রোগীর লক্ষণ সংগ্রহ করে লক্ষণগুলিকে রেপার্টরীর ভাষায় সজ্জিত করতে হবে। তারপর লক্ষণানুসারে রেপার্টরী হতে ভিন্ন ভিন্ন লক্ষণের জন্য বিভিন্ন ঔষধ বাহির করে নিতে হবে। যেমন- ব্যথার জন্য ২য় বিভাগ খুঁজতে হবে হ্রাস-বৃদ্ধির জন্য ৬ষ্ঠ বিভাগ এবং ঔষধাবলীর জন্য ৭ম বিভাগ খুঁজতে হবে। উক্ত লক্ষণাবলীর জন্য প্রয়োজনীয় ঔষধগুলিকে ১ম, ২য়, ৩য়, ৪র্থ ও ৫ম এই পাঁচটি গ্রেডে লেখা আছে। এই হিসাবে এদের আংকিক মান ১ম গ্রেডে ৫, ২য় গ্রেডে ৪, ৩য় গ্রেডে ৩, ৪র্থ গ্রেডে ২ এবং ৫ম গ্রেডে ১ ধরে প্রয়োজনীয় লক্ষণানুযায়ী রেপার্টরীতে লিখিত ঔষধগুলির নাম একটি পৃথক কাগজে লিখিতে হবে এবং এদের পাশে আংকিক মান বসাতে হবে। এভাবে
প্রতিটি লক্ষণের জন্য ভিন্ন ভিন্ন ঔষধ লিখে নিতে হবে। তারপর প্রত্যেকটি ঔষধের মান পৃথক পৃথকভাবে যোগ করে যে ঔষধের মান সর্বোচ্চ হবে উহাই রোগীর জন্য সঠিক ঔষধ বলে নির্বাচন করতে হবে।
কেন্ট’স রেপার্টরী (Kent’s Repertory)
১। ডাঃ কেন্টের রেপার্টরীর শ্রেণীবিভাগ কর। বা, ব্যবহারিক ক্ষেত্রে ডাঃ কেন্ট রেপার্টরী কয় প্রকার ও কি কি?
ডাঃ কেন্টের রেপার্টরীর শ্রেণীবিভাগ:
ব্যবহারিক ক্ষেত্রে ডাঃ কেন্টের রেপার্টরীকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়। যথা :- ১। প্রথম শ্রেণী (Thumb Index পদ্ধতি),
২। দ্বিতীয় শ্রেণী (Plain Paper পদ্ধতি) ও
৩। তৃতীয় শ্রেণী (Rubric Index পদ্ধতি)
(i) প্রথম শ্রেণী (Thumb Index পদ্ধতি): এই প্রকারের রেপার্টরী ব্যবহার করা খুবই সহজ। কেননা পুস্তকের প্রতিটি বিভাগে নাম অনুযায়ী Thumb Index করা আছে।
(ii) দ্বিতীয় শ্রেণী (Plain Paper পদ্ধতি): এই প্রকারের রেপার্টরীতে কোন সূচীপত্র নাই। ফলে চিকিৎককে প্রথম শ্রেণী Thumb Index অপেক্ষা অধিক সময় ব্যয় করে লক্ষণ অনুযায়ী ঔষধ খুঁজে বাহির করতে হয়।
(iii) তৃতীয় শ্রেণী (Rubric Index পদ্ধতি): এই প্রকারের রেপার্টরী শিরোনাম নির্দেশক পদ্ধতির। এতেও Thumb Index কোন নাই। কিন্তু পুস্তকের শেষে রুব্রিকের সূচীপত্র দেয়া আছে। ফলে চিকিৎসক অতি সহজে ইহা ব্যবহার করতে পারেন।
২। প্রশ্নঃ কেন্ট রেপার্টরীর উৎস লিখ। ২০১৮
কেন্ট রেপার্টরীর উৎসঃ
ডাঃ হ্যানিম্যানের মেটেরিয়া মেডিকা পিউরা, ক্রনিক ডিজিজ, বোনিং হাউসেন থেরাপিউটিক পকেট বুক রেপার্টরী, ডাঃ লিপি এবং ডাঃ নার এর রেপার্টরী।
১। ভেষজ ক্রিয়া ১৭
ভেষজ (Drug): যে সকল পদার্থ সুস্থ শরীরে প্রয়োগ করলে শরীর অসুস্থ হয়, তাকে ভেষজ বলা হয়। অর্থাৎ যে সকল পদার্থের রোগ উৎপাদিকা ও ফার্মাকোপিয়া মতে শক্তিকৃত করার পর প্রয়োগে রোগনাশক উভয় শক্তিই বর্তমান থাকে, তাকে ড্রাগ (Drug) বলে। কাজেই ভেষজ হল ঔষধীগুণ সম্পন্ন বস্তু যা থেকে ঔষধ প্রস্তুত করা হয়।
২। এনামনেসিস বা, লক্ষণসমষ্টি ১৭
এনামনেসিস:
এনামনেসিসের অর্থ রোগীর লক্ষণসমষ্টি। রোগীর বর্তমান ও অতীত লক্ষণ, রোগ লক্ষণের ক্রমবিকাশ, লক্ষণ বৃদ্ধির কারণ, রোগীর বংশানুক্রমিক ইতিহাস, রোগীর দৈহিক গঠনমূলক লক্ষণ, রোগ নিরাময়ের পারিপার্শ্বিক বাধা বিপত্তি, জীবাণুঘটিত রোগের জটিল প্রকৃতি প্রভৃতি এনামনেসিসের অন্তর্ভুক্ত। অর্থাৎ রোগী সম্বন্ধে পুংখানুপুংখভাবে জানার নাম এনামনেসিস। হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় এনামনেসিস অপরিহার্য। রোগে আক্রমণে দেহ ও মনের উপর কিরূপ প্রতিক্রিয়া ঘটেছে এবং তাদের প্রতিরোধ ব্যবস্থা কিরূপ সে সম্বন্ধে পরিচয় লাভ করাই এনামনেসিসের লক্ষ্য।
৩। ব্যবস্থাপত্র ২০১৩, ১৫, ১৭
ব্যবস্থাপত্র (Prescription) :
চিকিৎসক রোগীর নিজের বর্ণনা, আপনজনের বর্ণনা, সেবাকারীর বর্ণনা হতে বৈশিষ্ট্যপূর্ণ লক্ষণসমষ্টি ও এ লক্ষণগুলোর কারণের গুরুত্ব অনুসারে এবং চিকিৎসক স্বয়ং রোগীর স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষা করে রোগের বিষয় অবগত হয়ে রোগীর আরোগ্য উপযোগী মনে করে রোগীলিপি অনুযায়ী যে সদৃশতম ঔষধ নির্বাচন করে সেবন করার জন্য লিখিত নির্দেশ প্রদান করেন, তাকেই ব্যবস্থাপত্র বলে।
৪। আরোগ্যের প্রতিবন্ধকতা, ২০১৭
আরোগ্যের প্রতিবন্ধকতাঃ
যখন সুনির্বাচিত ঔষধ প্রয়োগের পরও রোগী আরোগ্য হয় না, তখন চিকিৎসক ব্যর্থ হন। ইহার কারণ আরোগ্যের পথে কিছু বাঁধা র। ঔষধের সাথে খাদ্যের ও কিছু পারিপার্শ্বিক অবস্থার সম্পর্ক কাজ করে। রয়েছে। যেমন – যে উৎস থেকে ঔষধ প্রস্তুত হয়, তা খাদ্য হিসাবে গ্রহন করলে আরোগ্যের পথে বাঁধার সৃষ্টি হয়। থুজা ঔষধের ক্রিয়া নষ্ট করে চা ও পেঁয়াজ, ঠান্ডা গরমে অত্যানুভূতি রোগের ক্ষেত্রে উপযুক্ত নিষেধ না দিলে ইত্যাদি।
৫। বিরল লক্ষণ। ২০১৭
বিরল লক্ষণ (symptom):
যে সব অদ্ভুত অবস্থা রোগী ও ঔষধের বিশেষ চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যকে নির্দেশ করে, উহাকে বিরল লক্ষণ বলে যেমন- বুক ধড়ফড়ানি, তাড়াতাড়ি হাঁটলে উপশম-আর্জেন্টাম নাইট্রিকাম ও সিপিয়া ইত্যাদি।
৬। ক্রস রেপার্টরাইজেশন বা, ক্রস-রেফারেন্স; ২০১৬
ক্রস রেপার্টরাইজেশন:
রেপার্টরী পুস্তকে উল্লেখিত একটি রুব্রিকের ঔষধ তালিকার জন্য ভিন্ন নামে অন্য রুব্রিক বা একই নামে ভিন্ন অধ্যায়ে বা সমার্থক অন্য শব্দের উল্লেখ করাকে প্রতি নির্দেশ বা ক্রস-রেফারেন্স বলে। বিভিন্ন রেপার্টরীতে ক্রস-রেফারেন্সের বহু উল্লেখ আছে, চিকিৎসক এ ধরনের ক্ষেত্রে নির্দেশিত ক্রস-রেফারেন্সের রুব্রিকটিকে সন্ধান করে ঔষধ তালিকা পেতে পারেন। অধিকাংশ রেপার্টরীতে ‘দেখ’ বা ‘দেখুন’ শব্দ দ্বারা ক্রস-রেফারেন্স নির্দেশ করা হয়েছে।
৭। লক্ষণ এনালাইসিস: ২০১৬, ১৮
লক্ষণ এনালাইসিস:
(i) কারণ (Causes), (ii) অবস্থান (Locations) (iii) প্রকৃতি (Nature), (iv) অনুভূতি (Sensations) (v) হ্রাস-বৃদ্ধি (Modalities) (vi) আনুষঙ্গিক বা সহচর অবস্থা (Concomitants)
৮। লক্ষণ সমষ্টি। ২০১৬
লক্ষণসমষ্টি:
রোগশক্তির গতিশীল প্রভাব যখন জীবনীশক্তির উপর পড়ে ঐ অবস্থায় যদি জীবনীশক্তির ভিতরে রোগ প্রবণতা থাকে তবে ঐ রোগশক্তির প্রভাবে জীবনীশক্তি অসুস্থ হয়ে পড়ে। ফলে ইতিপূর্বে জীবনীশক্তির মাধ্যমে শরীর ও মনের যে স্বাভাবিক অনুভূতি, কাজ কর্ম ও গঠনাকৃতি অব্যাহত ছিল, ইহার পরিবর্তে কতকগুলো অস্বাভাবিক শারীরিক ও মানসিক অবস্থা প্রকাশ পায়। এ প্রকাশিত লক্ষণাবলীর সমষ্টিকে লক্ষণ সমষ্টি (Totality of Symptoms) বলে।
৯। মায়াজম; ২০১৩, ১৬
মায়াজম (Miasm):
মায়াজম একটি গ্রীক শব্দ। এর অর্থ দাগ, অপবিত্রতা, দূষিত অবস্থা। যে সকল প্রাকৃতিক সূক্ষ্ম শক্তি বা কারণসমূহ হতে রোগ উৎপত্তি হয়, সে সকল সূক্ষ্ম শক্তি বা কারণসমূহকে, উপবিষ বা মায়াজম বলে।’ সুতরাং উপবিষ বা মায়াজম হচ্ছে এমন একটি অবস্থা যা মানবদেহে প্রবেশ করে এবং দেহের বিশৃংখলা সৃষ্টি করে রোগ লক্ষণাবলী উৎপন্ন করে। মায়াজম তিন প্রকার। যথা- (ⅰ) সোরা, (ii) সিফিলিস ও (iii) সাইকোসিস।
১০। দৈহিক পরীক্ষা। ২০১৫, ১৬, ১৮
দৈহিক পরীক্ষা : একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎকের সর্বপ্রথম ও সর্বপ্রধান কর্তব্য হল চিকিৎসার উদ্দেশ্যে রোগী পরীক্ষা করে লক্ষণ সমষ্টি সংগ্রহ করা। রোগীলিপি সংগ্রহ অর্থাৎ লক্ষণ সমষ্টি সংগ্রহের নিয়মাবলী যেমন রোগীর বর্ণনা হতে, সেবাকারীর বর্ণনা হতে, আত্মীয়- স্বজনের বর্ণনা হতে এবং চিকিৎসক নিজে রোগী সম্বন্ধে যা পর্যবেক্ষণ করবেন তার বিস্তারিত বর্ণনা দেয়া রয়েছে। চিকিৎসক রোগীর দেহের তাপমাত্রা, রক্তের চাপ, এনিমিয়া, জন্ডিস, চেহারা, ধাতুগত লক্ষণ, অংগ-প্রত্যংগের সাধারণ চিত্র, সার্বদৈহিক লক্ষণাবলী, মায়াজমেটিক অবস্থা ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত পর্যবেক্ষণ করে মেটেরিয়া মেডিকা হতে উক্ত রোগের সদৃশ ঔষধ নির্বাচন করতে হবে।
১১। ডাঃ বোনিং হাউসেন ২০১৫
ডাঃ বোনিং হাউসেন: বোনিং হাউসেনের পূর্ণনাম Baron Clemens Maria Franz von Boenninghausen বোনিংহাউসেন ১৮৩০ সাল হতে ডাঃ হ্যানিম্যানের মৃত্যুর পূর্বই পর্যন্ত তাঁর স্পর্শে থেকে সকল কর্মকান্ডের সহযোগী ছিলেন। ডাঃ হ্যানিম্যানের সকল রচনাবলী তিনি অধ্যয়ন করে ছিলেন। হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকদের সদৃশ ঔষধ নির্বাচনের সুবিধার্থে তিনি হোমিওপ্যাথি বিষয়ক অনেক পুস্তক রচনা করে ছিলেন। তাঁর রচিত- Repertory of the Antipsoric Medicine প্রথম ১৮৩২ সালে মুদ্রিত অবস্থায় প্রকাশিত হয়। এটি জার্মান ভাষায় লিখিত ছিল এবং এর ভূমিকা স্বয়ং ডাঃ হ্যানিম্যান লিখেছিলেন।
১২। ঔষধ ২০১৩, ১৪, ১৫
ঔষধের সংজ্ঞা: সুস্থ মানবদেহে ভেষজ এর ক্রিয়া অর্থাৎ সৃষ্ট কৃত্রিম রোগ লক্ষণ এবং ঐ ভেষজকে ফার্মাকোপিয়া মতে ঔষধে রূপান্তরপূর্বক উক্ত সৃষ্ট কৃত্রিম রোগ লক্ষণ সদৃশ প্রাকৃতিক রোগ লক্ষণ সম্বলিত অসুস্থ দেহে সূক্ষ্মমাত্রা প্রয়োগপূর্বক আরোগ্য সাধন করাকে ঔষধ বলে।
১৩। হ্রাস-বৃদ্ধি। ২০১৫, ১৮
হ্রাস-বৃদ্ধির সংজ্ঞাঃ
যে সকল অবস্থায় রোগ লক্ষণের পরিবর্তন ঘটে, বিশেষ করে রোগ লক্ষণ কমে ও বাড়ে, তাকে হ্রাস-বৃদ্ধি (মোড়ালিটি) বলে। পরিবেশ পরিস্থিতি অনুযায়ী শীত ও গ্রীষ্মে, শীতল ও উত্তাপে, আর্দ্রতায় ও শুষ্কতায়, দিবা-রাত্রির বিভিন্ন সময়ে, পূর্নিমা ও অমাবস্যায় এবং অবস্থা ও অবস্থানের পরিবর্তনে বিভিন্ন ব্যক্তির প্রতিক্রিয়া বিভিন্ন রূপ হয়।
১৪। রুব্রিক কি? ২০১৩, ১৪
রুব্রিকের সংজ্ঞা:
হোমিওপ্যাথিক রেপার্টরীতে লক্ষণের মূল অর্থের পরিবর্তন না করে যে মূল শব্দ দ্বারা লক্ষণকে সংক্ষিপ্ত করে বা শব্দান্তরে প্রকাশ করে বর্ণিত হয়েছে বা বিশেষ অক্ষর দ্বারা চিহ্নিত করে বিভিন্ন অধ্যায় শিরোনাম হিসাবে দেখানো হয়েছে, তাদেরকে রুব্রিক বলা হয়।
১৫। মানসিক লক্ষণ ২০১৩, ১৪
মানসিক লক্ষণ:
যে সকল লক্ষণ দ্বারা রোগীর মনোবৃত্তি এবং আচরণের বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পায়, তাদেরকে মানসিক লক্ষণ বলে। অর্থাৎ যা কিছু রোগীর মনের ভাব, অবস্থা, আকাঙ্খা, অনীহা, ভয়, ভালবাসা প্রভৃতি প্রকাশ করে, সে সকল লক্ষণাবলীকে মানসিক লক্ষণ বলে।
মানসিক লক্ষণকে গুরুত্ব অনুসারে ৩টি পর্যায়ে ভাগ করা যায়। যথা-
১। ইচ্ছাবৃত্তি, ২। বুদ্ধিবৃত্তি ও ৩।স্মৃতিশক্তি।
১৬। কার্ড রেপার্টরী, ২০১৪
কার্ড রেপার্টরী: কার্ড রেপার্টরী প্রচলিত পুস্তক রেপার্টরী নয়, এটি পুস্তক রেপার্টরীকে ভিত্তি করে রেপার্টরীকরণের একটি কৌশল মাত্র। ১৮৮৮ সালে সর্বপ্রথম কার্ড রেপার্টরীর উদ্ভাবন হয়। এতে ২৫০০ কার্ড ছিল। এ রেপার্টরীর লক্ষণসমূহকে রুব্রিকে রূপান্তর করে নেয়ার পর বুকলেট হতে প্রয়োজনীয় কব্রিকের কার্ডের কোড নং জেনে নিতে হয়। কার্ড রেপার্টরীর ফলাফল প্রাপ্তির এর মেটেরিয়া মেডিকা যাচাই করে রোগীর জন্য চূড়ান্ত ঔষধ নির্বাচন প্রান্তির হয়, এতে করে কার্ড রেপার্টরী চিকিৎসককে মেটেরিয়া মেডিকা পালন করতে করে, ফলে চিকিৎসক মেটেরিয়া মেডিকায় বিশেষ পারদর্শিতা অর্জন করেনা।
১৭। হোমিওপ্যাথিক বৃদ্ধি। ২০১৪, ১৮
হোমিওপ্যাথিক বৃদ্ধি : সদৃশ বিধান মতে সুনির্বাচিত ঔষধের স্বল্পমাত্রার প্রয়োগে রোগ নিরূপদ্রবে দূরীভূত হয়ে যায়। কিন্তু যদি নির্বাচিত ঔষধ অতিরিক্ত মাত্রায় প্রয়োগ করা হয়। তখন রোগশক্তির চেয়ে ঔষধশক্তি বেশি হওয়ায় সদৃশ বিধান মতে জীবনীশক্তি রোগশক্তির কবল হতে মুক্ত হলে ও প্রবলতর ঔষধশক্তি স্বাভাবিক নিয়মে সদ্যমুক্ত জীবনীশক্তিকে আক্রমন করে পীড়িত করে। হোমিওপ্যাথিক সদৃশ ঔষধের কারণে এই বৃদ্ধি ঘটে থাকে বলে ইহাকে হোমিওপ্যাথিক বৃদ্ধি বলে।
১৮। ডাঃ জেমস টাইলার কেন্ট
ডাঃ জেমস টাইলার কেন্ট:
ডাঃ জেমস টাইলার কেন্ট (১৮৪৯ ১৯১৬) একজন আমেরিকান চিকিৎসক এবং আধুনিক হোমিওপ্যাথির পূর্বপুরুষ ছিলেন। তিনি হোমিওপ্যাথিতে হ্যানিম্যানের পরবর্তী বিশেষ অবদান রেখেছেন। ১৮৯৭ সালে কেন্ট মানুষের অসুস্থতা এবং তাদের সাথে সম্পর্কিত হোমিওপ্যাথিক প্রতিকারগুলির উপর একটি বিশাল গাইডবুক প্রকাশ করেন। তাঁর রচিত মেটিরিয়া মেডিকা ও রেপার্টরী আজ বিশ্বের দরবারে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকদের সুপ্রতিষ্ঠিত করেছে এবং মানব কল্যানে বিশেষ অবদান রাখছে।
১৯। রেপার্টরীকরণের বিভিন্ন পদ্ধতি বর্ণনা কর। ২০০৮, ১৪
রেপার্টরীকরণের বিভিন্ন পদ্ধতি:
সদৃশ, একক ঔষধ নির্বাচনের উদ্দেশ্যে রেপার্টরীকরণের বিভিন্ন পদ্ধতি প্রচলিত আছে। তন্মধ্যে প্রধান তিনটি পদ্ধতি হল-
(i) হ্যানিম্যান-বোনিংহাউসেন পদ্ধতি (Hahnemann Boeighausen’s Method), (ii) কেন্ট পদ্ধতি (Kent’s Method)
(iii) আধুনিক পদ্ধতি (Modern Method)
২০। ঔষধজনিত রোগ। ২০১৮
ঔষধজনিত রোগ: বিসদৃশ ঔষধ বার বার প্রয়োগের ফলে ঔষধের দ্বারা
সৃষ্ট লক্ষণ স্থায়ী রূপ ধারণ করলে, তাকে ঔষধজনিত রোগ বলে। ইহাতে বিসদৃশ ঔষধ প্রয়োগ বন্ধ রাখলে অনেক সময় জীবনীশক্তি তার নিজস্ব ক্রিয়া দ্বারা আরোগ্য করে তুলতে পারে।
২১। টিকার কুফল
টিকার কুফল:
যক্ষ্মার জীবাণু হতে যক্ষ্মার টিকা তৈরি হয়। টিকা দেয়ার ফলে দেহে এন্টিবডি তৈরি হয়। ডাঃ হ্যানিম্যানের মতে, “রোগ সৃষ্টিকারী ক্ষতিকর উপাদানসমূহের দ্বারা মানুষের সুস্থ শরীরকে অসুস্থ করার শক্তি গৌণ ও শর্তসাপেক্ষ। কিন্তু ভেষজ পদার্থের শক্তি সম্পূর্ণ শর্তহীন, এমন কি পূর্বোক্ত শক্তি অপেক্ষা অনেক বেশি শক্তিশালী।” অতএব টিকা দেয়া ফলে দেহে এন্টিবডি তৈরি হয় কিন্তু দেহের জীবনীশক্তি দুর্বল হয়ে পড়লে তখন এই টিকার উপাদান হতে উক্ত প্রতিরোধকারী রোগ সৃষ্টি হয়।
১। রেপার্টরী ও মেটেরিয়া মেডিকার মধ্যে পার্থক্য লিখ। ২০ রেপার্টরী ও মেটেরিয়া মেডিকার মধ্যে পার্থক্য:
রেপার্টরী
মেটেরিয়া মেডিকায় অন্তর্ভুক্ত মানব দেহ-মনে প্রকাশিত প্রায় সর্বপ্রকার রোগ লক্ষণাবলীকে ধারাবাহিকভাবে প্রতিটি লক্ষণের নির্দেশিত ঔষধাবলীকে বর্ণমালার ক্রমানুসারে এবং ঔষধের গুরুত্ব অনুযায়ী সাজিয়ে অর্থাৎ আভিধানিক পদ্ধতি অনুসরণ করে যে বিশেষ ধরনের লক্ষণ নির্দেশিকা বা ঔষধ কোষ রচিত হয়েছে, তাকে রেপার্টরী বলা হয়।
রেপার্টরী রোগ লক্ষণানুসারে ঔষধরে সূচীপত্র হিসাবে কাজ করে।
মেটেরিয়া মেডিকার জ্ঞান ছাড়া শুধু রেপার্টরীর দিয়ে আদর্শ আরোগ্য সম্ভব নয়।
এতে রোগ লক্ষণের বর্ণনা ও এর প্রয়োজনীয় ঔষধাবলী সাজানো থাকে। সঠিক ঔষধটি ব্যবহারে করার জন্য মেটেরিয়া মেডিকার সাহায্য নিতে হবে।
ডাঃ হ্যানিম্যান রচিত মেটেরিয়া মেডিকার নাম “মেটেরিয়া মেডিকা পিউরা”।
১ যে
মেটেরিয়া মেডিকা
পুস্তক পাঠ করলে হোমিওপ্যাথিক বিভিন্ন ঔষধের প্রত্যেকটির সমনাম, লক্ষণ হতে ক্রিয়াকাল, মাত্রা ও শক্তি ইত্যাদি সম্বন্ধে বিস্তারিতভাবে জ্ঞান অর্জন করা যায়, তাকে মেটেরিয়া মেডিকা বলে।
২
মেটেরিয়া মেডিকা ঔষধের লক্ষণের ভান্ডার হিসাবে কাজ করে।
৩
রেপার্টরী ছাড়া শুধু মেটেরিয়া মেডিকা দিয়ে আদর্শ আরোগ্য সম্ভব।
৪ এতে প্রত্যেকটি ঔষধের বিস্তারিত ও পরিপূর্ণ বিবরণ দেয়া থাকে। এটি হতে রেপার্টরীর সাহায্য সম্ভাব্য সঠিক ঔষধ খুঁজে বের করা যায়।
৫ ডাঃ হ্যানিম্যান রচিত রেপার্টরী প্রকাশিত হয় নাই। প্রথম প্রকাশিত হয় ডাঃ বোনিং হাউসেনের রেপার্টরী।
২। চিকিৎসায় মিশ্র ঔষধের জটিলতা ব্যাখ্যা কর। ২০ চিকিৎসায় মিশ্র ঔষধের জটিলতা:
ডাঃ হ্যানিম্যান “অর্গানন অব মেডিসিন” গ্রন্থের অনুচ্ছেদ নং ২৭৩ এ বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন, কোন রোগীকেই একই সময় একটি বেশী অবিমিশ্রিত ঔষধ প্রয়োগ করার প্রয়োজন হয় না কাজেই তা এক সময় একাধিক ঔষধ প্রয়োগ করা অনুমোদন যোগ্য হতে পারে না। রোগের ক্ষেত্রে এক সময় একটি অবিমিশ্র ঔষধ অথবা বিভিন্নভাবে কার্যকরী কতিপয় ঔষধের মিশ্রণ প্রয়োগ করার মধ্যে কোনটি অধিকতর প্রাকৃতিক বিধান সম্মত ও যুক্তিসংগত সে বিষয় বিন্দু মাত্র সন্দেহ থাকাও ধারণাতীত ব্যাপার। একমাত্র যথার্থ সহজবোধ্য ও প্রাকৃতিক আরোগ্যকলা এই হোমিওপ্যাথিতে রোগীকে একই সময় দুটি বিভিন্ন ঔষধ প্রয়োগ করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। সুতরাং চিকিৎসায় মিশ্র ঔষধের জটিলতা অত্যন্ত বিপদজনক।
৩। রোগীর অতীত ইতিহাসের গুরুত্ব লিখ। ২০
রোগীর অতীত ইতিহাসের গুরুত্ব:
হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা পদ্ধতি একটি লক্ষণভিত্তিক চিকিৎসা পদ্ধতি। এখানে রোগী রোগ লক্ষণ সমষ্টি নিয়ে একটি সদৃশ ঔষধ নির্বাচিত করে সূক্ষ্মমাত্রায় প্রয়োগে রোগীর রোগ আরোগ্য করা হয়। রোগীর বর্তমান ও অতীতের ইতিহাস নিয়েই রোগীলিপি প্রস্তুত করা হয়। রোগীর রোগ সম্পর্কিত অতীতের ইতিহাস অর্থাৎ দাদা-দাদী, নানা-নানী, বাব-মা, ভাই-বোন এবং রোগী নিজের জন্ম হতে অসুস্থ হওয়ার আগ পর্যন্ত যে সকল রোগ কষ্টে ভুগেছিলেন তা ঔষধ নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সুতরাং রোগীর অতীত ইতিহাস আদর্শ রোগারোগ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৪। একদৈশিক পীড়ার চিকিৎসায় রেপার্টরীর ভূমিকা লিখ। ২০
একদৈশিক পীড়ার চিকিৎসায় রেপার্টরীর ভূমিকা: ডাঃ হ্যানিম্যান “অর্গানন অব মেডিসিন” গ্রন্থের অনুচ্ছেদ নং ১৭২ ও ১৭৩ একদৈশিক পীড়া সম্বন্ধে বিস্তারিত আলোকপাত করেছেন। রোগের লক্ষণ অত্যন্ত কম হলে আরোগ্যের পথে সেরূপ অসুবিধা হয়। এরূপ ক্ষেত্রে আমাদের যত্নের সাথে মনোযোগ দিতে হবে। কারণ এই বাঁধা অপসারণ করা হলে সম্ভাব্য সকল প্রকার চিকিৎসা পদ্ধতির মধ্যে সর্বাপেক্ষা পূর্ণাঙ্গ এই চিকিৎসা পদ্ধতির অন্যান্য সকল বাঁধা দূরীভূত হবে। অত্যন্ত কম লক্ষণ বিশিষ্ট রোগের আরোগ্য দুঃসাধ্য, তাদেরকে একদৈশিক রোগ বলা হয়। এই সকল রোগের কেবল মাত্র দুই একটি লক্ষণ প্রকাশিত হলেও বাকী লক্ষণ সমূহ অস্পষ্ট থাকে। প্রধানতঃ সেই রোগগুলো চিররোগের অর্ন্তগত। রোপার্টরীর অধ্যায় ভিত্তিক রোগীর একক, অদ্ভুত ও নির্দেশক লক্ষণের সাহায্যে সদৃশ ঔষধ নির্বাচন করা সম্ভব হয়। রেপার্টরীর সহায়তায় একক লক্ষণ দ্বারাও যেমন- ঔষধ নির্বাচন করা যায় আবার একাধিক লক্ষণের সমন্বয়ের মাধ্যমে রোগীচিত্রের সর্বাধিক সদৃশ ঔষধও নির্বাচন করা যায়। সুতরাং একদৈশিক পীড়ার চিকিৎসায় রেপার্টরীর ভূমিকা অপরিসীম।
৫। কোন রেপার্টরী তোমার কাছে সর্বাপেক্ষা উত্তম মনে হয় এবং কেন?
ডাঃ জে. টি. কেন্ট এম.ডি কর্তৃক রচিত রেপার্টরী আমার কাছে সর্বাপেক্ষা উত্তম মনে হয়।
কারণ: ডাঃ জে. টি. কেন্ট এম.ডি রেপার্টরীতে শাখা বা অধ্যায়- মানসিক অংশ-১ টি অধ্যায়, আঙ্গিক অংশ-৩৫টি অধ্যায়, সাধারণ লক্ষণাবলী-১টি অধ্যায়। এই তিনটি মূল বিভাগের অধীনে কেন্ট রেপার্টরীতে ৩৭ টি অধ্যায় আছে। ডাঃ কেন্ট রেপার্টরীতে রুব্রিক ৭৫,০০০ টি রুব্রিক আছে। এই পদ্ধতিতে পূর্ণাঙ্গ রোগীলিপি প্রস্তুতের পর বৈশিষ্ট্যপূর্ণ লক্ষণাবলীকে সর্বাঙ্গিন মানসিক লক্ষণ, সর্বাঙ্গিন দৈহিক লক্ষণ এবং সর্বশেষ আঙ্গিক লক্ষণ হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করার পর রুব্রিকে পরিবর্তত করা হয়। এ রেপার্টরীর সহায়তায় একক লক্ষণ দ্বারাও যেমন- ঔষধ নির্বাচন করা যায় আবার একাধিক লক্ষণের সমন্বয়ের মাধ্যমে রোগীচিত্রের সর্বাধিক সদৃশ ঔষধও নির্বাচন করা যায়।
উপরিউক্ত কারণে ডাঃ জে. টি. কেন্ট এম.ডি কর্তৃক রচিত রেপার্টরী
আমার কাছে সর্বাপেক্ষা উত্তম মনে হয়।
৬। কম্পিউটার রেপার্টরীর সুবিধাসমূহ লিখ।
কম্পিউটার রেপার্টরীর
সুবিধাসমূহ (Advantage of Computer
Repertory): আর্দশ রোগীচিত্রের রেপার্টরীকরণের পর প্রাপ্ত ঔষধ তালিকা হতে ঔষধ বাছাই বরে রোগীর জন্য সদৃশ একক ঔষধের ব্যবস্থাপত্রে দিতে সহজ হয়। এক অভিনব ঔষধ বাছাই কমান্ডের মাধ্যমে চিকিৎসকের নির্দেশ অনুসারে মায়াজম ভিত্তিক, শীত/গরমের অত্যানুভুতিতার উপর ভিত্তিকরে, দেহের পার্শ্বভিত্তিক, লিঙ্গ ও বয়স ভিত্তিক, নির্দেশক ও একক পিকুলিয়ার লক্ষণ ইত্যাদি কম্পিউটার রেপার্টরী সদৃশ ঔষধের তালিকা বাছাই করে দিতে পারে।
৭। সংক্ষেপে লিখ- রিজিওনাল রেপার্টরী। ২০ রিজিওনাল রেপার্টরী (আঞ্চলিক রেপার্টরি):
রিজিওনাল রেপার্টরী দ্বারা দেহের বিভিন্ন অঙ্গ, সিস্টেম (যেমন যৌনাঙ্গ, শ্বাসতন্ত্রের অঙ্গ, পরিপাকতন্ত্র, স্নায়ুতন্ত্র ইত্যাদি) এবং অঞ্চলগুলিকে বোঝায়। উদাহরণ-
১। অর্গান- (ক) হেড নেইহার্ডের রেপার্টরি,
(খ) আইস বেরিজের রেপার্টরি,
(গ) টঙ্গ ডগলাসের রেপার্টরি, (ঘ) শ্বাসতন্ত্রের অঙ্গ লুটজে এর রেপার্টরি। (ঙ)
পায়ের ঘামের রেপার্টরি ও. এম. ড্রেক।
২। সিস্টেম- (ক) শ্বাসতন্ত্রের সিস্টেম ভ্যান ডেন বাগ,
(খ) পরিপাকতন্ত্রের রেপার্টরি আর্কেল ম্যাক মিশেল
৩। অঞ্চল- (ক) আঞ্চলিক নেতা ন্যাশ (Regional Leaders Nash),
(খ) ব্যাক উইলসির রেপার্টরি (Repertory of Back Wilsey) ।
রিজিওনাল/আঞ্চলিক রেপার্টরির সুবিধা:
(ক) সংশয় এবং বিভ্রান্তির মধ্যে প্রস্তুত রেফারেন্সের জন্য।
(খ) তীব্র ক্ষেত্রে এটি সর্বোত্তম সাহায্য করে কারণ রোগী সাধারণত বিশেষ লক্ষণ ব্যতীত যন্ত্রণার সময় তার সমস্ত লক্ষণ বলে না। (গ) এটি সাধারণ
চিকিৎসকদের তুলনায় বিশেষজ্ঞদের অনেক বেশি সাহায্য করে।
৮। সংক্ষেপে লিখ। রেমিডি ২০
রেমেডি (Remady): যখন একটি ঔষধ সদৃশ বিধান মতে প্রয়োগ করা হয় এবং প্রয়োগের ফলে শরীরে সুস্থতা আনয়ন করে, তাকে রিমেডি বলা হয়। অর্থাৎ সুনির্বাচিত ঔষধকেই রেমেডি বলা হয়।